অবাধ গাছ কাটা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া রেঞ্জে সংরক্ষিত ও সামাজিক বনাঞ্চলে নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রভাবশালী একটি গোষ্ঠী বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মচারীর যোগসাজশে এই বন উজাড়ের কাজে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অস্ত্রধারীদের মাধ্যমে বন পাহারার দায়িত্বপ্রাপ্তদের সরিয়ে দিয়ে জোরপূর্বক গাছ কাটা সেখানে নৈমত্তিক চিত্রে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

এক সময় যেসব বনাঞ্চলে সামাজিক বনায়নের আওতায় লাখো গাছ রোপণ করা হয়েছিল, সেই গাছগুলো এখন বাণিজ্যিক লোভের শিকার। দীর্ঘ আট বছর ধরে রোপণ ও পরিচর্যার মাধ্যমে গড়ে ওঠা এই বাগান এখন কয়েক মাসের মধ্যেই ধ্বংসের সম্মুখীন হয়েছে। এতে শুধু বন উজাড় হচ্ছে না, ভেঙে পড়ছে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির প্রতি স্থানীয় মানুষের আস্থা। আর সেইসঙ্গে হুমকির মুখে পড়ছে জলবায়ু সহনশীলতা, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশগত ভারসাম্য।

গাছ কেটে বন উজাড় করার ফলে ভূমিক্ষয়, বন্যা, খরা, জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্রতা, বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস ও মানুষের জীবন-জীবিকায় বিপর্যয় নেমে আসে। যেসব অঞ্চলে বন নিধন দ্রুত গতিতে ঘটছে, সেখানে দীর্ঘমেয়াদে কৃষি, জলাধার ও বাস্তুসংস্থান ভেঙে পড়ছে। তাছাড়া বনজসম্পদের ওপর নির্ভরশীল মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থাও দুর্বল হয়ে পড়ে।

এই অবস্থায় বন রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। সামাজিক বনায়নের গাছগুলোকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আওতায় আনতে হবে। বন বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যৌথভাবে কঠোর নজরদারি চালাতে হবে। প্রয়োজনে অভিযানে নামতে হবে। যারা বেআইনিভাবে গাছ কাটছে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এমনটা আমরা দেখতে চাই। সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের সংরক্ষণ কাজে আরও সক্রিয়ভাবে যুক্ত করতে হবে।

পরিবেশ সংরক্ষণ রাষ্ট্রের মৌলিক দায়। তাই রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে অবিলম্বে অবাধে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। টেকসই বন ব্যবস্থাপনার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের পরিবেশ-সচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ ও স্থানীয় প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে।

সম্প্রতি