রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৬টি চিকিৎসক পদের বিপরীতে মাত্র ৪ জন ডাক্তার আছেন। এত অল্পসংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে একটি হাসপাতাল পরিচালনা করা নিঃসন্দেহে দুঃসাধ্য কাজ। সেখানে প্রতিদিন শতাধিক রোগী সেবা নিতে আসেন। পর্যাপ্তসংখ্যক জনবল না থাকলে রোগীদের কাক্সিক্ষত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া দুরূহ হয়ে পড়ে।
এ অবস্থা শুধু হাসপাতালে নয়, ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতেও চিকিৎসক অনুপস্থিত। এতে করে গ্রামের সাধারণ মানুষ দূরবর্তী হাসপাতাল কিংবা বেসরকারি ক্লিনিকের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রান্তিক দরিদ্র মানুষের জন্য এই বিড়ম্বনা আরও যন্ত্রণাদায়ক। এ নিয়ে সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এ সংকট একদিনে তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে পদগুলো শূন্য পড়ে আছে, অথচ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। শুধু চাহিদা পাঠালেই দায়িত্ব শেষ হয় না, তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাই মূল দায়িত্ব। জনবল সমস্যার সমাধান না করে যদি শুধু ধৈর্যের পরামর্শ দেয়া হয়, তাহলে প্রান্তিক মানুষের ভোগান্তি বাড়তেই থাকবে।
দেশে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ও পরিকল্পনা থাকলেও তার বাস্তব প্রয়োগে ঘাটতি স্পষ্ট। রায়গঞ্জের অভিজ্ঞতা দেখিয়ে দেয়, কেন্দ্র থেকে প্রান্ত পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব কতটা গভীর। এটি শুধু একটি উপজেলার সংকট নয়, বরং একটি সামগ্রিক নীতিগত ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। এই বাস্তবতা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক নিয়োগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে জনবল সরবরাহ এবং তদারকি ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন। তা না হলে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা সাধারণ মানুষের আস্থার বাইরে চলে যাবে।