alt

সম্পাদকীয়

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

: শনিবার, ০৯ আগস্ট ২০২৫

২০২৪ সালের ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর এক বছর পার করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গত এক বছরে তাদের অর্জন কী সেটা নিয়ে কথা বলছেন অনেকে। এই সময়ের মধ্যে তাদের কী ব্যর্থতা ছিল সেটাও উঠে এসেছে সমালোচকদের বক্তব্যে।

গত এক বছরে অর্থনৈতিক খাতে কিছু ইতিবাচক সাফল্য চোখে পড়ে। মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা কিছুটা হলেও সফল হয়েছে। গত বছর জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১১.৬৬ শতাংশ। চলতি বছরের জুনে সেটা কমে হয়েছে ৮.৪৮ শতাংশ। যদিও জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। মূল্যস্ফীতিতে কিছুটা লাগাম টানা গেলেও মানুষ যে খুব স্বস্তিতে আছে সেটা বলার অবকাশ নেই।

ব্যাংক খাত গভীর সংকটে নিমজ্জিত হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকার আমলে ঋণ খেলাপি, অর্থ পাচারের ঘটনগুলোতে রাশ টানা গেছে বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়। তিন বছর মেয়াদি কাঠামোগত সংস্কার পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে। এই রোডম্যাপ আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এডিবির মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার সমর্থন পেয়েছে। তবে এই পরিকল্পনার সাফল্য নির্ভর করছে বাস্তবায়নের সক্ষমতার ওপর।

রেমিট্যান্স খাতে বেশ অগ্রগতি দেখা গেছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩০.৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। সরকারের হুন্ডি দমন ও প্রবাসীদের বৈধ ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি আগ্রহী করার পদক্ষেপকে সফল বলাই যায়।

তবে বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার যে স্বপ্ন নিয়ে ছাত্র-গণঅভ্যূত্থান হয়েছিল সেই স্বপ্নের পথে কতটুকু হাঁটা গেছে সেই প্রশ্ন রয়েছে। গত এক বছরে কিছু গুরুতর সমস্যারও সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো ‘মব সন্ত্রাস’, বা গণপিটুনির মতো সহিংসতার ঘটনা এবং নৈরাজ্য ও উগ্রবাদীদের আস্ফালন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নীরবতা, কিংবা অনেক সময় নির্লিপ্ততা, এই ধরনের ঘটনায় একধরনের বৈধতা তৈরি করছে। সরকারের কারও কারও বক্তব্যে মব সন্ত্রাস উৎসাহিত হয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

ঢালাও মামলা, গণগ্রেপ্তার, আদালত প্রাঙ্গনে অভিযুক্তকে হেনস্তা করা আরেকটি সমস্যা। এক্ষেত্রে কোনো কোনো গোষ্ঠীর তৎপরতা আইনের শাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এসবের বিরুদ্ধে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।

নারীবিষয়ক সংস্কারে সরকার বড় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ ছিল। কিন্তু জুলাই-পরিবর্তী সময়ে নারী-নিগৃহের অনেক ঘটনা ঘটেছে। নারী-বিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠীর আস্ফালনে নারী সংস্কারের প্রসঙ্গ চাপা পড়ে গেছে। নারীদের পেছনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

দেশে বড় সমস্যা কেন্দ্রীকরন। এর বিপরীতে বিকেন্দ্রীকরন করতে হলে শক্তিশালী ও কার্যকর স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা দরকার। এক্ষেত্রে সংস্কারের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও অগ্রগতি চোখে পড়ে না।

অর্থনীতিতে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। ব্যাবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যাবসায়ী সমাজের অনেক অভাব-অভিযোগ আছে। বিনিয়োগে কোনও স্বস্তি দেখা যায়নি। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে অস্বস্তিগুলো দূর হয়নি।

এই অবস্থায় ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করার ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান। দেশে অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান করা বরাবরই একটি চ্যালেঞ্জ। এবার এই চ্যালেঞ্জটিকে আর কঠিনই মনে করছেন অনেকে। যদিও প্রধান উপদেষ্টা আশা করছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের ‘সেরা নির্বাচন’ অনুষ্ঠিত হবে এবার। আগামী নির্বাচন কেমন হবে, ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে এর প্রভাব কী হবে সেটার উত্তর কেবল সময়রে কাছেই আছে।

ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবায় ভোগান্তির অবসান ঘটান

সড়কে মৃত্যু : দুর্ঘটনা নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

নির্বাচনের ঘোষণায় স্বস্তি, তবে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’: কিছু জিজ্ঞাসা

বয়স্ক ভাতা পেতে আর কত অপেক্ষা

ডিএনডি এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নিন

গণঅভ্যুত্থানের এক বছর: প্রত্যাশায় কী প্রাপ্তি

অবৈধ মিনি পেট্রোল পাম্পের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

অজগর হত্যা : বন্যপ্রাণীর সুরক্ষায় চাই জনসচেতনতা

লেভেল ক্রসিংয়ে প্রাণহানি : অব্যবস্থাপনার দুর্ভাগ্যজনক চিত্র

ঠাকুরগাঁওয়ে জলাতঙ্ক টিকার সংকট দূর করুন

পাহাড় কাটা রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিন

বনমালীনগরে পাকা সড়কের জন্য আর কত অপেক্ষা

সার বিতরণ ব্যবস্থায় অনিয়ম বন্ধে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন

গাবতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংকট দূর করুন

গ্যাস অপচয় ও অব্যবস্থাপনার দায় এড়ানোর সুযোগ নেই

সুন্দরবনের বাঘ : সাফল্যের পরিসংখ্যান, চ্যালেঞ্জের বাস্তবতা

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে হামলা : প্রশ্নবিদ্ধ প্রশাসনের ভূমিকা

পীরগঞ্জে গবাদিপশুর চিকিৎসা নিয়ে কৃষকদের দুর্ভোগ

তিস্তায় অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে কঠোর হোন

রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিন

অবাধ গাছ কাটা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

দাদনের ফাঁদে আটকে পড়া জেলে সমাজ

জলাবদ্ধতা মোকাবিলায় টেকসই ব্যবস্থা নিন

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ আমলে নিন

অব্যবস্থাপনার অনাকাঙ্ক্ষিত দৃষ্টান্ত হয়ে রইল মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি

একটি ট্র্যাজেডি, কিছু প্রশ্ন

আসামী ‘অজ্ঞাতনামা’, হয়রানি সাধারণ মানুষের

পাট চাষিদের বিকল্প পচন প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করুন

পুরোনো যানবাহন অপসারণে কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন

খাল দখল-ভরাট বন্ধে কঠোর হোন

কয়রায় টেকসই বাঁধ নির্মাণে বিলম্ব কেন

ফেনীর বন্যা : টেকসই সমাধান জরুরি

স্বাস্থ্য খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিচ্ছবি দুমকি হাসপাতাল

অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজন কঠোর প্রশাসনিক উদ্যোগ

আইনের শাসন নিশ্চিত না হলে সহিংসতার পুনরাবৃত্তি থামবে না

tab

সম্পাদকীয়

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

শনিবার, ০৯ আগস্ট ২০২৫

২০২৪ সালের ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর এক বছর পার করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গত এক বছরে তাদের অর্জন কী সেটা নিয়ে কথা বলছেন অনেকে। এই সময়ের মধ্যে তাদের কী ব্যর্থতা ছিল সেটাও উঠে এসেছে সমালোচকদের বক্তব্যে।

গত এক বছরে অর্থনৈতিক খাতে কিছু ইতিবাচক সাফল্য চোখে পড়ে। মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা কিছুটা হলেও সফল হয়েছে। গত বছর জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১১.৬৬ শতাংশ। চলতি বছরের জুনে সেটা কমে হয়েছে ৮.৪৮ শতাংশ। যদিও জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। মূল্যস্ফীতিতে কিছুটা লাগাম টানা গেলেও মানুষ যে খুব স্বস্তিতে আছে সেটা বলার অবকাশ নেই।

ব্যাংক খাত গভীর সংকটে নিমজ্জিত হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকার আমলে ঋণ খেলাপি, অর্থ পাচারের ঘটনগুলোতে রাশ টানা গেছে বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়। তিন বছর মেয়াদি কাঠামোগত সংস্কার পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে। এই রোডম্যাপ আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এডিবির মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার সমর্থন পেয়েছে। তবে এই পরিকল্পনার সাফল্য নির্ভর করছে বাস্তবায়নের সক্ষমতার ওপর।

রেমিট্যান্স খাতে বেশ অগ্রগতি দেখা গেছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩০.৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। সরকারের হুন্ডি দমন ও প্রবাসীদের বৈধ ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি আগ্রহী করার পদক্ষেপকে সফল বলাই যায়।

তবে বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার যে স্বপ্ন নিয়ে ছাত্র-গণঅভ্যূত্থান হয়েছিল সেই স্বপ্নের পথে কতটুকু হাঁটা গেছে সেই প্রশ্ন রয়েছে। গত এক বছরে কিছু গুরুতর সমস্যারও সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো ‘মব সন্ত্রাস’, বা গণপিটুনির মতো সহিংসতার ঘটনা এবং নৈরাজ্য ও উগ্রবাদীদের আস্ফালন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নীরবতা, কিংবা অনেক সময় নির্লিপ্ততা, এই ধরনের ঘটনায় একধরনের বৈধতা তৈরি করছে। সরকারের কারও কারও বক্তব্যে মব সন্ত্রাস উৎসাহিত হয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

ঢালাও মামলা, গণগ্রেপ্তার, আদালত প্রাঙ্গনে অভিযুক্তকে হেনস্তা করা আরেকটি সমস্যা। এক্ষেত্রে কোনো কোনো গোষ্ঠীর তৎপরতা আইনের শাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এসবের বিরুদ্ধে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।

নারীবিষয়ক সংস্কারে সরকার বড় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ ছিল। কিন্তু জুলাই-পরিবর্তী সময়ে নারী-নিগৃহের অনেক ঘটনা ঘটেছে। নারী-বিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠীর আস্ফালনে নারী সংস্কারের প্রসঙ্গ চাপা পড়ে গেছে। নারীদের পেছনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

দেশে বড় সমস্যা কেন্দ্রীকরন। এর বিপরীতে বিকেন্দ্রীকরন করতে হলে শক্তিশালী ও কার্যকর স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা দরকার। এক্ষেত্রে সংস্কারের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও অগ্রগতি চোখে পড়ে না।

অর্থনীতিতে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। ব্যাবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যাবসায়ী সমাজের অনেক অভাব-অভিযোগ আছে। বিনিয়োগে কোনও স্বস্তি দেখা যায়নি। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে অস্বস্তিগুলো দূর হয়নি।

এই অবস্থায় ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করার ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান। দেশে অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান করা বরাবরই একটি চ্যালেঞ্জ। এবার এই চ্যালেঞ্জটিকে আর কঠিনই মনে করছেন অনেকে। যদিও প্রধান উপদেষ্টা আশা করছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের ‘সেরা নির্বাচন’ অনুষ্ঠিত হবে এবার। আগামী নির্বাচন কেমন হবে, ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে এর প্রভাব কী হবে সেটার উত্তর কেবল সময়রে কাছেই আছে।

back to top