চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে তিন কিশোরকে চোর সন্দেহে বেঁধে বেধড়ক মারধরের ঘটনা আমাদের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে। সেই নৃশংসতায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। গুরুতর আহত হয়েছে বাকি দুই কিশোর। পুলিশ ধারণা করছে, পূর্ববিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে ‘মব’ তৈরি করে এই হামলা চালানো হতে পারে। ফটিকছড়িতে নির্মম গণপিটুনির আরেকটি মন্দ উদাহরণ তৈরি হল। দেশে এ ধরনের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েই চলেছে।
মানবাধিকার সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, কেবল জুলাই মাসেই গণপিটুনিতে ১৬ জন মরা গেছেন। চলতি বছর এ পর্যন্ত মবের হাতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। আইনকে পাশ কাটিয়ে মুহূর্তের আবেগে কিংবা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ‘মব’ তৈরি করে মানুষের প্রাণ হরণ করা এখন সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। আইনের শাসন ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রশ্নে এটা কোনো শুভ ইঙ্গিত দেয় না।
গণপিটুনি কোনো সমস্যার সমাধান নয়। বরং তা নতুন অপরাধ জন্ম দেয়। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকতে পারে। অভিযোগ থাকলে আইন-আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে। সন্দেহভাজনকে আইনের হাতে তুলে দেওয়ার পরিবর্তে নিজেরাই বিচারক সেজে হত্যা করা কেবল অমানবিকই নয়, এটি আইনের প্রতি অবমাননা। এ ধরনের ঘটনা সমাজে নৈরাজ্য ও বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি আরও পাকাপোক্ত করছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কি এ ঘটনার দায় এড়াতে পারে? ঘটনার আগাম উত্তেজনা প্রশমনে স্থানীয় নেতৃত্ব ও সমাজের ভূমিকাইবা কী? একটি এলাকার কিছু লোক তিন কিশোরকে পিটুনি দিল, তাদের একজনকে হত্যা করল, অথচ কেউ তা ঠেকাতে এগিয়ে এল না! বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
গণপিটুনির এই প্রবণতা কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। রাষ্ট্র ও সমাজ যদি এ প্রবণতা রুখে না দাঁড়ায়, তবে আইনের শাসনের ভিত্তি ভেঙে পড়বে, আর নিরাপত্তাহীনতা গ্রাস করবে পুরো সমাজকে।
ফটিকছড়ির ঘটনাসহ সাম্প্রতিক সব গণপিটুনির ঘটনার বিচার করতে হবে। এসব ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারীদের আইনের আওতায় আনা না হলে এই অপসংস্কৃতি থামবে না। আইনের শাসনের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি। সমাজকেও এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে তিন কিশোরকে চোর সন্দেহে বেঁধে বেধড়ক মারধরের ঘটনা আমাদের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে। সেই নৃশংসতায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। গুরুতর আহত হয়েছে বাকি দুই কিশোর। পুলিশ ধারণা করছে, পূর্ববিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে ‘মব’ তৈরি করে এই হামলা চালানো হতে পারে। ফটিকছড়িতে নির্মম গণপিটুনির আরেকটি মন্দ উদাহরণ তৈরি হল। দেশে এ ধরনের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েই চলেছে।
মানবাধিকার সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, কেবল জুলাই মাসেই গণপিটুনিতে ১৬ জন মরা গেছেন। চলতি বছর এ পর্যন্ত মবের হাতে নিহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। আইনকে পাশ কাটিয়ে মুহূর্তের আবেগে কিংবা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ‘মব’ তৈরি করে মানুষের প্রাণ হরণ করা এখন সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। আইনের শাসন ও সামাজিক নিরাপত্তার প্রশ্নে এটা কোনো শুভ ইঙ্গিত দেয় না।
গণপিটুনি কোনো সমস্যার সমাধান নয়। বরং তা নতুন অপরাধ জন্ম দেয়। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকতে পারে। অভিযোগ থাকলে আইন-আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে। সন্দেহভাজনকে আইনের হাতে তুলে দেওয়ার পরিবর্তে নিজেরাই বিচারক সেজে হত্যা করা কেবল অমানবিকই নয়, এটি আইনের প্রতি অবমাননা। এ ধরনের ঘটনা সমাজে নৈরাজ্য ও বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি আরও পাকাপোক্ত করছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কি এ ঘটনার দায় এড়াতে পারে? ঘটনার আগাম উত্তেজনা প্রশমনে স্থানীয় নেতৃত্ব ও সমাজের ভূমিকাইবা কী? একটি এলাকার কিছু লোক তিন কিশোরকে পিটুনি দিল, তাদের একজনকে হত্যা করল, অথচ কেউ তা ঠেকাতে এগিয়ে এল না! বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
গণপিটুনির এই প্রবণতা কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। রাষ্ট্র ও সমাজ যদি এ প্রবণতা রুখে না দাঁড়ায়, তবে আইনের শাসনের ভিত্তি ভেঙে পড়বে, আর নিরাপত্তাহীনতা গ্রাস করবে পুরো সমাজকে।
ফটিকছড়ির ঘটনাসহ সাম্প্রতিক সব গণপিটুনির ঘটনার বিচার করতে হবে। এসব ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারীদের আইনের আওতায় আনা না হলে এই অপসংস্কৃতি থামবে না। আইনের শাসনের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনা জরুরি। সমাজকেও এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।