পরপর দু’দিন ঘটনা ঘটলো। গত শুক্রবার রাজধানীতে গণ অধিকার পরিষদের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে দলটির সভাপতিসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর ওপর হামলা অগ্রহণযোগ্য। আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানাই।
এ ঘটনায় জাতীয় পার্টি ও গণ অধিকার পরিষদ একে অপরকে দোষারোপ করছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দুই দলের সংঘর্ষ থামাতেই সেনাবাহিনী ও পুলিশ হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে।
আমরা মনে করি, সত্য উন্মোচন ও সেটা প্রকাশ করতে হবে। সেদিন সংঘাতময় পরিস্থিতির উদ্ভব হল কীভাবে? ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে কীভাবে? উস্কানিটা কে বা কারা দিয়েছে? কেউ কি চাচ্ছে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির উদ্ভব হোক?
সরকারের উচিত তদন্ত যেন নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ হয় সেই ব্যবস্থা করা। তদন্তের আগে সরকারের উচিত হবে না কারও পক্ষে অবস্থান নেওয়া ও সেটা ঘোষণা করা। সরকারের উচিত হচ্ছে, যে কোনো মূল্যে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা। যারাই শান্তি-শৃঙ্খলায় ব্যাঘাত ঘটাবে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। সহিংসতায় দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে হবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে হবে।
সেদিনের ঘটনার জের ধরে রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে আরও কয়েকটি জেলায় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবারের ঘটনার পর নৈরাজ্য আরও বাড়ল কী করে সেটা আমরা জানতে চাইব।
কোনো দলের কার্যালয়ে হামলা-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনা গণতান্ত্রিক চর্চার জন্যও বিপজ্জনক বার্তা বহন করে। কারা এ হামলার সঙ্গে জড়িত, তাদের উদ্দেশ্য কী, এবং কোন উসকানিতে এই সহিংসতা সংঘটিত হলোÑএসব প্রশ্নের উত্তর জনগণ জানতে চায়।
কেবল রাজনৈতিক বিবৃতি বা পাল্টা অভিযোগে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে না। আর সরকারের কাজ বিবৃতি দিয়ে নিন্দা জানানো নয়। প্রয়োজন নিরপেক্ষ তদন্ত। হামলার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া। আইনের শাসন নিশ্চিত না হলে এবং অপরাধীদের সঠিক বিচার না হলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।
রাষ্ট্রের উচিত স্পষ্ট বার্তা দেওয়া যে, যে কোনো কার্যালয়, কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে হামলা কিংবা অগ্নিসংযোগের মতো সহিংসতা সহ্য করা হবে না। প্রতিটি নাগরিক এবং তার সম্পত্তি রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব। অপরাধী যেই হোক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তবেই সমাজে আস্থা ফিরবে।
একটি সভ্য সমাজে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। একের পর এক মব সহিংসতা ও আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা সমাজে ভয়াবহ বার্তা দিচ্ছে। এতে কেবল ন্যায়বিচারের ধারণা দুর্বল হয় না, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাও মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়ে। সরকার মুখে জিরো টলারেন্স নীতির কথা বললেও, বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।
দেশের মানুষ শান্তি চায়। তারা নির্বাচন চায়। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনই পারে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর আশা করা গিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনমুখী হবে। বাস্তবতা ভিন্ন। রোডম্যাপ ঘোষণার পর নৈরাজ্য আরও বেড়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, এসব নৈরাজ্য কারা করছে? আর নৈরাজ্য হতে পারছে কী করে? নৈরাজ্যকারীরা কেন ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে? কোনো গোষ্ঠী আগামী নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে কোনো অপশক্তি যেন বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে সে বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে, কঠোর হতে হবেÑ সেই শক্তি যেই হোক না কেন।
রোববার, ৩১ আগস্ট ২০২৫
পরপর দু’দিন ঘটনা ঘটলো। গত শুক্রবার রাজধানীতে গণ অধিকার পরিষদের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে দলটির সভাপতিসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর ওপর হামলা অগ্রহণযোগ্য। আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানাই।
এ ঘটনায় জাতীয় পার্টি ও গণ অধিকার পরিষদ একে অপরকে দোষারোপ করছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দুই দলের সংঘর্ষ থামাতেই সেনাবাহিনী ও পুলিশ হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে।
আমরা মনে করি, সত্য উন্মোচন ও সেটা প্রকাশ করতে হবে। সেদিন সংঘাতময় পরিস্থিতির উদ্ভব হল কীভাবে? ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে কীভাবে? উস্কানিটা কে বা কারা দিয়েছে? কেউ কি চাচ্ছে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির উদ্ভব হোক?
সরকারের উচিত তদন্ত যেন নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ হয় সেই ব্যবস্থা করা। তদন্তের আগে সরকারের উচিত হবে না কারও পক্ষে অবস্থান নেওয়া ও সেটা ঘোষণা করা। সরকারের উচিত হচ্ছে, যে কোনো মূল্যে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা। যারাই শান্তি-শৃঙ্খলায় ব্যাঘাত ঘটাবে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। সহিংসতায় দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে হবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে হবে।
সেদিনের ঘটনার জের ধরে রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে আরও কয়েকটি জেলায় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবারের ঘটনার পর নৈরাজ্য আরও বাড়ল কী করে সেটা আমরা জানতে চাইব।
কোনো দলের কার্যালয়ে হামলা-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনা গণতান্ত্রিক চর্চার জন্যও বিপজ্জনক বার্তা বহন করে। কারা এ হামলার সঙ্গে জড়িত, তাদের উদ্দেশ্য কী, এবং কোন উসকানিতে এই সহিংসতা সংঘটিত হলোÑএসব প্রশ্নের উত্তর জনগণ জানতে চায়।
কেবল রাজনৈতিক বিবৃতি বা পাল্টা অভিযোগে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে না। আর সরকারের কাজ বিবৃতি দিয়ে নিন্দা জানানো নয়। প্রয়োজন নিরপেক্ষ তদন্ত। হামলার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া। আইনের শাসন নিশ্চিত না হলে এবং অপরাধীদের সঠিক বিচার না হলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।
রাষ্ট্রের উচিত স্পষ্ট বার্তা দেওয়া যে, যে কোনো কার্যালয়, কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে হামলা কিংবা অগ্নিসংযোগের মতো সহিংসতা সহ্য করা হবে না। প্রতিটি নাগরিক এবং তার সম্পত্তি রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব। অপরাধী যেই হোক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তবেই সমাজে আস্থা ফিরবে।
একটি সভ্য সমাজে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। একের পর এক মব সহিংসতা ও আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা সমাজে ভয়াবহ বার্তা দিচ্ছে। এতে কেবল ন্যায়বিচারের ধারণা দুর্বল হয় না, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাও মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়ে। সরকার মুখে জিরো টলারেন্স নীতির কথা বললেও, বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।
দেশের মানুষ শান্তি চায়। তারা নির্বাচন চায়। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনই পারে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর আশা করা গিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনমুখী হবে। বাস্তবতা ভিন্ন। রোডম্যাপ ঘোষণার পর নৈরাজ্য আরও বেড়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, এসব নৈরাজ্য কারা করছে? আর নৈরাজ্য হতে পারছে কী করে? নৈরাজ্যকারীরা কেন ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে? কোনো গোষ্ঠী আগামী নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে কোনো অপশক্তি যেন বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে সে বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে, কঠোর হতে হবেÑ সেই শক্তি যেই হোক না কেন।