অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে ধীরগতি: ঝুঁকিতে মানুষ ও গবাদিপশু

রংপুরে গবাদিপশু থেকে মানুষের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণের তিন মাস পার হয়ে গেছে। পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, জেলাটির ৮৩ শতাংশ গরু এখনো টিকার বাইরে রয়েছে। ছাগল ও ভেড়ার অ্যানথ্রাক্স টিকাদান শুরুই হয়নি। ফলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বদলে নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে।

অ্যানথ্রাক্স এমন এক ব্যাধি, যা পশু থেকে সরাসরি মানুষের দেহে ছড়ায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অসুস্থ গরু, ছাগল বা ভেড়ার রক্ত, মাংস বা চামড়ার সংস্পর্শে এলে মানুষ এতে আক্রান্ত হতে পারে। রংপুরের বিভিন্ন উপজেলায় অনেক মানুষ অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গত জুলাই ও সেপ্টেম্বরে পীরগাছায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) বলেছে, ত্বকের অ্যানথ্রাক্স চিকিৎসাযোগ্য হলেও সময়মতো চিকিৎসা না পেলে ২০ শতাংশ রোগীর মৃত্যু হয়।

প্রাণিসম্পদ বিভাগের দাবি, তারা প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার গরুকে টিকা দিচ্ছে। কিন্তু সংখ্যাটা জেলায় মোট গবাদিপশুর তুলনায় অতি নগণ্য। রংপুরে গরু রয়েছে প্রায় ১৬ লাখ, ছাগল ও ভেড়া ১১ লাখ।

খামারিদের অভিযোগ, সরকারি হিসাবের বাইরে অনেক গরু ও ছাগল মারা গেছে। একদিকে গবাদিপশু মারা যাচ্ছে, অন্যদিকে অসুস্থ পশু জবাই করে বিক্রি করা হচ্ছে।

অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে টিকা কার্যক্রম ও জনসচেতনতা দুইই সমান জরুরি। প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগকে মাঠপর্যায়ে আরো তৎপর হতে হবে। প্রতিটি ইউনিয়নে স্বেচ্ছাসেবী ও মাঠকর্মীর সংখ্যা বাড়াতে হবে। অসুস্থ গরু জবাইয়ের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও কসাইখানায় বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

সম্প্রতি