গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ‘গরু চোর’ সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা আবারও আমাদের সমাজের ভয়ংকর এক চিত্র সামনে এনেছে। বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের এই ঘটনায় নিহত আব্দুস সালামকে স্থানীয়রা সন্দেহবশত পিটিয়ে হত্যা করে। অথচ তার স্বজনরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তি ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন, তিনি বহুদিন ধরে মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন। প্রশ্ন হলো, কোনো প্রমাণ ছাড়াই একজন মানুষকে পিটিয়ে মারার অধিকার কে দিয়েছে?
কারও বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ উঠতেই পারে। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তি অপরাধ করেছেন কি না, তা নির্ধারণ করবে আদালত। আইনকে পাশ কাটিয়ে কাউকে অপরাধী সাব্যস্ত করা এবং নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী সাজা দেওয়ার অধিকার কারও নেই। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ‘চোর’, ‘ছিনতাইকারী’ কিংবা অন্য কোনো সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। এর মধ্যে অনেক সময় নিরপরাধ মানুষও প্রাণ হারাচ্ছেন। এতে সমাজে ভয়, অবিশ্বাস আর নৈরাজ্যের সংস্কৃতি গড়ে উঠছে।
এধরনের হত্যাকাণ্ড শুধু একজন মানুষের মৃত্যু ঘটায় না, এটি আমাদের মানবিকতাকেও হত্যা করে। একজন মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষ যদি চুরির মতো সন্দেহজনক কাজে জড়ানও, তবুও তাকে হত্যা করা চলে না। তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়াই ছিল সঠিক পথ। কিন্তু গ্রামের কিছু মানুষ নিজেরাই ‘বিচারক’ হয়ে তার জীবন শেষ করে দিলেন। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ধরনের ঘটনা ন্যায়বিচারের ধারণার পরিপন্থী, আইনের শাসনের ওপর সরাসরি আঘাত।
পুলিশ ঘটনার পর একজন নারীকে আটক করেছে। তদন্ত চলছে। তবে এখানেই থেমে গেলে হবে না। যারা এই হত্যায় সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে মানুষের মধ্যে আইন ও মানবাধিকারের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
সন্দেহ থেকে যদি বিচার শুরু হয়, তাহলে সমাজে আর কেউ নিরাপদ থাকবে না। তাই এখনই গণপিটুনির অপসংস্কৃতির অবসান ঘটাতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ০২ নভেম্বর ২০২৫
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ‘গরু চোর’ সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা আবারও আমাদের সমাজের ভয়ংকর এক চিত্র সামনে এনেছে। বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের এই ঘটনায় নিহত আব্দুস সালামকে স্থানীয়রা সন্দেহবশত পিটিয়ে হত্যা করে। অথচ তার স্বজনরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তি ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন, তিনি বহুদিন ধরে মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন। প্রশ্ন হলো, কোনো প্রমাণ ছাড়াই একজন মানুষকে পিটিয়ে মারার অধিকার কে দিয়েছে?
কারও বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ উঠতেই পারে। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তি অপরাধ করেছেন কি না, তা নির্ধারণ করবে আদালত। আইনকে পাশ কাটিয়ে কাউকে অপরাধী সাব্যস্ত করা এবং নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী সাজা দেওয়ার অধিকার কারও নেই। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ‘চোর’, ‘ছিনতাইকারী’ কিংবা অন্য কোনো সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। এর মধ্যে অনেক সময় নিরপরাধ মানুষও প্রাণ হারাচ্ছেন। এতে সমাজে ভয়, অবিশ্বাস আর নৈরাজ্যের সংস্কৃতি গড়ে উঠছে।
এধরনের হত্যাকাণ্ড শুধু একজন মানুষের মৃত্যু ঘটায় না, এটি আমাদের মানবিকতাকেও হত্যা করে। একজন মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষ যদি চুরির মতো সন্দেহজনক কাজে জড়ানও, তবুও তাকে হত্যা করা চলে না। তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়াই ছিল সঠিক পথ। কিন্তু গ্রামের কিছু মানুষ নিজেরাই ‘বিচারক’ হয়ে তার জীবন শেষ করে দিলেন। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ধরনের ঘটনা ন্যায়বিচারের ধারণার পরিপন্থী, আইনের শাসনের ওপর সরাসরি আঘাত।
পুলিশ ঘটনার পর একজন নারীকে আটক করেছে। তদন্ত চলছে। তবে এখানেই থেমে গেলে হবে না। যারা এই হত্যায় সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে মানুষের মধ্যে আইন ও মানবাধিকারের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
সন্দেহ থেকে যদি বিচার শুরু হয়, তাহলে সমাজে আর কেউ নিরাপদ থাকবে না। তাই এখনই গণপিটুনির অপসংস্কৃতির অবসান ঘটাতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।