সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা এসেছিল দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এক আশাব্যঞ্জক পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে। কিন্তু ঘোষণার পরপরই কিছু ধর্মভিত্তিক সংগঠনের আপত্তির মুখে অন্তর্বর্তী সরকার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। এই সিদ্ধান্ত শুধু শিক্ষাক্ষেত্র নয়, পুরো সমাজের জন্য একটি হতাশার বার্তা দিয়েছে।
প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা, সংগীত ও সংস্কৃতিচর্চা অপরিহার্য। সারা পৃথিবীতেই এটি স্বীকৃত বিষয়। শিশুদের সৃজনশীলতা, আত্মবিশ্বাস ও দলগত মনোভাব গড়ে ওঠে এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে। বাংলাদেশেও এ বিষয়ে শিক্ষাবিদরা বহুদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। অবশেষে সরকার যখন শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন সেটি ছিল সঠিক ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
কিন্তু কিছু সংগঠনের আপত্তির মুখে অন্তর্বর্তী সরকার পিছু হটল। অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যাখ্যা হচ্ছে, “অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দিলে কার্যকর সুফল আসবে না”। এই ব্যাখ্যা কতটা যুক্তিগ্রাহ্য সেই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, যে কোনো পরিবর্তনের শুরু হয় ছোট পরিসর থেকেই। পর্যায়ক্রমে সেটি বিস্তৃত করা যায়। শুরুটাই যদি না হয়, তবে উন্নতির পথই বন্ধ হয়ে যায়।
এই সিদ্ধান্তে সরকারের এক ধরনের নতিস্বীকারের চিত্র ফুটে উঠেছে। কিছু গোষ্ঠীর চাপের মুখে যদি শিক্ষা নীতি নির্ধারণ হয়, তাহলে তা ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত তৈরি করবে। এতে ধর্ম ও সংস্কৃতির মধ্যে এক সংঘাত তৈরি হচ্ছে, যা সমাজকে আরও বিভক্ত করবে।
শিক্ষা শুধু পরীক্ষার নম্বরের জন্য নয়, এটি মানুষ গড়ার প্রক্রিয়া। সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা সেই মানুষ গড়ারই অংশ। শিশুরা যদি ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতি, সৌন্দর্যবোধ ও খেলাধুলার চর্চা থেকে দূরে থাকে, তবে তারা মানসিকভাবে অসম্পূর্ণ হয়ে বড় হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা। ধর্ম, সংগীত, শারীরিক শিক্ষাÑসব বিষয়ই শিশুর সার্বিক বিকাশের জন্য প্রয়োজন। এই তিনকে মুখোমুখি না দাঁড় করিয়ে একসাথে এগিয়ে নেওয়াই হোক আমাদের শিক্ষানীতির মূল দিকনির্দেশনা।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা এসেছিল দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এক আশাব্যঞ্জক পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে। কিন্তু ঘোষণার পরপরই কিছু ধর্মভিত্তিক সংগঠনের আপত্তির মুখে অন্তর্বর্তী সরকার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। এই সিদ্ধান্ত শুধু শিক্ষাক্ষেত্র নয়, পুরো সমাজের জন্য একটি হতাশার বার্তা দিয়েছে।
প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা, সংগীত ও সংস্কৃতিচর্চা অপরিহার্য। সারা পৃথিবীতেই এটি স্বীকৃত বিষয়। শিশুদের সৃজনশীলতা, আত্মবিশ্বাস ও দলগত মনোভাব গড়ে ওঠে এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে। বাংলাদেশেও এ বিষয়ে শিক্ষাবিদরা বহুদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। অবশেষে সরকার যখন শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন সেটি ছিল সঠিক ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
কিন্তু কিছু সংগঠনের আপত্তির মুখে অন্তর্বর্তী সরকার পিছু হটল। অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যাখ্যা হচ্ছে, “অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দিলে কার্যকর সুফল আসবে না”। এই ব্যাখ্যা কতটা যুক্তিগ্রাহ্য সেই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, যে কোনো পরিবর্তনের শুরু হয় ছোট পরিসর থেকেই। পর্যায়ক্রমে সেটি বিস্তৃত করা যায়। শুরুটাই যদি না হয়, তবে উন্নতির পথই বন্ধ হয়ে যায়।
এই সিদ্ধান্তে সরকারের এক ধরনের নতিস্বীকারের চিত্র ফুটে উঠেছে। কিছু গোষ্ঠীর চাপের মুখে যদি শিক্ষা নীতি নির্ধারণ হয়, তাহলে তা ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত তৈরি করবে। এতে ধর্ম ও সংস্কৃতির মধ্যে এক সংঘাত তৈরি হচ্ছে, যা সমাজকে আরও বিভক্ত করবে।
শিক্ষা শুধু পরীক্ষার নম্বরের জন্য নয়, এটি মানুষ গড়ার প্রক্রিয়া। সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা সেই মানুষ গড়ারই অংশ। শিশুরা যদি ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতি, সৌন্দর্যবোধ ও খেলাধুলার চর্চা থেকে দূরে থাকে, তবে তারা মানসিকভাবে অসম্পূর্ণ হয়ে বড় হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা। ধর্ম, সংগীত, শারীরিক শিক্ষাÑসব বিষয়ই শিশুর সার্বিক বিকাশের জন্য প্রয়োজন। এই তিনকে মুখোমুখি না দাঁড় করিয়ে একসাথে এগিয়ে নেওয়াই হোক আমাদের শিক্ষানীতির মূল দিকনির্দেশনা।