জয়পুরহাটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় হিমাগারে স্তূপ হয়ে আছে আলু। উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় ও বাজারে চাহিদা কম থাকায় এ বছর আলুর দাম পড়েছে রেকর্ড পরিমাণে। অনেক জায়গায় আধা লিটারের পানির দামে এক কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা মারাত্মক লোকসানে পড়েছেন।
এক কেজি আলু উৎপাদনে খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১৩ টাকা, আর হিমাগারে সংরক্ষণসহ মোট খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৩ টাকা। কিন্তু বাজারে সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৭-৮ টাকায়। ফলে প্রতি কেজিতে ১৫ টাকারও বেশি ক্ষতি হচ্ছে।
এই অবস্থার প্রধান কারণ অতিরিক্ত উৎপাদন। গত বছরের তুলনায় এ বছর জয়পুরহাটে ৬৮০ হেক্টর জমিতে বেশি আলু চাষ হয়েছে। মোট উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টন। ফলে বাজারে সরবরাহ বেড়ে দাম পড়ে গেছে। হিমাগারেও দেখা দিয়েছে সংকট। অনেক হিমাগারে এখনো হাজার হাজার বস্তা আলু পড়ে আছে। হিমাগার কর্তৃপক্ষ বারবার আলু তুলতে বললেও কৃষক ও ব্যবসায়ীরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
অন্তর্বর্তী সরকার এ অবস্থায় হিমাগারের গেটে ২২ টাকা কেজি দরে আলু কেনার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে হতাশা বাড়ছে। অনেক কৃষক বলছেন, সরকার কিনবে ভেবে আলু বিক্রি করিনি। এখন সব আলু হিমাগারে পড়ে আছে, আর লোকসান বাড়ছে।
দেশজুড়ে একই চিত্র। মুন্সিগঞ্জ, বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী-সব জায়গায় আলুর দাম পড়েছে। গত বছর যেখানে আলুর দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, সেখানে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকায়। ফলে কৃষকেরা উৎপাদন খরচই তুলতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে অনেক কৃষক আলু চাষ কমিয়ে অন্য ফসলে ঝুঁকতে চাইছেন। এতে আগামী মৌসুমে আলুর উৎপাদন কমে যেতে পারে।
আলু দেশের প্রধান খাদ্যশস্যগুলোর একটি। কৃষকের ন্যায্য দাম নিশ্চিত না হলে এ খাত বড় সংকটে পড়বে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত আলু কেনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা এবং রপ্তানির পথ খুলে দেওয়া। তা না হলে কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়েরই ক্ষতি বাড়বে, আর দেশের কৃষি অর্থনীতিতে দেখা দেবে নতুন এক ধস।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
জয়পুরহাটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় হিমাগারে স্তূপ হয়ে আছে আলু। উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় ও বাজারে চাহিদা কম থাকায় এ বছর আলুর দাম পড়েছে রেকর্ড পরিমাণে। অনেক জায়গায় আধা লিটারের পানির দামে এক কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা মারাত্মক লোকসানে পড়েছেন।
এক কেজি আলু উৎপাদনে খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১৩ টাকা, আর হিমাগারে সংরক্ষণসহ মোট খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৩ টাকা। কিন্তু বাজারে সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৭-৮ টাকায়। ফলে প্রতি কেজিতে ১৫ টাকারও বেশি ক্ষতি হচ্ছে।
এই অবস্থার প্রধান কারণ অতিরিক্ত উৎপাদন। গত বছরের তুলনায় এ বছর জয়পুরহাটে ৬৮০ হেক্টর জমিতে বেশি আলু চাষ হয়েছে। মোট উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টন। ফলে বাজারে সরবরাহ বেড়ে দাম পড়ে গেছে। হিমাগারেও দেখা দিয়েছে সংকট। অনেক হিমাগারে এখনো হাজার হাজার বস্তা আলু পড়ে আছে। হিমাগার কর্তৃপক্ষ বারবার আলু তুলতে বললেও কৃষক ও ব্যবসায়ীরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
অন্তর্বর্তী সরকার এ অবস্থায় হিমাগারের গেটে ২২ টাকা কেজি দরে আলু কেনার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে হতাশা বাড়ছে। অনেক কৃষক বলছেন, সরকার কিনবে ভেবে আলু বিক্রি করিনি। এখন সব আলু হিমাগারে পড়ে আছে, আর লোকসান বাড়ছে।
দেশজুড়ে একই চিত্র। মুন্সিগঞ্জ, বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী-সব জায়গায় আলুর দাম পড়েছে। গত বছর যেখানে আলুর দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, সেখানে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকায়। ফলে কৃষকেরা উৎপাদন খরচই তুলতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে অনেক কৃষক আলু চাষ কমিয়ে অন্য ফসলে ঝুঁকতে চাইছেন। এতে আগামী মৌসুমে আলুর উৎপাদন কমে যেতে পারে।
আলু দেশের প্রধান খাদ্যশস্যগুলোর একটি। কৃষকের ন্যায্য দাম নিশ্চিত না হলে এ খাত বড় সংকটে পড়বে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত আলু কেনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা এবং রপ্তানির পথ খুলে দেওয়া। তা না হলে কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়েরই ক্ষতি বাড়বে, আর দেশের কৃষি অর্থনীতিতে দেখা দেবে নতুন এক ধস।