বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম খাউলিয়া গ্রামের মানুষের জীবন আজও লবণাক্ত পানির ওপর নির্ভরশীল। মাত্র ৫১টি পরিবারের চার শতাধিক মানুষ বছরের পর বছর ধরে লবণাক্ত খালের পানি ব্যবহার করছে। এই পানি দিয়েই তারা রান্না, গোসল ও অন্যান্য কাজ চালাচ্ছে। ফলে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়া তাদের নিত্য ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গ্রামটিতে সুপেয় পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। ইউপি সদস্যের বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার কিংবা পঞ্চায়েত বাড়ির মিষ্টি পুকুর থেকে চার কিলোমিটার দূরে হাঁটতে হয় পানি আনার জন্য। বয়স্ক মানুষ, নারী ও শিশুরা এই কষ্ট নিয়মিতই পোহাচ্ছেন। অনেকে বাধ্য হয়ে খালের পানি ফুটিয়ে খাচ্ছেন, যা একেবারেই নিরাপদ নয়। এ নিয়ে সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
পানি সংকটের পাশাপাশি গ্রামের সাড়ে তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা তাদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে। বর্ষা এলেই রাস্তা কাদা-পানিতে ডুবে যায়। তখন স্কুলগামী শিশুরা যেমন কষ্ট পায়, তেমনি অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে নিতে হয় বাঁশে করে কাঁধে নিয়ে।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, প্রতিটি নির্বাচনে জনপ্রতিনিধিরা সুপেয় পানি ও পাকা রাস্তার প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু নির্বাচনের পর কেউ খোঁজ নেন না। এনজিও সংস্থা ডর্প কিছু ট্যাংক দিয়েছে, কিন্তু তা দিয়ে খুব অল্পসংখ্যক পরিবারের প্রয়োজন মেটানো যায়।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এলাকায় আর্সেনিক ও অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে চার হাজারেরও বেশি টিউবওয়েল অচল হয়ে গেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১১ হাজার পানির ট্যাংকি বিতরণ করা হলেও, তা দিয়ে মাত্র ১৫ শতাংশ পরিবার উপকৃত হয়েছে।
এই পরিস্থিতি দীর্ঘদিন চলতে পারে না। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। উপকূলীয় অঞ্চলের এই মানুষগুলো দেশের নাগরিক। তাদেরও বিশুদ্ধ পানি পাওয়ার অধিকার রয়েছে। সুপেয় পানির ব্যবস্থা না হলে, তাদের দুর্ভোগ শুধু বাড়তেই থাকবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম খাউলিয়া গ্রামের মানুষের জীবন আজও লবণাক্ত পানির ওপর নির্ভরশীল। মাত্র ৫১টি পরিবারের চার শতাধিক মানুষ বছরের পর বছর ধরে লবণাক্ত খালের পানি ব্যবহার করছে। এই পানি দিয়েই তারা রান্না, গোসল ও অন্যান্য কাজ চালাচ্ছে। ফলে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়া তাদের নিত্য ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গ্রামটিতে সুপেয় পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। ইউপি সদস্যের বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার কিংবা পঞ্চায়েত বাড়ির মিষ্টি পুকুর থেকে চার কিলোমিটার দূরে হাঁটতে হয় পানি আনার জন্য। বয়স্ক মানুষ, নারী ও শিশুরা এই কষ্ট নিয়মিতই পোহাচ্ছেন। অনেকে বাধ্য হয়ে খালের পানি ফুটিয়ে খাচ্ছেন, যা একেবারেই নিরাপদ নয়। এ নিয়ে সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
পানি সংকটের পাশাপাশি গ্রামের সাড়ে তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা তাদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে। বর্ষা এলেই রাস্তা কাদা-পানিতে ডুবে যায়। তখন স্কুলগামী শিশুরা যেমন কষ্ট পায়, তেমনি অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে নিতে হয় বাঁশে করে কাঁধে নিয়ে।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, প্রতিটি নির্বাচনে জনপ্রতিনিধিরা সুপেয় পানি ও পাকা রাস্তার প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু নির্বাচনের পর কেউ খোঁজ নেন না। এনজিও সংস্থা ডর্প কিছু ট্যাংক দিয়েছে, কিন্তু তা দিয়ে খুব অল্পসংখ্যক পরিবারের প্রয়োজন মেটানো যায়।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এলাকায় আর্সেনিক ও অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে চার হাজারেরও বেশি টিউবওয়েল অচল হয়ে গেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১১ হাজার পানির ট্যাংকি বিতরণ করা হলেও, তা দিয়ে মাত্র ১৫ শতাংশ পরিবার উপকৃত হয়েছে।
এই পরিস্থিতি দীর্ঘদিন চলতে পারে না। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। উপকূলীয় অঞ্চলের এই মানুষগুলো দেশের নাগরিক। তাদেরও বিশুদ্ধ পানি পাওয়ার অধিকার রয়েছে। সুপেয় পানির ব্যবস্থা না হলে, তাদের দুর্ভোগ শুধু বাড়তেই থাকবে।