গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পাঁচ বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৮ নভেম্বর রাতে এই ঘটনা ঘটে। পরদিন ৯ নভেম্বর গ্রামের মাতব্বররা সালিস বৈঠক ডাকেন। অভিযুক্ত যুবককে কয়েকটা চড়থাপ্পড় মারা হয়। তাকে শাসানো হয়, “আর এমন কাজ করবি না।”
এছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তির বাবাকে বলা হয়, দ্রুত ছেলের বিয়ে দিতে। না দিলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে। এটাকেই ‘সমাধান’ বলে ঘোষণা করেন মাতব্বররা। তারা ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারকে সতর্ক করেন, “এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। বিষয়টি মিটে গেছে।”
ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। মাতব্বরদের চাপে ও মেয়ের ভবিষ্যতের ভয়ে থানায় যাইনি। কিন্তু এটা কোনো বিচার হলো? ওই যুবক যদি শাস্তি না পায়, তাহলে আবার এমন করবে। আমি আমার মেয়ের জন্য ন্যায়বিচার চাই।”
সালিসে অংশ নেওয়া মাতব্বর রেজাউল করিম ও হানিফ মুন্সি প্রথমে ঘটনা অস্বীকার করেন। পরে স্বীকার করে বলেন, “ঘটনা নিজেদের মধ্যে ঘটেছে। আমরা শাসন করেছি। গ্রাম থেকেও তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু থানায় যেতে কেন বাধা দেওয়া হয়েছে-এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি তারা।
আমরা জানতে চাইব, ধর্ষণচেষ্টার মতো গুরুতর অপরাধের সালিস মাতব্বররা করতে পারেন কিনা। এটা আইনসম্মত কিনা। এ ধরনের ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে, তদন্তের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু গোপালগঞ্জের ঘটনায় সেটা হয়নি।
এটি কোনো বিচার নয়, বরং অপরাধকে এক ধরনের প্রশ্রয় দেওয়া। এমনটি হলে অপরাধীরা আরও উৎসাহিত হবে, এবং ভবিষ্যতে নির্যাতনের শিকার মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবে।
ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা কোনো সাধারণ অপরাধ নয়। এর প্রতিকার করতে হবে কঠোর আইনের মাধ্যমে, স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে নয়। পুলিশের দায়িত্ব হলো পরিবারের অভিযোগ পেলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি যেন আইনি সহায়তা পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পাঁচ বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৮ নভেম্বর রাতে এই ঘটনা ঘটে। পরদিন ৯ নভেম্বর গ্রামের মাতব্বররা সালিস বৈঠক ডাকেন। অভিযুক্ত যুবককে কয়েকটা চড়থাপ্পড় মারা হয়। তাকে শাসানো হয়, “আর এমন কাজ করবি না।”
এছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তির বাবাকে বলা হয়, দ্রুত ছেলের বিয়ে দিতে। না দিলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে। এটাকেই ‘সমাধান’ বলে ঘোষণা করেন মাতব্বররা। তারা ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারকে সতর্ক করেন, “এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। বিষয়টি মিটে গেছে।”
ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। মাতব্বরদের চাপে ও মেয়ের ভবিষ্যতের ভয়ে থানায় যাইনি। কিন্তু এটা কোনো বিচার হলো? ওই যুবক যদি শাস্তি না পায়, তাহলে আবার এমন করবে। আমি আমার মেয়ের জন্য ন্যায়বিচার চাই।”
সালিসে অংশ নেওয়া মাতব্বর রেজাউল করিম ও হানিফ মুন্সি প্রথমে ঘটনা অস্বীকার করেন। পরে স্বীকার করে বলেন, “ঘটনা নিজেদের মধ্যে ঘটেছে। আমরা শাসন করেছি। গ্রাম থেকেও তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু থানায় যেতে কেন বাধা দেওয়া হয়েছে-এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি তারা।
আমরা জানতে চাইব, ধর্ষণচেষ্টার মতো গুরুতর অপরাধের সালিস মাতব্বররা করতে পারেন কিনা। এটা আইনসম্মত কিনা। এ ধরনের ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে, তদন্তের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু গোপালগঞ্জের ঘটনায় সেটা হয়নি।
এটি কোনো বিচার নয়, বরং অপরাধকে এক ধরনের প্রশ্রয় দেওয়া। এমনটি হলে অপরাধীরা আরও উৎসাহিত হবে, এবং ভবিষ্যতে নির্যাতনের শিকার মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবে।
ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা কোনো সাধারণ অপরাধ নয়। এর প্রতিকার করতে হবে কঠোর আইনের মাধ্যমে, স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে নয়। পুলিশের দায়িত্ব হলো পরিবারের অভিযোগ পেলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি যেন আইনি সহায়তা পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।