alt

মতামত » সম্পাদকীয়

শিশু ধর্ষণচেষ্টা: সালিসের নামে প্রহসন কাম্য নয়

: বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পাঁচ বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৮ নভেম্বর রাতে এই ঘটনা ঘটে। পরদিন ৯ নভেম্বর গ্রামের মাতব্বররা সালিস বৈঠক ডাকেন। অভিযুক্ত যুবককে কয়েকটা চড়থাপ্পড় মারা হয়। তাকে শাসানো হয়, “আর এমন কাজ করবি না।”

এছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তির বাবাকে বলা হয়, দ্রুত ছেলের বিয়ে দিতে। না দিলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে। এটাকেই ‘সমাধান’ বলে ঘোষণা করেন মাতব্বররা। তারা ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারকে সতর্ক করেন, “এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। বিষয়টি মিটে গেছে।”

ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। মাতব্বরদের চাপে ও মেয়ের ভবিষ্যতের ভয়ে থানায় যাইনি। কিন্তু এটা কোনো বিচার হলো? ওই যুবক যদি শাস্তি না পায়, তাহলে আবার এমন করবে। আমি আমার মেয়ের জন্য ন্যায়বিচার চাই।”

সালিসে অংশ নেওয়া মাতব্বর রেজাউল করিম ও হানিফ মুন্সি প্রথমে ঘটনা অস্বীকার করেন। পরে স্বীকার করে বলেন, “ঘটনা নিজেদের মধ্যে ঘটেছে। আমরা শাসন করেছি। গ্রাম থেকেও তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু থানায় যেতে কেন বাধা দেওয়া হয়েছে-এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি তারা।

আমরা জানতে চাইব, ধর্ষণচেষ্টার মতো গুরুতর অপরাধের সালিস মাতব্বররা করতে পারেন কিনা। এটা আইনসম্মত কিনা। এ ধরনের ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে, তদন্তের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু গোপালগঞ্জের ঘটনায় সেটা হয়নি।

এটি কোনো বিচার নয়, বরং অপরাধকে এক ধরনের প্রশ্রয় দেওয়া। এমনটি হলে অপরাধীরা আরও উৎসাহিত হবে, এবং ভবিষ্যতে নির্যাতনের শিকার মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবে।

ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা কোনো সাধারণ অপরাধ নয়। এর প্রতিকার করতে হবে কঠোর আইনের মাধ্যমে, স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে নয়। পুলিশের দায়িত্ব হলো পরিবারের অভিযোগ পেলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি যেন আইনি সহায়তা পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

বিশুদ্ধ পানির প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

সুপেয় পানির জন্য মোরেলগঞ্জের মানুষের অপেক্ষার অবসান হবে কবে

কেন একজন নিরপরাধ মানুষকে কিসের আগুনে পুড়ে মরতে হলো

জেলেদের মাঝে বকনা বাছুর বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ সুরাহা করুন

রাজধানীতে প্রকাশ্যে হত্যা: আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ

নলবিলা খাল খনন করুন

অগ্নি-নিরাপত্তায় উদাসীনতা কাম্য নয়

কারেন্ট পোকা দমনে কৃষককে সহায়তা দিন

আলুর বাজারে নীরব বিপর্যয়

বিদ্যালয়ের মাঠ দখলমুক্ত করুন

টিলায় পাথর লুট : কার্যকর ব্যবস্থা নিন

ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবন সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

ডেঙ্গু মোকাবিলায় দায়িত্বহীনতা আর নয়

সার সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন

প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা যেন অবহেলার শিকার না হয়

প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল : একটি ভুল বার্তা

ঘিওর ভেটেরিনারি হাসপাতালের সংকট দূর করুন

ভূমি অফিসে সেবাপ্রার্থীদের দুর্ভোগ

একটি পাকা সেতুর জন্য অপেক্ষা

নদী থেকে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ করুন

ইছামতী নদীকে রক্ষা করুন

সন্দেহবশত পিটিয়ে হত্যা: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জয়দেবপুর রেলক্রসিংয়ে দুর্ভোগের অবসান হোক

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কেন থামছে না?

সারের সংকট আর কত

সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করুন

কক্সবাজার সৈকত রক্ষা করুন

ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য কী?

সড়ক দখলমুক্ত করা জরুরি

কৃষকদের পাশে থাকুন

প্রাথমিক শিক্ষায় সংকট

অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে ধীরগতি: ঝুঁকিতে মানুষ ও গবাদিপশু

রাজধানীর যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে সিগন্যাল বাতি: বাস্তবায়ন জরুরি

দুস্থদের জন্য নিম্নমানের চাল: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

নিরাপদ সড়কের আকাঙ্ক্ষা ও বাস্তবতা

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

শিশু ধর্ষণচেষ্টা: সালিসের নামে প্রহসন কাম্য নয়

বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পাঁচ বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৮ নভেম্বর রাতে এই ঘটনা ঘটে। পরদিন ৯ নভেম্বর গ্রামের মাতব্বররা সালিস বৈঠক ডাকেন। অভিযুক্ত যুবককে কয়েকটা চড়থাপ্পড় মারা হয়। তাকে শাসানো হয়, “আর এমন কাজ করবি না।”

এছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তির বাবাকে বলা হয়, দ্রুত ছেলের বিয়ে দিতে। না দিলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে। এটাকেই ‘সমাধান’ বলে ঘোষণা করেন মাতব্বররা। তারা ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারকে সতর্ক করেন, “এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। বিষয়টি মিটে গেছে।”

ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। মাতব্বরদের চাপে ও মেয়ের ভবিষ্যতের ভয়ে থানায় যাইনি। কিন্তু এটা কোনো বিচার হলো? ওই যুবক যদি শাস্তি না পায়, তাহলে আবার এমন করবে। আমি আমার মেয়ের জন্য ন্যায়বিচার চাই।”

সালিসে অংশ নেওয়া মাতব্বর রেজাউল করিম ও হানিফ মুন্সি প্রথমে ঘটনা অস্বীকার করেন। পরে স্বীকার করে বলেন, “ঘটনা নিজেদের মধ্যে ঘটেছে। আমরা শাসন করেছি। গ্রাম থেকেও তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু থানায় যেতে কেন বাধা দেওয়া হয়েছে-এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি তারা।

আমরা জানতে চাইব, ধর্ষণচেষ্টার মতো গুরুতর অপরাধের সালিস মাতব্বররা করতে পারেন কিনা। এটা আইনসম্মত কিনা। এ ধরনের ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে, তদন্তের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু গোপালগঞ্জের ঘটনায় সেটা হয়নি।

এটি কোনো বিচার নয়, বরং অপরাধকে এক ধরনের প্রশ্রয় দেওয়া। এমনটি হলে অপরাধীরা আরও উৎসাহিত হবে, এবং ভবিষ্যতে নির্যাতনের শিকার মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবে।

ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা কোনো সাধারণ অপরাধ নয়। এর প্রতিকার করতে হবে কঠোর আইনের মাধ্যমে, স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে নয়। পুলিশের দায়িত্ব হলো পরিবারের অভিযোগ পেলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি যেন আইনি সহায়তা পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

back to top