দেশে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ। সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে, নির্বাচনী পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অভিযোগ।
চট্টগ্রামের রাউজানে গত পাঁচ দিনে তিনটি হিন্দু পরিবারের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার ভোরে দরজা বাইরে থেকে আটকে আগুন দেওয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে কেরোসিনে ভেজা কাপড় আর কিছু রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নাম-নম্বর লেখা কাগজ উদ্ধার হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা শুধু সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি ঘটায় না, সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয় ও অবিশ্বাস ছড়ায়।
বগুড়ায় এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে। খুলনায় এক যুবকের দুই হাতের কবজি কেটে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় ধারণা করা যায় যে, অপরাধীরা নির্বিঘেœ অস্ত্র ব্যবহার করছে। গত বছরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর লুট হওয়া হাজারের বেশি অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি। মাঠ প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তারা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সভায় স্পষ্টভাবে বলেছেন, অবৈধ অস্ত্র, গুজব ছড়ানো, সামাজিক মাধ্যমের অপব্যবহার, চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের জামিন-এসব বড় চ্যালেঞ্জ।
এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের প্রতি জনগণের প্রত্যাশা অনেক। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব দেখাতে হবে।
শুধু কথায় পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ অভিযান চালাতে হবে। সাম্প্রদায়িক উসকানি রোধে জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে। সংখ্যালঘু ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন, তা নিশ্চিত করা জরুরি।
নির্বাচন শুধু একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, এটি গণতন্ত্রের উৎসব। কিন্তু ভয়ের পরিবেশে এ উৎসব ম্লান হয়ে যায়। প্রশাসন-পুলিশকে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে দেখাতে হবে যে, বাংলাদেশ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোকেও দায়িত্ব নিতে হবে। সংশ্লিষ্টদেরকে সংযম দেখাতে হবে। গুজব থেকে দূরে থাকতে হবে।
অর্থ-বাণিজ্য: নির্বাচনের প্রার্থীদের জন্য শনিবার সব ব্যাংক খোলা থাকবে