শুভ বড়দিন

বছর ঘুরে আবার এসেছে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মহাউৎসব, শুভ বড়দিন। খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশু এই দিনে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের বেথলেহেম নগরীর এক গোয়ালঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। প্রতিবছর খ্রিস্টান সম্প্রদায় তার জন্মোৎসব পালন করে। বড়দিন কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি মানুষের মধ্যে ভালোবাসা, সহমর্মিতা ও মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করার দিন।

ইতিহাসের এক ক্রান্তিকালে যীশু খ্রিস্ট অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের পক্ষাবলম্বন করেছেন। তিনি শুধু ধর্মীয় পথপ্রদর্শক ছিলেন না, তিনি মানবতার প্রকৃত দৃষ্টান্ত। ভালোবাসা, উদারতা, সেবা এবং ভ্রাতৃত্বের অনন্য নজির রেখেছেন।

হিংসা, বিদ্বেষ এবং পঙ্কিলতার পথ থেকে মানুষকে রক্ষার কাজে নিজেকে উৎসর্গ করতে গিয়ে তিনি তৎকালীন শাসকগোষ্ঠীর কোপানলে পড়েন। এ কারণে মাত্র তেত্রিশ বছর বয়সে তাকে ক্রুশবিদ্ধ হয়ে জীবন দিতে হয়েছিল। অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হলেও তিনি অত্যাচারী-নিপীড়কদের ক্ষমা করেছেন। তার আত্মবলিদানের মাধ্যমে অন্যায় ও অত্যাচার থেকে মানুষকে মুক্ত করার শিক্ষা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।

যিশু খ্রিস্ট ক্ষমা ও ভালোবাসার যে শাশ্বত আদর্শ রেখে গেছেন তা স্থান-কাল নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য প্রযোজ্য। এই আদর্শ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, মানুষ শুধুমাত্র ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য নয়, বরং সমাজ ও মানবজাতির কল্যাণের জন্য দায়িত্বশীল। বড়দিনের উজ্জ্বল আলো, কোরাস ও উৎসবের আয়োজন এই বার্তাকে আরও জীবন্ত করে তোলে।

ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে আমরা যদি সকল সম্প্রদায় একত্রিত হই, তাহলে সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা পেতে পারে। ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি নির্বিশেষে সব মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গড়ে তুলতে পারে এমন একটি সমাজ যেখানে শোষণ, হিংসা এবং বিদ্বেষের স্থান থাকবে না।

মহামানব যিশুর জন্মদিনে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের আমরা জানাই শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন।

শুভ বড়দিন।

সম্প্রতি