শীতে বিপর্যস্ত জনপদ

দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের সাত জেলায় মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যশোর, চুয়াডাঙ্গা, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ এবং নীলফামারীতে রাতের তাপমাত্রা নেমে ৯–১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে পৌঁছেছে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, শীত এই প্রথম পুরোপুরি আঘাত হানছে, যদিও তীব্র শৈত্যপ্রবাহ এখনও শুরু হয়নি। কুয়াশা ও ঠান্ডা এক সঙ্গে থাকা আর সূর্যের আলো সীমিত থাকার কারণে দৈনন্দিন জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।

উত্তরের লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের মতো জেলাগুলোতে সাধারণ মানুষ শীতের তীব্রতায় কাবু হয়ে পড়েছে। নদী তীরবর্তী চরাঞ্চল ও প্রান্তিক গ্রামে বসবাসকারীরা রাতে আগুন জ্বালিয়ে, খড়কুটো জড়ো করে বা একখানা কম্বল ভাগাভাগি করে জীবন চালাচ্ছেন। কৃষকরা জমির কাজ ঠিকমতো করতে পারছেন না, দিনমজুররা ঠান্ডার মধ্যে বাইরে গিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেও অর্ধেকে ফিরছেন। রিকশাচালক ও পরিবহন শ্রমিকরা কুয়াশার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন।

শীতের এই কঠিন মুহূর্তে শুধুমাত্র মানুষই নয়, নদী ও সড়কপথে চলাচলও বিঘ্নিত হচ্ছে। চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার কারণে যাত্রীবাহী দুটি লঞ্চের সংঘর্ষে চারজন মারা গেছেন। কুয়াশা ও শীত-দুইই একসঙ্গে জনজীবনকে স্থবির করেছে।

প্রশাসন, স্থানীয় সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের এখনই সহায়তার হাত বাড়ানো দরকার। শীত নিবারণে চরম অসহায় দুঃস্থ মানুষের জন্য পর্যাপ্ত কম্বল, শীতবস্ত্র ও অগ্নিসামগ্রী পৌঁছানো জরুরি। ঘন কুয়াশায় সড়ক ও নৌপথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট চালকদের সচেতন করতে হবে।

শীত এসেছে প্রকৃতির নিয়মে। আবহাওয়া বৈরি হলেও মানুষের জীবন চলার পথে থেমে থাকা প্রায়ই সম্ভব হয় না। জরুরি সহায়তা ও সচেতন পদক্ষেপ ছাড়া এই শীতে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দুর্দশা দূর করা যাবে না। সরকার, সমাজ এবং জনসাধারণ সমন্বিতভাবে কাজ করবে এটা আমাদের প্রত্যাশা।

সম্প্রতি