হবিগঞ্জের মাধবপুর পৌরসভার একটি সরকারি জলমহালকে ব্যক্তি নামে লিজ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মৎস্য আইন ২০০৯ অনুযায়ী, জলমহাল ব্যবস্থাপনায় অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা প্রকৃত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির। অথচ সেই আইন উপেক্ষা করে ব্যক্তি নামে জলমহাল লিজ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে সংবাদ-এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
এটা শুধু একটি স্থানীয় অনিয়মের ঘটনা নয়, বরং দেশের আইনের প্রতি অবহেলার দৃষ্টান্ত। উদ্বেগজনক বিষয় হলো, জলমহালটি নিয়ে হাইকোর্টে রিট বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও লিজ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিতর্কিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে লিজ দেওয়ার অভিযোগ প্রশাসনের ভেতরের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
এই লিজের ফলে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যাদের জীবিকা নির্ভর করে জলমহালের ওপর, তাদের পরিবর্তে প্রভাবশালীদের অন্যায় সুবিধা দেয়া কাম্য নয়। এর ফলে সরকারের রাজস্ব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
লিজগ্রহীতার বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘন করে জলমহালের পানি নিষ্কাশনের অভিযোগ উঠেছে। এতে শুধু মাছ নয়, পুরো জলজ পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ক্ষতির মুখে পড়ছে। এমন কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে। আমরা বলতে চাই, বাস্তবতার সঙ্গে সেই দাবি কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ তা খতিয়ে দেখা জরুরি। এখানে কার ভুল, কার গাফিলতি বা কার স্বার্থ জড়িত সেটা জানতে হবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তই একমাত্র পথ। দুর্নীতি দমন কমিশনের সক্রিয় ভূমিকা এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের মাধ্যমে অবৈধ লিজ বাতিল করে জলমহালটি প্রকৃত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কাছে হস্তান্তর করতে হবে। আইন ও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোই প্রশাসনের প্রথম দায়িত্ব। এর ব্যত্যয় ঘটলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাষ্ট্র, সমাজ এবং সাধারণ মানুষ।