alt

মতামত » সম্পাদকীয়

লাইলাতুল কদর

: শনিবার, ০৮ মে ২০২১

মাহে রমজান বিশ্বের মুসলমানদের জন্য বিশেষ রহমত ও বরকতের মাস হিসেবে চিহ্নিত। এই রমজান মাসেরই একটি বিশেষ রাত লাইলাতুল কদর বা শবে কদর, অর্থাৎ মহিমান্বিত রজনী। সাধারণভাবে ধারণা করা হয় ২৬ রমজান দিবাগত রাত অর্থাৎ ২৭ রমজানের রাতটিই সেই পুণ্য রজনী, আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.) যার সুসংবাদ দিয়েছেন। মুমিন মুসলমানগণ তাই বিশেষভাবে এই রাতটি এবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করেন। এ রাতে যিনি এবাদত-বন্দেগিতে নিজকে নিয়োজিত রাখবেন তিনি হাজার মাসের এবাদত-বন্দেগির চেয়ে বেশি সওয়াব হাসিল করবেন, এই হলো শবে কদরের বড় ফজিলত।

লাইলাতুল কদরের তাৎপর্য ও মহিমা অবশ্য শুধু এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। অজ্ঞতার অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এসে জ্ঞান ও শিক্ষার চর্চার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ রাতে মানব সম্প্রদায়কে বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন। শেষ নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেছিলেন আইয়ামে জাহেলিয়াত বা অন্ধকার যুগে। আল্লাহ তার প্রিয় নবীর কাছে এই রাতে কোরআন শরিফ নাজিল করেছিলেন এই বলে : ‘পড়, তোমার প্রতিপালকের নামে- যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন লেখনি দ্বারা। তিনি মানুষকে শিখিয়েছেন, যা সে জানতো না।’ জাহেলিয়াত বা অন্ধকার থেকে আলোকের যুগে উত্তরণ, জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে আত্মোপলব্ধি, কুসংস্কার ও গোঁড়ামি থেকে মানুষের মুক্তি-এটাই ইসলামের শাশ্বত মর্মবাণী। ‘পড়’ কথাটির মধ্য দিয়ে এই রাতেই শুরু হয়েছিল জ্ঞান-বিজ্ঞান তথা এক নতুন সভ্যতার জয়যাত্রা। সেদিক থেকে দেখতে গেলে শুধু মুসলমানদের জন্য নয়, গোটা মানবজাতির জন্যই এই রাতটি ঐতিহাসিক তাৎপর্যমন্ডিত।

প্রশ্ন জাগে, আজকের বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় কি আল্লাহর নির্দেশিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের সেই পথ অনুসরণ করে চলছে? ইসলাম শুধু পারলৌকিক কল্যাণের ধর্ম নয়, ইহলোকের মঙ্গলকেও এতে সমান গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মানুষকে আল্লাহর কাছে প্রার্থণা করতে বলা হয়েছে দুনিয়ার মঙ্গল ও আখেরাতের মঙ্গল কামনা করে। কিন্তু দুনিয়ার মঙ্গলের পথটি তো নিহিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাধনা দ্বারা নিজের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতি ও পরিবেশকে জানা এবং প্রকৃতি ও পরিবেশকে বশ মানিয়ে সুখী ও সমৃদ্ধশালী জীবন গড়ে তোলার মধ্যে, আল্লাহ স্বয়ং এই মহিমান্বিত রাতে যার তাগিদ দিয়েছিলেন ‘পড়’ বলে। মহানবী (সা.) বলেছিলেন, জ্ঞান অর্জনের জন্য (প্রয়োজনবোধে) চীন দেশে যাও। আমরা কি সেই অমূল্য উপদেশ-নির্দেশ পালন করছি? নাকি আল্লাহ ও রাসুলের নির্দেশিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের পথ ত্যাগ করে অজ্ঞতা, কুসংস্কার ও গোমরাহির কাছে আত্মসমর্পণ করেছি? আজকের ধর্মীয় নেতারা কি আমাদের শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞানের পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগাচ্ছেন, না পবিত্র ধর্মকে সংকীর্ণতা ও রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ারে পরিণত করে তুলছেন? এ প্রশ্ন কি মুসলিম সম্প্রদায়ের মনে জাগবে না যে, ইসলামের আদিযুগে যারা সভ্যতা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নতির চরম শিখরে উঠেছিল সেই বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় আজ এমন পশ্চাৎপদ কেন? পবিত্র লাইলাতুল কদরে এবাদত-বন্দেগির সঙ্গে সঙ্গে এ প্রশ্নটিরও জবাব আমাদের অবশ্যই খুঁজতে হবে।

রংপুর সিটি করপোরেশনে অটোরিকশার লাইসেন্স প্রসঙ্গে

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড প্রশ্ন অনেক, উত্তর মিলবে কি

দেবীদ্বার কলেজ মাঠ: অবহেলায় হারাতে বসেছে ঐতিহ্য

সিইপিজেডের আগুন: অবহেলা আর দায়িত্বহীনতার নজির

বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা : ফল বিপর্যয় নাকি বাস্তবতা

কুমারভোগের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিন

বেহাল রাজবাড়ী বিসিক শিল্পনগরী: ব্যবস্থা নিন

শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি: যৌক্তিক পদক্ষেপ নিন

গার্মেন্টস কারখানায় অগ্নিকাণ্ড: প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ভিডব্লিউবি কর্মসূচিতে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করুন

টিআরএম প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ পেতে আর কত অপেক্ষা

জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ

লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা যাচ্ছে না কেন

টাইফয়েড টিকা: ভালো উদ্যোগ

হামাস-ইসরায়েল চুক্তি: শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সফল হোক

বকুলতলায় স্থগিত শরৎ উৎসব!

সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স টিকাদান কার্যক্রমে জনবল সংকট দূর করুন

বনভূমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

নন্দীগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো সংস্কার করুন

কমছেই আলুর দাম, লোকসান বাড়ছে কৃষকের

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি কি পূরণ হলো?

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

কন্যাশিশু নিপীড়নের উদ্বেগজনক চিত্র

ট্রাম্পের পরিকল্পনা একটি সম্ভাবনাময় সূচনা, কিন্তু পথ এখনও দীর্ঘ

বিজয়া দশমী: সম্প্রীতি রক্ষার অঙ্গীকার

প্লাস্টিক দূষণের শিকার সুন্দরবন: চাই জনসচেতনতা

খাগড়াছড়িতে সহিংসতা কি এড়ানো যেত না

এক প্রবীণের আর্তনাদ: সমাজ কি শুনবে?

সাঁওতালদের বিদ্যালয় ও খেলার মাঠ রক্ষা করুন

সারের কৃত্রিম সংকট ও কৃষকদের দুর্ভোগ

কুড়িগ্রামে সার ও বীজ সংকট দূর করুন

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল পাচার: প্রশাসনের তৎপরতা ও প্রত্যাশা

অ্যান্টিভেনম সংকট দূর করুন

বিলাসবহুল গাড়ি কেনার ‘অতিআগ্রহ’ নিয়ে প্রশ্ন, উত্তর কি মিলবে?

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

লাইলাতুল কদর

শনিবার, ০৮ মে ২০২১

মাহে রমজান বিশ্বের মুসলমানদের জন্য বিশেষ রহমত ও বরকতের মাস হিসেবে চিহ্নিত। এই রমজান মাসেরই একটি বিশেষ রাত লাইলাতুল কদর বা শবে কদর, অর্থাৎ মহিমান্বিত রজনী। সাধারণভাবে ধারণা করা হয় ২৬ রমজান দিবাগত রাত অর্থাৎ ২৭ রমজানের রাতটিই সেই পুণ্য রজনী, আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.) যার সুসংবাদ দিয়েছেন। মুমিন মুসলমানগণ তাই বিশেষভাবে এই রাতটি এবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করেন। এ রাতে যিনি এবাদত-বন্দেগিতে নিজকে নিয়োজিত রাখবেন তিনি হাজার মাসের এবাদত-বন্দেগির চেয়ে বেশি সওয়াব হাসিল করবেন, এই হলো শবে কদরের বড় ফজিলত।

লাইলাতুল কদরের তাৎপর্য ও মহিমা অবশ্য শুধু এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। অজ্ঞতার অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এসে জ্ঞান ও শিক্ষার চর্চার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ রাতে মানব সম্প্রদায়কে বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন। শেষ নবী হযরত মুহম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেছিলেন আইয়ামে জাহেলিয়াত বা অন্ধকার যুগে। আল্লাহ তার প্রিয় নবীর কাছে এই রাতে কোরআন শরিফ নাজিল করেছিলেন এই বলে : ‘পড়, তোমার প্রতিপালকের নামে- যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন লেখনি দ্বারা। তিনি মানুষকে শিখিয়েছেন, যা সে জানতো না।’ জাহেলিয়াত বা অন্ধকার থেকে আলোকের যুগে উত্তরণ, জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে আত্মোপলব্ধি, কুসংস্কার ও গোঁড়ামি থেকে মানুষের মুক্তি-এটাই ইসলামের শাশ্বত মর্মবাণী। ‘পড়’ কথাটির মধ্য দিয়ে এই রাতেই শুরু হয়েছিল জ্ঞান-বিজ্ঞান তথা এক নতুন সভ্যতার জয়যাত্রা। সেদিক থেকে দেখতে গেলে শুধু মুসলমানদের জন্য নয়, গোটা মানবজাতির জন্যই এই রাতটি ঐতিহাসিক তাৎপর্যমন্ডিত।

প্রশ্ন জাগে, আজকের বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় কি আল্লাহর নির্দেশিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের সেই পথ অনুসরণ করে চলছে? ইসলাম শুধু পারলৌকিক কল্যাণের ধর্ম নয়, ইহলোকের মঙ্গলকেও এতে সমান গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মানুষকে আল্লাহর কাছে প্রার্থণা করতে বলা হয়েছে দুনিয়ার মঙ্গল ও আখেরাতের মঙ্গল কামনা করে। কিন্তু দুনিয়ার মঙ্গলের পথটি তো নিহিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাধনা দ্বারা নিজের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতি ও পরিবেশকে জানা এবং প্রকৃতি ও পরিবেশকে বশ মানিয়ে সুখী ও সমৃদ্ধশালী জীবন গড়ে তোলার মধ্যে, আল্লাহ স্বয়ং এই মহিমান্বিত রাতে যার তাগিদ দিয়েছিলেন ‘পড়’ বলে। মহানবী (সা.) বলেছিলেন, জ্ঞান অর্জনের জন্য (প্রয়োজনবোধে) চীন দেশে যাও। আমরা কি সেই অমূল্য উপদেশ-নির্দেশ পালন করছি? নাকি আল্লাহ ও রাসুলের নির্দেশিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের পথ ত্যাগ করে অজ্ঞতা, কুসংস্কার ও গোমরাহির কাছে আত্মসমর্পণ করেছি? আজকের ধর্মীয় নেতারা কি আমাদের শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞানের পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগাচ্ছেন, না পবিত্র ধর্মকে সংকীর্ণতা ও রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ারে পরিণত করে তুলছেন? এ প্রশ্ন কি মুসলিম সম্প্রদায়ের মনে জাগবে না যে, ইসলামের আদিযুগে যারা সভ্যতা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নতির চরম শিখরে উঠেছিল সেই বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় আজ এমন পশ্চাৎপদ কেন? পবিত্র লাইলাতুল কদরে এবাদত-বন্দেগির সঙ্গে সঙ্গে এ প্রশ্নটিরও জবাব আমাদের অবশ্যই খুঁজতে হবে।

back to top