alt

opinion » editorial

অগ্রহণযোগ্য

: মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১

সুপারিশটি কোন উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীর কাছ থেকে আসেনি। এসেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির কাছ থেকে। কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বসে সভা করে সেই সুপারিশ তৈরি করা হয়নি, সভা হয়েছে জাতীয় সংসদ ভবনে। আর সেই সভায় কোন ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন না। সভায় সভাপতিত্ব করেছেন সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, যিনি বর্তমান সংসদের একজন আইনপ্রণেতা। কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকও আইনপ্রণেতা। সুপারিশটি করা হয়েছে কমিটির সদস্য ও জাতীয় সংসদের আরেক আইনপ্রণেতা রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার দেয়ার ক্ষেত্রে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পরিবর্তে বিকল্প ব্যক্তি নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। জীবনাবসানের পর মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানোর একটি ব্যবস্থায় এই পরিবর্তন আনার প্রয়োজন কেন অনুভূত হলো সেই প্রশ্ন উঠেছে। প্রস্তাবটির উত্থাপক বৈঠকে বলেছেন, সাধারণত নারীরা জানাজায় অংশ নেন না। এটি নিয়ে সমাজে অনেকে প্রশ্ন তোলেন। তাই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার দেয়ার ক্ষেত্রে যেখানে নারী ইউএনও আছেন, সেখানে বিকল্প কোন কর্মকর্তাকে রাখা যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

সংসদীয় কমিটির সভাপতি বলেছেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে সাধারণত জানাজার আগ মুহূর্তে এবং অনেক সময় কবরস্থানের পাশেই গার্ড অব অনার দেয়া হয়। ধর্মের বিধানমতে নারীরা জানাজায় অংশ নিতে পারেন না। সেজন্য নারী ইউএনও যখন গার্ড অব অনার দিচ্ছেন, তখন তা নিয়ে অনেক এলাকায় সামাজিক দিক থেকেও আপত্তি আসছে।’

গার্ড অব অনার আর জানাজা এক বিষয় কিনা সেটা আমরা জানতে চাইব। গার্ড অব অনার রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান আর জানাজা ধর্মীয় একটা রীতি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানায় রাষ্ট্র। নীতিমালা অনুযায়ী গার্ড অব অনারে নেতৃত্ব দেন ডিসি বা ইউএনও। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে লিঙ্গ, ধর্ম, বর্ণের ভেদাভেদ করার কোন সুযোগ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নেই। বাংলাদেশ কোন ধর্মীয় রাষ্ট্র নয়। বিশেষ কোন ধর্মীয় গোষ্ঠীর ধর্মগ্রন্থ দিয়ে দেশ পরিচালিত হয় না। দেশ পরিচালিত হয় সংবিধান আর আইন দিয়ে। বাংলাদেশের সংবিধান বা কোন আইনেই নারী-পুরুষের কাজের ক্ষেত্রে পার্থক্য বা বৈষম্য তৈরি করা হয়নি।

প্রশ্ন হচ্ছে এসব কথা কি সংশ্লিষ্ট আইন প্রণেতারা বিস্মৃত হয়েছেন? নইলে এ ধরনের প্রস্তাব সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ওঠে কীভাবে আর সেই প্রস্তাব কমিটি সুপারিশ আকারে মন্ত্রণালয়ে পেশ করে কীভাবে!

আমরা মনে করি, সংসদীয় কমিটির উক্ত সুপারিশ চরম বৈষম্যমূলক ও নারীর ক্ষমতায়নের ধারণাবিরোধী। এ ধরনের সুপারিশ অগ্রহণযোগ্য। এক দল আইনপ্রণেতা জাতীয় সংসদে বসে সংবিধান ও আইনপরিপন্থী এবং ধর্ম ও লিঙ্গ বৈষম্যমূলক একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন কী করে আর সেটাকে সুপারিশ আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠান কোন বিবেচনায় সেটা ভেবে আমরা বিস্মিত হই।

দেশজুড়ে হওয়া তীব্র সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেছেন, এ মুহূর্তে এমন প্রস্তাব তারা বিবেচনায় নিচ্ছেন না। আমরা বলতে চাই, এ মুহূর্তে তো বটেই কোন মুহূর্তেই এ ধরনের প্রস্তাব বিবেচনায় নেয়ার সুযোগ নেই। অবিলম্বে এই সুপারিশ প্রত্যাহার করতে হবে। চরম বৈষম্যমূলক প্রস্তাব যিনি দিয়েছেন এবং যে বা যারা সেটাকে সুপারিশের আকার দিয়েছেন তাদের জাতির সামনে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে, ক্ষমা চাইতে হবে।

ধর্ম আর সমাজের ধুয়া তুলে যারা লিঙ্গবৈষম্যকে উসকে দিচ্ছে তাদের বিষয়ে আমরা সরকারকে সতর্ক করতে চাই। সরকারের ভেতর কোন প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া না গেলে কেবল সরকারকেই নয়, দেশকেও চরম মূল্য দিতে হবে।

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

নীলফামারীতে শ্রমিকের প্রাণহানি: এই মৃত্যু কি এড়ানো যেত না

বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন: নারী সহপাঠীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, নারী প্রার্থীদের সাইবার হয়রানি

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কেন এই নৈরাজ্য

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

নারী ও শিশু নির্যাতনের উদ্বেগজনক চিত্র

ভবদহের জলাবদ্ধতা: শিক্ষা ও জীবনযাত্রার উপর অব্যাহত সংকট

সৈয়দপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুর্দশা

জমি রেজিস্ট্রিতে ঘুষের বোঝা: সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

মবের নামে মানুষ হত্যা : সমাজ কোথায় যাচ্ছে?

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ : কেন প্রশ্ন তোলা যাবে না

সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই ব্যবস্থা নিন

মামলা, গ্রেপ্তার, জামিন : প্রশ্নবিদ্ধ আইনের শাসন

শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ : ঐক্য ও উদ্যমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বন্যা ও ভাঙন : দ্রুত ব্যবস্থা নিন

অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করুন

ভূমি অফিসে ঘুষ বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জন্ম নিবন্ধনে জটিলতা দূর করা জরুরি

‘সাদা পাথর’ লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

তরুণদের জন্য আলাদা বুথ! সিদ্ধান্ত কার? কেন?

চিকিৎসক সংকটে জীবননগরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

গণপিটুনির সংস্কৃতি রুখতে হবে এখনই

সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবায় ভোগান্তির অবসান ঘটান

সড়কে মৃত্যু : দুর্ঘটনা নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

নির্বাচনের ঘোষণায় স্বস্তি, তবে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’: কিছু জিজ্ঞাসা

বয়স্ক ভাতা পেতে আর কত অপেক্ষা

ডিএনডি এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নিন

গণঅভ্যুত্থানের এক বছর: প্রত্যাশায় কী প্রাপ্তি

tab

opinion » editorial

অগ্রহণযোগ্য

মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১

সুপারিশটি কোন উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীর কাছ থেকে আসেনি। এসেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির কাছ থেকে। কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বসে সভা করে সেই সুপারিশ তৈরি করা হয়নি, সভা হয়েছে জাতীয় সংসদ ভবনে। আর সেই সভায় কোন ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন না। সভায় সভাপতিত্ব করেছেন সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, যিনি বর্তমান সংসদের একজন আইনপ্রণেতা। কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকও আইনপ্রণেতা। সুপারিশটি করা হয়েছে কমিটির সদস্য ও জাতীয় সংসদের আরেক আইনপ্রণেতা রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার দেয়ার ক্ষেত্রে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পরিবর্তে বিকল্প ব্যক্তি নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। জীবনাবসানের পর মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানোর একটি ব্যবস্থায় এই পরিবর্তন আনার প্রয়োজন কেন অনুভূত হলো সেই প্রশ্ন উঠেছে। প্রস্তাবটির উত্থাপক বৈঠকে বলেছেন, সাধারণত নারীরা জানাজায় অংশ নেন না। এটি নিয়ে সমাজে অনেকে প্রশ্ন তোলেন। তাই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার দেয়ার ক্ষেত্রে যেখানে নারী ইউএনও আছেন, সেখানে বিকল্প কোন কর্মকর্তাকে রাখা যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

সংসদীয় কমিটির সভাপতি বলেছেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে সাধারণত জানাজার আগ মুহূর্তে এবং অনেক সময় কবরস্থানের পাশেই গার্ড অব অনার দেয়া হয়। ধর্মের বিধানমতে নারীরা জানাজায় অংশ নিতে পারেন না। সেজন্য নারী ইউএনও যখন গার্ড অব অনার দিচ্ছেন, তখন তা নিয়ে অনেক এলাকায় সামাজিক দিক থেকেও আপত্তি আসছে।’

গার্ড অব অনার আর জানাজা এক বিষয় কিনা সেটা আমরা জানতে চাইব। গার্ড অব অনার রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান আর জানাজা ধর্মীয় একটা রীতি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানায় রাষ্ট্র। নীতিমালা অনুযায়ী গার্ড অব অনারে নেতৃত্ব দেন ডিসি বা ইউএনও। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে লিঙ্গ, ধর্ম, বর্ণের ভেদাভেদ করার কোন সুযোগ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নেই। বাংলাদেশ কোন ধর্মীয় রাষ্ট্র নয়। বিশেষ কোন ধর্মীয় গোষ্ঠীর ধর্মগ্রন্থ দিয়ে দেশ পরিচালিত হয় না। দেশ পরিচালিত হয় সংবিধান আর আইন দিয়ে। বাংলাদেশের সংবিধান বা কোন আইনেই নারী-পুরুষের কাজের ক্ষেত্রে পার্থক্য বা বৈষম্য তৈরি করা হয়নি।

প্রশ্ন হচ্ছে এসব কথা কি সংশ্লিষ্ট আইন প্রণেতারা বিস্মৃত হয়েছেন? নইলে এ ধরনের প্রস্তাব সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ওঠে কীভাবে আর সেই প্রস্তাব কমিটি সুপারিশ আকারে মন্ত্রণালয়ে পেশ করে কীভাবে!

আমরা মনে করি, সংসদীয় কমিটির উক্ত সুপারিশ চরম বৈষম্যমূলক ও নারীর ক্ষমতায়নের ধারণাবিরোধী। এ ধরনের সুপারিশ অগ্রহণযোগ্য। এক দল আইনপ্রণেতা জাতীয় সংসদে বসে সংবিধান ও আইনপরিপন্থী এবং ধর্ম ও লিঙ্গ বৈষম্যমূলক একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন কী করে আর সেটাকে সুপারিশ আকারে মন্ত্রণালয়ে পাঠান কোন বিবেচনায় সেটা ভেবে আমরা বিস্মিত হই।

দেশজুড়ে হওয়া তীব্র সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেছেন, এ মুহূর্তে এমন প্রস্তাব তারা বিবেচনায় নিচ্ছেন না। আমরা বলতে চাই, এ মুহূর্তে তো বটেই কোন মুহূর্তেই এ ধরনের প্রস্তাব বিবেচনায় নেয়ার সুযোগ নেই। অবিলম্বে এই সুপারিশ প্রত্যাহার করতে হবে। চরম বৈষম্যমূলক প্রস্তাব যিনি দিয়েছেন এবং যে বা যারা সেটাকে সুপারিশের আকার দিয়েছেন তাদের জাতির সামনে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে, ক্ষমা চাইতে হবে।

ধর্ম আর সমাজের ধুয়া তুলে যারা লিঙ্গবৈষম্যকে উসকে দিচ্ছে তাদের বিষয়ে আমরা সরকারকে সতর্ক করতে চাই। সরকারের ভেতর কোন প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া না গেলে কেবল সরকারকেই নয়, দেশকেও চরম মূল্য দিতে হবে।

back to top