alt

opinion » editorial

থামছে না মানব পাচার : গডফাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

: বুধবার, ১৬ জুন ২০২১

ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাতে যাওয়া ৫২৯ বাংলাদেশিকে গত এক মাসে উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিউনিশিয়া থেকে ৪৪৩ জন এবং লিবিয়া থেকে ৭৬ জনকে উদ্ধার করা হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ তথ্য থেকে দেশের মানব পাচারের ভয়াবহ চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। মানব পাচারের শিকার পাঁচ শতাধিক মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে এক মাসে। প্রশ্ন হচ্ছে, পাচার হয়েছেন উদ্ধার করা যায়নি এমন মানুষের সংখ্যা কত।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্যানুসারে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১২ জুন পর্যন্ত ভূমধ্যসাগরে ৮১৩ জন অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে। এ সংস্থার সহায়তায় গত মে মাসে দেশে ফিরেছেন ১৬০ জন বাংলাদেশি। তাছাড়া ২০১৫ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত ভূধ্যসাগর থেকে উদ্ধার হওয়া ২ হাজার ৯০০ বাংলাদেশি লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আইওএমের সহযোগিতায়।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মানব পাচারের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রুট হচ্ছে ভূমধ্যসাগর। এখানে যাওয়ার সময় অনেকেই সাগরে ডুবে প্রাণ হারান, কেউ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে নির্যাতনের শিকার হন, আবার কেউ পড়েন অপহরণকারীর খপ্পরে। এরপরও বিপজ্জনক এ পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশিদের ইউরোপ যাত্রা যেন থামছেই না।

ভূমধ্যসাগরের একটি রুট ব্যবহার করেই যে শুধু মানব পাচার হচ্ছে তা নয়। বাংলাদেশ পুলিশ ও জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছরই ভারত, পাকিস্তান, সিরিয়া, লেবানন, জর্ডান, সৌদি আরব, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানব পাচার করা হয়। যাদের অধিকাংশই হচ্ছে নারী ও শিশু। সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর একটি আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের সন্ধান পায় পুলিশ। ২০১৫ সালে মালয়েশিয়ার উত্তরে থাইল্যান্ডের সীমান্তঘেঁষা পাহাড়ি জঙ্গলে ২৮টি পরিত্যক্ত বন্দী শিবিরসহ ১৩৯টি গণকবরের সন্ধান মেলে। সাগরপথে পাচার হওয়া শত শত বাংলাদেশি নাগরিকদের পাশাপাশি মায়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের মৃতদেহও সেসব গণকবরে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

মানব পাচার আমাদের দেশের বড় সমস্যাগুলোর একটি। সরকারের এ ব্যাপারে যতটা নজর দেয়ার দরকার ছিল ততটা নেই। বিষয়টি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সরকার মানব পাচারবিষয়ক অপরাধের তদন্ত, মামলা পরিচালনা ও অপরাধীর দন্ড দেয়া ইত্যাদি বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে মানব পাচার বেড়েই চলেছে।

মানব পাচারের বড় কোন ঘটনা ঘটলে প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। শুরু হয় অভিযান। বিচ্ছিন্ন সেই অভিযান শুরু হতে সময় লাগে না, শেষ হতেও সময় লাগে না। লোক দেখানো অভিযানে কিছু চুনোপুঁটি ধরা পড়লেও রাঘববোয়ালরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই থাকে। আইন প্রয়োগের শিথিলতার কারণে মানব পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না। মানব পাচার বন্ধ করতে হলে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পাচারের নেপথ্যের গডফাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি।

উন্নত জীবন বা কর্মসংস্থানের খোঁজে দেশ থেকে প্রতি বছরই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের নানা দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। লোভনীয় চাকরি ও সুযোগ-সুবিধার প্রলোভন দিয়ে মানব পাচারকারীরা তাদের ফাঁদে ফেলছে। প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে সচতেনতা বাড়াতে হবে। তিউনিশিয়া ও লিবিয়ায় উদ্ধার হওয়া নাগরিকদের দ্রুত ও নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে।

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

নীলফামারীতে শ্রমিকের প্রাণহানি: এই মৃত্যু কি এড়ানো যেত না

বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন: নারী সহপাঠীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, নারী প্রার্থীদের সাইবার হয়রানি

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কেন এই নৈরাজ্য

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

নারী ও শিশু নির্যাতনের উদ্বেগজনক চিত্র

ভবদহের জলাবদ্ধতা: শিক্ষা ও জীবনযাত্রার উপর অব্যাহত সংকট

সৈয়দপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুর্দশা

জমি রেজিস্ট্রিতে ঘুষের বোঝা: সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

মবের নামে মানুষ হত্যা : সমাজ কোথায় যাচ্ছে?

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ : কেন প্রশ্ন তোলা যাবে না

সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই ব্যবস্থা নিন

মামলা, গ্রেপ্তার, জামিন : প্রশ্নবিদ্ধ আইনের শাসন

শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ : ঐক্য ও উদ্যমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বন্যা ও ভাঙন : দ্রুত ব্যবস্থা নিন

অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করুন

ভূমি অফিসে ঘুষ বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জন্ম নিবন্ধনে জটিলতা দূর করা জরুরি

‘সাদা পাথর’ লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

তরুণদের জন্য আলাদা বুথ! সিদ্ধান্ত কার? কেন?

চিকিৎসক সংকটে জীবননগরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

গণপিটুনির সংস্কৃতি রুখতে হবে এখনই

সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবায় ভোগান্তির অবসান ঘটান

সড়কে মৃত্যু : দুর্ঘটনা নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

নির্বাচনের ঘোষণায় স্বস্তি, তবে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’: কিছু জিজ্ঞাসা

বয়স্ক ভাতা পেতে আর কত অপেক্ষা

ডিএনডি এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নিন

গণঅভ্যুত্থানের এক বছর: প্রত্যাশায় কী প্রাপ্তি

tab

opinion » editorial

থামছে না মানব পাচার : গডফাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বুধবার, ১৬ জুন ২০২১

ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাতে যাওয়া ৫২৯ বাংলাদেশিকে গত এক মাসে উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিউনিশিয়া থেকে ৪৪৩ জন এবং লিবিয়া থেকে ৭৬ জনকে উদ্ধার করা হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ তথ্য থেকে দেশের মানব পাচারের ভয়াবহ চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। মানব পাচারের শিকার পাঁচ শতাধিক মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে এক মাসে। প্রশ্ন হচ্ছে, পাচার হয়েছেন উদ্ধার করা যায়নি এমন মানুষের সংখ্যা কত।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্যানুসারে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১২ জুন পর্যন্ত ভূমধ্যসাগরে ৮১৩ জন অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে। এ সংস্থার সহায়তায় গত মে মাসে দেশে ফিরেছেন ১৬০ জন বাংলাদেশি। তাছাড়া ২০১৫ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত ভূধ্যসাগর থেকে উদ্ধার হওয়া ২ হাজার ৯০০ বাংলাদেশি লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আইওএমের সহযোগিতায়।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মানব পাচারের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রুট হচ্ছে ভূমধ্যসাগর। এখানে যাওয়ার সময় অনেকেই সাগরে ডুবে প্রাণ হারান, কেউ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে নির্যাতনের শিকার হন, আবার কেউ পড়েন অপহরণকারীর খপ্পরে। এরপরও বিপজ্জনক এ পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশিদের ইউরোপ যাত্রা যেন থামছেই না।

ভূমধ্যসাগরের একটি রুট ব্যবহার করেই যে শুধু মানব পাচার হচ্ছে তা নয়। বাংলাদেশ পুলিশ ও জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছরই ভারত, পাকিস্তান, সিরিয়া, লেবানন, জর্ডান, সৌদি আরব, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানব পাচার করা হয়। যাদের অধিকাংশই হচ্ছে নারী ও শিশু। সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর একটি আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের সন্ধান পায় পুলিশ। ২০১৫ সালে মালয়েশিয়ার উত্তরে থাইল্যান্ডের সীমান্তঘেঁষা পাহাড়ি জঙ্গলে ২৮টি পরিত্যক্ত বন্দী শিবিরসহ ১৩৯টি গণকবরের সন্ধান মেলে। সাগরপথে পাচার হওয়া শত শত বাংলাদেশি নাগরিকদের পাশাপাশি মায়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের মৃতদেহও সেসব গণকবরে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

মানব পাচার আমাদের দেশের বড় সমস্যাগুলোর একটি। সরকারের এ ব্যাপারে যতটা নজর দেয়ার দরকার ছিল ততটা নেই। বিষয়টি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সরকার মানব পাচারবিষয়ক অপরাধের তদন্ত, মামলা পরিচালনা ও অপরাধীর দন্ড দেয়া ইত্যাদি বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে মানব পাচার বেড়েই চলেছে।

মানব পাচারের বড় কোন ঘটনা ঘটলে প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। শুরু হয় অভিযান। বিচ্ছিন্ন সেই অভিযান শুরু হতে সময় লাগে না, শেষ হতেও সময় লাগে না। লোক দেখানো অভিযানে কিছু চুনোপুঁটি ধরা পড়লেও রাঘববোয়ালরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই থাকে। আইন প্রয়োগের শিথিলতার কারণে মানব পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না। মানব পাচার বন্ধ করতে হলে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পাচারের নেপথ্যের গডফাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি।

উন্নত জীবন বা কর্মসংস্থানের খোঁজে দেশ থেকে প্রতি বছরই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের নানা দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। লোভনীয় চাকরি ও সুযোগ-সুবিধার প্রলোভন দিয়ে মানব পাচারকারীরা তাদের ফাঁদে ফেলছে। প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে সচতেনতা বাড়াতে হবে। তিউনিশিয়া ও লিবিয়ায় উদ্ধার হওয়া নাগরিকদের দ্রুত ও নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে।

back to top