alt

মতামত » সম্পাদকীয়

নদ-নদী দখলের অবসান চাই

: শুক্রবার, ২২ অক্টোবর ২০২১

দেশে দখলবাজি দূরারোগ্য এক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি, রাস্তা-ঘাট, ফুটপাত সব দখলদারের পেটে। দুর্বৃত্তরা দখল করতে করতে খাল-বিল-জলাশয় ছাড়িয়ে নদীতে পর্যন্ত নেমেছে। একদিকে দখল বহুমাত্রিক রূপলাভ করেছে, অন্যদিকে এর বিস্তৃতি বেড়েছে। নদী দখল শুধু রাজধানী বা বড় বড় নগরীতেই থেমে নেই। ছোট-বড় অন্যান্য শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জেও চলছে দখল।

৬০ হাজারেরও বেশি দখলদার দেশের ৭০০ নদী দখল করে আছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। নদীর দখলদারদের একদিকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে অন্যদিকে নতুন করে আবার দখল চলছে। ছোট দোকান থেকে শুরু করে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান- সবই আছে দখলদারের তালিকায়।

ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার রাংসা নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করে ঘের দিয়ে মাছ চাষ করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। নদীর বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দেওয়ার কারণে ফসলি জমি হয়ে পড়ছে অনাবাদি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বালু কাটার অবৈধ ড্রেজার। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

নদী দখল করে মাছের ঘের তৈরি করা, নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু কাটা- এসব ঘটনা দেশের অন্যান্য জায়গায়ও ঘটছে। প্রশাসনের নাকের ডগার ওপর দিয়েই এগুলো চলতে থাকে কীভাবে- সেটা একটা প্রশ্ন। প্রশাসন আছে কেন, তাদের কাজ কী?

স্থানীয়রা বলছেন, দুই দশক আগেও রাংসা নদীতে নৌকা, ট্রলারসহ অন্যান্য নৌযান চলত। এখন নদীজুড়ে শুধুই কচুরিপানা। সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, চলতি আমন মৌসুমে সেখানে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে কৃষক চাষাবাদ করতে পারেনি। নদীর প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উপজেলায় জলাবদ্ধতা সংকটও প্রকট। পানিতে তলিয়ে কৃষকরা ফসলহানি হচ্ছে, জনজীবনের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। আবার শুকনা মৌসুমে পানির অভাবে ফসল ফলাতে পারছেন না কৃষক। নদীটির বর্তমান অবস্থা জীববৈচিত্র্যের ওপর চরম নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

দেশজুড়ে নদ-নদী দখলের অবসান ঘটাতে হবে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে দেশের সব নদ-নদী-খালের আইনগত অভিভাবক ঘোষণা করেছেন আদালত। সংস্থাটি বিভিন্ন মামলার রায়, আদালতের নির্দেশনা এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের পরামর্শ সভার মতামত নিয়ে নদী রক্ষায় ১২২ দফার সুপারিশ তৈরি করেছে। ২০১৮ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে সুপারিশগুলো প্রকাশ করা হয়। সুপারিশের শুরুতেই নদীর সীমানা নির্ধারণ, অবৈধ দখলদার চিহ্নিতকরণ ও উচ্ছেদ, নদী রক্ষায় আইনের প্রয়োগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত, পুলিশ কী ভূমিকা রাখবে ইত্যাদি সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে। তাছাড়া দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও বন্ধ, নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি, গবেষণা, প্রশাসনিক ও ব্যবস্থাপনাসহ আন্তঃসীমান্ত নদী সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় কয়েক দফা সুপারিশ করেছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।

দেশের সর্বোচ্চ আদালত বলছেন- নদ-নদীর মালিকানা ও স্বত্ব জনগণের। এ মালিকানা ও স্বত্ব রক্ষা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের এবং রাষ্ট্রের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার। তাই নদী রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর আইনের প্রয়োগ করে যেতে হবে। আমরা নদ-নদীর মুক্ত পানিপ্রবাহ দেখতে চাই। দখল ও দূষণমুক্ত নদ-নদী চাই।

কুমারভোগের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিন

বেহাল রাজবাড়ী বিসিক শিল্পনগরী: ব্যবস্থা নিন

শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি: যৌক্তিক পদক্ষেপ নিন

গার্মেন্টস কারখানায় অগ্নিকাণ্ড: প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ভিডব্লিউবি কর্মসূচিতে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করুন

টিআরএম প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ পেতে আর কত অপেক্ষা

জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ

লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা যাচ্ছে না কেন

টাইফয়েড টিকা: ভালো উদ্যোগ

হামাস-ইসরায়েল চুক্তি: শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সফল হোক

বকুলতলায় স্থগিত শরৎ উৎসব!

সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স টিকাদান কার্যক্রমে জনবল সংকট দূর করুন

বনভূমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

নন্দীগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো সংস্কার করুন

কমছেই আলুর দাম, লোকসান বাড়ছে কৃষকের

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি কি পূরণ হলো?

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

কন্যাশিশু নিপীড়নের উদ্বেগজনক চিত্র

ট্রাম্পের পরিকল্পনা একটি সম্ভাবনাময় সূচনা, কিন্তু পথ এখনও দীর্ঘ

বিজয়া দশমী: সম্প্রীতি রক্ষার অঙ্গীকার

প্লাস্টিক দূষণের শিকার সুন্দরবন: চাই জনসচেতনতা

খাগড়াছড়িতে সহিংসতা কি এড়ানো যেত না

এক প্রবীণের আর্তনাদ: সমাজ কি শুনবে?

সাঁওতালদের বিদ্যালয় ও খেলার মাঠ রক্ষা করুন

সারের কৃত্রিম সংকট ও কৃষকদের দুর্ভোগ

কুড়িগ্রামে সার ও বীজ সংকট দূর করুন

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল পাচার: প্রশাসনের তৎপরতা ও প্রত্যাশা

অ্যান্টিভেনম সংকট দূর করুন

বিলাসবহুল গাড়ি কেনার ‘অতিআগ্রহ’ নিয়ে প্রশ্ন, উত্তর কি মিলবে?

তাপমাত্রা বাড়ার মূল্য

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

নদ-নদী দখলের অবসান চাই

শুক্রবার, ২২ অক্টোবর ২০২১

দেশে দখলবাজি দূরারোগ্য এক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি, রাস্তা-ঘাট, ফুটপাত সব দখলদারের পেটে। দুর্বৃত্তরা দখল করতে করতে খাল-বিল-জলাশয় ছাড়িয়ে নদীতে পর্যন্ত নেমেছে। একদিকে দখল বহুমাত্রিক রূপলাভ করেছে, অন্যদিকে এর বিস্তৃতি বেড়েছে। নদী দখল শুধু রাজধানী বা বড় বড় নগরীতেই থেমে নেই। ছোট-বড় অন্যান্য শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জেও চলছে দখল।

৬০ হাজারেরও বেশি দখলদার দেশের ৭০০ নদী দখল করে আছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। নদীর দখলদারদের একদিকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে অন্যদিকে নতুন করে আবার দখল চলছে। ছোট দোকান থেকে শুরু করে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান- সবই আছে দখলদারের তালিকায়।

ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার রাংসা নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করে ঘের দিয়ে মাছ চাষ করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। নদীর বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দেওয়ার কারণে ফসলি জমি হয়ে পড়ছে অনাবাদি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বালু কাটার অবৈধ ড্রেজার। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

নদী দখল করে মাছের ঘের তৈরি করা, নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু কাটা- এসব ঘটনা দেশের অন্যান্য জায়গায়ও ঘটছে। প্রশাসনের নাকের ডগার ওপর দিয়েই এগুলো চলতে থাকে কীভাবে- সেটা একটা প্রশ্ন। প্রশাসন আছে কেন, তাদের কাজ কী?

স্থানীয়রা বলছেন, দুই দশক আগেও রাংসা নদীতে নৌকা, ট্রলারসহ অন্যান্য নৌযান চলত। এখন নদীজুড়ে শুধুই কচুরিপানা। সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, চলতি আমন মৌসুমে সেখানে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে কৃষক চাষাবাদ করতে পারেনি। নদীর প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উপজেলায় জলাবদ্ধতা সংকটও প্রকট। পানিতে তলিয়ে কৃষকরা ফসলহানি হচ্ছে, জনজীবনের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। আবার শুকনা মৌসুমে পানির অভাবে ফসল ফলাতে পারছেন না কৃষক। নদীটির বর্তমান অবস্থা জীববৈচিত্র্যের ওপর চরম নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

দেশজুড়ে নদ-নদী দখলের অবসান ঘটাতে হবে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে দেশের সব নদ-নদী-খালের আইনগত অভিভাবক ঘোষণা করেছেন আদালত। সংস্থাটি বিভিন্ন মামলার রায়, আদালতের নির্দেশনা এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের পরামর্শ সভার মতামত নিয়ে নদী রক্ষায় ১২২ দফার সুপারিশ তৈরি করেছে। ২০১৮ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে সুপারিশগুলো প্রকাশ করা হয়। সুপারিশের শুরুতেই নদীর সীমানা নির্ধারণ, অবৈধ দখলদার চিহ্নিতকরণ ও উচ্ছেদ, নদী রক্ষায় আইনের প্রয়োগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত, পুলিশ কী ভূমিকা রাখবে ইত্যাদি সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে। তাছাড়া দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও বন্ধ, নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি, গবেষণা, প্রশাসনিক ও ব্যবস্থাপনাসহ আন্তঃসীমান্ত নদী সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় কয়েক দফা সুপারিশ করেছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।

দেশের সর্বোচ্চ আদালত বলছেন- নদ-নদীর মালিকানা ও স্বত্ব জনগণের। এ মালিকানা ও স্বত্ব রক্ষা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের এবং রাষ্ট্রের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার। তাই নদী রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর আইনের প্রয়োগ করে যেতে হবে। আমরা নদ-নদীর মুক্ত পানিপ্রবাহ দেখতে চাই। দখল ও দূষণমুক্ত নদ-নদী চাই।

back to top