alt

opinion » editorial

এই কি নিরাময় কেন্দ্র, না টর্চার সেল?

: শুক্রবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২২

গাজীপুরে অনুমোদন ছাড়াই গড়ে তোলা হয়েছে ‘ভাওয়াল মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্র’। মাদকাসক্তির চিকিৎসা দেয়ার কথা বলা হলেও প্রতিষ্ঠানটির মালিক-কর্মচারীরাই উল্টো মাদকাসক্ত। সেবার আড়ালে চলতো মাদক ব্যবসাও। সেখানে ছিল না চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় লোকবল ও অবকাঠামো। চিকিৎসার নামে করা হতো শারীরিক-মানসিক নির্যাতন। প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান চালিয়ে মালিকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

দেশে আগেও এমন অবৈধ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধেও একই রকমের অভিযোগ ছিল। ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর রাজধানীর আদাবরে মাইন্ডএইড অ্যান্ড সাইকিয়াট্রি ডি-অ্যাডিকশন হাসপাতালে মারধরের পর একজন সহকারী পুলিশ সুপারের মৃত্যু হয়। এরপর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে ঢাকার ১১টি অবৈধ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়।

একসময় যারা মাদকাসক্ত ছিল, তারাই এখন বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের মালিক বলে জানা যায়। চিকিৎসার নিয়ম-কানুন মানা হয় না, চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। এমন অবস্থায় দেশের মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রগুলোর কী অবস্থা-সেটা সহজেই অনুমেয়। এসব দেখে প্রশ্ন জাগে যে, এগুলোকি নিরাময় কেন্দ্র নাকি টর্চার সেল। মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোরই এখন চিকিৎসা দরকার।

দেশে মাদকাসক্তির চিকিৎসা ও নিরাময়ের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে মাত্র চারটি। সেগুলোর অবস্থাও শোচনীয়। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, চিকিৎসকসহ অন্যান্য লোকবলের ঘাটতি প্রকট। এর বাইরে বেসরকারি উদ্যোগে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে গড়ে উঠেছে অজস্র নিরাময় কেন্দ্র। জানা যায়, ঢাকাসহ দেশের ৪৪টি জেলায় ৩৫১টি বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্র আছে। এগুলোর মধ্যে শুধু ঢাকাতেই আছে ১০৫টি। তবে সংশ্লিষ্টদের ধারণা অবৈধ নিরাময় কেন্দ্রের সংখ্যা অনুমোদনপ্রাপ্ত কেন্দ্রের কয়েকগুণ হবে। সর্বশেষ গাজীপুরের এ অভিযানের মাধ্যমে তার প্রমাণও পাওয়া গেল।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ফরেনসিক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা জরিপের সূত্রে জানা গেছে দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৬৬ লাখ। অবশ্য এটা ২০১৮ সালের হিসাব। বর্তমানে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। অনেকেই মাদকাসক্ত জীবন থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়। অথবা তাদের পরিবার ফেরাতে চায়। এজন্য নিরাময় কেন্দ্রের প্রয়োজন আছে।

কিন্তু নিরাময় কেন্দ্রের মান ও পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আইন অনুযায়ী, নিরাময় কেন্দ্রে একজন মাদকাসক্ত রোগীর জন্য গড়ে কমপক্ষে ৮০ বর্গফুট জায়গা এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা ও নিরিবিলি পরিবেশ থাকতে হয়। তাছাড়া একজন চিকিৎসক, একজন মনোচিকিৎসক, একজন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, দুজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স, একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও জীবন রক্ষাকারী উপকরণ এবং ওষুধপথ্য থাকতে হবে।

নিরাময় কেন্দ্রগুলোর প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, সরঞ্জাম ও লোকবল যদি না থাকে; তাহলে সেখানে নিরাময় ঘটবে কীভাবে। মাদক নিরাময় কেন্দ্রের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি নামকাওয়াস্তে সাইনবোর্ড টানিয়ে বাণিজ্য করেই যাচ্ছে। অথচ এসব দেখভাল করার জন্য দেশে প্রশাসন রয়েছে। রয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মতো সরকারের একটি সংস্থাও। প্রশ্ন হচ্ছে-তারা কী করে।

মাঝে মাঝে অভিযান চালানোর খবর পাওয়া যায়। বিচ্ছিন্নভাবে এমন অভিযান না চালিয়ে ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালাতে হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অন্যায়-অনিয়ম করার সাহস না পায়। পাশাপাশি মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতার অবসান ঘটাতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

অ্যান্টিভেনম সংকট দূর করুন

বিলাসবহুল গাড়ি কেনার ‘অতিআগ্রহ’ নিয়ে প্রশ্ন, উত্তর কি মিলবে?

তাপমাত্রা বাড়ার মূল্য

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

নীলফামারীতে শ্রমিকের প্রাণহানি: এই মৃত্যু কি এড়ানো যেত না

বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন: নারী সহপাঠীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, নারী প্রার্থীদের সাইবার হয়রানি

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কেন এই নৈরাজ্য

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

নারী ও শিশু নির্যাতনের উদ্বেগজনক চিত্র

ভবদহের জলাবদ্ধতা: শিক্ষা ও জীবনযাত্রার উপর অব্যাহত সংকট

সৈয়দপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুর্দশা

জমি রেজিস্ট্রিতে ঘুষের বোঝা: সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

মবের নামে মানুষ হত্যা : সমাজ কোথায় যাচ্ছে?

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ : কেন প্রশ্ন তোলা যাবে না

সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই ব্যবস্থা নিন

মামলা, গ্রেপ্তার, জামিন : প্রশ্নবিদ্ধ আইনের শাসন

শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ : ঐক্য ও উদ্যমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বন্যা ও ভাঙন : দ্রুত ব্যবস্থা নিন

অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করুন

ভূমি অফিসে ঘুষ বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জন্ম নিবন্ধনে জটিলতা দূর করা জরুরি

‘সাদা পাথর’ লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

তরুণদের জন্য আলাদা বুথ! সিদ্ধান্ত কার? কেন?

চিকিৎসক সংকটে জীবননগরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

গণপিটুনির সংস্কৃতি রুখতে হবে এখনই

সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবায় ভোগান্তির অবসান ঘটান

সড়কে মৃত্যু : দুর্ঘটনা নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

নির্বাচনের ঘোষণায় স্বস্তি, তবে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’: কিছু জিজ্ঞাসা

tab

opinion » editorial

এই কি নিরাময় কেন্দ্র, না টর্চার সেল?

শুক্রবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২২

গাজীপুরে অনুমোদন ছাড়াই গড়ে তোলা হয়েছে ‘ভাওয়াল মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্র’। মাদকাসক্তির চিকিৎসা দেয়ার কথা বলা হলেও প্রতিষ্ঠানটির মালিক-কর্মচারীরাই উল্টো মাদকাসক্ত। সেবার আড়ালে চলতো মাদক ব্যবসাও। সেখানে ছিল না চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় লোকবল ও অবকাঠামো। চিকিৎসার নামে করা হতো শারীরিক-মানসিক নির্যাতন। প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান চালিয়ে মালিকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

দেশে আগেও এমন অবৈধ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধেও একই রকমের অভিযোগ ছিল। ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর রাজধানীর আদাবরে মাইন্ডএইড অ্যান্ড সাইকিয়াট্রি ডি-অ্যাডিকশন হাসপাতালে মারধরের পর একজন সহকারী পুলিশ সুপারের মৃত্যু হয়। এরপর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে ঢাকার ১১টি অবৈধ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়।

একসময় যারা মাদকাসক্ত ছিল, তারাই এখন বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের মালিক বলে জানা যায়। চিকিৎসার নিয়ম-কানুন মানা হয় না, চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। এমন অবস্থায় দেশের মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রগুলোর কী অবস্থা-সেটা সহজেই অনুমেয়। এসব দেখে প্রশ্ন জাগে যে, এগুলোকি নিরাময় কেন্দ্র নাকি টর্চার সেল। মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোরই এখন চিকিৎসা দরকার।

দেশে মাদকাসক্তির চিকিৎসা ও নিরাময়ের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে মাত্র চারটি। সেগুলোর অবস্থাও শোচনীয়। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, চিকিৎসকসহ অন্যান্য লোকবলের ঘাটতি প্রকট। এর বাইরে বেসরকারি উদ্যোগে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে গড়ে উঠেছে অজস্র নিরাময় কেন্দ্র। জানা যায়, ঢাকাসহ দেশের ৪৪টি জেলায় ৩৫১টি বেসরকারি নিরাময় কেন্দ্র আছে। এগুলোর মধ্যে শুধু ঢাকাতেই আছে ১০৫টি। তবে সংশ্লিষ্টদের ধারণা অবৈধ নিরাময় কেন্দ্রের সংখ্যা অনুমোদনপ্রাপ্ত কেন্দ্রের কয়েকগুণ হবে। সর্বশেষ গাজীপুরের এ অভিযানের মাধ্যমে তার প্রমাণও পাওয়া গেল।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের ফরেনসিক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা জরিপের সূত্রে জানা গেছে দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৬৬ লাখ। অবশ্য এটা ২০১৮ সালের হিসাব। বর্তমানে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। অনেকেই মাদকাসক্ত জীবন থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়। অথবা তাদের পরিবার ফেরাতে চায়। এজন্য নিরাময় কেন্দ্রের প্রয়োজন আছে।

কিন্তু নিরাময় কেন্দ্রের মান ও পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আইন অনুযায়ী, নিরাময় কেন্দ্রে একজন মাদকাসক্ত রোগীর জন্য গড়ে কমপক্ষে ৮০ বর্গফুট জায়গা এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা ও নিরিবিলি পরিবেশ থাকতে হয়। তাছাড়া একজন চিকিৎসক, একজন মনোচিকিৎসক, একজন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, দুজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স, একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও জীবন রক্ষাকারী উপকরণ এবং ওষুধপথ্য থাকতে হবে।

নিরাময় কেন্দ্রগুলোর প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, সরঞ্জাম ও লোকবল যদি না থাকে; তাহলে সেখানে নিরাময় ঘটবে কীভাবে। মাদক নিরাময় কেন্দ্রের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি নামকাওয়াস্তে সাইনবোর্ড টানিয়ে বাণিজ্য করেই যাচ্ছে। অথচ এসব দেখভাল করার জন্য দেশে প্রশাসন রয়েছে। রয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মতো সরকারের একটি সংস্থাও। প্রশ্ন হচ্ছে-তারা কী করে।

মাঝে মাঝে অভিযান চালানোর খবর পাওয়া যায়। বিচ্ছিন্নভাবে এমন অভিযান না চালিয়ে ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালাতে হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অন্যায়-অনিয়ম করার সাহস না পায়। পাশাপাশি মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতার অবসান ঘটাতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

back to top