alt

মতামত » সম্পাদকীয়

উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করুন

: শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২২

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে একজনকরে মেডিকেল অফিসার, সাব এসিস্টেন্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, ফার্মাসিস্ট, এমএলএসএস ও নিরাপত্তারক্ষী থাকার কথা। কিন্তু হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার লাখাই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আছেন মাত্র একজন মেডিকেল অফিসার। তাও আবার কাগজে-কলমে। বাস্তবে গত সাড়ে ৪ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। সেখানে সপ্তাহে মাত্র দুই দিন রোগী দেখছেন একজন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকর্মী। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিরার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

শুধ হবিগঞ্জের লাখাই নয়, দেশের অনেক উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরই চিত্র এই রকম। গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রায়ই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। দেশের অধিকাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রের মেডিকেল অফিসারের পদ শূন্য। কিছু কেন্দ্রে চিকিৎসক পদায়ন থাকলেও তারা নিয়মিত সেখানে যান না। কোন কোন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফার্মাসিস্ট ও এমএলএসএস পদও ফাঁকা পড়ে আছে দীর্ঘ সময় ধরে। ফলে এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। এর বাইরে প্রয়োজনের তুলনায় ওষুধ সংকট তো রয়েছেই।

অভিযোগ আছে, চিকিৎসকরা সরকারি চাকরি বহাল রেখে প্রাইভেট প্রাকটিসে বেশি মনোযোগী। আর শহরে ডাক্তারদের একটি বড় আকর্ষণ প্রাইভেট প্র্যাকটিস, যেখানে অনেক বেশি উপার্জন করা যায়। যেটা গ্রামে গেলে সম্ভব হয় না। অন্যদিকে গ্রামে থাকার মতো পর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধাও নেই। ভালো বাসস্থান, নিরাপত্তা, ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজসহ অন্যান্য নাগরিক সুবিধা গ্রামে নেই। তাই চিকিৎসকরা গ্রামে থাকতে চান না। কোন কারণে গেলেও আবার চলে আসেন।

দুই বছর গ্রামাঞ্চলের কর্মস্থলে থাকলে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলেছে সরকার। তাছাড়া গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসকদের না থাকার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীও বার বার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তিনি চিকিৎসকদের ইন্টার্নি বাড়িয়ে দুই বছর করার কথা বলেছিলেন, যেখানে এক বছর গ্রামে থাকা বাধ্যতামূলক। এরপরও কাক্সিক্ষত সুফল মিলছে না।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসকরা যাতে দায়িত্ব পালন করতে পারেন সে ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে। তাদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, একটি স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা ঠিকভাবে কাজ করার জন্য ছয়টি বিষয় নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সেগুলো হলো-প্রয়োজনীয় অর্থায়ন, জনবল, চিকিৎসা সরঞ্জাম, তথ্য-উপাত্ত, সেবাদানের সঠিক নির্দেশিকা ও যথাযথ ব্যবস্থাপনা। এর কোন একটির ঘাটতি হলে নামকাওয়াস্তে স্বাস্থ্য-কাঠামো টিকে থাকবে বটে, কিন্তু কাক্সিক্ষত মানের স্বাস্থ্যসেবা দেয়া সম্ভব হবে না।

সারা দেশেই গ্রাম-মফস্বলে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় লোকবল সংকট রয়েছে। টাকা খরচ করে যে ভবন বানানো ও যন্ত্রপাতি কেনা হয় সেগুলো কাজে লাগানোর লোকবল নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দিতে হবে। নিয়োগপ্রাপ্তরা যেন স্ব স্ব কর্মস্থলে থাকে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। কাজগুলো করা গেলে প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার পথ সুগম বলে আমাদের প্রত্যাশা। গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসক না থাকার গল্প যেমন পুরোনো, তেমন অজুহাতও মুখস্থ। আমরা পুরোনো গল্প আর মুখস্থ অজুহাত আর শুনতে চাই না। এগুলোর অবসান চাই।

সদরপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে ব্যবস্থা নিন

সরকারি জমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে

রংপুর সিটি করপোরেশনে অটোরিকশার লাইসেন্স প্রসঙ্গে

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড প্রশ্ন অনেক, উত্তর মিলবে কি

দেবীদ্বার কলেজ মাঠ: অবহেলায় হারাতে বসেছে ঐতিহ্য

সিইপিজেডের আগুন: অবহেলা আর দায়িত্বহীনতার নজির

বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা : ফল বিপর্যয় নাকি বাস্তবতা

কুমারভোগের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিন

বেহাল রাজবাড়ী বিসিক শিল্পনগরী: ব্যবস্থা নিন

শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি: যৌক্তিক পদক্ষেপ নিন

গার্মেন্টস কারখানায় অগ্নিকাণ্ড: প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ভিডব্লিউবি কর্মসূচিতে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করুন

টিআরএম প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ পেতে আর কত অপেক্ষা

জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ

লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা যাচ্ছে না কেন

টাইফয়েড টিকা: ভালো উদ্যোগ

হামাস-ইসরায়েল চুক্তি: শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সফল হোক

বকুলতলায় স্থগিত শরৎ উৎসব!

সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স টিকাদান কার্যক্রমে জনবল সংকট দূর করুন

বনভূমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

নন্দীগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো সংস্কার করুন

কমছেই আলুর দাম, লোকসান বাড়ছে কৃষকের

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি কি পূরণ হলো?

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

কন্যাশিশু নিপীড়নের উদ্বেগজনক চিত্র

ট্রাম্পের পরিকল্পনা একটি সম্ভাবনাময় সূচনা, কিন্তু পথ এখনও দীর্ঘ

বিজয়া দশমী: সম্প্রীতি রক্ষার অঙ্গীকার

প্লাস্টিক দূষণের শিকার সুন্দরবন: চাই জনসচেতনতা

খাগড়াছড়িতে সহিংসতা কি এড়ানো যেত না

এক প্রবীণের আর্তনাদ: সমাজ কি শুনবে?

সাঁওতালদের বিদ্যালয় ও খেলার মাঠ রক্ষা করুন

সারের কৃত্রিম সংকট ও কৃষকদের দুর্ভোগ

কুড়িগ্রামে সার ও বীজ সংকট দূর করুন

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল পাচার: প্রশাসনের তৎপরতা ও প্রত্যাশা

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করুন

শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২২

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে একজনকরে মেডিকেল অফিসার, সাব এসিস্টেন্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, ফার্মাসিস্ট, এমএলএসএস ও নিরাপত্তারক্ষী থাকার কথা। কিন্তু হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার লাখাই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আছেন মাত্র একজন মেডিকেল অফিসার। তাও আবার কাগজে-কলমে। বাস্তবে গত সাড়ে ৪ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। সেখানে সপ্তাহে মাত্র দুই দিন রোগী দেখছেন একজন ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকর্মী। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিরার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

শুধ হবিগঞ্জের লাখাই নয়, দেশের অনেক উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরই চিত্র এই রকম। গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রায়ই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। দেশের অধিকাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রের মেডিকেল অফিসারের পদ শূন্য। কিছু কেন্দ্রে চিকিৎসক পদায়ন থাকলেও তারা নিয়মিত সেখানে যান না। কোন কোন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফার্মাসিস্ট ও এমএলএসএস পদও ফাঁকা পড়ে আছে দীর্ঘ সময় ধরে। ফলে এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। এর বাইরে প্রয়োজনের তুলনায় ওষুধ সংকট তো রয়েছেই।

অভিযোগ আছে, চিকিৎসকরা সরকারি চাকরি বহাল রেখে প্রাইভেট প্রাকটিসে বেশি মনোযোগী। আর শহরে ডাক্তারদের একটি বড় আকর্ষণ প্রাইভেট প্র্যাকটিস, যেখানে অনেক বেশি উপার্জন করা যায়। যেটা গ্রামে গেলে সম্ভব হয় না। অন্যদিকে গ্রামে থাকার মতো পর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধাও নেই। ভালো বাসস্থান, নিরাপত্তা, ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজসহ অন্যান্য নাগরিক সুবিধা গ্রামে নেই। তাই চিকিৎসকরা গ্রামে থাকতে চান না। কোন কারণে গেলেও আবার চলে আসেন।

দুই বছর গ্রামাঞ্চলের কর্মস্থলে থাকলে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলেছে সরকার। তাছাড়া গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসকদের না থাকার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীও বার বার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তিনি চিকিৎসকদের ইন্টার্নি বাড়িয়ে দুই বছর করার কথা বলেছিলেন, যেখানে এক বছর গ্রামে থাকা বাধ্যতামূলক। এরপরও কাক্সিক্ষত সুফল মিলছে না।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসকরা যাতে দায়িত্ব পালন করতে পারেন সে ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে। তাদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, একটি স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা ঠিকভাবে কাজ করার জন্য ছয়টি বিষয় নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সেগুলো হলো-প্রয়োজনীয় অর্থায়ন, জনবল, চিকিৎসা সরঞ্জাম, তথ্য-উপাত্ত, সেবাদানের সঠিক নির্দেশিকা ও যথাযথ ব্যবস্থাপনা। এর কোন একটির ঘাটতি হলে নামকাওয়াস্তে স্বাস্থ্য-কাঠামো টিকে থাকবে বটে, কিন্তু কাক্সিক্ষত মানের স্বাস্থ্যসেবা দেয়া সম্ভব হবে না।

সারা দেশেই গ্রাম-মফস্বলে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় লোকবল সংকট রয়েছে। টাকা খরচ করে যে ভবন বানানো ও যন্ত্রপাতি কেনা হয় সেগুলো কাজে লাগানোর লোকবল নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দিতে হবে। নিয়োগপ্রাপ্তরা যেন স্ব স্ব কর্মস্থলে থাকে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। কাজগুলো করা গেলে প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার পথ সুগম বলে আমাদের প্রত্যাশা। গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসক না থাকার গল্প যেমন পুরোনো, তেমন অজুহাতও মুখস্থ। আমরা পুরোনো গল্প আর মুখস্থ অজুহাত আর শুনতে চাই না। এগুলোর অবসান চাই।

back to top