alt

opinion » editorial

অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশের বাস্তবায়ন দেখতে চাই

: শুক্রবার, ২১ জানুয়ারী ২০২২

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে সংরক্ষিত বনের পাশে, ফসলি জমিতে ও বিদ্যালয়ে পাশে অবৈধ ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এসব ইটভাটার অন্তত ১২টিতে জ্বালানি কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। জ্বালানি কাঠের অধিকাংশই সংগ্রহ করা হচ্ছে আশেপাশের সংরক্ষিত বন থেকে। উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতি লিখিতভাবে তালিকা দিয়ে এসব ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু এরপরও কোন ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এর বাইরে সেখানকার অধিকাংশ ইটভাটারই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ-এ সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

‘ইটভাটা’র এমন চিত্র দেশের অনেক স্থানেই দেখা যায়। এর সবকিছুই হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায়। প্রায় প্রতিদিনই গণমাধ্যমে দেশের কোন না কোন এলাকার ইটভাটা নিয়ে এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। কিন্তু প্রতিকার মেলে না।

প্রতিটি ড্রাম চিমনির ইটভাটায় প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৪০০ মণ জ্বালানি কাঠ পোড়ানো হয়। সে হিসাবে একটি ইটভাটায় প্রতি মাসে ১২ হাজার মণ জ্বালানি কাঠের প্রয়োজন হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৪০ লাখ ইট তৈরিতে একেকটি চুল্লি থেকে প্রায় ৩৯৪ টন কার্বন, ১ হাজার ৪৪৪ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড, ৬ দশমিক ৩ টন মিথেন ও ১০২ টন নাইট্রিক অক্সাইড নিঃসৃত হয়, যা প্রাণ-প্রকৃতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

ইটভাটা স্থাপনে পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, বিএসটিআইসহ কয়েকটি দপ্তরের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়। ছাড়পত্র বা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে লোকালয়, বাজার, স্কুল, মসজিদের পাশে স্থাপন করা হয়েছে ইটভাটা। অভিযোগ আছে, জমি দখল করে ইটভাটা স্থাপনেরও। এসব ইটভাটার মালিকরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী। তাই এসবের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।

দেশে পরিবেশ আইন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন থাকা সত্ত্বেও সেগুলোর যথাযথ প্রয়োগ দেখা যায় না। গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে কখনও কখনও অভিযান পরিচলনা করা হয়। জরিমানা করার পর বন্ধও হয় কিছু কিছু ইটভাটা। কিন্তু ভাটার মালিকরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় আবার সেগুলো চালু করে। প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে ইটভাটা চালুর অভিযোগও আছে। সংবাদের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বরিশালের মেহিন্দিগঞ্জে অনুমোদনহীন ও ড্রাম চিমনি ব্যবহার করে কাঠ পোড়ানোর অভিযোগে একটি ইটভাটা বন্ধ করে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। এর কিছুদিন পরই সেটি আবার চালু করে স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান। জমি দখল করে ইটভাটা স্থাপনের অভিযোগও রয়েছে।

দেশের অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ডিসিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ডিসি সম্মেলনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে বনভূমি উদ্ধারে নির্দেশনা দেন তিনি। আমরা আশা করি, এই নির্দেশনার পর অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরালো হবে। ভাটায় বেআইনিভাবে কাঠ পোড়ানো এবং ফসলি জমির মাটি কাটা দ্রুত বন্ধ হবে। বিপন্ন পরিবেশ ও প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা পাবে।

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

নীলফামারীতে শ্রমিকের প্রাণহানি: এই মৃত্যু কি এড়ানো যেত না

বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন: নারী সহপাঠীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, নারী প্রার্থীদের সাইবার হয়রানি

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কেন এই নৈরাজ্য

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

নারী ও শিশু নির্যাতনের উদ্বেগজনক চিত্র

ভবদহের জলাবদ্ধতা: শিক্ষা ও জীবনযাত্রার উপর অব্যাহত সংকট

সৈয়দপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুর্দশা

জমি রেজিস্ট্রিতে ঘুষের বোঝা: সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

মবের নামে মানুষ হত্যা : সমাজ কোথায় যাচ্ছে?

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ : কেন প্রশ্ন তোলা যাবে না

সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই ব্যবস্থা নিন

মামলা, গ্রেপ্তার, জামিন : প্রশ্নবিদ্ধ আইনের শাসন

শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ : ঐক্য ও উদ্যমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বন্যা ও ভাঙন : দ্রুত ব্যবস্থা নিন

অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করুন

ভূমি অফিসে ঘুষ বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জন্ম নিবন্ধনে জটিলতা দূর করা জরুরি

‘সাদা পাথর’ লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

তরুণদের জন্য আলাদা বুথ! সিদ্ধান্ত কার? কেন?

চিকিৎসক সংকটে জীবননগরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

গণপিটুনির সংস্কৃতি রুখতে হবে এখনই

সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবায় ভোগান্তির অবসান ঘটান

সড়কে মৃত্যু : দুর্ঘটনা নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

নির্বাচনের ঘোষণায় স্বস্তি, তবে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’: কিছু জিজ্ঞাসা

বয়স্ক ভাতা পেতে আর কত অপেক্ষা

ডিএনডি এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নিন

গণঅভ্যুত্থানের এক বছর: প্রত্যাশায় কী প্রাপ্তি

tab

opinion » editorial

অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশের বাস্তবায়ন দেখতে চাই

শুক্রবার, ২১ জানুয়ারী ২০২২

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে সংরক্ষিত বনের পাশে, ফসলি জমিতে ও বিদ্যালয়ে পাশে অবৈধ ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এসব ইটভাটার অন্তত ১২টিতে জ্বালানি কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। জ্বালানি কাঠের অধিকাংশই সংগ্রহ করা হচ্ছে আশেপাশের সংরক্ষিত বন থেকে। উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতি লিখিতভাবে তালিকা দিয়ে এসব ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু এরপরও কোন ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এর বাইরে সেখানকার অধিকাংশ ইটভাটারই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ-এ সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

‘ইটভাটা’র এমন চিত্র দেশের অনেক স্থানেই দেখা যায়। এর সবকিছুই হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায়। প্রায় প্রতিদিনই গণমাধ্যমে দেশের কোন না কোন এলাকার ইটভাটা নিয়ে এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। কিন্তু প্রতিকার মেলে না।

প্রতিটি ড্রাম চিমনির ইটভাটায় প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৪০০ মণ জ্বালানি কাঠ পোড়ানো হয়। সে হিসাবে একটি ইটভাটায় প্রতি মাসে ১২ হাজার মণ জ্বালানি কাঠের প্রয়োজন হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৪০ লাখ ইট তৈরিতে একেকটি চুল্লি থেকে প্রায় ৩৯৪ টন কার্বন, ১ হাজার ৪৪৪ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড, ৬ দশমিক ৩ টন মিথেন ও ১০২ টন নাইট্রিক অক্সাইড নিঃসৃত হয়, যা প্রাণ-প্রকৃতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

ইটভাটা স্থাপনে পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, বিএসটিআইসহ কয়েকটি দপ্তরের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়। ছাড়পত্র বা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে লোকালয়, বাজার, স্কুল, মসজিদের পাশে স্থাপন করা হয়েছে ইটভাটা। অভিযোগ আছে, জমি দখল করে ইটভাটা স্থাপনেরও। এসব ইটভাটার মালিকরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী। তাই এসবের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।

দেশে পরিবেশ আইন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন থাকা সত্ত্বেও সেগুলোর যথাযথ প্রয়োগ দেখা যায় না। গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে কখনও কখনও অভিযান পরিচলনা করা হয়। জরিমানা করার পর বন্ধও হয় কিছু কিছু ইটভাটা। কিন্তু ভাটার মালিকরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় আবার সেগুলো চালু করে। প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে ইটভাটা চালুর অভিযোগও আছে। সংবাদের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বরিশালের মেহিন্দিগঞ্জে অনুমোদনহীন ও ড্রাম চিমনি ব্যবহার করে কাঠ পোড়ানোর অভিযোগে একটি ইটভাটা বন্ধ করে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। এর কিছুদিন পরই সেটি আবার চালু করে স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান। জমি দখল করে ইটভাটা স্থাপনের অভিযোগও রয়েছে।

দেশের অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ডিসিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ডিসি সম্মেলনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে বনভূমি উদ্ধারে নির্দেশনা দেন তিনি। আমরা আশা করি, এই নির্দেশনার পর অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরালো হবে। ভাটায় বেআইনিভাবে কাঠ পোড়ানো এবং ফসলি জমির মাটি কাটা দ্রুত বন্ধ হবে। বিপন্ন পরিবেশ ও প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা পাবে।

back to top