নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজারে রঙের ব্যবসার আড়ালে দাহ্য রাসায়নিকের ব্যবসা চলছে বলে জানা গেছে। সেখানকার পাঁচ শতাধিক দোকানে এসব রাসায়নিক বিক্রি করা হয়। পাশাপাশি মজুদ রাখা হয় গুদামে। এসব দোকান ও গুদামের আশেপাশেই রয়েছে কয়েকশ’ হোসিয়ারি, সুতার দোকান ও কারখানা, গুদামসহ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, বীমা, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। নারায়ণগঞ্জ সদর থানারও অবস্থান এই এলাকায়। শুধু তাই নয়, অধিকাংশ বহুতল ভবনের নিচতলায় রাসায়নিকের দোকান এবং উপরের তলাগুলোর আবাসিক ফ্ল্যাটে ঝুঁকি নিয়ে বাস করছেন হাজারো মানুষ। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজার বাণিজ্যিক ও আবাসিক এলাকা হওয়াতে খুবই জনাকীর্ণ। সেখানে ভবনগুলো একটির সঙ্গে একটি লাগোয়া। শহরের পুরাতন এলাকা হওয়ায় রাস্তাগুলো সরু। পুরো এলাকাটাই গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে। সেখানকার ব্যবসায়ীদের দাহ্য পদার্থ মজুদ রেখে তথ্য গোপন করায় ঝুঁকি আরও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক। সেখানে কোন দুর্ঘটনা বা অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে সমস্যা হবে বলেও জানান তিনি।
টানবাজারের দাহ্য পদার্থের ব্যবসা অনেক বছর ধরেই চলছে বলে জানা গেছে। এ ধরনের ব্যবসা করতে গেলে বিস্ফোরক অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্ত, ফায়ার সর্ভিস, সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় প্রশাসনের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) সূত্রে জানা গেছে, টানবাজারের চার শতাধিক দোকানের শুধু রং বিক্রির ট্রেড লাইসেন্স আছে। কোন ধরনের দাহ্য পদার্থ মজুদ ও বিক্রি না করার শর্তে দোকান মালিকদের এই লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের কাছে কী কী ধরনের রাসায়নিক পদার্থ আছে তাও জানা নেই নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের। তাহলে প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন একটি জনাকীর্ণ এলাকায় দাহ্য পদার্থের দোকান ও গুদাম কীভাবে চলছে সেটা একটা প্রশ্ন। এর পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা কি তারা ভেবে দেখেছেন?
সম্প্রতি চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লেগে মারা গেছে ৪৯ জন। আহত হায়েছে প্রায় ২০০, এখনও নিখোঁজ আছে অনেক ব্যক্তি। এর আগে ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে রাসায়নিকের গুদামে আগুন লেগেছিল। ভয়াবহ সেই অগ্নিকান্ডে মারা গিয়েছিলেন ১২৪ জন। এরপর ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুন লেগে মারা যান ৭৭ জন। এসব ঘটনায় হতাহতের পাশাপাশি বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি তো রয়েছেই।
এসব জায়গায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ভয়াবহ হয়েছিল রাসায়নিকের মজুদ ও গুদামের কারণেই। টানবাজারের মতো নিমতলী ও চুড়িহাট্টার রাস্তাঘাট সরু ছিল। কোন ধরনে দুর্ঘটনা ঘটলে টানবাজারের পরিস্থিতি যে পুরান ঢাকার চেয়ে ভয়াবহ হবে না তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে?
চুরিহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর টানবাজার থেকে রাসায়নিকের দোকান ও গুদাম সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসন। তখন দশ দিন সময় চেয়ে নিয়েছেলেন ব্যবসায়ীরা। দশ দিন বা দশ মাস নয়, এরপর কেটে গেছে তিন বছর। এসব দোকান সরেনি, বরং সংখ্যা আরও বেড়েছে, ঝুঁকিও বেড়েছে। প্রশাসনকেও আর কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
আমারা চাই, যে কোন মূল্যে টানবাজার থেকে রাসায়নিকের গুদাম সরিয়ে নেওয়া হোক। এজন্য সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে। কারণ, জীবনের চেয়ে মুনাফা বড় নয়।
 ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                        ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                           	                                            শুক্রবার, ১৭ জুন ২০২২
নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজারে রঙের ব্যবসার আড়ালে দাহ্য রাসায়নিকের ব্যবসা চলছে বলে জানা গেছে। সেখানকার পাঁচ শতাধিক দোকানে এসব রাসায়নিক বিক্রি করা হয়। পাশাপাশি মজুদ রাখা হয় গুদামে। এসব দোকান ও গুদামের আশেপাশেই রয়েছে কয়েকশ’ হোসিয়ারি, সুতার দোকান ও কারখানা, গুদামসহ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, বীমা, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। নারায়ণগঞ্জ সদর থানারও অবস্থান এই এলাকায়। শুধু তাই নয়, অধিকাংশ বহুতল ভবনের নিচতলায় রাসায়নিকের দোকান এবং উপরের তলাগুলোর আবাসিক ফ্ল্যাটে ঝুঁকি নিয়ে বাস করছেন হাজারো মানুষ। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজার বাণিজ্যিক ও আবাসিক এলাকা হওয়াতে খুবই জনাকীর্ণ। সেখানে ভবনগুলো একটির সঙ্গে একটি লাগোয়া। শহরের পুরাতন এলাকা হওয়ায় রাস্তাগুলো সরু। পুরো এলাকাটাই গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে। সেখানকার ব্যবসায়ীদের দাহ্য পদার্থ মজুদ রেখে তথ্য গোপন করায় ঝুঁকি আরও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক। সেখানে কোন দুর্ঘটনা বা অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে সমস্যা হবে বলেও জানান তিনি।
টানবাজারের দাহ্য পদার্থের ব্যবসা অনেক বছর ধরেই চলছে বলে জানা গেছে। এ ধরনের ব্যবসা করতে গেলে বিস্ফোরক অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্ত, ফায়ার সর্ভিস, সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় প্রশাসনের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) সূত্রে জানা গেছে, টানবাজারের চার শতাধিক দোকানের শুধু রং বিক্রির ট্রেড লাইসেন্স আছে। কোন ধরনের দাহ্য পদার্থ মজুদ ও বিক্রি না করার শর্তে দোকান মালিকদের এই লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের কাছে কী কী ধরনের রাসায়নিক পদার্থ আছে তাও জানা নেই নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের। তাহলে প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন একটি জনাকীর্ণ এলাকায় দাহ্য পদার্থের দোকান ও গুদাম কীভাবে চলছে সেটা একটা প্রশ্ন। এর পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা কি তারা ভেবে দেখেছেন?
সম্প্রতি চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লেগে মারা গেছে ৪৯ জন। আহত হায়েছে প্রায় ২০০, এখনও নিখোঁজ আছে অনেক ব্যক্তি। এর আগে ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে রাসায়নিকের গুদামে আগুন লেগেছিল। ভয়াবহ সেই অগ্নিকান্ডে মারা গিয়েছিলেন ১২৪ জন। এরপর ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুন লেগে মারা যান ৭৭ জন। এসব ঘটনায় হতাহতের পাশাপাশি বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি তো রয়েছেই।
এসব জায়গায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ভয়াবহ হয়েছিল রাসায়নিকের মজুদ ও গুদামের কারণেই। টানবাজারের মতো নিমতলী ও চুড়িহাট্টার রাস্তাঘাট সরু ছিল। কোন ধরনে দুর্ঘটনা ঘটলে টানবাজারের পরিস্থিতি যে পুরান ঢাকার চেয়ে ভয়াবহ হবে না তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে?
চুরিহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর টানবাজার থেকে রাসায়নিকের দোকান ও গুদাম সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসন। তখন দশ দিন সময় চেয়ে নিয়েছেলেন ব্যবসায়ীরা। দশ দিন বা দশ মাস নয়, এরপর কেটে গেছে তিন বছর। এসব দোকান সরেনি, বরং সংখ্যা আরও বেড়েছে, ঝুঁকিও বেড়েছে। প্রশাসনকেও আর কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
আমারা চাই, যে কোন মূল্যে টানবাজার থেকে রাসায়নিকের গুদাম সরিয়ে নেওয়া হোক। এজন্য সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে। কারণ, জীবনের চেয়ে মুনাফা বড় নয়।
