alt

মতামত » সম্পাদকীয়

মানবপাচার বন্ধে নতুন চ্যালেঞ্জ

: রোববার, ৩১ জুলাই ২০২২

মানবপাচারের ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে চিহ্নিত, নিয়ন্ত্রণ ও তাদের দুর্বলতার সুযোগ নিতে প্রযুক্তির অপব্যবহার হচ্ছে। শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বেই মানবপাচারে প্রযুক্তির অপব্যবহার করছে পাচারকারীরা। মানবপাচার নিয়ে দেশ-বিদেশের সাম্প্রতিক নানা গবেষণা ও বিশ্লেষণে এমনটাই বলা হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে সারা বিশ্বে গত ৩০ জুলাই পালিত হয়েছে মানব পাচারবিরোধী দিবস। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল- প্রযুক্তির ব্যবহার এবং অপব্যবহার।

মানবপাচারকারীরা অনেক কায়দা-কৌশল করে, প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করে আসছিল। তার সঙ্গে এখন নতুন করে যুক্ত হয়েছে প্রযুক্তির অভিনব অপব্যবহার। ব্র্যাকের এক গবেষণায় দেখা গেছে- গত কয়েক বছরে পাচারের ক্ষেত্রে ফেসবুকসহ নানারকম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অনেক বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই তরুণীদের চাকরি, নায়িকা বা মডেল বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে তাদের মানবপাচার চক্রের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মানবপাচারের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রুট হচ্ছে ভূমধ্যসাগর। এখানে যাওয়ার সময় অনেকেই সাগরে ডুবে প্রাণ হারান, কেউ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে নির্যাতনের শিকার হন, আবার কেউ পড়েন অপহরণকারীর খপ্পরে। শুধু যে ভূমধ্যসাগরের একটি রুট ব্যবহার করেই মানবপাচার হচ্ছে তা নয়; বাংলাদেশ পুলিশ ও জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী- বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছরই ভারত, পাকিস্তান, সিরিয়া, লেবানন, জর্ডান, সৌদি আরব, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবপাচার করা হয়। যাদের অধিকাংশই হচ্ছে নারী ও শিশু।

মানবপাচার আমাদের দেশের বড় সমস্যাগুলোর একটি। সরকারের এ ব্যাপারে যতটা নজর দেওয়ার দরকার ছিল ততটা নেই। বিষয়টি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দেশে ‘মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন-২০১২’ রয়েছে। মানব পাচারবিষয়ক অপরাধের তদন্ত, মামলা পরিচালনা ও অপরাধীর দন্ড দেওয়া ইত্যাদি বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ১৩ হাজারের বেশি মানুষকে পাচারের অভিযোগে মামলা হয়েছে ৬ হাজার ৫২০টি। এসব মামলার আসামি সাড়ে ৩১ হাজারের বেশি। কিন্তু গত ১০ বছরে মাত্র ৭২৮টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৫০টি মামলায় মাত্র ৯৬ জনের সাজা হয়েছে। বাকিরা অব্যাহতি পেয়েছে। মামলা নিষ্পত্তির হার ১১ শতাংশ, সাজা হয়েছে ২ শতাংশেরও কম।

মানবপাচারের বড় কোন ঘটনা ঘটলেই শুধু প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। তখন লোক দেখানো অভিযানে কিছু চুনোপুঁটি ধরা পড়লেও রাঘববোয়ালরা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। আইন প্রয়োগের শিথিলতার কারণে মানবপাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না। মানবপাচার বন্ধ করতে হলে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পাচারের নেপথ্যের বাঘববোয়ালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। এখন মানবপাচার বন্ধে নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রযুক্তির অপব্যবহার। সরকার মানবপাচার বন্ধে তথ্য প্রযুক্তিকে কীভাবে কাজে লাগাচ্ছে- সেটা গবেষণার বিষয়।

ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ

স্কুল ফিডিং কর্মসূচিতে অনিয়ম কাম্য নয়

ছবি

শীতজনিত রোগ প্রতিরোধে চাই সচেতনতা

গাজনার বিলে জলাবদ্ধতা দূর করতে ব্যবস্থা নিন

বাল্যবিয়ে: সংকট এখনো গভীর

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়: সব প্রশ্নের কি মীমাংসা হলো?

কুষ্টিয়ায় গাছ কাটার ‘গোপন টেন্ডার’ নিয়ে বিতর্কের অবসান হোক

ধান কেনায় অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

লালমনিরহাটের বিসিক শিল্পনগরীর দুরবস্থা

তৃণমূলে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবস্থা নিন

শ্রীপুরের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে ব্যবস্থা নিন

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে ক্লাস, পদক্ষেপ জরুরি

শিশু ধর্ষণচেষ্টা: সালিসের নামে প্রহসন কাম্য নয়

বিশুদ্ধ পানির প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

সুপেয় পানির জন্য মোরেলগঞ্জের মানুষের অপেক্ষার অবসান হবে কবে

কেন একজন নিরপরাধ মানুষকে কিসের আগুনে পুড়ে মরতে হলো

জেলেদের মাঝে বকনা বাছুর বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ সুরাহা করুন

রাজধানীতে প্রকাশ্যে হত্যা: আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ

নলবিলা খাল খনন করুন

অগ্নি-নিরাপত্তায় উদাসীনতা কাম্য নয়

কারেন্ট পোকা দমনে কৃষককে সহায়তা দিন

আলুর বাজারে নীরব বিপর্যয়

বিদ্যালয়ের মাঠ দখলমুক্ত করুন

টিলায় পাথর লুট : কার্যকর ব্যবস্থা নিন

ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবন সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

ডেঙ্গু মোকাবিলায় দায়িত্বহীনতা আর নয়

সার সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন

প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা যেন অবহেলার শিকার না হয়

প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল : একটি ভুল বার্তা

ঘিওর ভেটেরিনারি হাসপাতালের সংকট দূর করুন

ভূমি অফিসে সেবাপ্রার্থীদের দুর্ভোগ

একটি পাকা সেতুর জন্য অপেক্ষা

নদী থেকে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ করুন

ইছামতী নদীকে রক্ষা করুন

সন্দেহবশত পিটিয়ে হত্যা: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

মানবপাচার বন্ধে নতুন চ্যালেঞ্জ

রোববার, ৩১ জুলাই ২০২২

মানবপাচারের ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে চিহ্নিত, নিয়ন্ত্রণ ও তাদের দুর্বলতার সুযোগ নিতে প্রযুক্তির অপব্যবহার হচ্ছে। শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বেই মানবপাচারে প্রযুক্তির অপব্যবহার করছে পাচারকারীরা। মানবপাচার নিয়ে দেশ-বিদেশের সাম্প্রতিক নানা গবেষণা ও বিশ্লেষণে এমনটাই বলা হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে সারা বিশ্বে গত ৩০ জুলাই পালিত হয়েছে মানব পাচারবিরোধী দিবস। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল- প্রযুক্তির ব্যবহার এবং অপব্যবহার।

মানবপাচারকারীরা অনেক কায়দা-কৌশল করে, প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করে আসছিল। তার সঙ্গে এখন নতুন করে যুক্ত হয়েছে প্রযুক্তির অভিনব অপব্যবহার। ব্র্যাকের এক গবেষণায় দেখা গেছে- গত কয়েক বছরে পাচারের ক্ষেত্রে ফেসবুকসহ নানারকম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অনেক বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই তরুণীদের চাকরি, নায়িকা বা মডেল বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে তাদের মানবপাচার চক্রের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মানবপাচারের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রুট হচ্ছে ভূমধ্যসাগর। এখানে যাওয়ার সময় অনেকেই সাগরে ডুবে প্রাণ হারান, কেউ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে নির্যাতনের শিকার হন, আবার কেউ পড়েন অপহরণকারীর খপ্পরে। শুধু যে ভূমধ্যসাগরের একটি রুট ব্যবহার করেই মানবপাচার হচ্ছে তা নয়; বাংলাদেশ পুলিশ ও জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী- বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছরই ভারত, পাকিস্তান, সিরিয়া, লেবানন, জর্ডান, সৌদি আরব, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবপাচার করা হয়। যাদের অধিকাংশই হচ্ছে নারী ও শিশু।

মানবপাচার আমাদের দেশের বড় সমস্যাগুলোর একটি। সরকারের এ ব্যাপারে যতটা নজর দেওয়ার দরকার ছিল ততটা নেই। বিষয়টি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দেশে ‘মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন-২০১২’ রয়েছে। মানব পাচারবিষয়ক অপরাধের তদন্ত, মামলা পরিচালনা ও অপরাধীর দন্ড দেওয়া ইত্যাদি বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ১৩ হাজারের বেশি মানুষকে পাচারের অভিযোগে মামলা হয়েছে ৬ হাজার ৫২০টি। এসব মামলার আসামি সাড়ে ৩১ হাজারের বেশি। কিন্তু গত ১০ বছরে মাত্র ৭২৮টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৫০টি মামলায় মাত্র ৯৬ জনের সাজা হয়েছে। বাকিরা অব্যাহতি পেয়েছে। মামলা নিষ্পত্তির হার ১১ শতাংশ, সাজা হয়েছে ২ শতাংশেরও কম।

মানবপাচারের বড় কোন ঘটনা ঘটলেই শুধু প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। তখন লোক দেখানো অভিযানে কিছু চুনোপুঁটি ধরা পড়লেও রাঘববোয়ালরা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। আইন প্রয়োগের শিথিলতার কারণে মানবপাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না। মানবপাচার বন্ধ করতে হলে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পাচারের নেপথ্যের বাঘববোয়ালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। এখন মানবপাচার বন্ধে নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রযুক্তির অপব্যবহার। সরকার মানবপাচার বন্ধে তথ্য প্রযুক্তিকে কীভাবে কাজে লাগাচ্ছে- সেটা গবেষণার বিষয়।

back to top