alt

opinion » editorial

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিন

: রোববার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২

কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের বটতৈল এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন তিন তরুণ। গত শুক্রবার রাতে ঘটে যাওয়া এ দুর্ঘটনায় আরও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, রাতে ঝিনাইদহ থেকে ৮-১০টি মোটরসাইকেলে দ্রুতগতিতে কুষ্টিয়ার দিকে যাচ্ছিল একদল তরুণ। বটতৈল এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ দুটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কে উল্টে যায়।

দেশে সাম্প্রতিক সময়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) এক গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে সড়কে যত হতাহতের ঘটনা ঘটছে, তার ৪০ শতাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার কারণে হচ্ছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ২ হাজার ৭৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মারা যান ২ হাজার ২১৪ জন, যা সড়ক দুর্ঘটনায় মোট মৃত্যুর ৩৫ শতাংশ। আর আগের বছরের তুলনায় এই হার ৫০ শতাংশ বেশি।

মোটরসাইকেল চলাচলে অনেক ক্ষেত্রে হেলমেটসহ নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি ব্যবহার না করা, অতিরিক্ত গতি, ওভারটেকিং, নিয়ম না জানা বা নিয়ম না মানা ইত্যাদি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোয় মোটরসাইকেল চালানোর সময় বিশেষ পোশাক ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে পোশাক তো দূরের কথা, আত্মরক্ষার জন্য হেলমেটের মতো ন্যূনতম সরঞ্জামও ব্যবহার করা হয় না। এক গবেষণায় দেখা গেছে, হেলমেট পড়লে মৃত্যুঝুঁকি ৭০ শতাংশ আর আহত হওয়ার হার ৪০ শতাংশ কমে যায়।

মোটরসাইকেল চালকদের বড় একটি অংশের লাইসেন্স নেই। আবার যাদের রয়েছে, তাদের অনেকেই সঠিক যাচাই-বাছাই ছাড়াই লাইসেন্স পেয়েছে বলে অভিযোগ। বিআরটিএ’র তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত মোটরসাইকেলের সংখ্যা ৩৬ লাখের বেশি। কিন্তু মোটরসাইকেল চালানোর লাইসেন্স রয়েছে ২৩ লাখের মতো। অর্থাৎ ১৩ লাখের বেশি মোটরসাইকেল চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। তবে এআরআই’র তথ্য অনুযায়ী, জেলা শহর ও গ্রামীণ এলাকায় ১৫ লাখের বেশি মোটরসাইকেল রয়েছে, যেগুলোর এমনকি নিবন্ধনও নেই। সে হিসেবে দেশে প্রায় ২৮ লাখ মোটরসাইকেল চালকের কোন লাইসেন্স নেই। লাইসেন্সবিহীন চালকদের মধ্যে অধিকাংশই তরুণ। আর দুর্ঘটনায় নিহতদের ৪০ শতাংশের বয়স ২৪ থেকে ৩০ বছর।

সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু কমছে না বলে মনে করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। লাইসেন্সহীন ও ত্রুটিপূর্ণ মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কেউ মোটরসাইকেল নিয়ে সড়কে বেরোতে পারবেন না-এমনটা নিশ্চিত করতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের প্রক্রিয়াটিও যথাযথ হওয়া দরকার। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা। বিআরটিএ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই এসব করতে হবে।

তরুণদের দুর্ঘটনারোধে অভিভাবকদেরই প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষকরে অপ্রাপ্তবয়স্কদের মোটরসাইকেল ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে হবে। এর বাইরে চালক ও আরোহী উভয়েরই মানসম্মত হেলমেট ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে। একজনের বেশি আরোহী বহন করা যাবে না। মোটরসাইকেল চালানোর সময় ইয়ারফোন বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ট্রাফিক আইন, ট্রাফিক সাইন মেনে চলতে হবে, দূরপাল্লায় মোটরসাইকেল না চালানোই ভালো। এসব ব্যাপারে চালক-আরোহী সবাইকে সচেতন হতে হবে।

অ্যান্টিভেনম সংকট দূর করুন

বিলাসবহুল গাড়ি কেনার ‘অতিআগ্রহ’ নিয়ে প্রশ্ন, উত্তর কি মিলবে?

তাপমাত্রা বাড়ার মূল্য

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

নীলফামারীতে শ্রমিকের প্রাণহানি: এই মৃত্যু কি এড়ানো যেত না

বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন: নারী সহপাঠীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, নারী প্রার্থীদের সাইবার হয়রানি

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কেন এই নৈরাজ্য

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

নারী ও শিশু নির্যাতনের উদ্বেগজনক চিত্র

ভবদহের জলাবদ্ধতা: শিক্ষা ও জীবনযাত্রার উপর অব্যাহত সংকট

সৈয়দপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুর্দশা

জমি রেজিস্ট্রিতে ঘুষের বোঝা: সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

মবের নামে মানুষ হত্যা : সমাজ কোথায় যাচ্ছে?

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ : কেন প্রশ্ন তোলা যাবে না

সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই ব্যবস্থা নিন

মামলা, গ্রেপ্তার, জামিন : প্রশ্নবিদ্ধ আইনের শাসন

শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ : ঐক্য ও উদ্যমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বন্যা ও ভাঙন : দ্রুত ব্যবস্থা নিন

অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করুন

ভূমি অফিসে ঘুষ বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জন্ম নিবন্ধনে জটিলতা দূর করা জরুরি

‘সাদা পাথর’ লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

তরুণদের জন্য আলাদা বুথ! সিদ্ধান্ত কার? কেন?

চিকিৎসক সংকটে জীবননগরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

গণপিটুনির সংস্কৃতি রুখতে হবে এখনই

সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবায় ভোগান্তির অবসান ঘটান

সড়কে মৃত্যু : দুর্ঘটনা নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

নির্বাচনের ঘোষণায় স্বস্তি, তবে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’: কিছু জিজ্ঞাসা

tab

opinion » editorial

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিন

রোববার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২

কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের বটতৈল এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন তিন তরুণ। গত শুক্রবার রাতে ঘটে যাওয়া এ দুর্ঘটনায় আরও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, রাতে ঝিনাইদহ থেকে ৮-১০টি মোটরসাইকেলে দ্রুতগতিতে কুষ্টিয়ার দিকে যাচ্ছিল একদল তরুণ। বটতৈল এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ দুটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কে উল্টে যায়।

দেশে সাম্প্রতিক সময়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) এক গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে সড়কে যত হতাহতের ঘটনা ঘটছে, তার ৪০ শতাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার কারণে হচ্ছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ২ হাজার ৭৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মারা যান ২ হাজার ২১৪ জন, যা সড়ক দুর্ঘটনায় মোট মৃত্যুর ৩৫ শতাংশ। আর আগের বছরের তুলনায় এই হার ৫০ শতাংশ বেশি।

মোটরসাইকেল চলাচলে অনেক ক্ষেত্রে হেলমেটসহ নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি ব্যবহার না করা, অতিরিক্ত গতি, ওভারটেকিং, নিয়ম না জানা বা নিয়ম না মানা ইত্যাদি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোয় মোটরসাইকেল চালানোর সময় বিশেষ পোশাক ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশে পোশাক তো দূরের কথা, আত্মরক্ষার জন্য হেলমেটের মতো ন্যূনতম সরঞ্জামও ব্যবহার করা হয় না। এক গবেষণায় দেখা গেছে, হেলমেট পড়লে মৃত্যুঝুঁকি ৭০ শতাংশ আর আহত হওয়ার হার ৪০ শতাংশ কমে যায়।

মোটরসাইকেল চালকদের বড় একটি অংশের লাইসেন্স নেই। আবার যাদের রয়েছে, তাদের অনেকেই সঠিক যাচাই-বাছাই ছাড়াই লাইসেন্স পেয়েছে বলে অভিযোগ। বিআরটিএ’র তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত মোটরসাইকেলের সংখ্যা ৩৬ লাখের বেশি। কিন্তু মোটরসাইকেল চালানোর লাইসেন্স রয়েছে ২৩ লাখের মতো। অর্থাৎ ১৩ লাখের বেশি মোটরসাইকেল চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। তবে এআরআই’র তথ্য অনুযায়ী, জেলা শহর ও গ্রামীণ এলাকায় ১৫ লাখের বেশি মোটরসাইকেল রয়েছে, যেগুলোর এমনকি নিবন্ধনও নেই। সে হিসেবে দেশে প্রায় ২৮ লাখ মোটরসাইকেল চালকের কোন লাইসেন্স নেই। লাইসেন্সবিহীন চালকদের মধ্যে অধিকাংশই তরুণ। আর দুর্ঘটনায় নিহতদের ৪০ শতাংশের বয়স ২৪ থেকে ৩০ বছর।

সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু কমছে না বলে মনে করেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। লাইসেন্সহীন ও ত্রুটিপূর্ণ মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কেউ মোটরসাইকেল নিয়ে সড়কে বেরোতে পারবেন না-এমনটা নিশ্চিত করতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের প্রক্রিয়াটিও যথাযথ হওয়া দরকার। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা। বিআরটিএ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই এসব করতে হবে।

তরুণদের দুর্ঘটনারোধে অভিভাবকদেরই প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষকরে অপ্রাপ্তবয়স্কদের মোটরসাইকেল ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে হবে। এর বাইরে চালক ও আরোহী উভয়েরই মানসম্মত হেলমেট ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে। একজনের বেশি আরোহী বহন করা যাবে না। মোটরসাইকেল চালানোর সময় ইয়ারফোন বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ট্রাফিক আইন, ট্রাফিক সাইন মেনে চলতে হবে, দূরপাল্লায় মোটরসাইকেল না চালানোই ভালো। এসব ব্যাপারে চালক-আরোহী সবাইকে সচেতন হতে হবে।

back to top