alt

মতামত » সম্পাদকীয়

উপকূলীয় বন রক্ষা করুন

: সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় প্যারাবনের গাছ কেটে চিংড়ির ঘের করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় একটি চক্রের বিরুদ্ধে। চক্রটি চকরিয়ার উপকূলীয় বদরখালী-মহেশখালী চ্যানেলের বদরখালী বাজার সংলগ্ন স্লুইস গেটের পশ্চিম পাশে প্যারাবনের শত শত গাছ কেটে এস্ককেভেটর দিয়ে মাটি কাটছে। সেখানে প্রবাহমান নদী দখল করে ঘেরের কাজ চলছে। এ নিয়ে গতকাল রোববার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

১৯৯১ সালে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে উপকূলের জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। চকরিয়ার উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়, ২০-২৫ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়। পরবর্তীতে এ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনীর আওতায় প্যারাবন বা ম্যানগ্রোভ বন গড়ে তোলা হয়।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে উপকূলে বিপদ বাড়ছে। দিন দিন হুমকির মুখে পড়ছে উপকূল। এ হুমকি উপেক্ষা করার কোন সুযোগ নেই, বরং মোকাবেলা করতে হবে। ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ু তারতম্যের কারণে দেশে পাহাড়ি বন, প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বন, সৃজিত উপকূলীয় বন, শালবন, জলাভূমির বন রয়েছে। দেশের জলবায়ু, উপকূলীয় এলাকা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এসব বনের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এগুলোর মধ্যে সৃজিত উপকূলীয় বন ও প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বন উপকূলবর্তী এলাকাগুলোর বেষ্টনী হিসেবে কাজ করছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত হুমকি মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা রাখছে।

উপকূলীয় এলাকায় বছরের বিভিন্ন সময়ে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, সাইক্লোন, টর্নেডোসহ নানারকম প্রকৃতিকি দুর্যোগ আঘাত হানে। এর ফলে বাড়িঘর, ফসল ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকাংশে কমিয়ে আনে সৃজিত উপকূলীয় প্যারাবন। যেখানে নতুন নতুন বন সৃজন করার কথা, সম্প্রসারিত করার কথা- সেখানে তা ধ্বংস করা হচ্ছে, সংকুচিত করা হচ্ছে।

বন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকাশ্যে প্যারাবন নিধন করা হলেও বন বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। চট্টগ্রাম উপকূলীয় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এটি বন বিভাগের জায়গা না, তবে খাস জায়গা। চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেছেন, কেউ নদী দখল করে চিংড়ি ঘের করে থাকলে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কোন এলাকার বনের শতাধিক গাছ মুহূর্তের মধ্যেই কেটে ফেলা যায় না। রাতারাতি মাটি কেটে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে নদী-খাল দখল করা যায় না। দিনের পর দিন এভাবে গাছ কেটে নেওয়া হচ্ছে, বন ধ্বংস করে নদী দখল করে চিংড়ি ঘের করা হচ্ছে- আর কর্তৃপক্ষ বলছেন ‘খাস জায়গা’, ‘শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

বন সংরক্ষণে দেশে কঠোর আইন আছে। সমস্যা হচ্ছে, প্রায় ক্ষেত্রেই আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হয় না। চকরিয়া এলাকার উপকূলীয় বন যেকোন উপায়ে রক্ষা করতে হবে। নইলে উপকূল চরম ঝুঁকির মুখে পড়বে। বনের গাছ কাটা বন্ধে নজরদারি বাড়াতে হবে। বন ধ্বংসের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

শিশু ধর্ষণচেষ্টা: সালিসের নামে প্রহসন কাম্য নয়

বিশুদ্ধ পানির প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

সুপেয় পানির জন্য মোরেলগঞ্জের মানুষের অপেক্ষার অবসান হবে কবে

কেন একজন নিরপরাধ মানুষকে কিসের আগুনে পুড়ে মরতে হলো

জেলেদের মাঝে বকনা বাছুর বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ সুরাহা করুন

রাজধানীতে প্রকাশ্যে হত্যা: আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ

নলবিলা খাল খনন করুন

অগ্নি-নিরাপত্তায় উদাসীনতা কাম্য নয়

কারেন্ট পোকা দমনে কৃষককে সহায়তা দিন

আলুর বাজারে নীরব বিপর্যয়

বিদ্যালয়ের মাঠ দখলমুক্ত করুন

টিলায় পাথর লুট : কার্যকর ব্যবস্থা নিন

ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবন সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

ডেঙ্গু মোকাবিলায় দায়িত্বহীনতা আর নয়

সার সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন

প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা যেন অবহেলার শিকার না হয়

প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল : একটি ভুল বার্তা

ঘিওর ভেটেরিনারি হাসপাতালের সংকট দূর করুন

ভূমি অফিসে সেবাপ্রার্থীদের দুর্ভোগ

একটি পাকা সেতুর জন্য অপেক্ষা

নদী থেকে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ করুন

ইছামতী নদীকে রক্ষা করুন

সন্দেহবশত পিটিয়ে হত্যা: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জয়দেবপুর রেলক্রসিংয়ে দুর্ভোগের অবসান হোক

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কেন থামছে না?

সারের সংকট আর কত

সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করুন

কক্সবাজার সৈকত রক্ষা করুন

ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য কী?

সড়ক দখলমুক্ত করা জরুরি

কৃষকদের পাশে থাকুন

প্রাথমিক শিক্ষায় সংকট

অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে ধীরগতি: ঝুঁকিতে মানুষ ও গবাদিপশু

রাজধানীর যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে সিগন্যাল বাতি: বাস্তবায়ন জরুরি

দুস্থদের জন্য নিম্নমানের চাল: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

উপকূলীয় বন রক্ষা করুন

সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় প্যারাবনের গাছ কেটে চিংড়ির ঘের করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় একটি চক্রের বিরুদ্ধে। চক্রটি চকরিয়ার উপকূলীয় বদরখালী-মহেশখালী চ্যানেলের বদরখালী বাজার সংলগ্ন স্লুইস গেটের পশ্চিম পাশে প্যারাবনের শত শত গাছ কেটে এস্ককেভেটর দিয়ে মাটি কাটছে। সেখানে প্রবাহমান নদী দখল করে ঘেরের কাজ চলছে। এ নিয়ে গতকাল রোববার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

১৯৯১ সালে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে উপকূলের জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। চকরিয়ার উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়, ২০-২৫ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়। পরবর্তীতে এ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনীর আওতায় প্যারাবন বা ম্যানগ্রোভ বন গড়ে তোলা হয়।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে উপকূলে বিপদ বাড়ছে। দিন দিন হুমকির মুখে পড়ছে উপকূল। এ হুমকি উপেক্ষা করার কোন সুযোগ নেই, বরং মোকাবেলা করতে হবে। ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ু তারতম্যের কারণে দেশে পাহাড়ি বন, প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বন, সৃজিত উপকূলীয় বন, শালবন, জলাভূমির বন রয়েছে। দেশের জলবায়ু, উপকূলীয় এলাকা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এসব বনের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এগুলোর মধ্যে সৃজিত উপকূলীয় বন ও প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বন উপকূলবর্তী এলাকাগুলোর বেষ্টনী হিসেবে কাজ করছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত হুমকি মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা রাখছে।

উপকূলীয় এলাকায় বছরের বিভিন্ন সময়ে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, সাইক্লোন, টর্নেডোসহ নানারকম প্রকৃতিকি দুর্যোগ আঘাত হানে। এর ফলে বাড়িঘর, ফসল ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকাংশে কমিয়ে আনে সৃজিত উপকূলীয় প্যারাবন। যেখানে নতুন নতুন বন সৃজন করার কথা, সম্প্রসারিত করার কথা- সেখানে তা ধ্বংস করা হচ্ছে, সংকুচিত করা হচ্ছে।

বন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকাশ্যে প্যারাবন নিধন করা হলেও বন বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। চট্টগ্রাম উপকূলীয় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এটি বন বিভাগের জায়গা না, তবে খাস জায়গা। চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেছেন, কেউ নদী দখল করে চিংড়ি ঘের করে থাকলে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কোন এলাকার বনের শতাধিক গাছ মুহূর্তের মধ্যেই কেটে ফেলা যায় না। রাতারাতি মাটি কেটে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে নদী-খাল দখল করা যায় না। দিনের পর দিন এভাবে গাছ কেটে নেওয়া হচ্ছে, বন ধ্বংস করে নদী দখল করে চিংড়ি ঘের করা হচ্ছে- আর কর্তৃপক্ষ বলছেন ‘খাস জায়গা’, ‘শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

বন সংরক্ষণে দেশে কঠোর আইন আছে। সমস্যা হচ্ছে, প্রায় ক্ষেত্রেই আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হয় না। চকরিয়া এলাকার উপকূলীয় বন যেকোন উপায়ে রক্ষা করতে হবে। নইলে উপকূল চরম ঝুঁকির মুখে পড়বে। বনের গাছ কাটা বন্ধে নজরদারি বাড়াতে হবে। বন ধ্বংসের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

back to top