alt

opinion » editorial

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার নামে হরিলুট বন্ধ করুন

: সোমবার, ০৩ অক্টোবর ২০২২

প্রাথমিকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করার লক্ষ্যে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে সরকার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো ‘আউট অব চিলড্রেন এডুকেশন’ নামে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের অধীনে সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৪২০টি উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সাস, উন্নয়ন পরিষদ (উপ) এবং ইডা নামের তিনটি এনজিও যৌথভাবে এসব কেন্দ্র পরিচালনা করেছে। এসব কেন্দ্র পরিচালনায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গতকাল রোববার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, খুপড়ি ঘর, বাঁশবাগান অথবা মাঠের মধ্যে, ডোবার ধারে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এছাড়া বসতবাড়িতে, পরিত্যক্ত দোকানে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দেয়ালে কিছু কিছু কেন্দ্রের শুধু নামসর্বস্ব সাইনবোর্ড থাকলেও নেই কোন কার্যক্রম। স্কুল ঘর বাবদ প্রতি মাসে ১৫শ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে ৭শ থেকে ৮শ টাকা। এছাড়া ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ আছে এই প্রকল্পের শিক্ষক, সুপারভাইজার ও প্রোগ্রাম অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রেও। এমনকি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে এখনও কমিশন হিসেবে টাকা নেওয়া হচ্ছে। সরকারের প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা মিলেমিশেই এসব করছে বলে অভিযোগ।

বিভিন্নভাবে ঝরে পড়া ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের এসব স্কুলে পড়ানোর কথা। ঝরে পড়া শিশুদের সংখ্যার হিসাবেও দেওয়া হয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি। প্রতিটি কেন্দ্রে ৩০ জন করে মোট সাড়ে বারো হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী হওয়ার কথা। হিসাবেও তাই দেখানো হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, এ জেলায় ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ১ হাজার ৩০০ জনের কাছাকাছি। স্কুলের রেজিস্টার খাতায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়মিত শিক্ষার্থীর নাম উঠিয়ে রাখা হয়েছে। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও ড্রেসসহ ৩২ প্রকার উপকরণ দেয়ার কথা থাকলেও শুধুমাত্র বই, খাতা ও পেনসিলেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের টাকা হরিলুট করা হচ্ছে।

দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় অনেক ধরনের সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে ও শিক্ষা খাতের সংকট দূর করতে যে পরিমাণ বাজেট দেওয়া হয়, তা যথেষ্ট নয়। আবার যে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয় তার বড় একটা অংশ ব্যয় হয় অবকাঠামো নির্মাণে। এর বাইরে ছিটেফোঁটা যা থাকে তা দিয়ে যেসব প্রকল্প নেওয়া হয় সেগুলোতেও যদি এভাবে হরিলুট চলে, তাহলে শিক্ষা খাত এগোবে কী করে। শিক্ষা খাতকে ভয়াবহ দুর্নীতির খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলা অফিস এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যন্ত এ দুর্নীতির বিস্তার বলে জানায় সংস্থাটি। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধে সংস্থাটি ৩৯টি সুপারিশও করেছিল। সেসব সুপারিশ বাস্তবায়নে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

সাতক্ষীরার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কেন্দ্রগুলোর অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। এসব অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একটি জেলার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমে এমন চিত্রে অন্যান্য জেলার কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেয়। আমরা চাই ব্যবস্থাটা চালু থাকুক; কিন্তু সেটা হতে হবে অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত।

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

নীলফামারীতে শ্রমিকের প্রাণহানি: এই মৃত্যু কি এড়ানো যেত না

বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন: নারী সহপাঠীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, নারী প্রার্থীদের সাইবার হয়রানি

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কেন এই নৈরাজ্য

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

নারী ও শিশু নির্যাতনের উদ্বেগজনক চিত্র

ভবদহের জলাবদ্ধতা: শিক্ষা ও জীবনযাত্রার উপর অব্যাহত সংকট

সৈয়দপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুর্দশা

জমি রেজিস্ট্রিতে ঘুষের বোঝা: সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

মবের নামে মানুষ হত্যা : সমাজ কোথায় যাচ্ছে?

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ : কেন প্রশ্ন তোলা যাবে না

সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই ব্যবস্থা নিন

মামলা, গ্রেপ্তার, জামিন : প্রশ্নবিদ্ধ আইনের শাসন

শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ : ঐক্য ও উদ্যমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বন্যা ও ভাঙন : দ্রুত ব্যবস্থা নিন

অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করুন

ভূমি অফিসে ঘুষ বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জন্ম নিবন্ধনে জটিলতা দূর করা জরুরি

‘সাদা পাথর’ লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

তরুণদের জন্য আলাদা বুথ! সিদ্ধান্ত কার? কেন?

চিকিৎসক সংকটে জীবননগরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

গণপিটুনির সংস্কৃতি রুখতে হবে এখনই

সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবায় ভোগান্তির অবসান ঘটান

সড়কে মৃত্যু : দুর্ঘটনা নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

নির্বাচনের ঘোষণায় স্বস্তি, তবে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’: কিছু জিজ্ঞাসা

বয়স্ক ভাতা পেতে আর কত অপেক্ষা

ডিএনডি এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নিন

গণঅভ্যুত্থানের এক বছর: প্রত্যাশায় কী প্রাপ্তি

tab

opinion » editorial

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার নামে হরিলুট বন্ধ করুন

সোমবার, ০৩ অক্টোবর ২০২২

প্রাথমিকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করার লক্ষ্যে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে সরকার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো ‘আউট অব চিলড্রেন এডুকেশন’ নামে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের অধীনে সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৪২০টি উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সাস, উন্নয়ন পরিষদ (উপ) এবং ইডা নামের তিনটি এনজিও যৌথভাবে এসব কেন্দ্র পরিচালনা করেছে। এসব কেন্দ্র পরিচালনায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গতকাল রোববার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, খুপড়ি ঘর, বাঁশবাগান অথবা মাঠের মধ্যে, ডোবার ধারে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এছাড়া বসতবাড়িতে, পরিত্যক্ত দোকানে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দেয়ালে কিছু কিছু কেন্দ্রের শুধু নামসর্বস্ব সাইনবোর্ড থাকলেও নেই কোন কার্যক্রম। স্কুল ঘর বাবদ প্রতি মাসে ১৫শ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে ৭শ থেকে ৮শ টাকা। এছাড়া ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ আছে এই প্রকল্পের শিক্ষক, সুপারভাইজার ও প্রোগ্রাম অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রেও। এমনকি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে এখনও কমিশন হিসেবে টাকা নেওয়া হচ্ছে। সরকারের প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা মিলেমিশেই এসব করছে বলে অভিযোগ।

বিভিন্নভাবে ঝরে পড়া ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের এসব স্কুলে পড়ানোর কথা। ঝরে পড়া শিশুদের সংখ্যার হিসাবেও দেওয়া হয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি। প্রতিটি কেন্দ্রে ৩০ জন করে মোট সাড়ে বারো হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী হওয়ার কথা। হিসাবেও তাই দেখানো হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, এ জেলায় ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ১ হাজার ৩০০ জনের কাছাকাছি। স্কুলের রেজিস্টার খাতায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়মিত শিক্ষার্থীর নাম উঠিয়ে রাখা হয়েছে। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও ড্রেসসহ ৩২ প্রকার উপকরণ দেয়ার কথা থাকলেও শুধুমাত্র বই, খাতা ও পেনসিলেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের টাকা হরিলুট করা হচ্ছে।

দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় অনেক ধরনের সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে ও শিক্ষা খাতের সংকট দূর করতে যে পরিমাণ বাজেট দেওয়া হয়, তা যথেষ্ট নয়। আবার যে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয় তার বড় একটা অংশ ব্যয় হয় অবকাঠামো নির্মাণে। এর বাইরে ছিটেফোঁটা যা থাকে তা দিয়ে যেসব প্রকল্প নেওয়া হয় সেগুলোতেও যদি এভাবে হরিলুট চলে, তাহলে শিক্ষা খাত এগোবে কী করে। শিক্ষা খাতকে ভয়াবহ দুর্নীতির খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে জেলা-উপজেলা অফিস এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যন্ত এ দুর্নীতির বিস্তার বলে জানায় সংস্থাটি। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধে সংস্থাটি ৩৯টি সুপারিশও করেছিল। সেসব সুপারিশ বাস্তবায়নে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

সাতক্ষীরার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কেন্দ্রগুলোর অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। এসব অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একটি জেলার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমে এমন চিত্রে অন্যান্য জেলার কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেয়। আমরা চাই ব্যবস্থাটা চালু থাকুক; কিন্তু সেটা হতে হবে অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত।

back to top