জাতীয় গ্রিড বারবার বিপর্যয়ের কারণ কী

জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মাসখানেক আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় গ্রিডের একটি সঞ্চালন লাইনে বিভ্রাট দেখা দিয়েছিল। সে সময় রাজশাহী, খুলনা, বরিশালসহ দেশের অনেক স্থানেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

৭ সেপ্টেম্বরের বিপর্যয় দ্রুতই সামলানো গেছে। সেদিন গ্রিড বিপর্যয়ের ৪০ মিনিট পর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তবে মঙ্গলবারের বিপর্যয় সামলাতে সংশ্লিষ্টদের বেগ পেতে হয়েছে। কোন কোন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে ১০ ঘণ্টা সময় লেগেছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল। চিকিৎসাসেবা, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, মোবাইল যোগাযোগ, শিল্পকলকারখানায় উৎপাদন, ব্যাংকিং সেবা প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটে। তবে মানুষ ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে।

এক মাসের মধ্যে দুইবার গ্রিড বিপর্যয় ঘটল। অতীতেও দেশে গ্রিড বিপর্যয় হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় বারবার কেন বিপত্তি ঘটছে, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

গ্রিড বিপর্যয় শুধু যে বাংলাদেশেই হয়, তা নয়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও এ ধরনের বিপর্যয় ঘটতে দেখা গেছে। অনেক সময় সক্রিয় সঞ্চালন লাইনে গাছের ডাল ভেঙে পড়া বা পাখি বসার কারণে গ্রিড বিপর্যয় হতে পারে। আবার কারিগরি ত্রুটিও বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ফ্রিকোয়েন্সিতে কখনো গড়বড় হলে গ্রিড বন্ধ হয়ে যেতে পারে। পুরোনো সঞ্চালন লাইনে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ সঞ্চালিত হলে অনেক সময় গ্রিডের সার্কিট পুড়ে যেতে পারে। তখন বিপর্যয় ঘটতে পারে। আবার সঞ্চালন লাইনে যদি ছিদ্র থাকে, তাহলে সেখান থেকে স্পার্ক করতে পারে। এর ফলেও বিপত্তি ঘটতে পারে।

মঙ্গলবার কেন গ্রিড বিপর্যয় হলো, সেটা জানতে দুটো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আশা করব, সুষ্ঠু তদন্তে প্রকৃত কারণ বেরিয়ে আসবে।

জাতীয় গ্রিড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর স্থাপনা। এখানে কোন বিপত্তি ঘটলে দেশের মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকে না। এর নিরাপত্তায় কোথাও কোন ঘাটতি আছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। দৈবদুর্বিপাকের ওপর কারও হাত নেই। তবে কারিগরি ক্ষেত্রে কোন দুর্বলতা থাকলে, তা দূর করতে হবে।

দেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় কাক্সিক্ষত উন্নয়ন হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গ্রিডের উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন নিশ্চিত করা জরুরি।

কোন কারণে জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় দেখা দিলে তা দ্রুত ঠিক করার সক্ষমতায় কোন ঘাটতি আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

‘সম্পাদকীয়’ : আরও খবর

» গোবিন্দগঞ্জে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখলের অভিযোগ আমলে নিন

» আত্রাই নদীর বালু লুট বন্ধ করুন

» ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মানুষ হত্যা: কঠোর ব্যবস্থা নিন

» অবৈধ ইটভাটা: প্রশাসনের দুর্বলতা ও পরিবেশের সংকট

» ফসলি জমি রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নিন

» শেষ না হওয়া সেতু, শেষ না হওয়া ভোগান্তি

» সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে হামলা: আদি ও অকৃত্রিম ফ্যাসিবাদের জঘন্য রূপ

» পাহাড় কেটে কেন পানের বরজ?

» মতপ্রকাশের জন্য গ্রেপ্তার: গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়

» সাহাগোলা রেলওয়ে স্টেশনে জনবল সংকট দূর করুন

» চাঁদপুর সেচ প্রকল্প রক্ষায় ব্যবস্থা নিন

সম্প্রতি