alt

সম্পাদকীয়

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রসঙ্গে

: বুধবার, ২৪ মে ২০২৩

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা নৃশংস গণহত্যা চালিয়েছিল। স্বাধীনতার পর পেরিয়েছে পাঁচ দশকেরও বেশি সময়; কিন্তু সেই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি আজও। অবশ্য একাত্তরের হত্যাযজ্ঞকে সম্প্রতি ‘গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ’ ঘোষণা করে প্রস্তাব পাস করেছে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলার্স (আইএজিএস)। এটাকে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার পথে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করছেন অনেকে।

বাংলাদেশে সফররত ইউরোপের একটি প্রতিনিধি দল গণহত্যার স্বীকৃতির প্রশ্নে শুনিয়েছে আশার বাণী। প্রতিনিধি দলের সদস্য নেদারল্যান্ডসের সাবেক সংসদ সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী হ্যারি ভ্যান বোমেল আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, একাত্তরে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পাওয়া যাবে।

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পাওয়ার পেছনে কাজ করছে বৈশ্বিক রাজনীতি। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয় এমন এক সময়ে যখন দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে শীতল যুদ্ধ চলছিল। সেই শীতল যুদ্ধের কারণে মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতাকামী বাঙালিকে দিতে হয়েছে চরম মূল্য। পশ্চিমাবিশ্ব সেই সময় পশ্চিম পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়ে গেছে। একই কারণে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও মেলেনি। ইউরোপীয় প্রতিনিধি দলের কথাতেও বিষিয়টি প্রকাশ পেয়েছে।

এখন সময় বদলেছে। শীতল যুদ্ধের অবসান হয়েছে অনেক আগেই। এখনো গণহত্যার স্বীকৃতি না মেলা দুঃখজনক। এটা শুধু বাংলাদেশের মানুষের জন্যই নয়, বিশ্ব মানবতার জন্যই গ্লানিকর। গণহত্যার স্বীকৃতি না মিললে মানবতার শত্রুদের বিচারের মুখোমুখি করা অসম্ভব হয়ে পড়ে, নির্যাতিতদের ন্যায়বিচার দেয়া যায় না।

যারা গণহত্যা চালিয়েছে তাদের বিচার করতে হলে এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া প্রয়োজন। দেশে দেশে গণহত্যার পুনরাবৃত্তি রোধের স্বার্থেও এর গুরুত্ব রয়েছে। সফররত ইউরোপীয় প্রতিনিধি দল গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার প্রশ্নে যে কথা বলেছে তাতে আমরা আশাবাদী হতে চাই। স্বীকৃতি পাওয়ার পথে তারা নিজ নিজ জায়গা থেকে ভূমিকা পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, তারা এ প্রতিশ্রুতি পালন করবেন। তাহলে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার স্বীকৃতি পাওয়ার প্রক্রিয়া গতিশীল হবে।

একাত্তরের গণহত্যা নিয়ে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন পর্যায়ে কথা হচ্ছে। এ অবস্থায় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে- সেটা আমাদের প্রত্যাশা। গণহত্যা নিয়ে তথ্য-প্রমাণভিত্তিক মানসম্মত গবেষণা করে তা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে হবে। তার স্বীকৃতি আদায়ের জন্য বিশ্ব জনমত গড়ে তুলতে হবে।

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অপেক্ষা কবে ফুরাবে

হাইল হাওরের অস্তিত্ব সংকট

সমানাধিকারে আপত্তি কেন?

লেমুর চুরি : সাফারি পার্কের নিরাপত্তা সংকট

একটি হাসাহাসির ঘটনা, একটি হত্যাকাণ্ড : সমাজের সহিষ্ণুতার অবক্ষয়

চাই সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

মানুষ-হাতির সংঘাত : সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সংকট দূর করুন

ফসলি জমি রক্ষায় কঠোর হোন

নিষ্ঠুরতার শিকার হাতি

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও নাগরিক অধিকার

হালদায় অবৈধ মাছ শিকার বন্ধ করতে হবে

মশার উপদ্রব : বর্ষার আগেই সাবধান হতে হবে

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের হামলা : মানবতার প্রতি এক অব্যাহত আঘাত

অবৈধ বৈদ্যুতিক ফাঁদে প্রাণহানি : দায় কার?

নদীর বাঁধ ভাঙার দুর্ভোগ : টেকসই সমাধানের জরুরি প্রয়োজন

মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট

সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা : কঠোর নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ জরুরি

সড়ক দুর্ঘটনা নাকি অবহেলার পরিণতি

ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ ও আমাদের প্রস্তুতি

বার্ড ফ্লু : আতঙ্ক নয়, চাই সতর্কতা

জাটকা রক্ষার প্রতিশ্রুতি কি শুধুই কাগজে-কলমে?

ভেজাল কীটনাশক বন্ধে ব্যবস্থা নিন

অতিরিক্ত ভাড়া : যাত্রীদের দুর্ভোগ আর কতকাল?

করতোয়া নদীতে রাবার ড্যাম স্থাপনের দাবি

tab

সম্পাদকীয়

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রসঙ্গে

বুধবার, ২৪ মে ২০২৩

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা নৃশংস গণহত্যা চালিয়েছিল। স্বাধীনতার পর পেরিয়েছে পাঁচ দশকেরও বেশি সময়; কিন্তু সেই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি আজও। অবশ্য একাত্তরের হত্যাযজ্ঞকে সম্প্রতি ‘গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ’ ঘোষণা করে প্রস্তাব পাস করেছে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলার্স (আইএজিএস)। এটাকে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার পথে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করছেন অনেকে।

বাংলাদেশে সফররত ইউরোপের একটি প্রতিনিধি দল গণহত্যার স্বীকৃতির প্রশ্নে শুনিয়েছে আশার বাণী। প্রতিনিধি দলের সদস্য নেদারল্যান্ডসের সাবেক সংসদ সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী হ্যারি ভ্যান বোমেল আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, একাত্তরে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পাওয়া যাবে।

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পাওয়ার পেছনে কাজ করছে বৈশ্বিক রাজনীতি। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয় এমন এক সময়ে যখন দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে শীতল যুদ্ধ চলছিল। সেই শীতল যুদ্ধের কারণে মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতাকামী বাঙালিকে দিতে হয়েছে চরম মূল্য। পশ্চিমাবিশ্ব সেই সময় পশ্চিম পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়ে গেছে। একই কারণে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও মেলেনি। ইউরোপীয় প্রতিনিধি দলের কথাতেও বিষিয়টি প্রকাশ পেয়েছে।

এখন সময় বদলেছে। শীতল যুদ্ধের অবসান হয়েছে অনেক আগেই। এখনো গণহত্যার স্বীকৃতি না মেলা দুঃখজনক। এটা শুধু বাংলাদেশের মানুষের জন্যই নয়, বিশ্ব মানবতার জন্যই গ্লানিকর। গণহত্যার স্বীকৃতি না মিললে মানবতার শত্রুদের বিচারের মুখোমুখি করা অসম্ভব হয়ে পড়ে, নির্যাতিতদের ন্যায়বিচার দেয়া যায় না।

যারা গণহত্যা চালিয়েছে তাদের বিচার করতে হলে এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া প্রয়োজন। দেশে দেশে গণহত্যার পুনরাবৃত্তি রোধের স্বার্থেও এর গুরুত্ব রয়েছে। সফররত ইউরোপীয় প্রতিনিধি দল গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার প্রশ্নে যে কথা বলেছে তাতে আমরা আশাবাদী হতে চাই। স্বীকৃতি পাওয়ার পথে তারা নিজ নিজ জায়গা থেকে ভূমিকা পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, তারা এ প্রতিশ্রুতি পালন করবেন। তাহলে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার স্বীকৃতি পাওয়ার প্রক্রিয়া গতিশীল হবে।

একাত্তরের গণহত্যা নিয়ে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন পর্যায়ে কথা হচ্ছে। এ অবস্থায় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে- সেটা আমাদের প্রত্যাশা। গণহত্যা নিয়ে তথ্য-প্রমাণভিত্তিক মানসম্মত গবেষণা করে তা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে হবে। তার স্বীকৃতি আদায়ের জন্য বিশ্ব জনমত গড়ে তুলতে হবে।

back to top