alt

মুক্ত আলোচনা

রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশনের পরিবর্তন আশু প্রয়োজন

রহমান মৃধা

: সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বর্তমান ডিজিটাল বিশ্বে যে ক্ষমতাশালী কম্পিউটার এসেছে যা মানুষের মস্তিষ্কের বুদ্ধিমত্তার মত অনেক অচিন্তনীয় পরিমাণ ডেটা সৃষ্টি করে নিউরাল নেটের সঙ্গে এমনভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে যে, এটা এখন মানুষের মত চিন্তাশক্তি, বুদ্ধি কিংবা বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা রাখে, যাকে আমরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলছি। কিছুদিন আগেও এটা ছিল দূর ভবিষ্যতের একটি কাল্পনিক বিষয়।

কিন্তু এখন বিষয়টি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হতে শুরু করেছে। এখন এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তো পিঁপড়ার মতো চার পায়ে পিল পিল করে হেটে আসেনি, এটাকে তৈরি করা হযেছে যাতে করে মানুষ জাতি ক্রমাগত ভাবে জ্ঞান ভান্ডারের শীর্শে উর্তীর্ণ হতে সক্ষম হয়। এমন একটি চ্যালেঞ্জিং সময়ে আমাদেরকে স্মার্ট হতে হবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে। আর সেটা করতে হলে যেমন আছি তেমন থাকলে চলবে না। সেক্ষেত্রে নতুন করে ভাবতে হবে, নতুন করে দেশের পরিকাঠামোর পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করতে হবে।

নতুন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং কূটনৈতিক সংগঠন নিয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরতে চাই স্মার্ট বাংলাদেশ তথা সোনার বাংলা গড়ার স্বার্থে।

রাষ্ট্রদূত একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবিশেষ, যিনি কোনো নির্দিষ্ট দেশের সরকারের পক্ষ থেকে অন্য কোনো স্বাধীন দেশ, সরকার কিংবা আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কূটনৈতিক কার্যসম্পাদনের উদ্দেশ্যে প্রেরিত হন। একজন রাষ্ট্রদূত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো দেশের প্রতিনিধিত্ব করে যাবতীয় রাষ্ট্রীয় কার্যাবলী সম্পন্ন করেন। সাধারণত তিনি নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য কাজ করেন। কর্মরত দেশের সরকারের নিকট নিজ দেশের কূটনীতি সম্পর্কিত বিষয়গুলো তুলে ধরেন এবং দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি বাস্তবায়নে সদা তৎপর থাকেন।

বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থার উপরের বর্ণনায় প্রভূত উন্নয়ন ঘটায় সরাসরি কিংবা মুহূর্তের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভবপর। তারপরও এটি সত্য যে, অনেক সমস্যা রয়েছে যেখানে সরাসরি যোগাযোগ অবশ্যই রক্ষা করতে হয়। এখানেই রাষ্ট্রদূতের উপযোগিতা ও প্রয়োজনীয়তা বিদ্যমান।

একজন রাষ্ট্রদূতকে বৈদেশিক রাষ্ট্রে অনির্ধারিতভাবে কয়েক বছর অবস্থান করতে হয় এবং তিনি ওই রাষ্ট্রের যাবতীয় আইন-কানুন, রীতি-নীতি, সমাজ ব্যবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে যথেষ্ট অবগত থাকেন। তিনি যেখানে কাজ করেন তা দূতাবাস নামে পরিচিত। সাধারণত দূতাবাস বৈদেশিক রাষ্ট্র কর্তৃক বরাদ্দকৃত এবং তা দেশটির রাজধানী এলাকায় অবস্থিত। তাকে কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড ও কর্তব্য কাজে সহযোগিতার জন্য একদল প্রশিক্ষিত ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়। কিছু উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি দূতাবাসের কর্মকর্তা নামে পরিচিত।

সচরাচর উভয় দেশের রাষ্ট্রদূত এবং অনেক দূতাবাসকর্মী ব্যাপক কূটনৈতিক সুবিধাদি ভোগ করে থাকেন। কমনওয়েলথভূক্ত দেশসমূহের রাষ্ট্রদূতরা হাইকমিশনার নামে পরিচিত। রাষ্ট্রদূত নামেই হোক আর হাইকমিশনার নামেই হোক, দায়িত্ব তাদের একই।

দায়ীত্ব এবং কর্তব্যের প্রশ্নে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত সুইডিশ দূতাবাসের দায়িত্ব এবং কর্তব্য সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করতেই হুড়হুড় করে সব পেয়ে গেলাম। সুইডেনের বাইরে বসবাসরত সুইডিশদের সমস্ত দায়ভার, ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়ে সাহায্য করা, নাগরিকের নিরাপত্তার দিকে নজর রাখা, সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষা প্রশিক্ষণের সুযোগ সুবিধাসহ অন্যান্য বিষয়ের ওপর নজর রাখা এবং সকল ধরণের সাহায্যের হাত বাড়ানোই সুইডিশ দূতাবাসের কাজ।

সুইডেনের মত বাংলাদেশেরও অনেক দূতাবাস রয়েছে। কতগুলো দূতাবাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশজুড়ে আছে জনগণ সেটা সঠিকভাবে জানতে চায়। জানতে চায় দেশের কী পরিমাণ অর্থ এদের পেছনে প্রতিবছর খরচ হয় এবং তাদের কাজ কী। যদিও বাংলাদেশ দূতাবাসের একই ধরণের দায়িত্ব এবং কর্তব্য থাকা উচিত বলে আমি মনে করি।

আমি বহু বছর বাংলাদেশের বাইরে। জীবনে কোনোদিন বাংলাদেশ দূতাবাসে যাইনি এর আগে। শুনেছি মাঝে মধ্যে তাদের অনুষ্ঠান হয় কিন্তু কোনোদিন আমার সঙ্গে তারা যোগাযোগ করেননি। গত কয়েক বছর আগে আমার ছেলে-মেয়ে বাংলাদেশের হয়ে টেনিস খেলতে আগ্রহ প্রকাশ করায় আমি সরাসরি বাংলাদেশে টেনিস ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করি। পরে বাংলাদেশ থেকে স্টকহোম দূতাবাসে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে নির্দেশ দেয়ার ফলে তাদের সঙ্গে আমার প্রথম যোগাযোগ হয়।

দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ দূতাবাসের দায়িত্ব, কর্তব্য এবং দূতাবাসের অমানবিক ব্যবহারের কথা জেনে আমি কষ্ট পেয়েছি। একই সঙ্গে আমার বিবেকে যে রিফ্লেকশনের উদয় হয়েছে সেটা হলো বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা প্রবাসে পড়াশুনা করতে কী করণীয় বা বর্জনীয় সেটা কেন তারা সব সময় আমার থেকে জানতে চায়? কেন তারা বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করে না? কেনই বা ব্যবসায়িক বিষয়ে আমাকে সুইডেন এবং ইউরোপের বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করে? তাহলে দূতাবাস এসব দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ নাকি তাদের টু ডু লিস্টে এ কাজ পড়ে না?

পাসপোর্ট ইস্যু ছাড়া আর কী কী দায়িত্ব তাদের রয়েছে সেটা অনেক চেষ্টা করেও সঠিক তথ্য জানতে ব্যর্থ হয়েছি। শুধু পাসপোর্ট ইস্যুর কাজে যদি এতগুলো কর্মী নিয়োগ হয় এবং তাও যদি সঠিকভাবে কাজটি করতে ব্যর্থ হয় তবে কী দরকার দেশের অর্থ এভাবে নষ্ট করার?

দূতাবাস কর্তৃপক্ষ শুধু নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। তারা কীভাবে নিজ নিজ পরিবারকে নানা ধরণের সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দিবে সেটাই তাদের প্রধান কাজ এমনটি কথাও উঠেছে। আমি এও জানতে পেরেছি, অনেকে দূতাবাসের বাসা বাড়ি ভাড়া দেয়ার কারণে ধরা খেয়েছে যা সুইডেনের খবরের কাগজে পড়েছি। বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কি জানে না দূতাবাসের দায়িত্বের গাফিলতির কথা? তা যদি না জেনে থাকে তবে দয়া করে তদন্ত করুন এবং যে কাজের জন্য তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তা যেন তারা সঠিকভাবে পালন করে সে বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করতে নির্দেশ দিন।

দেশকে সোনার বাংলা করতে হলে সবাইকে সক্রিয়ভাবে মন প্রাণ দিয়ে কাজ করতে হবে। মানুষের জীবনের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। সেই স্বাধীনতার বিনিময়ে রাষ্ট্রদূত হয়ে আজ বাংলাদেশের দায়িত্ব নেবার সুযোগ হয়েছে। তাদের প্রতি এত বড় অবিচার, আর যাই হোক জাতি মেনে নিবে না ।

[লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন]

রেসলিং

কোটা সমাচার

বাজেট ২০২৪-২৫: তথ্যপ্রযুক্তি খাতের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের যাত্রা শুরু হোক এবার

সীমান্ত সড়ক পশ্চাদপদ পার্বত্য অঞ্চলকে উন্নয়নের স্রোতধারায় একীভূত করেছে

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১: উন্নত ও সমৃদ্ধ আগামীর স্বপ্ন পূরণে বাংলাদেশের মহাকাশ জয়

ছবি

নাটোরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য

রিলিফ

মুজিবনগরে স্বাধীনতার সূর্যোদয়

বঙ্গাব্দ প্রচলনের ইতিকথা

পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব

কেউতো অপেক্ষায় নেই

ফরগেট মি নট

ছবি

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বীমা শিল্পের গুরুত্ব

একুশে ফেব্রুয়ারি আত্মপরিচয়ের দিন

দিদি, আপা, “বু” খালা

হিজল-করচ-আড়াংবন

ছবি

শেখ হাসিনা, এক উৎসারিত আলোকধারা

মনমাঝি

সেই ইটনা

ছবি

আংকর ওয়াট : উন্নত সভ্যতার স্মৃতিচিহ্ন যেখানে

নিয়ত ও নিয়তি

হারিয়ে যাওয়া ট্রেন

টম সয়ার না রবিনহুড

ছবি

‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে, আমরা আছি তোমার সাথে’

বাংলাদেশ-জাপান সহযোগিতা স্মারক: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনন্য মাইলফলক

কুয়েতের জীবনযাত্রার সাতকাহন: পর্ব-১-বিয়ে

বিবেকের লড়াই

ছবি

ছবি যেন শুধু ছবি নয়

বাত ব্যথার কারণ ও আধুনিক চিকিৎসা

ছবি

স্বাধীন স্বদেশে মুক্ত বঙ্গবন্ধু

ছবি

মহান নেতার স্বভূমিতে ফিরে আসা

ছবি

মেট্রোরেল : প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী চিন্তার ফসল

ছবি

আমার মা

ডিজিটাল বাংলাদেশ: প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি

ছবি

৩ নভেম্বর: ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের ধারাবাহিকতা

tab

মুক্ত আলোচনা

রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশনের পরিবর্তন আশু প্রয়োজন

রহমান মৃধা

সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বর্তমান ডিজিটাল বিশ্বে যে ক্ষমতাশালী কম্পিউটার এসেছে যা মানুষের মস্তিষ্কের বুদ্ধিমত্তার মত অনেক অচিন্তনীয় পরিমাণ ডেটা সৃষ্টি করে নিউরাল নেটের সঙ্গে এমনভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে যে, এটা এখন মানুষের মত চিন্তাশক্তি, বুদ্ধি কিংবা বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা রাখে, যাকে আমরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলছি। কিছুদিন আগেও এটা ছিল দূর ভবিষ্যতের একটি কাল্পনিক বিষয়।

কিন্তু এখন বিষয়টি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হতে শুরু করেছে। এখন এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তো পিঁপড়ার মতো চার পায়ে পিল পিল করে হেটে আসেনি, এটাকে তৈরি করা হযেছে যাতে করে মানুষ জাতি ক্রমাগত ভাবে জ্ঞান ভান্ডারের শীর্শে উর্তীর্ণ হতে সক্ষম হয়। এমন একটি চ্যালেঞ্জিং সময়ে আমাদেরকে স্মার্ট হতে হবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে। আর সেটা করতে হলে যেমন আছি তেমন থাকলে চলবে না। সেক্ষেত্রে নতুন করে ভাবতে হবে, নতুন করে দেশের পরিকাঠামোর পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করতে হবে।

নতুন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং কূটনৈতিক সংগঠন নিয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরতে চাই স্মার্ট বাংলাদেশ তথা সোনার বাংলা গড়ার স্বার্থে।

রাষ্ট্রদূত একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবিশেষ, যিনি কোনো নির্দিষ্ট দেশের সরকারের পক্ষ থেকে অন্য কোনো স্বাধীন দেশ, সরকার কিংবা আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কূটনৈতিক কার্যসম্পাদনের উদ্দেশ্যে প্রেরিত হন। একজন রাষ্ট্রদূত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো দেশের প্রতিনিধিত্ব করে যাবতীয় রাষ্ট্রীয় কার্যাবলী সম্পন্ন করেন। সাধারণত তিনি নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য কাজ করেন। কর্মরত দেশের সরকারের নিকট নিজ দেশের কূটনীতি সম্পর্কিত বিষয়গুলো তুলে ধরেন এবং দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি বাস্তবায়নে সদা তৎপর থাকেন।

বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থার উপরের বর্ণনায় প্রভূত উন্নয়ন ঘটায় সরাসরি কিংবা মুহূর্তের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভবপর। তারপরও এটি সত্য যে, অনেক সমস্যা রয়েছে যেখানে সরাসরি যোগাযোগ অবশ্যই রক্ষা করতে হয়। এখানেই রাষ্ট্রদূতের উপযোগিতা ও প্রয়োজনীয়তা বিদ্যমান।

একজন রাষ্ট্রদূতকে বৈদেশিক রাষ্ট্রে অনির্ধারিতভাবে কয়েক বছর অবস্থান করতে হয় এবং তিনি ওই রাষ্ট্রের যাবতীয় আইন-কানুন, রীতি-নীতি, সমাজ ব্যবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে যথেষ্ট অবগত থাকেন। তিনি যেখানে কাজ করেন তা দূতাবাস নামে পরিচিত। সাধারণত দূতাবাস বৈদেশিক রাষ্ট্র কর্তৃক বরাদ্দকৃত এবং তা দেশটির রাজধানী এলাকায় অবস্থিত। তাকে কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড ও কর্তব্য কাজে সহযোগিতার জন্য একদল প্রশিক্ষিত ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়। কিছু উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি দূতাবাসের কর্মকর্তা নামে পরিচিত।

সচরাচর উভয় দেশের রাষ্ট্রদূত এবং অনেক দূতাবাসকর্মী ব্যাপক কূটনৈতিক সুবিধাদি ভোগ করে থাকেন। কমনওয়েলথভূক্ত দেশসমূহের রাষ্ট্রদূতরা হাইকমিশনার নামে পরিচিত। রাষ্ট্রদূত নামেই হোক আর হাইকমিশনার নামেই হোক, দায়িত্ব তাদের একই।

দায়ীত্ব এবং কর্তব্যের প্রশ্নে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত সুইডিশ দূতাবাসের দায়িত্ব এবং কর্তব্য সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করতেই হুড়হুড় করে সব পেয়ে গেলাম। সুইডেনের বাইরে বসবাসরত সুইডিশদের সমস্ত দায়ভার, ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়ে সাহায্য করা, নাগরিকের নিরাপত্তার দিকে নজর রাখা, সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষা প্রশিক্ষণের সুযোগ সুবিধাসহ অন্যান্য বিষয়ের ওপর নজর রাখা এবং সকল ধরণের সাহায্যের হাত বাড়ানোই সুইডিশ দূতাবাসের কাজ।

সুইডেনের মত বাংলাদেশেরও অনেক দূতাবাস রয়েছে। কতগুলো দূতাবাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশজুড়ে আছে জনগণ সেটা সঠিকভাবে জানতে চায়। জানতে চায় দেশের কী পরিমাণ অর্থ এদের পেছনে প্রতিবছর খরচ হয় এবং তাদের কাজ কী। যদিও বাংলাদেশ দূতাবাসের একই ধরণের দায়িত্ব এবং কর্তব্য থাকা উচিত বলে আমি মনে করি।

আমি বহু বছর বাংলাদেশের বাইরে। জীবনে কোনোদিন বাংলাদেশ দূতাবাসে যাইনি এর আগে। শুনেছি মাঝে মধ্যে তাদের অনুষ্ঠান হয় কিন্তু কোনোদিন আমার সঙ্গে তারা যোগাযোগ করেননি। গত কয়েক বছর আগে আমার ছেলে-মেয়ে বাংলাদেশের হয়ে টেনিস খেলতে আগ্রহ প্রকাশ করায় আমি সরাসরি বাংলাদেশে টেনিস ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করি। পরে বাংলাদেশ থেকে স্টকহোম দূতাবাসে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে নির্দেশ দেয়ার ফলে তাদের সঙ্গে আমার প্রথম যোগাযোগ হয়।

দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ দূতাবাসের দায়িত্ব, কর্তব্য এবং দূতাবাসের অমানবিক ব্যবহারের কথা জেনে আমি কষ্ট পেয়েছি। একই সঙ্গে আমার বিবেকে যে রিফ্লেকশনের উদয় হয়েছে সেটা হলো বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা প্রবাসে পড়াশুনা করতে কী করণীয় বা বর্জনীয় সেটা কেন তারা সব সময় আমার থেকে জানতে চায়? কেন তারা বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করে না? কেনই বা ব্যবসায়িক বিষয়ে আমাকে সুইডেন এবং ইউরোপের বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করে? তাহলে দূতাবাস এসব দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ নাকি তাদের টু ডু লিস্টে এ কাজ পড়ে না?

পাসপোর্ট ইস্যু ছাড়া আর কী কী দায়িত্ব তাদের রয়েছে সেটা অনেক চেষ্টা করেও সঠিক তথ্য জানতে ব্যর্থ হয়েছি। শুধু পাসপোর্ট ইস্যুর কাজে যদি এতগুলো কর্মী নিয়োগ হয় এবং তাও যদি সঠিকভাবে কাজটি করতে ব্যর্থ হয় তবে কী দরকার দেশের অর্থ এভাবে নষ্ট করার?

দূতাবাস কর্তৃপক্ষ শুধু নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। তারা কীভাবে নিজ নিজ পরিবারকে নানা ধরণের সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দিবে সেটাই তাদের প্রধান কাজ এমনটি কথাও উঠেছে। আমি এও জানতে পেরেছি, অনেকে দূতাবাসের বাসা বাড়ি ভাড়া দেয়ার কারণে ধরা খেয়েছে যা সুইডেনের খবরের কাগজে পড়েছি। বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কি জানে না দূতাবাসের দায়িত্বের গাফিলতির কথা? তা যদি না জেনে থাকে তবে দয়া করে তদন্ত করুন এবং যে কাজের জন্য তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তা যেন তারা সঠিকভাবে পালন করে সে বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করতে নির্দেশ দিন।

দেশকে সোনার বাংলা করতে হলে সবাইকে সক্রিয়ভাবে মন প্রাণ দিয়ে কাজ করতে হবে। মানুষের জীবনের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। সেই স্বাধীনতার বিনিময়ে রাষ্ট্রদূত হয়ে আজ বাংলাদেশের দায়িত্ব নেবার সুযোগ হয়েছে। তাদের প্রতি এত বড় অবিচার, আর যাই হোক জাতি মেনে নিবে না ।

[লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন]

back to top