alt

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

প্রাচীন স্থাপত্যশৈলী হেমনগর জমিদার বাড়ি

হাবিবুর রহমান

: বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
image

হেমনগর জমিদার বাড়ি

অনেক দিন ধরে যাওয়ার ইচ্ছে। সময় হয়ে উঠছিল না। অবশেষে ১০ সেপ্টেম্বর সকালে বের হলাম। গন্তব্য টাঙ্গাইলের গোপালপুরের হেমনগর জমিদার বাড়ি। সাথে আরও দুজন। ছুটে চললাম। মাঝপথে বৃষ্টি। যাওয়ার পথে গ্রাম পল্লী প্রকৃতি দেখে দারুণ মুগ্ধ হলাম। বিলের পাড়ে শিবজাল দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য অবিরাম। বলে রাখি- গোপালপুর কিন্তু মধুপুরের থেকে নিচু এলাকা। মধুপুর বন্যামুক্ত হবার কারণে কৃষি ফসলের বৈচিত্র্য বেশি।

যাই হোক ছুটে চলছি। পথে পথে পাটকাঠি শুকাতে দেখা। অনেক দিন দেখি না। ফড়িং ধরার কথা মনে পড়ে গেল। ছোট বেলায় শোলাতে ফড়িং বসত, আর আমরা কজন নিয়মিত স্কুল থেকে এসে ফড়িং ধরতাম। এখন আমার গ্রামে সোনালি আঁশের চাষ হয় না।

এভাবে পৌঁছে গেলাম হেমনগর। জমিদার বাড়ির প্রবেশ পথেই হেমনগর কলেজের প্রধান ফটক। বাইক নিয়ে ভেতরে গেলাম। ঘুরে ঘুরে দেখে মুগ্ধ হলাম। শুধু আমিই নই, যে কেউ মুগ্ধ হবার কথা। জমিদার বাড়ির বিশাল আয়তনে বাড়ি, পুকুর, কলেজ, মাঠ সব মিলিয়ে দারুন উপভোগ্য বিষয়।

স্থানীয়রা জানালেন, হেমনগর নামটি হয় মূলত হেম রাজার নাম অনুসারে। তিনি ছিলেন হেমনগরের জমিদার। জমিদারি প্রথা না থাকলেও রয়েছে জমিদারি আমলের নানা স্থাপনা, সান বাঁধানো ঘাট, বিশাল মাঠ, সবুজ প্রকৃতিসহ নানা স্মৃতি।

প্রতিদিন দেশের নানাপ্রান্ত থেকে ছুটে আসেন ভ্রমণ পিপাসুরা। দেখেন প্রাচীণ স্থাপত্যের সৌন্দর্যময় নিদর্শন। বিশাল জায়গাজুড়ে এখনও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই জমিদার বাড়ি; যা ভ্রমণ পিপাসুদের নজর কাড়ে।

হেমনগর জমিদার বাড়িটি টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা শহর থেকে ১৪-১৫ কিলোমিটার পশ্চিমে হেমনগর গ্রামে অবস্থিত। অষ্টাদশ শতাব্দীর নিপুণ কারুকাজে খচিত হেমবাবুর জমিদার বাড়িটি আজও সেই প্রাচীন ঐতিহ্য নিয়ে মাথা উঁচু করে স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে।

প্রায় ১২৪ বছর আগে পুখুরিয়া পরগণার প্রভাবশালী জমিদার হেমচন্দ্র চৌধুরী নিপুণ শৈলীর এই বাড়িটি তৈরি করেন। তিনি ছিলেন মধুপুর উপজেলার আমবাড়ীয়ার জমিদারের উত্তরসূরি। হেমচন্দ্রের দাদা পদ্মলোচন রায় ব্রিটিশ আইনের মাধ্যমে আমবাড়ীয়ার জমিদারি প্রাপ্ত হন। প্রথমে ১৮৮০ সালে হেমচন্দ্র তার আমবাড়ীয়ার জমিদার স্থানান্তরিত করে সুবর্ণখালিতে নির্মাণ করেন। পরে রাজবাড়ীটি যমুনা গর্ভে বিলীন হওয়ায় ১৮৯০ সালে একটি নতুন দ্বিতল রাজপ্রাসাদ নির্মাণ করেন, যা বর্তমানে জমিদার বাড়ি হিসেবে খ্যাত।

নিপুণ কারুকাজের অনিন্দ্য সুন্দর জমিদার বাড়িটি পরীর দালান নামেও স্থানীয়ভাবে সমধিক পরিচিত। রাজবাড়ির রাজসিক পরীর ভাস্কর্যের কারণেই এঞ্জেল হাউজ বা পরীর দালান হিসেবেও পরিচিত।

জ্যামিতিক এবং ফ্লোরাল নকশায় কারুকার্যমতি হেমনগর জমিদার বাড়িটি দিল্লি ও কলকাতার কারিগর দ্বারা তৈরি করা হয়। বিশাল জায়গাজুড়ে দ্বিতল জমিদারবাড়িটির প্রথম অংশে দ্বিতলা দরবার হল, পেছনে অন্দর মহল, বাড়ির সামনে রয়েছে মাঠ, জমিদার হেমচন্দ্রের দরবার ঘর, পেছনে রয়েছে বড় দুটি পুকুর। জমিদার বাড়ির আশপাশে আরো ৭টি সুরম্য ভবন আছে যেগুলো জমিদার হেমচন্দ্র চৌধুরীর তিন বোন ও চার ছেলেমেয়ের বাড়ি। আর এই এঞ্জেল হাউজের ভেতরে বিশাল বড় একটা শানবাধানো পুকুর আর দশটি কুয়ো আছে। পুরো বাড়িটি নিপুণ হাতের ছোঁয়া ফোটে আছে শৈল্পিক; যা সবার নজর কাড়ে।

হেমচন্দ্র চৌধুরীর তিন বোনসহ সভ্রান্ত পরিবারের সবাই ছিলেন উচ্চশিক্ষিত এবং মার্জিত রুচির কারণে পুরো পূর্ব বঙ্গজুড়ে সুনাম ছিল। হেমচন্দ্রের পরিবারে এক ডজন সদস্য ছিলেন; ব্রিটিশ প্রশাসণে চাকরি করতেন তারা। হেমচন্দ্র তার বাবার মৃত্যুর পর জমিদারির দায়িত্ব পেলেন এবং তিনি তা বিস্তৃত করলেন। টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ মিলিয়ে তার জমিদারির এলাকা ছিল। তিনি শিক্ষা, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্যসেবা এবং যোগাযোগ খাতে বিভিন্ন স্থাপনা প্রতিষ্ঠার জন্য জমি ও অর্থ প্রদান করতেন। তার দানকৃত জমিতে গড়ে উঠে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, ভূমি, অফিসসহ নানা প্রতিষ্ঠান।

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা বাতিল হওয়ার পর তিনি কলকাতায় চলে যান । হেমনগরে আর কখনই ফেরেননি। ১৯১৫ সালে ভারতের ব্যানারসে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

১৯৪৭ সালের পর সবাই ভারতে চলে যান। পরে স্থানীয়রা জমিদার বাড়ি ঘেঁষে ১৯৭৯ সালে ‘হেমনগর খন্দকার আসাদুজ্জামান ডিগ্রি কলেজ’ নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়। বাড়িটি কলেজের অধীনে থাকলেও বহু বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে না। হেমচন্দ্রের বংশধর কমল গাঙ্গুলীর কন্যা নন্দিত সঙ্গীত শিল্পী ড. পৌলমী গাঙ্গুলী ২০১৮ সালে পুর্বপুরুষের ভিটেমাটি দেখার জন্য কলকাতা থেকে হেমনগরে আসেন।

সারা দিনের বেড়ানো জমিদার বাড়ি দেখা নিয়ে আমাদের চমৎকার অভিজ্ঞতা। প্রাচীন সময়ের নিপুণ কারুকাজ দারুণ শিল্পের দারুণ উপলব্ধি। জমিদার বেঁচে না থাকলেও তার কর্ম ও স্মৃতিই তাকে যুগ যুগ বাঁচিয়ে রাখবে।

[লেখক : প্রাবন্ধিক]

স্বর্ণের মোহ ও মানবিক দ্বন্দ্ব

ভালোবাসার দেহধারণ: বড়দিনের তাৎপর্য

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট

বিনা-ভাড়ার ট্রেনযাত্রা

ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে এশিয়া

ছবি

নামে ইসলামী, কাজে আবু জাহেল!

জলবায়ু পরিবর্তন: স্বাস্থ্যঝুঁকি

ছবি

অস্থির পেঁয়াজের বাজার: আমদানি কি সত্যিই সমাধান?

মূল্যবৃদ্ধির ঘেরাটোপ: সংকটাক্রান্ত পরিবার ও সামাজিক রূপান্তর

বায়দূষণে অকালমৃত্যু

লাশের বদলে লাশই যদি চুড়ান্ত হয়, তবে রাষ্ট্রের দরকার কী?

ভিক্ষাবৃত্তি যেখানে অন্যতম পেশা

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

আদিবাসীদের ভূমি অধিকার ও নিরাপত্তা সংকট

“মুনীর চৌধুরীর কবর...”

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

জলবায়ু সংকট ও খাদ্য নিরাপত্তা

স্বাধীন তদন্ত কমিশন দাবির নেপথ্যে কি দায়মুক্তি?

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

প্রহর গুনি কোন আশাতে!

বিজয়ের রক্তাক্ত সূর্য ও আমাদের ঋণের হিসাব

বিজয় দিবস: নতুন প্রজন্মের রাষ্ট্রচিন্তার দিকদর্শন

ছবি

আমাদের বিজয়ের অন্তর্নিহিত বার্তা

প্রাণিসম্পদ: দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি

জমির জরিপ: ন্যায়বিচার প্রসঙ্গ

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

উন্নয়নের আড়ালে রোগীর ভোগান্তি: আস্থা সংকটে স্বাস্থ্যসেবা

ছবি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: অমিত শক্তির উৎস

ছবি

বেগম রোকেয়া এখনো জাগ্রত

পশ্চিমবঙ্গ: বামপন্থীদের ‘বাংলা বাঁচাও’-এর ডাক

সবার বাংলাদেশ কবে প্রতিষ্ঠিত হবে?

বিদেশি বিনিয়োগ : প্রয়োজন আইনের শাসন ও সামাজিক স্থিতি

চিকিৎসা যখন অসহনীয় ব্যয়, তখন প্রতিবাদই ন্যায়

মস্কোর কৌশলগত পুনর্গঠন

“সব শিয়ালের এক রা’ মারা গেল কুমিরের ছা”

ছবি

বিচূর্ণ দর্পণের মুখ

tab

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

প্রাচীন স্থাপত্যশৈলী হেমনগর জমিদার বাড়ি

হাবিবুর রহমান

image

হেমনগর জমিদার বাড়ি

বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

অনেক দিন ধরে যাওয়ার ইচ্ছে। সময় হয়ে উঠছিল না। অবশেষে ১০ সেপ্টেম্বর সকালে বের হলাম। গন্তব্য টাঙ্গাইলের গোপালপুরের হেমনগর জমিদার বাড়ি। সাথে আরও দুজন। ছুটে চললাম। মাঝপথে বৃষ্টি। যাওয়ার পথে গ্রাম পল্লী প্রকৃতি দেখে দারুণ মুগ্ধ হলাম। বিলের পাড়ে শিবজাল দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য অবিরাম। বলে রাখি- গোপালপুর কিন্তু মধুপুরের থেকে নিচু এলাকা। মধুপুর বন্যামুক্ত হবার কারণে কৃষি ফসলের বৈচিত্র্য বেশি।

যাই হোক ছুটে চলছি। পথে পথে পাটকাঠি শুকাতে দেখা। অনেক দিন দেখি না। ফড়িং ধরার কথা মনে পড়ে গেল। ছোট বেলায় শোলাতে ফড়িং বসত, আর আমরা কজন নিয়মিত স্কুল থেকে এসে ফড়িং ধরতাম। এখন আমার গ্রামে সোনালি আঁশের চাষ হয় না।

এভাবে পৌঁছে গেলাম হেমনগর। জমিদার বাড়ির প্রবেশ পথেই হেমনগর কলেজের প্রধান ফটক। বাইক নিয়ে ভেতরে গেলাম। ঘুরে ঘুরে দেখে মুগ্ধ হলাম। শুধু আমিই নই, যে কেউ মুগ্ধ হবার কথা। জমিদার বাড়ির বিশাল আয়তনে বাড়ি, পুকুর, কলেজ, মাঠ সব মিলিয়ে দারুন উপভোগ্য বিষয়।

স্থানীয়রা জানালেন, হেমনগর নামটি হয় মূলত হেম রাজার নাম অনুসারে। তিনি ছিলেন হেমনগরের জমিদার। জমিদারি প্রথা না থাকলেও রয়েছে জমিদারি আমলের নানা স্থাপনা, সান বাঁধানো ঘাট, বিশাল মাঠ, সবুজ প্রকৃতিসহ নানা স্মৃতি।

প্রতিদিন দেশের নানাপ্রান্ত থেকে ছুটে আসেন ভ্রমণ পিপাসুরা। দেখেন প্রাচীণ স্থাপত্যের সৌন্দর্যময় নিদর্শন। বিশাল জায়গাজুড়ে এখনও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই জমিদার বাড়ি; যা ভ্রমণ পিপাসুদের নজর কাড়ে।

হেমনগর জমিদার বাড়িটি টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা শহর থেকে ১৪-১৫ কিলোমিটার পশ্চিমে হেমনগর গ্রামে অবস্থিত। অষ্টাদশ শতাব্দীর নিপুণ কারুকাজে খচিত হেমবাবুর জমিদার বাড়িটি আজও সেই প্রাচীন ঐতিহ্য নিয়ে মাথা উঁচু করে স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে।

প্রায় ১২৪ বছর আগে পুখুরিয়া পরগণার প্রভাবশালী জমিদার হেমচন্দ্র চৌধুরী নিপুণ শৈলীর এই বাড়িটি তৈরি করেন। তিনি ছিলেন মধুপুর উপজেলার আমবাড়ীয়ার জমিদারের উত্তরসূরি। হেমচন্দ্রের দাদা পদ্মলোচন রায় ব্রিটিশ আইনের মাধ্যমে আমবাড়ীয়ার জমিদারি প্রাপ্ত হন। প্রথমে ১৮৮০ সালে হেমচন্দ্র তার আমবাড়ীয়ার জমিদার স্থানান্তরিত করে সুবর্ণখালিতে নির্মাণ করেন। পরে রাজবাড়ীটি যমুনা গর্ভে বিলীন হওয়ায় ১৮৯০ সালে একটি নতুন দ্বিতল রাজপ্রাসাদ নির্মাণ করেন, যা বর্তমানে জমিদার বাড়ি হিসেবে খ্যাত।

নিপুণ কারুকাজের অনিন্দ্য সুন্দর জমিদার বাড়িটি পরীর দালান নামেও স্থানীয়ভাবে সমধিক পরিচিত। রাজবাড়ির রাজসিক পরীর ভাস্কর্যের কারণেই এঞ্জেল হাউজ বা পরীর দালান হিসেবেও পরিচিত।

জ্যামিতিক এবং ফ্লোরাল নকশায় কারুকার্যমতি হেমনগর জমিদার বাড়িটি দিল্লি ও কলকাতার কারিগর দ্বারা তৈরি করা হয়। বিশাল জায়গাজুড়ে দ্বিতল জমিদারবাড়িটির প্রথম অংশে দ্বিতলা দরবার হল, পেছনে অন্দর মহল, বাড়ির সামনে রয়েছে মাঠ, জমিদার হেমচন্দ্রের দরবার ঘর, পেছনে রয়েছে বড় দুটি পুকুর। জমিদার বাড়ির আশপাশে আরো ৭টি সুরম্য ভবন আছে যেগুলো জমিদার হেমচন্দ্র চৌধুরীর তিন বোন ও চার ছেলেমেয়ের বাড়ি। আর এই এঞ্জেল হাউজের ভেতরে বিশাল বড় একটা শানবাধানো পুকুর আর দশটি কুয়ো আছে। পুরো বাড়িটি নিপুণ হাতের ছোঁয়া ফোটে আছে শৈল্পিক; যা সবার নজর কাড়ে।

হেমচন্দ্র চৌধুরীর তিন বোনসহ সভ্রান্ত পরিবারের সবাই ছিলেন উচ্চশিক্ষিত এবং মার্জিত রুচির কারণে পুরো পূর্ব বঙ্গজুড়ে সুনাম ছিল। হেমচন্দ্রের পরিবারে এক ডজন সদস্য ছিলেন; ব্রিটিশ প্রশাসণে চাকরি করতেন তারা। হেমচন্দ্র তার বাবার মৃত্যুর পর জমিদারির দায়িত্ব পেলেন এবং তিনি তা বিস্তৃত করলেন। টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ মিলিয়ে তার জমিদারির এলাকা ছিল। তিনি শিক্ষা, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্যসেবা এবং যোগাযোগ খাতে বিভিন্ন স্থাপনা প্রতিষ্ঠার জন্য জমি ও অর্থ প্রদান করতেন। তার দানকৃত জমিতে গড়ে উঠে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, ভূমি, অফিসসহ নানা প্রতিষ্ঠান।

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা বাতিল হওয়ার পর তিনি কলকাতায় চলে যান । হেমনগরে আর কখনই ফেরেননি। ১৯১৫ সালে ভারতের ব্যানারসে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

১৯৪৭ সালের পর সবাই ভারতে চলে যান। পরে স্থানীয়রা জমিদার বাড়ি ঘেঁষে ১৯৭৯ সালে ‘হেমনগর খন্দকার আসাদুজ্জামান ডিগ্রি কলেজ’ নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়। বাড়িটি কলেজের অধীনে থাকলেও বহু বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে না। হেমচন্দ্রের বংশধর কমল গাঙ্গুলীর কন্যা নন্দিত সঙ্গীত শিল্পী ড. পৌলমী গাঙ্গুলী ২০১৮ সালে পুর্বপুরুষের ভিটেমাটি দেখার জন্য কলকাতা থেকে হেমনগরে আসেন।

সারা দিনের বেড়ানো জমিদার বাড়ি দেখা নিয়ে আমাদের চমৎকার অভিজ্ঞতা। প্রাচীন সময়ের নিপুণ কারুকাজ দারুণ শিল্পের দারুণ উপলব্ধি। জমিদার বেঁচে না থাকলেও তার কর্ম ও স্মৃতিই তাকে যুগ যুগ বাঁচিয়ে রাখবে।

[লেখক : প্রাবন্ধিক]

back to top