মোশারফ হোসেন
আমাদের রয়েছে এক ঐতিহ্যবাহী অতীত ও এক সংগ্রামী বর্তমান, নারী সেখানে বিজয়া ও অগ্রগামী পথিক। ব্রিটিশামল থেকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম। যেমন- ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মেধা, সাহসিকতা তথা অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে নারীর অসামান্য অবদান, অনুকরণীয়, বরণীয়, অবিস্মরণীয়। সব ধরনের জড়তা, কুসংস্কার থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতাচেতা ও একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে নারীরা নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠার জন্য নিরন্তর সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।
নারী সমাজকে উন্নয়নের তথা ক্ষমতায়নের মূল স্রোতধারা থেকে বিচ্ছিন্ন রেখে কোনভাবেই সমাজের পরিবর্তন সম্ভব নয়। নারীর অসীম শক্তি সম্ভাবনা, বিকাশের পথ সহজ হবে তখনই যখন উন্নয়নের মূলধারায় তার প্রাপ্য অধিকারটুকু বাস্তবায়িত হবে। এক্ষেত্রে নারীর প্রতিভা গঠনমূলক চিন্তা, নৈতিকতা, যোগ্যতা, মানবিকতা, সামাজিকতা, দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হবে। তার অর্জনের মধ্য দিয়ে জাতির কল্যাণ দেশ ও দশের উন্নয়নে নারীর অপার সম্ভাবনা ক্ষমতায়নে নারী শিক্ষার ভূমিকাকে কোনভাবেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।
দেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই নারী। মোট ভোটার ও অর্ধেকই নারী। নারীর হাত দিয়েই কৃষির তথা শিল্পের সূচনা হয়েছিল। তুলনামূলক বিচারে পুরুষের তুলনায় নারীর ক্ষমতায়ন অনেকাংশেই বেড়েছে। সামাজিক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, উন্নয়ন অবদানে নারীরা অবাক করে দিয়েছে। এরপর ও সামাজিক সাংস্কৃতিক এমনকি মনস্তাত্ত্বিক ক্ষেত্রে নারীর অবস্থানকে সুদৃঢ় করতে হবে। সংবিধানে নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে ২৮(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, রাষ্ট্র ও জনজীবনের সর্বস্তরে নারী পুরুষের সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার প্রকৃত শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবে ব্যক্তিজীবন সব বাধা উপেক্ষা করে নারীর ক্ষমতায়নের জায়গাটি হবে শক্ত ও মজবুত। সাধারণভাবে বলতে গেলে ক্ষমতায়ন হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণ, প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়ন এবং প্রভাবিত করার অধিকার ক্ষমতা ও সুযোগ অর্জন। নারীর ক্ষমতায়ন বলতে বুঝায় ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যক্তি অধিকার ও রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিক সর্বজনীনতা সংরক্ষণ করে আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে নারীর স্বাধীনতা ও সার্বভৌম সিদ্ধান্ত গ্রহণের যে ক্ষমতা তাকেই নারীর ক্ষমতায়ন বলে। নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে জাতিসংঘ ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে ক্ষমতায়ন একটি প্রক্রিয়া যার দ্বারা নারী কল্যাণে সমতা এবং সম্পদ আহরণের সমান সুযোগ অর্জনের লক্ষ্য সামনে নিয়ে জেন্ডার বৈষম্য অনুধাবন, চিহ্নিতকরণ ও বিলোপ সাধনের জন্য একজোট হয়।
সংবিধানের ১৭(ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে- পরিকল্পনার প্রাথমিক নীতি হিসেবে একটি অভিন্ন গণমুখী এবং সর্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষা লাভের অধিকারকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া আছে। শিক্ষাই উন্নয়নের কার্যকরী হাতিয়ার হিসেবে নারীর শিক্ষা গ্রহণ, অর্জন, মুক্তির পথ, ক্ষমতায়ন সহজ স্বাভাবিক হবে। সঠিক শিক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে। প্রকৃত শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে ব্যক্তিসত্তা জেগে উঠবে, বিচার-বিবেচনা তথা নৈতিক শক্তির বলে বলীয়ান হয়ে নারীর ব্যক্তিত্ব বিকাশ তথা ক্ষমতায়নের নানা ক্ষেত্র তৈরি হবে। দায়িত্ব সচেতন মানুষ হিসেবে সমাজের কল্যাণে অবদান রাখতে সক্ষম হবে। নারীর পরিপূর্ণ ব্যক্তিসত্তা, মানবিক মূল্যবোধ নীতি, আদর্শ জেগে ওঠবে। শিক্ষা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মৌলক অধিকার কর্তব্য সচেতন হয়ে করণীয় সম্পর্কে বুঝতে সক্ষম হবে এবং কার্যকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে। শিক্ষার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় দক্ষতা, আত্মমর্যাদা, আত্ম বিশ্বাস তার ভেতরের গুণগত পরিবর্তন, যোগ্যতাকে শাণিত করতে পারবে। নারী কর্মসংস্থান, উৎপাদন, উৎপাদনমুখী কর্মতৎপরতা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান, কলা, শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি, প্রযুক্তি ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে দক্ষতা, ন্যায্যতা, স্বনির্ভরতার ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।
নারী সমাজকে শিক্ষিত করে তুলতে হবে। তাদের মানুষ হিসেবে মর্যাদা দিতে হবে। নারী তাদের মর্যাদা, অধিকার নিয়ে জেগে উঠুক। নারী তাদের মর্যাদা অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জেগে উঠুক- এটিই আমাদের প্রত্যাশা।
[লেখক : প্রভাষক, সমাজবিজ্ঞান, সরকারি ইস্পাহানী কলেজ, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা]
মোশারফ হোসেন
মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
আমাদের রয়েছে এক ঐতিহ্যবাহী অতীত ও এক সংগ্রামী বর্তমান, নারী সেখানে বিজয়া ও অগ্রগামী পথিক। ব্রিটিশামল থেকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম। যেমন- ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মেধা, সাহসিকতা তথা অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে নারীর অসামান্য অবদান, অনুকরণীয়, বরণীয়, অবিস্মরণীয়। সব ধরনের জড়তা, কুসংস্কার থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতাচেতা ও একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে নারীরা নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠার জন্য নিরন্তর সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।
নারী সমাজকে উন্নয়নের তথা ক্ষমতায়নের মূল স্রোতধারা থেকে বিচ্ছিন্ন রেখে কোনভাবেই সমাজের পরিবর্তন সম্ভব নয়। নারীর অসীম শক্তি সম্ভাবনা, বিকাশের পথ সহজ হবে তখনই যখন উন্নয়নের মূলধারায় তার প্রাপ্য অধিকারটুকু বাস্তবায়িত হবে। এক্ষেত্রে নারীর প্রতিভা গঠনমূলক চিন্তা, নৈতিকতা, যোগ্যতা, মানবিকতা, সামাজিকতা, দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হবে। তার অর্জনের মধ্য দিয়ে জাতির কল্যাণ দেশ ও দশের উন্নয়নে নারীর অপার সম্ভাবনা ক্ষমতায়নে নারী শিক্ষার ভূমিকাকে কোনভাবেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।
দেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই নারী। মোট ভোটার ও অর্ধেকই নারী। নারীর হাত দিয়েই কৃষির তথা শিল্পের সূচনা হয়েছিল। তুলনামূলক বিচারে পুরুষের তুলনায় নারীর ক্ষমতায়ন অনেকাংশেই বেড়েছে। সামাজিক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, উন্নয়ন অবদানে নারীরা অবাক করে দিয়েছে। এরপর ও সামাজিক সাংস্কৃতিক এমনকি মনস্তাত্ত্বিক ক্ষেত্রে নারীর অবস্থানকে সুদৃঢ় করতে হবে। সংবিধানে নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে ২৮(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, রাষ্ট্র ও জনজীবনের সর্বস্তরে নারী পুরুষের সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার প্রকৃত শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবে ব্যক্তিজীবন সব বাধা উপেক্ষা করে নারীর ক্ষমতায়নের জায়গাটি হবে শক্ত ও মজবুত। সাধারণভাবে বলতে গেলে ক্ষমতায়ন হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণ, প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়ন এবং প্রভাবিত করার অধিকার ক্ষমতা ও সুযোগ অর্জন। নারীর ক্ষমতায়ন বলতে বুঝায় ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যক্তি অধিকার ও রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিক সর্বজনীনতা সংরক্ষণ করে আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে নারীর স্বাধীনতা ও সার্বভৌম সিদ্ধান্ত গ্রহণের যে ক্ষমতা তাকেই নারীর ক্ষমতায়ন বলে। নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে জাতিসংঘ ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে ক্ষমতায়ন একটি প্রক্রিয়া যার দ্বারা নারী কল্যাণে সমতা এবং সম্পদ আহরণের সমান সুযোগ অর্জনের লক্ষ্য সামনে নিয়ে জেন্ডার বৈষম্য অনুধাবন, চিহ্নিতকরণ ও বিলোপ সাধনের জন্য একজোট হয়।
সংবিধানের ১৭(ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে- পরিকল্পনার প্রাথমিক নীতি হিসেবে একটি অভিন্ন গণমুখী এবং সর্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষা লাভের অধিকারকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া আছে। শিক্ষাই উন্নয়নের কার্যকরী হাতিয়ার হিসেবে নারীর শিক্ষা গ্রহণ, অর্জন, মুক্তির পথ, ক্ষমতায়ন সহজ স্বাভাবিক হবে। সঠিক শিক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে। প্রকৃত শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে ব্যক্তিসত্তা জেগে উঠবে, বিচার-বিবেচনা তথা নৈতিক শক্তির বলে বলীয়ান হয়ে নারীর ব্যক্তিত্ব বিকাশ তথা ক্ষমতায়নের নানা ক্ষেত্র তৈরি হবে। দায়িত্ব সচেতন মানুষ হিসেবে সমাজের কল্যাণে অবদান রাখতে সক্ষম হবে। নারীর পরিপূর্ণ ব্যক্তিসত্তা, মানবিক মূল্যবোধ নীতি, আদর্শ জেগে ওঠবে। শিক্ষা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মৌলক অধিকার কর্তব্য সচেতন হয়ে করণীয় সম্পর্কে বুঝতে সক্ষম হবে এবং কার্যকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে। শিক্ষার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় দক্ষতা, আত্মমর্যাদা, আত্ম বিশ্বাস তার ভেতরের গুণগত পরিবর্তন, যোগ্যতাকে শাণিত করতে পারবে। নারী কর্মসংস্থান, উৎপাদন, উৎপাদনমুখী কর্মতৎপরতা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান, কলা, শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি, প্রযুক্তি ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে দক্ষতা, ন্যায্যতা, স্বনির্ভরতার ক্ষেত্রে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।
নারী সমাজকে শিক্ষিত করে তুলতে হবে। তাদের মানুষ হিসেবে মর্যাদা দিতে হবে। নারী তাদের মর্যাদা, অধিকার নিয়ে জেগে উঠুক। নারী তাদের মর্যাদা অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জেগে উঠুক- এটিই আমাদের প্রত্যাশা।
[লেখক : প্রভাষক, সমাজবিজ্ঞান, সরকারি ইস্পাহানী কলেজ, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা]