alt

opinion » post-editorial

রম্যগদ্য : ‘দুনিয়ার বাঙালি এক হও”

জাঁ-নেসার ওসমান

: শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

‘দুনিয়ার বাঙালি এক হও!! ঢং মারার আর যায়গা পান না! দুনিয়ার বাঙালি এক হও!!’ ‘কেন ভাই, দুনিয়ার বাঙালি এক হলে, তোর জ্বলে ক্যেন??’ ‘দুনিয়ার বাঙালি এক হও। ফাজলামি করার আর জায়গা পাইলেন না মিয়া। একবার তো দুনিয়ার মজদুর এক হও এক হও, করে মুখে ফ্যেনা তুললেন। পীট সিগারের ইন্টারন্যাশনাল, ‘উই শ্যাল ওভার কাম, উই শ্যাল ওভার কাম সাম ডে...’ ফল কী হোলো। সকলি গরলী ভেল। এখন আবার শুরু করছেন, দুনিয়ার বাঙালি এক হও !!’ ‘কেন, পীট সিগারের গানতো দু’হাজার আট সালে বারাক ওবামা আমেরিকার প্রথম আফ্রিকান প্রেসিডেন্ট হয়ে প্রমাণ করলেন যে, আফ্রিকানরা একদিন জয় করবেই এবং হাতে হাত মিলিয়ে সাদা-কালো সবাই একসঙ্গে কাজ করবে। কেউ কাউকে ঘৃণা করবে না।’ ‘উরী, বাবারে কেউ কাউকে ঘৃণা করবে না!! উ লালা, আফ্রিক্যান র্জজ ফ্লয়েডের ঘেডির মইধ্যে সাদা পুলিশ পাড়াদিয়া মাইরা ফালাইলো!! কেউ কাউকে ঘৃণা করবে না!! বলতে লজ্জা করে. না।’ ‘আরে বাবা, তুই যেখানে যতই নেগেটিভ দেখিসনা ক্যেনো, কিন্তু সবাই এক না হলে বড় কোনো কাজ করা যায় না। ছোটবেলায় পড়িস নাই, একের বোঝা দশের লাঠি। তারপর একতাই বল। তাই বলছিলাম দুনিয়ার বাঙালি এক হও। সবাই এক হলে আমাদের সমাজটা অনেক সুন্দর হতো।’ ‘ও আমার সৃষ্টিকর্তারে, সবাই এক হলে সমাজটা সুন্দর হতো। আরে মিয়া সবাই এক হওয়ার কথা বাদ দেন, আপনে নোয়াখালী আর বরিশালরে এক করতে পারেন কিনা দেখি? তারপর কয়েন দুনিয়ার বাঙালি এক হও।’ ‘হেঁঃ হেঁঃ কী যে বলিস, নোয়াখালী আর বরিশাল, সব বাঙালি এক হলে ওরাও এক হবে।’ ‘শোনেন আপনারে একটা সত্যি ঘটনা বলি। একবার এক বরিশালের পুরোহিত, তার পূজা আর্চা করার পর ভক্তদের মাঝে গল্পের ছলে জ্ঞান বিতরণের জন্য একটা গল্প ফাঁদলেন।’ ‘এইনা বললি সত্য ঘটনা এখন আবার বলছিস গল্প ফাঁদলো!!’ ‘আরে ভাই আমিতো আগেই বলেছি, এটা একটা সত্য গল্প। আরে গল্পটা শোনেনইনা!!’ ‘আচ্ছা বল তোর সঞ্জীব পুরোহিতের সত্যগল্প।’ ‘পুরোহিত বাবা গল্প বলার আগে বললেন, ‘এখানে যদি কোনো শ্রদ্ধেয় নোয়াখালীর শ্রোতা থাকেন তাহলে আমি আমার গল্প বলবো না। তখন সব ভক্তগোষ্ঠী এক বাক্যে বলে উঠলেন, জ্বী’না, জ্বী’না, এখানে কোনো চাটখিল, জয়াগ, লক্ষ্মীপুর বা নোয়াখালীর লোক নেই। পুরোহিত সানন্দচিত্তে বয়ান শুরু করলেন, ‘আমি কামরুপ কামক্ষায় যে বোধী বৃক্ষের নিচে সাধনা করতাম, সেই বৃক্ষ ছিল অলৌকিক বৃক্ষ। এই বৃক্ষ রাতের বেলা আঁজলা আঁজলা জোৎ¯œা পান করত। আর সেই বৃক্ষের যে পাতা জলে পড়তো সেটা তাৎক্ষণিক কুম্ভ¢ীরে রূপ নিত। আর যে পাতা ডাঙায় পড়ত সেটা ব্যাঘ্রে রূপান্তরিত হয়ে বিকট গর্জন করে জঙ্গলে প্রস্থান করত।’ তখন ভক্তকুল থেকে এক যুবা-পুরুষ হাত তুলে, বলল, সঞ্জীব পুরোহিত স্যার, আমার একটা প্রশ্ন আছে। সঙ্গে সঙ্গে সঞ্জীব পুরোহিত বিপুল আগ্রহে বললেন, বল বৎস বল, তুমি কী জানতে চাও? তখন ওই যুবা-পুরুষ জিজ্ঞেস করলেন, আচ্ছা পুরোহিত বাবা, আমার বড্ড জানতে ইচ্ছে করে, অলৌকিক বৃক্ষের যে পাতা অর্ধেক জলে এবং অর্ধেক স্থলে পড়ে সে পাতা কোন প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়?? সঞ্জীব পুরোহিত বড় বেদনার্ত কণ্ঠে বলে উঠলেন, আমি তখনি বলে ছিলাম এখানে নোয়াখালীর লোক থাকলে আমি কোনো শাস্ত্র কথা বয়ান করবো না। এই হচ্ছে আপনার নোয়াখালী আর বরিশালের সখ্যতা। সেখানে আপনে মিয়া কন দুনিয়ার বাঙালি এক হও। বাঙালি এক হবে হাগলনি কোনো!!’ ‘কেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে, ১৯৭১’ এসব বাঙালি এক হয়নি?? অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেননি!!” “নিশ্চয় এক হয়েছিলো, মুক্তিযুদ্ধ করেছিলো। কিন্তু তখন প্রেক্ষাপট ছিলো ভিন্ন।” “ীভন্ন মানে কি? সবাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে, শোষণের বিরুদ্ধে,স্বৈরাচারি শাষকের বিরুদ্ধে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবাইকে, সব বাঙালিকে এক করেছিলেন।’ ‘ভাইরে তখন সব বাঙালি এক হয়েছিল কারণ, তখন বাঙালিদের পাঞ্জাবিরা বড় কোনো ব্যবসা করতে দিত না, অফিসে পিওন, আর্দালি বড়জোর করনিক ছাড়া বাঙালিকে আর বড় কোনো পদে পদায়ন করত না, সেনাবাহিনীতে বাঙালিদের নিত না, হাজার প্রতিভা থাকলেও খেলাধুলায় বাঙালিদের জাতীয় দলে সুযোগ দিত না। বিদেশের সব স্কলারশিপ অবাঙালি ছাত্রদের জন্য রাখা হতো, নিত্যপণ্যের দাম দুই পাকিস্তানে দুরকম। পূর্ব-পাকিস্তানে জিনিসের দাম পশ্চিম-পাকিস্তানের চেয়ে বেশি এইসব কারণে তখন ব্যবসায়ী, কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র জনতাÑ সব বাঙালি এক হয়েছিলো।’ ‘তো! এখন সব বাঙালির এক হতে দোষ কী??’ ‘এখন সব বাঙালি কেন এক হবে?? যারা হাজার হাজার কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছে, তারা, তারপর যেসব ফুটবলের লাইন্সম্যানরা প্রতিদিন লাইনে হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে আনছে, বড় বড় প্রজেক্টের হাজার কোটি ডলার সুইস ব্যাংকে জমা রাখছে, যারা প্রতিনিয়ত পাপিয়াদের সঙ্গে পিয়া পিয়া বলে রং তামাশা করছে, যে পিওনটি ঢাকায় সাততলা বাড়ি বানিয়েছে, যে লোকটি করোনাকালে মাল কামিয়েছে, তারা কেন তোমার সঙ্গে এক হবে? তাদের কি ঠ্যেকা তোমার সঙ্গে এক হয়ে সমাজকে সুন্দর করবে???’ ‘তার মানে তুমি কী বলতে চাও, বাঙালি আর কখনো এক হবে না, দুনিয়ার বাঙালি সব বিচ্ছিন্ন হয়ে বসবাস করবে?? হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বলেছিলেন, ‘কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ আপনি লিখেছেন, সাত কোটি বাঙালিরে হে বঙ্গ জননী, রেখেছো বাঙালি করে মানুষ করোনি। কবিগুরু আপনার কথা মিথ্যা, প্রমাণ হয়ে গেছে, আমার বাঙালি আজ মানুষ হয়েছে...’ এই কি তোদের মানুষ হওয়া!! তোরা কি আর কোনোদিনও এক হবি না ২৫ মার্চের রাত্রির মতো???

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

শারদীয় পূজার দিনলিপি

ঋণের জন্য আত্মহত্যা, ঋণ নিয়েই চল্লিশা

জাকসু নির্বাচন ও হট্টগোল: আমাদের জন্য শিক্ষণীয় কী?

নরসুন্দর পেশার গুরুত্ব ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন

বিভাগভিত্তিক এমপিআর নির্বাচন পদ্ধতি

প্ল্যাটফর্ম সমাজে বাংলাদেশ: জ্ঞানের ভবিষ্যৎ কার হাতে?

আনন্দবেদনার হাসপাতাল: সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার বাস্তবতা

ছবি

ভিন্ন ধরনের নির্বাচন, ভিন্ন ধরনের ফল

বেসরকারি খাতে সিআইবি’র যাত্রা: ঋণ ব্যবস্থার নতুন দিগন্ত

স্বাস্থ্যসেবায় মানবিকতা প্রতিষ্ঠা হোক

ছবি

নেপালে সরকার পতন ও বামপন্থীদের ভবিষ্যৎ

ডাকসু নির্বাচন ও সংস্কারপ্রয়াস: রাজনৈতিক চিন্তার নতুন দিগন্ত

নির্বাচন কি সব সমস্যার সমাধান

জিতিয়া উৎসব

ছবি

অলির পর নেপাল কোন পথে?

রম্যগদ্য: “মরেও বাঁচবি নারে পাগলা...”

অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শ্রীপুর পৌরসভা

ভূরিভোজ, উচ্ছেদ এবং আদিবাসী পাহাড়িয়া

অনলাইন সংস্কৃতিতে হাস্যরসের সমাজবিজ্ঞান

মামলাজট নিরসনে দেওয়ানি কার্যবিধির সংস্কার

বাস্তব মস্কো বনাম বিভ্রান্ত ইউরোপ

ছাত্রসংসদ নির্বাচন ও ভবিষ্যৎ ছাত্ররাজনীতির গতিপ্রকৃতি

সড়ক দুর্ঘটনা: কারও মৃত্যু সাধারণ, কারও মৃত্যু বিশেষ

ঐকমত্য ছাড়াও কিছু সংস্কার সম্ভব

আবার বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম : সংকটে সাধারণ মানুষ

ডায়াবেটিস রোগীর সেবা ও জনসচেতনতা

ভিন্ন ধরনের ডাকসু নির্বাচন

ডাকসু নির্বাচন : পেছনে ফেলে আসি

প্রসঙ্গ : এলডিসি তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ

“কোপা চাটিগাঁ...”

ই-কমার্স হতে পারে প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন

ভারত-চীনের নতুন সমীকরণ

সাইবার যুগে মানুষের মর্যাদা ও নিরাপত্তা

ছবি

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

একজন নাগরিকের অভিমানী বিদায় ও রাষ্ট্রের নৈতিক সংকট

tab

opinion » post-editorial

রম্যগদ্য : ‘দুনিয়ার বাঙালি এক হও”

জাঁ-নেসার ওসমান

শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

‘দুনিয়ার বাঙালি এক হও!! ঢং মারার আর যায়গা পান না! দুনিয়ার বাঙালি এক হও!!’ ‘কেন ভাই, দুনিয়ার বাঙালি এক হলে, তোর জ্বলে ক্যেন??’ ‘দুনিয়ার বাঙালি এক হও। ফাজলামি করার আর জায়গা পাইলেন না মিয়া। একবার তো দুনিয়ার মজদুর এক হও এক হও, করে মুখে ফ্যেনা তুললেন। পীট সিগারের ইন্টারন্যাশনাল, ‘উই শ্যাল ওভার কাম, উই শ্যাল ওভার কাম সাম ডে...’ ফল কী হোলো। সকলি গরলী ভেল। এখন আবার শুরু করছেন, দুনিয়ার বাঙালি এক হও !!’ ‘কেন, পীট সিগারের গানতো দু’হাজার আট সালে বারাক ওবামা আমেরিকার প্রথম আফ্রিকান প্রেসিডেন্ট হয়ে প্রমাণ করলেন যে, আফ্রিকানরা একদিন জয় করবেই এবং হাতে হাত মিলিয়ে সাদা-কালো সবাই একসঙ্গে কাজ করবে। কেউ কাউকে ঘৃণা করবে না।’ ‘উরী, বাবারে কেউ কাউকে ঘৃণা করবে না!! উ লালা, আফ্রিক্যান র্জজ ফ্লয়েডের ঘেডির মইধ্যে সাদা পুলিশ পাড়াদিয়া মাইরা ফালাইলো!! কেউ কাউকে ঘৃণা করবে না!! বলতে লজ্জা করে. না।’ ‘আরে বাবা, তুই যেখানে যতই নেগেটিভ দেখিসনা ক্যেনো, কিন্তু সবাই এক না হলে বড় কোনো কাজ করা যায় না। ছোটবেলায় পড়িস নাই, একের বোঝা দশের লাঠি। তারপর একতাই বল। তাই বলছিলাম দুনিয়ার বাঙালি এক হও। সবাই এক হলে আমাদের সমাজটা অনেক সুন্দর হতো।’ ‘ও আমার সৃষ্টিকর্তারে, সবাই এক হলে সমাজটা সুন্দর হতো। আরে মিয়া সবাই এক হওয়ার কথা বাদ দেন, আপনে নোয়াখালী আর বরিশালরে এক করতে পারেন কিনা দেখি? তারপর কয়েন দুনিয়ার বাঙালি এক হও।’ ‘হেঁঃ হেঁঃ কী যে বলিস, নোয়াখালী আর বরিশাল, সব বাঙালি এক হলে ওরাও এক হবে।’ ‘শোনেন আপনারে একটা সত্যি ঘটনা বলি। একবার এক বরিশালের পুরোহিত, তার পূজা আর্চা করার পর ভক্তদের মাঝে গল্পের ছলে জ্ঞান বিতরণের জন্য একটা গল্প ফাঁদলেন।’ ‘এইনা বললি সত্য ঘটনা এখন আবার বলছিস গল্প ফাঁদলো!!’ ‘আরে ভাই আমিতো আগেই বলেছি, এটা একটা সত্য গল্প। আরে গল্পটা শোনেনইনা!!’ ‘আচ্ছা বল তোর সঞ্জীব পুরোহিতের সত্যগল্প।’ ‘পুরোহিত বাবা গল্প বলার আগে বললেন, ‘এখানে যদি কোনো শ্রদ্ধেয় নোয়াখালীর শ্রোতা থাকেন তাহলে আমি আমার গল্প বলবো না। তখন সব ভক্তগোষ্ঠী এক বাক্যে বলে উঠলেন, জ্বী’না, জ্বী’না, এখানে কোনো চাটখিল, জয়াগ, লক্ষ্মীপুর বা নোয়াখালীর লোক নেই। পুরোহিত সানন্দচিত্তে বয়ান শুরু করলেন, ‘আমি কামরুপ কামক্ষায় যে বোধী বৃক্ষের নিচে সাধনা করতাম, সেই বৃক্ষ ছিল অলৌকিক বৃক্ষ। এই বৃক্ষ রাতের বেলা আঁজলা আঁজলা জোৎ¯œা পান করত। আর সেই বৃক্ষের যে পাতা জলে পড়তো সেটা তাৎক্ষণিক কুম্ভ¢ীরে রূপ নিত। আর যে পাতা ডাঙায় পড়ত সেটা ব্যাঘ্রে রূপান্তরিত হয়ে বিকট গর্জন করে জঙ্গলে প্রস্থান করত।’ তখন ভক্তকুল থেকে এক যুবা-পুরুষ হাত তুলে, বলল, সঞ্জীব পুরোহিত স্যার, আমার একটা প্রশ্ন আছে। সঙ্গে সঙ্গে সঞ্জীব পুরোহিত বিপুল আগ্রহে বললেন, বল বৎস বল, তুমি কী জানতে চাও? তখন ওই যুবা-পুরুষ জিজ্ঞেস করলেন, আচ্ছা পুরোহিত বাবা, আমার বড্ড জানতে ইচ্ছে করে, অলৌকিক বৃক্ষের যে পাতা অর্ধেক জলে এবং অর্ধেক স্থলে পড়ে সে পাতা কোন প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়?? সঞ্জীব পুরোহিত বড় বেদনার্ত কণ্ঠে বলে উঠলেন, আমি তখনি বলে ছিলাম এখানে নোয়াখালীর লোক থাকলে আমি কোনো শাস্ত্র কথা বয়ান করবো না। এই হচ্ছে আপনার নোয়াখালী আর বরিশালের সখ্যতা। সেখানে আপনে মিয়া কন দুনিয়ার বাঙালি এক হও। বাঙালি এক হবে হাগলনি কোনো!!’ ‘কেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে, ১৯৭১’ এসব বাঙালি এক হয়নি?? অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেননি!!” “নিশ্চয় এক হয়েছিলো, মুক্তিযুদ্ধ করেছিলো। কিন্তু তখন প্রেক্ষাপট ছিলো ভিন্ন।” “ীভন্ন মানে কি? সবাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে, শোষণের বিরুদ্ধে,স্বৈরাচারি শাষকের বিরুদ্ধে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবাইকে, সব বাঙালিকে এক করেছিলেন।’ ‘ভাইরে তখন সব বাঙালি এক হয়েছিল কারণ, তখন বাঙালিদের পাঞ্জাবিরা বড় কোনো ব্যবসা করতে দিত না, অফিসে পিওন, আর্দালি বড়জোর করনিক ছাড়া বাঙালিকে আর বড় কোনো পদে পদায়ন করত না, সেনাবাহিনীতে বাঙালিদের নিত না, হাজার প্রতিভা থাকলেও খেলাধুলায় বাঙালিদের জাতীয় দলে সুযোগ দিত না। বিদেশের সব স্কলারশিপ অবাঙালি ছাত্রদের জন্য রাখা হতো, নিত্যপণ্যের দাম দুই পাকিস্তানে দুরকম। পূর্ব-পাকিস্তানে জিনিসের দাম পশ্চিম-পাকিস্তানের চেয়ে বেশি এইসব কারণে তখন ব্যবসায়ী, কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র জনতাÑ সব বাঙালি এক হয়েছিলো।’ ‘তো! এখন সব বাঙালির এক হতে দোষ কী??’ ‘এখন সব বাঙালি কেন এক হবে?? যারা হাজার হাজার কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছে, তারা, তারপর যেসব ফুটবলের লাইন্সম্যানরা প্রতিদিন লাইনে হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে আনছে, বড় বড় প্রজেক্টের হাজার কোটি ডলার সুইস ব্যাংকে জমা রাখছে, যারা প্রতিনিয়ত পাপিয়াদের সঙ্গে পিয়া পিয়া বলে রং তামাশা করছে, যে পিওনটি ঢাকায় সাততলা বাড়ি বানিয়েছে, যে লোকটি করোনাকালে মাল কামিয়েছে, তারা কেন তোমার সঙ্গে এক হবে? তাদের কি ঠ্যেকা তোমার সঙ্গে এক হয়ে সমাজকে সুন্দর করবে???’ ‘তার মানে তুমি কী বলতে চাও, বাঙালি আর কখনো এক হবে না, দুনিয়ার বাঙালি সব বিচ্ছিন্ন হয়ে বসবাস করবে?? হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বলেছিলেন, ‘কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ আপনি লিখেছেন, সাত কোটি বাঙালিরে হে বঙ্গ জননী, রেখেছো বাঙালি করে মানুষ করোনি। কবিগুরু আপনার কথা মিথ্যা, প্রমাণ হয়ে গেছে, আমার বাঙালি আজ মানুষ হয়েছে...’ এই কি তোদের মানুষ হওয়া!! তোরা কি আর কোনোদিনও এক হবি না ২৫ মার্চের রাত্রির মতো???

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

back to top