alt

উপ-সম্পাদকীয়

আউশ ধান : পরিবেশ ও কৃষকবান্ধব ফসল

আবদুর রহমান

: মঙ্গলবার, ০২ এপ্রিল ২০২৪

আউশ ধানের চাষ বাংলাদেশের প্রাচীনতম চাষের অন্যতম। আউশ শব্দের অর্থ আগাম। বাংলা ‘আশু’ শব্দ থেকে আউশ শব্দের উৎপত্তি। দ্রুত (আশু) ফসল উৎপন্ন হওয়ার কারণে এ ধানের নামকরণ করা হয়েছে আউশ।

খনার বচনে আছে ‘আউশ ধানের চাষ, লাগে তিন মাস, কোল পাতলা ডাগর গুছি, লক্ষ্মী বলে হেথায় আছি’ অর্থাৎ আউশ ধান চাষে তিন মাস লাগে। ফাঁক ফাঁক করে লাগালে গোছা মোটা হয় এবং ফলনও বেশি হয়। কথায় আছে- ‘জ্যৈষ্ঠে খরা ধানে ভরা’। অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠ মাসে একটু বৃষ্টি পেলেই আউশের জমি সবুজ ধানে ভরে যায়। রোপা আমন ও বোরো ধানের মতো আউশের যতœ নিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। আউশ ধান বেশ পরিবেশবান্ধব এবং কৃষকবান্ধবও বটে! তাই আউশ ধানের আবাদ সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।

এক সময় বাংলাদেশে ব্যাপক এলাকায় আউশ ধানের আবাদ হতো। আশির দশক থেকে বোরো ধানের চাষ বাড়ার কারণে আউশের আবাদ ক্রমশ কমে গেছে। এমনকি আউশ ধানের অনেক জাত ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ষাট দশকে উৎপাদনের দিক থেকে রোপা আমন ছিল প্রধান মৌসুম, আউশ ছিল দ্বিতীয়, তৃতীয় অবস্থানে ছিল বোরো, বোনা আমন ছিল চতুর্থ অবস্থানে। বর্তমানে বোরো প্রথম, রোপা আমন দ্বিতীয়, তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আউশ। আর বোনা আমন তার আদি অবস্থান ধরে রেখেছে। জনশ্রুতি ছিল যে আউশের ভাত অধিক পুষ্টিকর ও পেটে অনেকক্ষণ থাকে অর্থাৎ হজম হতে সময় লাগে।

আমাদের দেশে রবি মৌসুমে বোরো ধান চাষে সেচকাজে পানির চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়; যা মেটাতে ভূ-গর্ভস্থ পানি অধিক উত্তোলন করা হয়। ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর ব্যাপক চাপ পড়ে ও ভৌগোলিক পরিবেশ বিঘিœত হয়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি কেজি চাল উৎপাদনে ২০০০-২৫০০ লিটার পানির প্রয়োজন; যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাই ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমাতে ও ভৌগোলিক পরিবেশ অক্ষুণœ রাখার স্বার্থে বোরো আবাদে আবাদি এলাকা যথাসম্ভব কমিয়ে পানি সাশ্রয়ী আউশ ধানের আবাদ বৃদ্ধি করা একান্ত আবশ্যক।

আউশ ধান চাষের অনেক সুবিধা রয়েছে। আউশ ধানে সালোক সংশ্লেষণ বেশি হয়, জীবনকাল কম এবং পানি সাশ্রয়ী। এ ধানের আবাদ বৃষ্টিনির্ভর। তাই আউশ ধান চাষে বৃষ্টি ছাড়া অতিরিক্ত পানির তেমন দরকার হয় না। এজন্য এ ধান উৎপাদনে সেচ খরচ সাশ্রয় হয়। আউশ ধান চাষের সময় মৌসুমের শুরুসহ পুরো সময় ধরে প্রায়ই বৃষ্টিপাত হয়। বিধায় ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের প্রয়োজনও নগণ্য অর্থাৎ জ্বালানি খরচ নেই বললেই চলে।

তদুপরি আউশ ধানের জাতগুলো স্বল্প জীবনকাল বিশিষ্ট হওয়ায় বায়ুম-লে বৈশ্বিক উষ্ণায়নে দায়ী (গ্রিন হাউস অ্যাফেক্ট) মিথেন গ্যাস অপেক্ষাকৃত কম পরিমাণে উদগিরণ করে থাকে।

অন্যদিকে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের প্রয়োজনীয়তা না থাকায় আউশ ধানের চাষ পরিবেশবান্ধব।

কৃষি উপকরণ তথা সার, সেচ ও বালাইনাশকের প্রয়োজনীয়তা বোরোর চেয়ে কম।

শ্রমিক খরচ কম।

আউশ ধান আবাদে চাষ খরচও কম।

আউশ মৌসুমে সুস্থ-সবল চারা উৎপন্ন করা অপেক্ষাকৃত সহজ।

উক্ত মৌসুমে ধান উৎপাদনের জন্য মোটামুটি উপযুক্ত তাপমাত্রা বিরাজমান থাকায় সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে এ ধান কেটে ঘরে তোলা যায়।

এ মৌসুমে উৎপাদিত ধানের ভালো দাম পাওয়া যায় এবং প্রাপ্ত খড়ে গোখাদ্যের অভাব দূর হওয়ার বিরাট সুযোগ রয়েছে।

এ ধানের চালের গুণগতমান ভালো এবং চাহিদা রয়েছে।

বোনা ও রোপা উভয় পদ্ধতিতে আউশ ধানের চাষ করা যায়। আগে আউশ আবাদ স্থানীয় জাত নির্ভর ছিল। স্থানীয় জাতের গড় ফলন ছিল হেক্টরপ্রতি ২.০০ টন থেকে ২.৩৫ টন পর্যন্ত। ব্যতিক্রম ছিল কেবল কটকতারা, যার হেক্টরপ্রতি ফলন ছিল ৩.৩৫ টন। তবে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল জাতের আউশ ধানের মধ্যে বোনা হিসেবে বিআর-২০, বি.আর-২১, বি.আর-২৪, ব্রিধান-২৭, ব্রিধান-৪২, বিধ্রান-৪৩, ব্রিধান-৬৫ ও ব্রিধান -৮৩ এবং রোপা হিসেবে বিআর-২৬, ব্রিধান-২৭, ব্রিধান-৪৮, ব্রিধান-৫৫, ব্রিধান-৮২, ব্রিধান-৮৫, ব্রিধান-৯৮, ব্রিধান-১০৬, বিনা ধান-১৯ ও বিনা ধান-২১ এসব জাতগুলোর ফলন কটকতারার চেয়ে অনেক বেশি।

আবাদি জমির সীমাবদ্ধতা থাকার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে বোরো চাষের আওতায় অপেক্ষাকৃত কিছু উঁচু জমি রবি ফসল বিশেষ করে ডাল, তেল বীজ ও মসলা উৎপাদনের জন্য ছেড়ে দিলে সে জমিই আবার রোপা আউশের আওতায় আনার মাধ্যমে ধানের মোট উৎপাদন অক্ষুণœ রেখেও খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা এবং কৃষকের আয় বৃদ্ধি করা সম্ভব। ডাল, তেলবীজ ও মসলা উৎপাদনে সাধারণত পানি কম লাগে। এতে কৃষি আরও পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী হয়ে উঠবে। ফলে শস্য নিবিড়তা ও বহুমুখীকরণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

ধান আমাদের দেশে খাদ্য নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কাজেই সবার সহযোগিতা ও প্রচেষ্টার ফলে পরিবেশবান্ধব আউশ ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা আরও টেকসই ও সুনিশ্চিত হবে বলে আশা করা যায়।

[লেখক : উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (পিআরএল), উপজেলা কৃষি অফিস, রূপসা, খুলনা]

বিয়ের কিছু লোকাচার ও অপব্যয় প্রসঙ্গে

ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পকে রক্ষা করুন

তরুণদের দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি সম্ভব

শিশুমৃত্যু রোধে করণীয় কী

সিগমুন্ড ফ্রয়েড ও মনঃসমীক্ষণ

ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ও বাস্তবতা

স্বামী কিংবা স্ত্রীর পরবর্তী বিয়ের আইনি প্রতিকার ও বাস্তবতা

তথ্য-উপাত্তের গরমিলে বাজারে অস্থিরতা, অর্থনীতিতে বিভ্রান্তি

দেশে অফশোর ব্যাংকিংয়ের গুরুত্ব

ইরানে কট্টরপন্থার সাময়িক পরাজয়

পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থার ভবিষ্যৎ কী

ক্ষমতার সাতকাহন

জলবায়ু সংকট : আমাদের উপলব্ধি

নারী-পুরুষ চুড়ি পরি, দেশের অন্যায় দূর করি!

ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার সবার

ছবি

সাধারণ মানুষেরা বড় অসাধারণ

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও কারিগরি শিক্ষা

মাদক রুখতে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক প্রতিরোধ

পারিবারিক অপরাধপ্রবণতা ও কয়েকটি প্রশ্ন

ডারউইনকে খুঁজে পেয়েছি

চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ফসল উৎপাদন করা জরুরি

পিএসসি প্রশ্নফাঁসের দায় এড়াবে কীভাবে

এত উন্নয়নের পরও বাসযোগ্যতায় কেন পিছিয়েই থাকছে ঢাকা

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য কি কেউ নেই?

জলবায়ু রক্ষায় কাজের কাজ কি কিছু হচ্ছে

অধরার হাতে সমর্পিত ক্ষমতা

প্রসঙ্গ : কোটাবিরোধী আন্দোলন

রম্যগদ্য : যে করিবে চালাকি, বুঝিবে তার জ্বালা কী

একটি মিথ্যা ধর্ষণ মামলার পরিণতি

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা কেন শ্রেণীকক্ষের বাইরে

মেধা নিয়ে কম মেধাবীর ভাবনা

প্রজাতন্ত্রের সেবক কেন ফ্রাঙ্কেনস্টাইন বনে যান

ছবি

বাইডেন কি দলে বোঝা হয়ে যাচ্ছেন?

ছবি

দুই যুগের পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

সাপ উপকারী প্রাণীও বটে!

ছবি

বাস্তববাদী রাজনীতিক জ্যোতি বসু

tab

উপ-সম্পাদকীয়

আউশ ধান : পরিবেশ ও কৃষকবান্ধব ফসল

আবদুর রহমান

মঙ্গলবার, ০২ এপ্রিল ২০২৪

আউশ ধানের চাষ বাংলাদেশের প্রাচীনতম চাষের অন্যতম। আউশ শব্দের অর্থ আগাম। বাংলা ‘আশু’ শব্দ থেকে আউশ শব্দের উৎপত্তি। দ্রুত (আশু) ফসল উৎপন্ন হওয়ার কারণে এ ধানের নামকরণ করা হয়েছে আউশ।

খনার বচনে আছে ‘আউশ ধানের চাষ, লাগে তিন মাস, কোল পাতলা ডাগর গুছি, লক্ষ্মী বলে হেথায় আছি’ অর্থাৎ আউশ ধান চাষে তিন মাস লাগে। ফাঁক ফাঁক করে লাগালে গোছা মোটা হয় এবং ফলনও বেশি হয়। কথায় আছে- ‘জ্যৈষ্ঠে খরা ধানে ভরা’। অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠ মাসে একটু বৃষ্টি পেলেই আউশের জমি সবুজ ধানে ভরে যায়। রোপা আমন ও বোরো ধানের মতো আউশের যতœ নিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। আউশ ধান বেশ পরিবেশবান্ধব এবং কৃষকবান্ধবও বটে! তাই আউশ ধানের আবাদ সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।

এক সময় বাংলাদেশে ব্যাপক এলাকায় আউশ ধানের আবাদ হতো। আশির দশক থেকে বোরো ধানের চাষ বাড়ার কারণে আউশের আবাদ ক্রমশ কমে গেছে। এমনকি আউশ ধানের অনেক জাত ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ষাট দশকে উৎপাদনের দিক থেকে রোপা আমন ছিল প্রধান মৌসুম, আউশ ছিল দ্বিতীয়, তৃতীয় অবস্থানে ছিল বোরো, বোনা আমন ছিল চতুর্থ অবস্থানে। বর্তমানে বোরো প্রথম, রোপা আমন দ্বিতীয়, তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আউশ। আর বোনা আমন তার আদি অবস্থান ধরে রেখেছে। জনশ্রুতি ছিল যে আউশের ভাত অধিক পুষ্টিকর ও পেটে অনেকক্ষণ থাকে অর্থাৎ হজম হতে সময় লাগে।

আমাদের দেশে রবি মৌসুমে বোরো ধান চাষে সেচকাজে পানির চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়; যা মেটাতে ভূ-গর্ভস্থ পানি অধিক উত্তোলন করা হয়। ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর ব্যাপক চাপ পড়ে ও ভৌগোলিক পরিবেশ বিঘিœত হয়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি কেজি চাল উৎপাদনে ২০০০-২৫০০ লিটার পানির প্রয়োজন; যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাই ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমাতে ও ভৌগোলিক পরিবেশ অক্ষুণœ রাখার স্বার্থে বোরো আবাদে আবাদি এলাকা যথাসম্ভব কমিয়ে পানি সাশ্রয়ী আউশ ধানের আবাদ বৃদ্ধি করা একান্ত আবশ্যক।

আউশ ধান চাষের অনেক সুবিধা রয়েছে। আউশ ধানে সালোক সংশ্লেষণ বেশি হয়, জীবনকাল কম এবং পানি সাশ্রয়ী। এ ধানের আবাদ বৃষ্টিনির্ভর। তাই আউশ ধান চাষে বৃষ্টি ছাড়া অতিরিক্ত পানির তেমন দরকার হয় না। এজন্য এ ধান উৎপাদনে সেচ খরচ সাশ্রয় হয়। আউশ ধান চাষের সময় মৌসুমের শুরুসহ পুরো সময় ধরে প্রায়ই বৃষ্টিপাত হয়। বিধায় ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের প্রয়োজনও নগণ্য অর্থাৎ জ্বালানি খরচ নেই বললেই চলে।

তদুপরি আউশ ধানের জাতগুলো স্বল্প জীবনকাল বিশিষ্ট হওয়ায় বায়ুম-লে বৈশ্বিক উষ্ণায়নে দায়ী (গ্রিন হাউস অ্যাফেক্ট) মিথেন গ্যাস অপেক্ষাকৃত কম পরিমাণে উদগিরণ করে থাকে।

অন্যদিকে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের প্রয়োজনীয়তা না থাকায় আউশ ধানের চাষ পরিবেশবান্ধব।

কৃষি উপকরণ তথা সার, সেচ ও বালাইনাশকের প্রয়োজনীয়তা বোরোর চেয়ে কম।

শ্রমিক খরচ কম।

আউশ ধান আবাদে চাষ খরচও কম।

আউশ মৌসুমে সুস্থ-সবল চারা উৎপন্ন করা অপেক্ষাকৃত সহজ।

উক্ত মৌসুমে ধান উৎপাদনের জন্য মোটামুটি উপযুক্ত তাপমাত্রা বিরাজমান থাকায় সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে এ ধান কেটে ঘরে তোলা যায়।

এ মৌসুমে উৎপাদিত ধানের ভালো দাম পাওয়া যায় এবং প্রাপ্ত খড়ে গোখাদ্যের অভাব দূর হওয়ার বিরাট সুযোগ রয়েছে।

এ ধানের চালের গুণগতমান ভালো এবং চাহিদা রয়েছে।

বোনা ও রোপা উভয় পদ্ধতিতে আউশ ধানের চাষ করা যায়। আগে আউশ আবাদ স্থানীয় জাত নির্ভর ছিল। স্থানীয় জাতের গড় ফলন ছিল হেক্টরপ্রতি ২.০০ টন থেকে ২.৩৫ টন পর্যন্ত। ব্যতিক্রম ছিল কেবল কটকতারা, যার হেক্টরপ্রতি ফলন ছিল ৩.৩৫ টন। তবে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল জাতের আউশ ধানের মধ্যে বোনা হিসেবে বিআর-২০, বি.আর-২১, বি.আর-২৪, ব্রিধান-২৭, ব্রিধান-৪২, বিধ্রান-৪৩, ব্রিধান-৬৫ ও ব্রিধান -৮৩ এবং রোপা হিসেবে বিআর-২৬, ব্রিধান-২৭, ব্রিধান-৪৮, ব্রিধান-৫৫, ব্রিধান-৮২, ব্রিধান-৮৫, ব্রিধান-৯৮, ব্রিধান-১০৬, বিনা ধান-১৯ ও বিনা ধান-২১ এসব জাতগুলোর ফলন কটকতারার চেয়ে অনেক বেশি।

আবাদি জমির সীমাবদ্ধতা থাকার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে বোরো চাষের আওতায় অপেক্ষাকৃত কিছু উঁচু জমি রবি ফসল বিশেষ করে ডাল, তেল বীজ ও মসলা উৎপাদনের জন্য ছেড়ে দিলে সে জমিই আবার রোপা আউশের আওতায় আনার মাধ্যমে ধানের মোট উৎপাদন অক্ষুণœ রেখেও খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা এবং কৃষকের আয় বৃদ্ধি করা সম্ভব। ডাল, তেলবীজ ও মসলা উৎপাদনে সাধারণত পানি কম লাগে। এতে কৃষি আরও পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী হয়ে উঠবে। ফলে শস্য নিবিড়তা ও বহুমুখীকরণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

ধান আমাদের দেশে খাদ্য নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কাজেই সবার সহযোগিতা ও প্রচেষ্টার ফলে পরিবেশবান্ধব আউশ ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা আরও টেকসই ও সুনিশ্চিত হবে বলে আশা করা যায়।

[লেখক : উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (পিআরএল), উপজেলা কৃষি অফিস, রূপসা, খুলনা]

back to top