alt

opinion » post-editorial

দুই যুগের পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

আসাদুজ্জামান মিয়া

: মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০২৪
image

৮ জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবির) ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। আজ থেকে দুই যুগ আগে এই দিনে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পটুয়াখালীতে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার প্রসারে পবিপ্রবি প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন সরকার (১৯৯৬-২০০১) দক্ষিণবঙ্গে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছিল ১৯৯৯ সালে। সেই সময় দেশের ১২টি বৃহত্তর জেলায় ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনার গ্রহণ করা হয় এবং প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নের জন্য ৬টি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করা হয় যার মধ্যে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পটি ছিল একটি।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পটুয়াখালীর দুমকিতে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার একটি বর্ণাঢ্য ইতিহাস আছে। সৃষ্টির শুরুতে এটি একটি বেসরকারি কৃষি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পটুয়াখালী কৃষি কলেজ নামে ১৯৭৯-৮০ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের অধিভুক্ত হয়ে যাত্রা শুরু করে।

এরপর প্রায় দুই দশক পর ২০০০ সালের ৮ জুলাই তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এই কৃষি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা করেন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০০১ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে পটুয়াখালী কৃষি কলেজ বিলুপ্ত করে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। ২০০১ সালের অক্টোবরে জাতীয় নির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হলে সাময়িক সময়ের জন্য স্থবির হয়ে পরে দক্ষিনবঙ্গের প্রথম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান পবিপ্রবির শিক্ষা কার্যক্রম অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অবশেষে আনন্দের সংবাদ আসলো। ২০০২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তব রূপ লাভ করল।

পটুয়াখালী জেলার প্রশ্চাৎপদ দুমকি উপজেলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তৎকালীন স্থানীয় অনেক গন্যমান্য মানুষের প্রত্যক্ষ ভুমিকা ছিল। তাদের অবদান অনস্বীকার্য। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি দুমকি উপজেলার মানুষের অনেক ত্যাগ তিতীক্ষার ফসল। পবিপ্রবি এখন দক্ষিণবঙ্গের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। ১৯৭৯-৮০ সালে কৃষি কলেজ ও ২০০০ সালে কেবলমাত্র কৃষি অনুষদ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টি ৮ টি অনুষদের অধীনে ৯টি বিষয়ে ¯œাতক ডিগ্রি প্রদান করছে। বর্তমানে পবিপ্রবির কলেবর অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে বর্তমানে প্রায় ৫ হাজার ছাত্রছাত্রী, ২৫০ জন শিক্ষক, ২০০ জন কর্মকর্তা ও ৫০০ জনের বেশি কর্মচারী রয়েছেন। পবিপ্রবি দেশ ও জাতির সময়োপযোগী চাহিদা পূরণে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মানসম্মত গ্র্যাজুয়েট তৈরিতে ভূমিকা রাখছে। তাছাড়া মাস্টার্স ও পিএইচডি গবেষনায় পবিপ্রবির এগিয়ে যাচ্ছে।

পবিপ্রবির অনেক শিক্ষক গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। দেশের সেরা গবেষকদের তালিকায় পবিপ্রবির শিক্ষকরা স্থান পাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতা আমাদেরকে রক্ষা করতে হবে। পবিপ্রবিকে মানসম্মত ও প্রযুক্তিনির্ভর উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা হিসেবে বিনির্মাণে আমাদের সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।

বিগত দুই দশকে বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার ব্যাপক প্রসার হলেও এখনো গুণগতমান নিশ্চিত করা যায়নি। তাই পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধির জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও গবেষণায় আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় শিক্ষাদান করতে হবে। শিক্ষা ও গবেষণায় অনেক দূর এগিয়ে নিতে যেতে হবে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হবে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

[লেখক : সাধারণ সম্পাদক, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি]

শারদীয় পূজার দিনলিপি

ঋণের জন্য আত্মহত্যা, ঋণ নিয়েই চল্লিশা

জাকসু নির্বাচন ও হট্টগোল: আমাদের জন্য শিক্ষণীয় কী?

নরসুন্দর পেশার গুরুত্ব ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন

বিভাগভিত্তিক এমপিআর নির্বাচন পদ্ধতি

প্ল্যাটফর্ম সমাজে বাংলাদেশ: জ্ঞানের ভবিষ্যৎ কার হাতে?

আনন্দবেদনার হাসপাতাল: সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার বাস্তবতা

ছবি

ভিন্ন ধরনের নির্বাচন, ভিন্ন ধরনের ফল

বেসরকারি খাতে সিআইবি’র যাত্রা: ঋণ ব্যবস্থার নতুন দিগন্ত

স্বাস্থ্যসেবায় মানবিকতা প্রতিষ্ঠা হোক

ছবি

নেপালে সরকার পতন ও বামপন্থীদের ভবিষ্যৎ

ডাকসু নির্বাচন ও সংস্কারপ্রয়াস: রাজনৈতিক চিন্তার নতুন দিগন্ত

নির্বাচন কি সব সমস্যার সমাধান

জিতিয়া উৎসব

ছবি

অলির পর নেপাল কোন পথে?

রম্যগদ্য: “মরেও বাঁচবি নারে পাগলা...”

অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শ্রীপুর পৌরসভা

ভূরিভোজ, উচ্ছেদ এবং আদিবাসী পাহাড়িয়া

অনলাইন সংস্কৃতিতে হাস্যরসের সমাজবিজ্ঞান

মামলাজট নিরসনে দেওয়ানি কার্যবিধির সংস্কার

বাস্তব মস্কো বনাম বিভ্রান্ত ইউরোপ

ছাত্রসংসদ নির্বাচন ও ভবিষ্যৎ ছাত্ররাজনীতির গতিপ্রকৃতি

সড়ক দুর্ঘটনা: কারও মৃত্যু সাধারণ, কারও মৃত্যু বিশেষ

ঐকমত্য ছাড়াও কিছু সংস্কার সম্ভব

আবার বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম : সংকটে সাধারণ মানুষ

ডায়াবেটিস রোগীর সেবা ও জনসচেতনতা

ভিন্ন ধরনের ডাকসু নির্বাচন

ডাকসু নির্বাচন : পেছনে ফেলে আসি

প্রসঙ্গ : এলডিসি তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ

“কোপা চাটিগাঁ...”

ই-কমার্স হতে পারে প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন

ভারত-চীনের নতুন সমীকরণ

সাইবার যুগে মানুষের মর্যাদা ও নিরাপত্তা

ছবি

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

একজন নাগরিকের অভিমানী বিদায় ও রাষ্ট্রের নৈতিক সংকট

tab

opinion » post-editorial

দুই যুগের পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

আসাদুজ্জামান মিয়া

image

মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০২৪

৮ জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবির) ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। আজ থেকে দুই যুগ আগে এই দিনে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পটুয়াখালীতে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার প্রসারে পবিপ্রবি প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন সরকার (১৯৯৬-২০০১) দক্ষিণবঙ্গে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছিল ১৯৯৯ সালে। সেই সময় দেশের ১২টি বৃহত্তর জেলায় ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনার গ্রহণ করা হয় এবং প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নের জন্য ৬টি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করা হয় যার মধ্যে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পটি ছিল একটি।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পটুয়াখালীর দুমকিতে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার একটি বর্ণাঢ্য ইতিহাস আছে। সৃষ্টির শুরুতে এটি একটি বেসরকারি কৃষি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পটুয়াখালী কৃষি কলেজ নামে ১৯৭৯-৮০ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের অধিভুক্ত হয়ে যাত্রা শুরু করে।

এরপর প্রায় দুই দশক পর ২০০০ সালের ৮ জুলাই তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এই কৃষি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা করেন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০০১ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে পটুয়াখালী কৃষি কলেজ বিলুপ্ত করে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। ২০০১ সালের অক্টোবরে জাতীয় নির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হলে সাময়িক সময়ের জন্য স্থবির হয়ে পরে দক্ষিনবঙ্গের প্রথম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান পবিপ্রবির শিক্ষা কার্যক্রম অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অবশেষে আনন্দের সংবাদ আসলো। ২০০২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তব রূপ লাভ করল।

পটুয়াখালী জেলার প্রশ্চাৎপদ দুমকি উপজেলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তৎকালীন স্থানীয় অনেক গন্যমান্য মানুষের প্রত্যক্ষ ভুমিকা ছিল। তাদের অবদান অনস্বীকার্য। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি দুমকি উপজেলার মানুষের অনেক ত্যাগ তিতীক্ষার ফসল। পবিপ্রবি এখন দক্ষিণবঙ্গের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। ১৯৭৯-৮০ সালে কৃষি কলেজ ও ২০০০ সালে কেবলমাত্র কৃষি অনুষদ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টি ৮ টি অনুষদের অধীনে ৯টি বিষয়ে ¯œাতক ডিগ্রি প্রদান করছে। বর্তমানে পবিপ্রবির কলেবর অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে বর্তমানে প্রায় ৫ হাজার ছাত্রছাত্রী, ২৫০ জন শিক্ষক, ২০০ জন কর্মকর্তা ও ৫০০ জনের বেশি কর্মচারী রয়েছেন। পবিপ্রবি দেশ ও জাতির সময়োপযোগী চাহিদা পূরণে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মানসম্মত গ্র্যাজুয়েট তৈরিতে ভূমিকা রাখছে। তাছাড়া মাস্টার্স ও পিএইচডি গবেষনায় পবিপ্রবির এগিয়ে যাচ্ছে।

পবিপ্রবির অনেক শিক্ষক গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। দেশের সেরা গবেষকদের তালিকায় পবিপ্রবির শিক্ষকরা স্থান পাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতা আমাদেরকে রক্ষা করতে হবে। পবিপ্রবিকে মানসম্মত ও প্রযুক্তিনির্ভর উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা হিসেবে বিনির্মাণে আমাদের সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।

বিগত দুই দশকে বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার ব্যাপক প্রসার হলেও এখনো গুণগতমান নিশ্চিত করা যায়নি। তাই পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধির জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও গবেষণায় আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় শিক্ষাদান করতে হবে। শিক্ষা ও গবেষণায় অনেক দূর এগিয়ে নিতে যেতে হবে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হবে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

[লেখক : সাধারণ সম্পাদক, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি]

back to top