জাঁ-নেসার ওসমান
আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে, নাচি নাচি ঘুরি ঘুরি তুড়ি বাজাই নানা বেশে, আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে...।
ব্যাপার কি কবি কবি ভাব ছন্দের অভাব। এতো নাচন কুদন কিতা লাগি, পেরমে পড়ছোনি? এই বয়সে প্রেমে পড়লে প্রেমিকা তো দুই দিনের মাথায় ডাইভারের লগে ভাইগগা যাইবো গা! তয় এতো কি আনন্দ আকাশে বাতাসে হুনাইতেছেন ক্যা?
ওই মদোন তুই কিছু দেশের খোঁজ খবর রাখো? কি খবর রাখমু, আলু ৬০ টাকা, মরিচ ২০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি কেজি ১৯০ টাকাÑ হেই খবর তো ডেইলি কাঁচাবাজারে গেলেই পাই। আরে মদন হেই খবর না। তায়লে কী খবর?
আরে ব্যাটা ইন্টেরিম গর্ভনমেন্ট আমাগো মানে সাংঘাতিকগো আর বেঘোরে মরতে দেবে না। তাই মুই আনন্দে গান গাই, আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে। তয় এতোদিন কি তোমাগো সাংবাদিকগো হাবলিকে ধইরা ধইরা হোতায়ছেনি? হোতায়ছে মানে! আমাগো অফিসে ঢুইক্কা চাপাতি দিয়া কোপায়া জনকন্ঠের সাংবাদিক শামসুর রহমানরে শহীদ করছে, তারপর মোশতাকের কান চাপাতিতে চোড়ায়া মাইরা ভবলীলা সাঙ্গো করছে। তুই কও কি, আমাগো সাংবাদিকগো সত্য কথা লিখলেই হাতের আঙুল কাইট্টা দিছে।
তুমরা দুই নাম্বার সংবাদ ছাইপ্পা টু পাইস কামাইতে গেলে পাবলিক তো আঙুল কাইট্টা দেবেই। হেতে দুষের তো কিছু দেখিনা।
তুমিতো ভাগ পাওনা তুমি আর দোষের দেখবা কী? এই যে কয়দিন আগে, সাংবাদিক আছিলে চট্টগ্রাম আর মার্ডার হইলো ঢাকায় তুমি সাংবাদিকরে মার্ডার কেসে আসামি কইরা দিলা, হেইয়া কি ঠিক করলা? না না এটা তো অন্যায় নোংরা পুলিশের অশিক্ষা কুশিক্ষার ফল। পুলিশ যদি ডাকাত না হয়া জনগণের বন্ধু হতো তায়লে কেউ এমনি বর্বরতার শিকার হতো না। এখন পুলিশ ক্যান কোনো হালায় আর সাংবাদিকগো বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দেতে পারবেনা। হা হা হা।
মানে কি? সাংবাদিকরা অন্যায় করলেও কেউ মামলা করতে পারবে না!
আরে না সাংবাদিক দেশের প্রচলিত আইনে পাপ করলে মামলা হবে কিন্তু খামাখা খামাখা অন্যায়ভাবে অযথা তুমি কুনো হয়রানিমূলক মামলা করতে পারবা না। কিন্তু তোমরা সাংবাদিকরা যে দুই দিন আগে বাপে মন্ত্রী পোলায় ঠিকাদার কয়া অন্যায়ভাবে অযথা একটা মিথ্যা খবর ছাপলা হেইডার কি হইবে?
আরে ভাই তুই বুজছিস না ক্যান, ড. মুহাম্মদ ইউনূস, গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা পর্যবেক্ষণে আট সদস্যের কমিটি করেছেন। কারণ কি জানিস?
জি না, তয় কারণ কী? কারণ হলো, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৩৬ জুলাই আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন হত্যা মামলায় অনেক সাংবাদিককেও আসামি করেছে। তাই ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যার এই অন্যায় রোধকল্পে এই কমিটি গঠন করেছেন। ফলে এখন থেকে আমরা সাংবাদিকরা হয়ে ইঠবো ইনভিনসিব্যাল, অপরাজেয়, আমাদের কেউ আর মিথ্যা মিথ্যি মামলা দিয়া হয়রানি করতে পারবে না। রাত দুইটায় টিএনও আইসসা সাংবাদিকরে বৌয়ের কোল থেইক্কা তুইল্লা লয়া হিডাইতে পারেবো না। হা. হা. হা.। বাইচ্চা গেলাম ড. মুহাম্মদ ইউনূস জ্যোতি বসুর মতো শতায়ু হোন এই কামনা করি। জয়য়য়য়... নানা ড. ইউনূস জিন্দাবাদ।
কিন্তু ভাই অনেক দুই নম্বর সাংবাদিক তো এই সুযোগে আরও বেশি ব্ল্যাকমেইলিং শুরু করবে? আরে ভাই সারা দুনিয়াতে সব সময় কিছু দুই নাম্বার সাংঘাতিক বা সাংবাদিক থাকবে, তারা বাপে মন্ত্রী পোলায় ঠিকাদার, পয়সা খায়া এই সব দুই নাম্বারি সংবাদ ছাপবে এই নিয়া তুই সোহরাব-রুস্তমের গল্পের মতো সোহরাবের কাছে বিচার দিলে সোহরাব কইবো, সরকার আসে, সরকার যায়, কিন্তু দুই নাম্বার সাংবাদিক থ্যাইক্কাই যায়, জনগণের দুঃখ যায় না। তাহলে সাধারণ পাবলিক দুই নাম্বার সাংবাদিকের দুই নাম্বারি রিপোর্টের জ্বালায় জ্বইল্লা-পুইড়া মরবো! এই যে দ্যাখ হিউম্যান জিনোমের কাজটা বাংলাদেসের ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা, অথচ তোরা কি করলি, ওই যে ইশারায় কথাকয় ইশরারে কোম্পানির নামে মাল খায়া উল্টা পাল্টা নিউজ করলি। পাবলিক তো ভুল তথ্যই পেলো। আসল খবর কেউ জানলো না।
বুজছি বুজছি এটা অনেকটা ঈশপের গল্পের মতো। কি গল্প? আরে ওই যে, কতগুলো বালক পুকুরে ঢিল ছুড়িয়া খেলিতে ছিলো। আর পুকুরে থাকা ব্যাঙেরা মরিতে ছিলো। তখন এক বুড়ো ব্যাঙ উঠিয়া বলিলÑ ‘ওহে মূঢ় বালক তোমাদের জন্য যা খেলা, আমাদের জন্য তা মরণ।’ অনেকটা তাইরে, দুই নাম্বার সাংবাদিকের জন্য যা খেলা কিন্তু যার বিরুদ্ধে খবরটা ছাপলো তার জন্য মরণ। কিন্তু কি করবি বল এর মধ্যেই তোকে এগিয়ে যেতে হবে, কোন দিন যদি তোরা সভ্য হোস তাহলে তোদের দেশের এই সব দুই নাম্বার সাংবাদিকরা জরিমানা দিতে দিতে যখন লালসুতা বাইরাবে তখন এরা দুই নাম্বারি ছাড়বে। এখন দেখ জনাব আসিফ ইকবাল এই সব আইন ঠিক করতে পারে কিনা?
ভাই কথাটা আসিফ ইকবাল না। কথাটা হবে- বিদ্রোহী কবি নজরুল। আরে গাড়ল আমি পাকিস্তানের আইন বিশারদ আসিফ ইকবালের কথা বলছিলাম। বাংলাদেশে পাকিস্তাানি আইন বিশারদ! কপালে থাকলে তোকে আবার পাকসার জমিন গাইতেও হতে পারে...। ঠিকই বলেছেন ভাই, উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে দেশ!
[লেখক : চলচ্চিত্রকার]
জাঁ-নেসার ওসমান
শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪
আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে, নাচি নাচি ঘুরি ঘুরি তুড়ি বাজাই নানা বেশে, আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে...।
ব্যাপার কি কবি কবি ভাব ছন্দের অভাব। এতো নাচন কুদন কিতা লাগি, পেরমে পড়ছোনি? এই বয়সে প্রেমে পড়লে প্রেমিকা তো দুই দিনের মাথায় ডাইভারের লগে ভাইগগা যাইবো গা! তয় এতো কি আনন্দ আকাশে বাতাসে হুনাইতেছেন ক্যা?
ওই মদোন তুই কিছু দেশের খোঁজ খবর রাখো? কি খবর রাখমু, আলু ৬০ টাকা, মরিচ ২০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি কেজি ১৯০ টাকাÑ হেই খবর তো ডেইলি কাঁচাবাজারে গেলেই পাই। আরে মদন হেই খবর না। তায়লে কী খবর?
আরে ব্যাটা ইন্টেরিম গর্ভনমেন্ট আমাগো মানে সাংঘাতিকগো আর বেঘোরে মরতে দেবে না। তাই মুই আনন্দে গান গাই, আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে। তয় এতোদিন কি তোমাগো সাংবাদিকগো হাবলিকে ধইরা ধইরা হোতায়ছেনি? হোতায়ছে মানে! আমাগো অফিসে ঢুইক্কা চাপাতি দিয়া কোপায়া জনকন্ঠের সাংবাদিক শামসুর রহমানরে শহীদ করছে, তারপর মোশতাকের কান চাপাতিতে চোড়ায়া মাইরা ভবলীলা সাঙ্গো করছে। তুই কও কি, আমাগো সাংবাদিকগো সত্য কথা লিখলেই হাতের আঙুল কাইট্টা দিছে।
তুমরা দুই নাম্বার সংবাদ ছাইপ্পা টু পাইস কামাইতে গেলে পাবলিক তো আঙুল কাইট্টা দেবেই। হেতে দুষের তো কিছু দেখিনা।
তুমিতো ভাগ পাওনা তুমি আর দোষের দেখবা কী? এই যে কয়দিন আগে, সাংবাদিক আছিলে চট্টগ্রাম আর মার্ডার হইলো ঢাকায় তুমি সাংবাদিকরে মার্ডার কেসে আসামি কইরা দিলা, হেইয়া কি ঠিক করলা? না না এটা তো অন্যায় নোংরা পুলিশের অশিক্ষা কুশিক্ষার ফল। পুলিশ যদি ডাকাত না হয়া জনগণের বন্ধু হতো তায়লে কেউ এমনি বর্বরতার শিকার হতো না। এখন পুলিশ ক্যান কোনো হালায় আর সাংবাদিকগো বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দেতে পারবেনা। হা হা হা।
মানে কি? সাংবাদিকরা অন্যায় করলেও কেউ মামলা করতে পারবে না!
আরে না সাংবাদিক দেশের প্রচলিত আইনে পাপ করলে মামলা হবে কিন্তু খামাখা খামাখা অন্যায়ভাবে অযথা তুমি কুনো হয়রানিমূলক মামলা করতে পারবা না। কিন্তু তোমরা সাংবাদিকরা যে দুই দিন আগে বাপে মন্ত্রী পোলায় ঠিকাদার কয়া অন্যায়ভাবে অযথা একটা মিথ্যা খবর ছাপলা হেইডার কি হইবে?
আরে ভাই তুই বুজছিস না ক্যান, ড. মুহাম্মদ ইউনূস, গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা পর্যবেক্ষণে আট সদস্যের কমিটি করেছেন। কারণ কি জানিস?
জি না, তয় কারণ কী? কারণ হলো, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৩৬ জুলাই আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন হত্যা মামলায় অনেক সাংবাদিককেও আসামি করেছে। তাই ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যার এই অন্যায় রোধকল্পে এই কমিটি গঠন করেছেন। ফলে এখন থেকে আমরা সাংবাদিকরা হয়ে ইঠবো ইনভিনসিব্যাল, অপরাজেয়, আমাদের কেউ আর মিথ্যা মিথ্যি মামলা দিয়া হয়রানি করতে পারবে না। রাত দুইটায় টিএনও আইসসা সাংবাদিকরে বৌয়ের কোল থেইক্কা তুইল্লা লয়া হিডাইতে পারেবো না। হা. হা. হা.। বাইচ্চা গেলাম ড. মুহাম্মদ ইউনূস জ্যোতি বসুর মতো শতায়ু হোন এই কামনা করি। জয়য়য়য়... নানা ড. ইউনূস জিন্দাবাদ।
কিন্তু ভাই অনেক দুই নম্বর সাংবাদিক তো এই সুযোগে আরও বেশি ব্ল্যাকমেইলিং শুরু করবে? আরে ভাই সারা দুনিয়াতে সব সময় কিছু দুই নাম্বার সাংঘাতিক বা সাংবাদিক থাকবে, তারা বাপে মন্ত্রী পোলায় ঠিকাদার, পয়সা খায়া এই সব দুই নাম্বারি সংবাদ ছাপবে এই নিয়া তুই সোহরাব-রুস্তমের গল্পের মতো সোহরাবের কাছে বিচার দিলে সোহরাব কইবো, সরকার আসে, সরকার যায়, কিন্তু দুই নাম্বার সাংবাদিক থ্যাইক্কাই যায়, জনগণের দুঃখ যায় না। তাহলে সাধারণ পাবলিক দুই নাম্বার সাংবাদিকের দুই নাম্বারি রিপোর্টের জ্বালায় জ্বইল্লা-পুইড়া মরবো! এই যে দ্যাখ হিউম্যান জিনোমের কাজটা বাংলাদেসের ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা, অথচ তোরা কি করলি, ওই যে ইশারায় কথাকয় ইশরারে কোম্পানির নামে মাল খায়া উল্টা পাল্টা নিউজ করলি। পাবলিক তো ভুল তথ্যই পেলো। আসল খবর কেউ জানলো না।
বুজছি বুজছি এটা অনেকটা ঈশপের গল্পের মতো। কি গল্প? আরে ওই যে, কতগুলো বালক পুকুরে ঢিল ছুড়িয়া খেলিতে ছিলো। আর পুকুরে থাকা ব্যাঙেরা মরিতে ছিলো। তখন এক বুড়ো ব্যাঙ উঠিয়া বলিলÑ ‘ওহে মূঢ় বালক তোমাদের জন্য যা খেলা, আমাদের জন্য তা মরণ।’ অনেকটা তাইরে, দুই নাম্বার সাংবাদিকের জন্য যা খেলা কিন্তু যার বিরুদ্ধে খবরটা ছাপলো তার জন্য মরণ। কিন্তু কি করবি বল এর মধ্যেই তোকে এগিয়ে যেতে হবে, কোন দিন যদি তোরা সভ্য হোস তাহলে তোদের দেশের এই সব দুই নাম্বার সাংবাদিকরা জরিমানা দিতে দিতে যখন লালসুতা বাইরাবে তখন এরা দুই নাম্বারি ছাড়বে। এখন দেখ জনাব আসিফ ইকবাল এই সব আইন ঠিক করতে পারে কিনা?
ভাই কথাটা আসিফ ইকবাল না। কথাটা হবে- বিদ্রোহী কবি নজরুল। আরে গাড়ল আমি পাকিস্তানের আইন বিশারদ আসিফ ইকবালের কথা বলছিলাম। বাংলাদেশে পাকিস্তাানি আইন বিশারদ! কপালে থাকলে তোকে আবার পাকসার জমিন গাইতেও হতে পারে...। ঠিকই বলেছেন ভাই, উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে দেশ!
[লেখক : চলচ্চিত্রকার]