alt

উপ-সম্পাদকীয়

অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ

ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ

: সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

জনগণ ও রাষ্ট্র এক অবিচ্ছেদ্য বিষয়। সরকার একটি স্বল্পস্থায়ী প্রতিষ্ঠান মাত্র এবং জনগণের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কই রাষ্ট্রীয় কর্মকা-ে সরকারের বৈধতা দেয়। তাই জনগণের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং এই সম্পর্ক সুদৃঢ় ও স্বচ্ছ হওয়া একান্ত প্রয়োজন। সরকার গঠনের প্রক্রিয়া ওই দৃঢ়তা ও স্বচ্ছতা বিধানের মাধ্যম। সরকারের রাষ্ট্রীয় কর্মকা- জনগণকে

সম্পৃক্ত করে, জনগণকেন্দ্রিক এবং সব জনগণের জন্য সমভিত্তিক হতে হয়। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পদ্ধতিই জনগণ, রাষ্ট্র ও সরকারের মধ্যকার সম্পর্ক ও জবাবদিহি অধিকতর নিশ্চিত করে বলে বর্তমান বিশ্বে প্রচলিত ধ্যানধারণা রয়েছে। যদিও গণতন্ত্র বর্তমানে দলতন্ত্রে এবং পরিবারতন্ত্রে পরিণত হয়েছে, বিভিন্ন দূষণে দুষ্ট এবং বিশ্বব্যাপী এখন অনেকটা ব্যর্থতায় পর্যবসিত। জনগণ এখনো শোষণের শিকার। এই শোষণে রাষ্ট্র ও সরকার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। অসম বণ্টন ও সুযোগ-সুবিধার বিষম ব্যবহার বর্তমান বিশ্বের বড় একটি সমস্যা। এটি একটি দুষ্টচক্রে পরিণত হয়েছে। জনগণ ও দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য এই রাহুগ্রাস থেকে নিষ্কৃতি নিশ্চিত করা জরুরি। রাজনীতি জনগণের জন্য, জনসেবার জন্য। আর অর্থনীতি জনজীবনকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে। তাই রাজনৈতিক বলয়ে অর্থনীতির স্বরূপ অনুধাবন প্রয়োজন। অন্য কথায় একটি রাষ্ট্রের রাজনৈতিক অর্থনীতি সম্পর্কে আমাদের কমবেশি সচেতনতা আবশ্যক। এটি ছাড়া নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা কঠিন বৈকি। রাজনীতি এবং অর্থনীতি পরস্পর প্রযুক্ত বা একে অন্যের পরিপূরকও বলা যেতে পারে। যেমন রাজনীতি করতে গেলে অর্থনীতির একটা ভূমিকা এসেই যায়, আবার অর্থনীতি পরিচালনার জন্য ক্ষমতা বা নেতৃত্বের প্রয়োজন হয়-যা কিনা রাজনীতির একটা বাই প্রডাক্ট। অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ, এর প্রবৃদ্ধি ঘটানো, ব্যবহার ও উপযোগিতা বৃদ্ধি রাজনৈতিক ইচ্ছা বা ক্ষমতার ব্যবহার ব্যতিরেকে ঘটে না। নাগরিকের কাছ থেকে কর রাজস্ব আহরণ এবং সেই নাগরিকের কল্যাণে তা ব্যয় করার জন্য আইনকানুন তৈরি ও প্রয়োগের মাধ্যমে জবাবিদিহিতার পরিবেশ যাতে সৃষ্টি হয়। এখানে রাজনীতি অর্থনীতির মেলবন্ধনের প্রাসঙ্গিকতা চলে আসে। আমাদের স্বীকার করতেই হবে যে, অর্থনৈতিক পরিবর্তন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রেরই পরিবর্তনের চাবিকাঠি।

আর্থিক ক্ষমতা একটি পরিবারকে নিশ্চিত ভবিষ্যতই দেয় না, একটি শিক্ষিত এবং স্বাস্থ্যবান পরিবার নির্মাণে সব ধরনের যোগান দিয়ে থাকে। দেশের প্রতিটি পরিবারে যখন অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটবে তখন সমগ্র দেশটার চেহারাই পাল্টে যাবে। অর্থনৈতিক পরিবর্তন না ঘটাতে পারলে অন্য কোনো ক্ষেত্রেরই পরিবর্তন ঘটবে না। আর এ পরিবর্তন ঘটানোর দায়িত্ব সর্বাগ্রে বর্তায় আমাদের রাজনীতিবিদদের তথা জনপ্রতিনিধিদের ওপর। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিশ্ব জুড়েই এখন চলছে উন্নয়নের রাজনীতি। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় উন্নয়নের রাজনীতি না হয়ে অর্থনৈতিক পরিবর্তনের রাজনীতি হলে ভালো হয়। ব্যর্থ রাষ্ট্র হওয়ার পথে থাকা দেশ অর্থনীতি ও সমাজে প্রায়শ কয়েকটি পরস্পর প্রযুক্ত প্রশ্নের সম্মুখীন। প্রথমত, মাত্রাহীন দুর্নীতি কি শুধু নৈতিক ব্যর্থতা নাকি তা রাজনৈতিক অর্থনীতির অবশ্যম্ভাবী অনুষঙ্গ? দ্বিতীয়ত, সংস্কারে অনীহা কি অদক্ষতার প্রশ্ন না দুর্নীতিগ্রস্ত স্বার্থকে আড়ালে রাখার প্রয়োজনে? তৃতীয়ত, বাস্তবায়নগত দুর্বলতা কি সক্ষমতার অভাব না ক্ষেত্র বিশেষে মেধার নিরন্তর অবমূল্যায়নের ফল? এসব দেশ বা অঞ্চলে অর্থনীতি সুষ্ঠু পরিচালনার ক্ষেত্রে ঘাটতিতে ঘরের স্বার্থ, দায়দায়িত্বহীনতা ও সুশাসনের অভাব এবং এ ব্যাপারে চির প্রতিদ্বন্দ্বী নিকট প্রতিবেশীদের কলকাঠি নাড়ার ভূমিকা সব সময় ছিল বা আছে। তবে তিন, চার কিংবা পাঁচবার টানা রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার সুবাদে সরকারগুলো রাজনৈতিক অর্থনীতির নীতি প্রণয়নে একটি মৌলিক রূপান্তর ঘটে চলেছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের প্রবণতা বা চ্যালেঞ্জ এর পরিণতি বিশ্লেষণে দেখা যায়- একমাত্রিক উন্নয়ন ধারণায় অবকাঠামোই সব সামাজিক উন্নয়ন দর্শনকে পাশে ঠেলে দিয়েছে। যেমন- শিক্ষার মানের চেয়ে শিক্ষালয়ের ভবন বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে। স্বাস্থ্যসেবার মানের চেয়ে হাসপাতাল ভবন এখন অধিক গুরুত্বপূর্ণ। নগর অবকাঠামো ইন্টিগ্রেটেড ও বাসযোগ্যতাকে প্রাধান্য না দিয়ে বিচ্ছিন্ন অবকাঠামোর সমাহারে রূপান্তরিত হয়েছে। একমাত্রিক উন্নয়ন দর্শনে কঠিন শর্তের ধার-কর্জে আত্মসাৎ, অপচয়, দুর্নীতি দ্বারা নির্মিত অবকাঠামোর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দৃশ্যমান হয়ে ওঠছে। যেমন সড়ক নিরাপত্তার শঙ্কাজনক ঘাটতি এবং নিরাপদ ভ্রমণের অনিশ্চয়তা, শিক্ষার মানের নিম্নগতি, কাক্সিক্ষত ফলাফল ছাড়াই স্বাস্থ্যসেবা অত্যধিক ব্যয়বহুল হয়ে যাওয়া, অতিমাত্রায় সড়ক এ সেতু অবকাঠামো নির্মাণে জলাধার ও নদী ও নিসর্গ নির্জীব হয়ে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ ঘটাচ্ছে।

আইন এবং তা বাস্তবায়নের মাঝে চোখে পড়ে বিপুল দূরত্ব। আইনের ভালোটুকু পালিত হয় না, পালিত হয় মন্দটুকু। আইনে যা বলা আছে তা পালনে বিস্তর অনীহা, যা বলা নেই সেটি পালনের মহোৎসবই যেন সর্বত্র দৃশ্যমান। জাল যার জলা তার নয়, যিনি কৃষক তিনি ভূমিহীন। ভূমির সঠিক ব্যবহার আজো নিশ্চিত হওয়ার অপেক্ষায়। বেঠিক ব্যবহারই যেন প্রশ্রয় পাচ্ছে। অ-নিয়ম নিয়ম হয়ে যাচ্ছে। শোষণ বঞ্চনা বৈষম্যের বিরুদ্ধে মরণপণ সংগ্রামে জয়ী তৃতীয় বিশ্বের বহু মানুষ আর্থ-সামাজিক রাজনীতির ক্ষেত্রে অব্যাহতভাবে অধিকার বঞ্চিত। বিশেষ করে, যারা অর্থনৈতিক বিচারে দরিদ্র, পেশার নিরিখে সংখ্যালঘু তাদের বঞ্চনা ও অধিকারহীনতার অভিযোগ বাড়ছে। সুসংহত আইনি ব্যবস্থা ব্যতিরেকে মানুষের অধিকার সমুন্নত রাখা পুরোপুরি সম্ভব নয়। অনেক দেশেই এখনো এমন একটি মানবিক আইনি কাঠামো স্থিতিশীল হয়নি যা মানুষের সার্বিক ও মানবিক বিকাশকে সহজ করবে। পুরো আইনি ব্যবস্থার পরতে পরতে এখনো রয়ে গেছে তাদের পূর্বেকার ঔপনিবেশিক মানসিকতার হীন অভিপ্রায়; ফলে অগুনতি আইনি অসংগতি থেকে ‘মুক্তির সংগ্রাম’ শেষ হয়নি। এসব দেশে দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় রাজনৈতিক, অর্ধরাজনৈতিক, ছদ্ম রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক অবস্থা-ব্যবস্থা নানান রঙে, নানান মোড়কে আচ্ছাদিত। প্রশাসনসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারি কিংবা দলীয়করণ করে সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিচ্ছিন্ন-দূরদৃষ্টিহীন- জনসংযোগহীন আইনি পরিবর্তনের সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছে না। তেমনি, রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং সদিচ্ছার অভাবে একটি ভালো আইনের মন্দ প্রয়োগও যেন অতি সাধারণ বিষয়। প্রতীয়মান হয় রাষ্ট্রের রাজনৈতিক এবং সামাজিক কাঠামোটাই এমন যে তা জনমানুষের দুর্ভোগে বিচলিত তো নয়ই, বরং ভোগান্তি উৎপাদন এবং পুনরুৎপাদনকারী আইনি এবং প্রশাসনিক কাঠামোই চিরকাল হাত ধরে পাশাপাশি হেঁটেছে, হাঁটছে। মানুষকে অজ্ঞতায় রেখে কোনো উন্নয়নই টেকসই হয় না।

অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়নের ওপর গোষ্ঠী বা সিন্ডিকেট স্বার্থের আধিপত্য। অতিমারী কিংবা পূর্ব ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সমর এর অভিঘাতের অজুহাতে উঠতি অর্থনীতির নিম্নগামী হওয়ার ক্ষেত্রে অলিগার বাস্তবতা তৈরি হচ্ছে, যা উৎপাদনশীলতা ও প্রতিযোগিতাকে নিরুৎসাহিত করছে এবং মেধা, উদ্যোক্তা ও সম্পদ পাচারকে উৎসাহিত করছে। সংকীর্ণ ও সংকুচিত বেসরকারি স্বার্থ রক্ষার নামে যে ধরনের অনৈতিক নিয়ম সাজানো হয় তা উদ্বেগজনকভাবে আর্থিক সংস্থান, ব্যাংক খাত, বিদ্যুৎ, পরিবহন ব্যবস্থা, আইসিটি এবং অবকাঠামো খাতের ধস ও ধ্বংস স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কোন কোন দেশে উন্নয়নের নানা মাত্রায় সে দেশের ভূমিকা এবং অর্জন দেশ এবং সারা বিশ্বে যথাযথভাবে পরিচিতি পেয়েছে। তবে এ সব দেশে পরিবর্তনের পাশাপাশি আকাক্সক্ষা ও চ্যালেঞ্জের জগৎ পাল্টেছে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে অর্থনীতিতে কিছু উদ্বেগের জায়গা ঘনীভূত হয়েছে। দরিদ্রের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক হতাশা বর্তমানে সংকটের শীর্ষবিন্দুতে অবস্থান করছে। এসব হতাশা তৈরি হচ্ছে ত্রুটিপূর্ণ ও দুর্নীতিগ্রস্ত অর্থনীতি পরিচালনার রাজনৈতিক অর্থনীতি থেকে। এটাও ঠিক কোন কোন দেশ উন্নয়ন যাত্রার বাঁকবদলের পর্যায়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে সফলতার মুখ দেখা অন্য দেশগুলো মধ্যম আয়ের ফাঁদে পড়েছে, কারণ তারা সতর্ক সংকেতগুলো মানেনি এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলোকে মূল্যায়ন করেনি।

সাব-সাহারা ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্তঃকলহে লিপ্ত দেশগুলোর মতো এমন কি শ্রীলঙ্কার মতো এসব দেশে পারস্পরিকভাবে এমন নীতির প্রবণতাকে শক্তিশালী করে তুলছে, যা দেশগুলোর অর্থনীতিতে ব্যাপক স্থিতিশীল উন্নয়ন আকাক্সক্ষার ক্ষেত্রে কাঠামোগত বাধায় রূপান্তরিত হতে চলেছে। বাস্তবে পরিকল্পিত অকার্যকারিতা এবং দুর্নীতি বিস্তারের যোগসাজশের বিষয়টি স্পষ্টতর হয়ে উঠতেও বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এর কারণ হছে, সার্বিক বিষয়টি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি ও সুশাসনের পথে না গেলে, বরং গোষ্ঠীস্বার্থ; রাজনৈতিক অর্থনীতির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।

রাজনৈতিক এজেন্ডায় অর্থনৈতিক মুক্তির কথা, দেশের উন্নয়নের কথা বা জনগণের কল্যাণের কথা হরহামেশা রাজনৈতিক প্রতিটি দলই নানাভাবে বলে যাচ্ছে। এসব শুধু এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত থাকলে চলবে না। খোদ রাজনীতিকেই অর্থনৈতিক পরিবর্তনের স্রোতধারায় নিয়ে এসে নতুন রাজনৈতিক প্রবাহ সৃষ্টি করতে হবে এবং সেটি হবে অর্থনৈতিক পরিবর্তনের রাজনীতি। আমাদের দেশে এখন গণতান্ত্রিক পদ্ধতির চর্চা কতটা বিদ্যমান? গণতন্ত্রে বিশ্বাসী প্রতিটি রাজনৈতিক দলের পুরনো দৃষ্টিভঙ্গি ও ধ্যান-ধারণার রাজনীতিতে বিবর্তন ঘটিয়ে বর্তমানের বাস্তবতাকে স্বীকৃতি দিয়ে অর্থনৈতিক পরিবর্তনের রাজনীতি প্রবর্তন করতে হবে। রাজনীতির স্বার্থে অর্থনীতি নয়, বরং অর্থনীতির স্বার্থেই রাজনীতিকে সাজাতে হবে। আর এ উদ্যোগটা নিতে হবে স্বয়ং রাজনীতিবিদদেরকেই।

[লেখক : সাবেক উপমহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি ]

‘ক্ষুদ্রতার মন্দিরেতে বসায়ে আপনারে আপন পায়ে না দিই যেন অর্ঘ্য ভারে ভারে’

একাকিত্ব : নিজেকে আবিষ্কার ও সৃজনশীলতা বিকাশের পথ

লাগামহীন দ্রব্যমূল্য

বাঁশের বংশবৃদ্ধিতে অন্তরায় বাঁশকরুল সংগ্রহ

একতার অভাবে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে করণীয়

শিক্ষা খাতে দলীয় রাজনীতির নেতিবাচক প্রভাব

কোন পথে জামায়াতের রাজনীতি?

শ্রমিকের উন্নয়ন ছাড়া গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনা সম্ভব নয়

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভূমিকা

ডিমের জারিজুরি

যোগ্য নেতৃত্ব সমাজ-সংগঠনকে এগিয়ে নেয়

ব্যক্তি স্বাধীনতার সংকট

কিল মারার গোঁসাই

ছবি

শেকড়ের সন্ধানে সাঁইজির ধামে

বৈষম্যের অন্ধকারে নিমজ্জিত প্রকৌশল শিক্ষার আরেক জগৎ

প্রশাসনিক সংস্কারে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা কতটা প্রতিষ্ঠা পাবে?

বাংলার মৃৎশিল্প

প্রবারণা পূর্ণিমার আলোয় আলোকিত হোক মানবজাতি

খেলাপি ঋণের অপসংস্কৃতি

কথার কথা যত কথা

দলীয় রাজনীতির প্রভাবমুক্ত হোক শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

সুইডেনের গণতন্ত্র

বিচ্ছিন্নতা ও একাকীত্ব : শহুরে জীবনধারার মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব

নতুন প্রেক্ষাপটে ‘চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড’ : স্বাধীনতা না প্রতিরোধ?

ধর্মীয় স্বাধীনতা ও কঠিন চীবরদান

ছবি

দুর্গাপূজার মর্মবাণী

মানুষ মূল্যস্ফীতি থেকে রক্ষা পাবে কীভাবে

গুজব ও মিথ্যা তথ্য : সমাজের এক ভয়াবহ ব্যাধি

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে দৃঢ় পদক্ষেপ প্রয়োজন

পুরাতত্ত্বের ধারায় সনাতনী সমাজের দুর্গাপূজা

জীবন-মৃত্যু কী?

নাসা : বিজ্ঞানের পীঠস্থান

শিক্ষা সংস্কারে প্রথাগত চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে

সাংঘাতিক ভাই, সাংঘাতিক...

প্রযুক্তির মায়াজালে বন্দি মানুষ

tab

উপ-সম্পাদকীয়

অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ

ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ

সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

জনগণ ও রাষ্ট্র এক অবিচ্ছেদ্য বিষয়। সরকার একটি স্বল্পস্থায়ী প্রতিষ্ঠান মাত্র এবং জনগণের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কই রাষ্ট্রীয় কর্মকা-ে সরকারের বৈধতা দেয়। তাই জনগণের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং এই সম্পর্ক সুদৃঢ় ও স্বচ্ছ হওয়া একান্ত প্রয়োজন। সরকার গঠনের প্রক্রিয়া ওই দৃঢ়তা ও স্বচ্ছতা বিধানের মাধ্যম। সরকারের রাষ্ট্রীয় কর্মকা- জনগণকে

সম্পৃক্ত করে, জনগণকেন্দ্রিক এবং সব জনগণের জন্য সমভিত্তিক হতে হয়। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পদ্ধতিই জনগণ, রাষ্ট্র ও সরকারের মধ্যকার সম্পর্ক ও জবাবদিহি অধিকতর নিশ্চিত করে বলে বর্তমান বিশ্বে প্রচলিত ধ্যানধারণা রয়েছে। যদিও গণতন্ত্র বর্তমানে দলতন্ত্রে এবং পরিবারতন্ত্রে পরিণত হয়েছে, বিভিন্ন দূষণে দুষ্ট এবং বিশ্বব্যাপী এখন অনেকটা ব্যর্থতায় পর্যবসিত। জনগণ এখনো শোষণের শিকার। এই শোষণে রাষ্ট্র ও সরকার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। অসম বণ্টন ও সুযোগ-সুবিধার বিষম ব্যবহার বর্তমান বিশ্বের বড় একটি সমস্যা। এটি একটি দুষ্টচক্রে পরিণত হয়েছে। জনগণ ও দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য এই রাহুগ্রাস থেকে নিষ্কৃতি নিশ্চিত করা জরুরি। রাজনীতি জনগণের জন্য, জনসেবার জন্য। আর অর্থনীতি জনজীবনকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে। তাই রাজনৈতিক বলয়ে অর্থনীতির স্বরূপ অনুধাবন প্রয়োজন। অন্য কথায় একটি রাষ্ট্রের রাজনৈতিক অর্থনীতি সম্পর্কে আমাদের কমবেশি সচেতনতা আবশ্যক। এটি ছাড়া নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা কঠিন বৈকি। রাজনীতি এবং অর্থনীতি পরস্পর প্রযুক্ত বা একে অন্যের পরিপূরকও বলা যেতে পারে। যেমন রাজনীতি করতে গেলে অর্থনীতির একটা ভূমিকা এসেই যায়, আবার অর্থনীতি পরিচালনার জন্য ক্ষমতা বা নেতৃত্বের প্রয়োজন হয়-যা কিনা রাজনীতির একটা বাই প্রডাক্ট। অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ, এর প্রবৃদ্ধি ঘটানো, ব্যবহার ও উপযোগিতা বৃদ্ধি রাজনৈতিক ইচ্ছা বা ক্ষমতার ব্যবহার ব্যতিরেকে ঘটে না। নাগরিকের কাছ থেকে কর রাজস্ব আহরণ এবং সেই নাগরিকের কল্যাণে তা ব্যয় করার জন্য আইনকানুন তৈরি ও প্রয়োগের মাধ্যমে জবাবিদিহিতার পরিবেশ যাতে সৃষ্টি হয়। এখানে রাজনীতি অর্থনীতির মেলবন্ধনের প্রাসঙ্গিকতা চলে আসে। আমাদের স্বীকার করতেই হবে যে, অর্থনৈতিক পরিবর্তন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রেরই পরিবর্তনের চাবিকাঠি।

আর্থিক ক্ষমতা একটি পরিবারকে নিশ্চিত ভবিষ্যতই দেয় না, একটি শিক্ষিত এবং স্বাস্থ্যবান পরিবার নির্মাণে সব ধরনের যোগান দিয়ে থাকে। দেশের প্রতিটি পরিবারে যখন অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটবে তখন সমগ্র দেশটার চেহারাই পাল্টে যাবে। অর্থনৈতিক পরিবর্তন না ঘটাতে পারলে অন্য কোনো ক্ষেত্রেরই পরিবর্তন ঘটবে না। আর এ পরিবর্তন ঘটানোর দায়িত্ব সর্বাগ্রে বর্তায় আমাদের রাজনীতিবিদদের তথা জনপ্রতিনিধিদের ওপর। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিশ্ব জুড়েই এখন চলছে উন্নয়নের রাজনীতি। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় উন্নয়নের রাজনীতি না হয়ে অর্থনৈতিক পরিবর্তনের রাজনীতি হলে ভালো হয়। ব্যর্থ রাষ্ট্র হওয়ার পথে থাকা দেশ অর্থনীতি ও সমাজে প্রায়শ কয়েকটি পরস্পর প্রযুক্ত প্রশ্নের সম্মুখীন। প্রথমত, মাত্রাহীন দুর্নীতি কি শুধু নৈতিক ব্যর্থতা নাকি তা রাজনৈতিক অর্থনীতির অবশ্যম্ভাবী অনুষঙ্গ? দ্বিতীয়ত, সংস্কারে অনীহা কি অদক্ষতার প্রশ্ন না দুর্নীতিগ্রস্ত স্বার্থকে আড়ালে রাখার প্রয়োজনে? তৃতীয়ত, বাস্তবায়নগত দুর্বলতা কি সক্ষমতার অভাব না ক্ষেত্র বিশেষে মেধার নিরন্তর অবমূল্যায়নের ফল? এসব দেশ বা অঞ্চলে অর্থনীতি সুষ্ঠু পরিচালনার ক্ষেত্রে ঘাটতিতে ঘরের স্বার্থ, দায়দায়িত্বহীনতা ও সুশাসনের অভাব এবং এ ব্যাপারে চির প্রতিদ্বন্দ্বী নিকট প্রতিবেশীদের কলকাঠি নাড়ার ভূমিকা সব সময় ছিল বা আছে। তবে তিন, চার কিংবা পাঁচবার টানা রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার সুবাদে সরকারগুলো রাজনৈতিক অর্থনীতির নীতি প্রণয়নে একটি মৌলিক রূপান্তর ঘটে চলেছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের প্রবণতা বা চ্যালেঞ্জ এর পরিণতি বিশ্লেষণে দেখা যায়- একমাত্রিক উন্নয়ন ধারণায় অবকাঠামোই সব সামাজিক উন্নয়ন দর্শনকে পাশে ঠেলে দিয়েছে। যেমন- শিক্ষার মানের চেয়ে শিক্ষালয়ের ভবন বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে। স্বাস্থ্যসেবার মানের চেয়ে হাসপাতাল ভবন এখন অধিক গুরুত্বপূর্ণ। নগর অবকাঠামো ইন্টিগ্রেটেড ও বাসযোগ্যতাকে প্রাধান্য না দিয়ে বিচ্ছিন্ন অবকাঠামোর সমাহারে রূপান্তরিত হয়েছে। একমাত্রিক উন্নয়ন দর্শনে কঠিন শর্তের ধার-কর্জে আত্মসাৎ, অপচয়, দুর্নীতি দ্বারা নির্মিত অবকাঠামোর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দৃশ্যমান হয়ে ওঠছে। যেমন সড়ক নিরাপত্তার শঙ্কাজনক ঘাটতি এবং নিরাপদ ভ্রমণের অনিশ্চয়তা, শিক্ষার মানের নিম্নগতি, কাক্সিক্ষত ফলাফল ছাড়াই স্বাস্থ্যসেবা অত্যধিক ব্যয়বহুল হয়ে যাওয়া, অতিমাত্রায় সড়ক এ সেতু অবকাঠামো নির্মাণে জলাধার ও নদী ও নিসর্গ নির্জীব হয়ে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ ঘটাচ্ছে।

আইন এবং তা বাস্তবায়নের মাঝে চোখে পড়ে বিপুল দূরত্ব। আইনের ভালোটুকু পালিত হয় না, পালিত হয় মন্দটুকু। আইনে যা বলা আছে তা পালনে বিস্তর অনীহা, যা বলা নেই সেটি পালনের মহোৎসবই যেন সর্বত্র দৃশ্যমান। জাল যার জলা তার নয়, যিনি কৃষক তিনি ভূমিহীন। ভূমির সঠিক ব্যবহার আজো নিশ্চিত হওয়ার অপেক্ষায়। বেঠিক ব্যবহারই যেন প্রশ্রয় পাচ্ছে। অ-নিয়ম নিয়ম হয়ে যাচ্ছে। শোষণ বঞ্চনা বৈষম্যের বিরুদ্ধে মরণপণ সংগ্রামে জয়ী তৃতীয় বিশ্বের বহু মানুষ আর্থ-সামাজিক রাজনীতির ক্ষেত্রে অব্যাহতভাবে অধিকার বঞ্চিত। বিশেষ করে, যারা অর্থনৈতিক বিচারে দরিদ্র, পেশার নিরিখে সংখ্যালঘু তাদের বঞ্চনা ও অধিকারহীনতার অভিযোগ বাড়ছে। সুসংহত আইনি ব্যবস্থা ব্যতিরেকে মানুষের অধিকার সমুন্নত রাখা পুরোপুরি সম্ভব নয়। অনেক দেশেই এখনো এমন একটি মানবিক আইনি কাঠামো স্থিতিশীল হয়নি যা মানুষের সার্বিক ও মানবিক বিকাশকে সহজ করবে। পুরো আইনি ব্যবস্থার পরতে পরতে এখনো রয়ে গেছে তাদের পূর্বেকার ঔপনিবেশিক মানসিকতার হীন অভিপ্রায়; ফলে অগুনতি আইনি অসংগতি থেকে ‘মুক্তির সংগ্রাম’ শেষ হয়নি। এসব দেশে দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় রাজনৈতিক, অর্ধরাজনৈতিক, ছদ্ম রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক অবস্থা-ব্যবস্থা নানান রঙে, নানান মোড়কে আচ্ছাদিত। প্রশাসনসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারি কিংবা দলীয়করণ করে সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিচ্ছিন্ন-দূরদৃষ্টিহীন- জনসংযোগহীন আইনি পরিবর্তনের সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারছে না। তেমনি, রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং সদিচ্ছার অভাবে একটি ভালো আইনের মন্দ প্রয়োগও যেন অতি সাধারণ বিষয়। প্রতীয়মান হয় রাষ্ট্রের রাজনৈতিক এবং সামাজিক কাঠামোটাই এমন যে তা জনমানুষের দুর্ভোগে বিচলিত তো নয়ই, বরং ভোগান্তি উৎপাদন এবং পুনরুৎপাদনকারী আইনি এবং প্রশাসনিক কাঠামোই চিরকাল হাত ধরে পাশাপাশি হেঁটেছে, হাঁটছে। মানুষকে অজ্ঞতায় রেখে কোনো উন্নয়নই টেকসই হয় না।

অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়নের ওপর গোষ্ঠী বা সিন্ডিকেট স্বার্থের আধিপত্য। অতিমারী কিংবা পূর্ব ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সমর এর অভিঘাতের অজুহাতে উঠতি অর্থনীতির নিম্নগামী হওয়ার ক্ষেত্রে অলিগার বাস্তবতা তৈরি হচ্ছে, যা উৎপাদনশীলতা ও প্রতিযোগিতাকে নিরুৎসাহিত করছে এবং মেধা, উদ্যোক্তা ও সম্পদ পাচারকে উৎসাহিত করছে। সংকীর্ণ ও সংকুচিত বেসরকারি স্বার্থ রক্ষার নামে যে ধরনের অনৈতিক নিয়ম সাজানো হয় তা উদ্বেগজনকভাবে আর্থিক সংস্থান, ব্যাংক খাত, বিদ্যুৎ, পরিবহন ব্যবস্থা, আইসিটি এবং অবকাঠামো খাতের ধস ও ধ্বংস স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কোন কোন দেশে উন্নয়নের নানা মাত্রায় সে দেশের ভূমিকা এবং অর্জন দেশ এবং সারা বিশ্বে যথাযথভাবে পরিচিতি পেয়েছে। তবে এ সব দেশে পরিবর্তনের পাশাপাশি আকাক্সক্ষা ও চ্যালেঞ্জের জগৎ পাল্টেছে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে অর্থনীতিতে কিছু উদ্বেগের জায়গা ঘনীভূত হয়েছে। দরিদ্রের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক হতাশা বর্তমানে সংকটের শীর্ষবিন্দুতে অবস্থান করছে। এসব হতাশা তৈরি হচ্ছে ত্রুটিপূর্ণ ও দুর্নীতিগ্রস্ত অর্থনীতি পরিচালনার রাজনৈতিক অর্থনীতি থেকে। এটাও ঠিক কোন কোন দেশ উন্নয়ন যাত্রার বাঁকবদলের পর্যায়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে সফলতার মুখ দেখা অন্য দেশগুলো মধ্যম আয়ের ফাঁদে পড়েছে, কারণ তারা সতর্ক সংকেতগুলো মানেনি এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলোকে মূল্যায়ন করেনি।

সাব-সাহারা ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্তঃকলহে লিপ্ত দেশগুলোর মতো এমন কি শ্রীলঙ্কার মতো এসব দেশে পারস্পরিকভাবে এমন নীতির প্রবণতাকে শক্তিশালী করে তুলছে, যা দেশগুলোর অর্থনীতিতে ব্যাপক স্থিতিশীল উন্নয়ন আকাক্সক্ষার ক্ষেত্রে কাঠামোগত বাধায় রূপান্তরিত হতে চলেছে। বাস্তবে পরিকল্পিত অকার্যকারিতা এবং দুর্নীতি বিস্তারের যোগসাজশের বিষয়টি স্পষ্টতর হয়ে উঠতেও বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। এর কারণ হছে, সার্বিক বিষয়টি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি ও সুশাসনের পথে না গেলে, বরং গোষ্ঠীস্বার্থ; রাজনৈতিক অর্থনীতির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।

রাজনৈতিক এজেন্ডায় অর্থনৈতিক মুক্তির কথা, দেশের উন্নয়নের কথা বা জনগণের কল্যাণের কথা হরহামেশা রাজনৈতিক প্রতিটি দলই নানাভাবে বলে যাচ্ছে। এসব শুধু এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত থাকলে চলবে না। খোদ রাজনীতিকেই অর্থনৈতিক পরিবর্তনের স্রোতধারায় নিয়ে এসে নতুন রাজনৈতিক প্রবাহ সৃষ্টি করতে হবে এবং সেটি হবে অর্থনৈতিক পরিবর্তনের রাজনীতি। আমাদের দেশে এখন গণতান্ত্রিক পদ্ধতির চর্চা কতটা বিদ্যমান? গণতন্ত্রে বিশ্বাসী প্রতিটি রাজনৈতিক দলের পুরনো দৃষ্টিভঙ্গি ও ধ্যান-ধারণার রাজনীতিতে বিবর্তন ঘটিয়ে বর্তমানের বাস্তবতাকে স্বীকৃতি দিয়ে অর্থনৈতিক পরিবর্তনের রাজনীতি প্রবর্তন করতে হবে। রাজনীতির স্বার্থে অর্থনীতি নয়, বরং অর্থনীতির স্বার্থেই রাজনীতিকে সাজাতে হবে। আর এ উদ্যোগটা নিতে হবে স্বয়ং রাজনীতিবিদদেরকেই।

[লেখক : সাবেক উপমহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি ]

back to top