জাঁ নেসার ওসমান
হি হি হি, এইডা কী কন, গণতন্ত্র আর হিটলার! এইডা কি একলগে যায় নি! হি হি হি...
হোইপ ব্যাডা এ্যাডলফ হিটলার আর ডেমোস একলগে যাক না যাক, বস্তবে তো কবি অর্ণিবান ভট্টাচার্য্যরে কবিতার মতো, “তোমার গড়া গণতন্ত্রের গলিতে গলিতে হিটলার...”
হে হে হে কী যে কন। বাংলাদেশে এ্যাডলফ হিটলার পাইবেন কোই? হিটলার তো জার্মানির প্রোডাক্ট। আপনে এহানে মানে বাংলাদেশে বড়জোর ডেভিড পাইতে পারেন, হিটলার পাইবেন না।
আব্বে হালায় তোর মতুন বুড়বকের লগে কথা কওয়াই মুশকিল।
ক্যা, আমরা অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত বইলা বেশি ফুটানি মাইরেন না। শ্যেষ-ম্যাশ ওই বুইড়া মাঝির মতুন আপনের জীবন ষুল্ল-আনাই মাটি হোইবো।
আরে মনু চ্যেতো ক্যা, আমি কোই এহানে হিটলার মানে জার্মানির প্রোডাক্টরে বুঝাই নাই।
ওম্মা, কোইবেন জার্মানির নাম আর কোইবেন জার্মানিরে বুঝাই নাই! লেব্বাবা আমার তো ব্যেরেইন আউট।
আরে ভাই তোকে বুঝতে হবে, এখানে কবি অর্ণিবান গলিতে গলিতে হিটলার বলতে সত্যি সত্যি স্বয়ং জার্মানির হিটলার দাঁড়িয়ে আছে, তা বলেননি, বলেছেন যে, হিটলারের মতো এক নায়কতন্ত্রের স্বৈরাচাররা গণতন্ত্রের নামে পাড়ায়-পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায় যেসব রাজনৈতিক ক্যাডার দাঁড় করিয়ে রেখেছে, তারা সব হিটলারের মতো আচরণ করছে। গণতন্ত্রের সর্বজন গ্রহণযোগ্য আইন এরা মানছে না। এরা নিজেদের মতোন করে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা দাঁড় করিয়ে আসলে হিটলারের মতো স্বৈরাচারকেই পূজা করছে!
কন কি? এই হালারা ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে জান-মাল বাজি রাইখ্খা গণতন্ত্রের জন্য দুই পাকিস্তানের বৈষম্য দূর করার জন্য, লক্ষ লক্ষ ছাত্র-জনতা শহীদ হইল, মা-বোনের ইজ্জত খোয়াইল, ওই হিটলারের পা-চাটার জন্য! আফশোষ হালারা কি মানুষ, না কি পাকিস্তানির অবৈধ বাচ্চা!
তোকে কি বলব বল ওই সব ক্র্যাক প্ল্যাটুনের বীর সৈনিকরা, যারা ১৯৭১ এ, জান বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশটাকে স্বাধীন করেছিল সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধারা এখন টাকার লোভে, হিটলারের পা-চাটতে গিয়ে স্বাধীন রা বাংলদেশের জেলে পচে মরছে।
লজ্জা, লজ্জা!
ভাবতে পারিস, যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধারা রণাঙ্গনের আর্মি পোশাক পরে. স্টেনগান, হ্যান্ড গ্রেনেড, পিস্তল নিয়ে গাজীর বেশে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল আজকে তারাই টাকা চুরি করে হিটলারের দ্যেখানো রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে, চোরের মতো সেই বাংলাদেশেরই জেলে হাজতির পোশাক পরে প্রবেশ করছে। এ কান্না তুই কী বুঝবি... ১৯৭১-এ যে মুক্তিযোদ্ধাদের দেখে বাংলার জনগণ শ্রদ্ধায় মাথানত করত, সেই বাংলার জনগণই মাত্র স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের মাথায় মুক্তিযোদ্ধাদের হিটলারি কায়দায় চলাচলের জন্য টাকার প্রতি পৈশাচিক লোভের জন্য আজ জনসাধারণ ওদের ঘরবাড়ি, কলকারখানা, গাড়ি-ঘোড়া সব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে খাক করছে। জানি না বাংলার সাধারণ জনগণের কপালে আরো কী ভোগান্তি আছে। জনগণের কপালে আর কী আছে!
হালারা আজীবন তথাকথিত শিক্ষিত লোকের পা-চাটব আর মধ্যবিত্তরা আফিং খায়া হালারা চ্যাগায়া পইড়া থাকব। এই সব পুঁপ অশিক্ষিত জনগণ কবে যে মানুষ হোইবো তা ওই মধ্যবিত্তের আফিমই জানে।
কিন্তু এভাবে বললে তো হবে না! এই সব অশিক্ষিত সাধারণ জনগণ তোমার দেশের নাগরিক না?
আরে হালায় আপনে কী কন! এই সব জনগণ আমাগো দেশের নাগরিক মানে!
এঁরা তো জনগণ, দেশের মালিক! তাহলে এই মালিকরা অশিক্ষিত বলে তুই এঁদের সাথে ছলনা করবি?
এঁদের সরলতার সুযোগে এঁদের সাথে চিটিং করবি? তাহলে তোর শিক্ষার দাম রইল কোথায়!
আরে ভাই আজকাল আর কেউ কারো জন্য ভাবে না সবাই কয় আপনে বাঁচলে, বাপের নাম। এই আপনে বাঁচলে বাপের নাম করতে যায়া তো তোর বাপের মাথায় পাবলিক মানে দেশের মালিক কী ন্যাক্কারজনক ঘটনাই না ঘটাল। তাই বলি আর নিজের জন্য নিজের জীবনের জন্য লালায়িত না হয়ে এবার সকল মানুষের জন্য কাজ কর।
আচ্ছা আচ্ছা তুই না বলতি, আমরা বেবাগ গরিবেরা ভাই ভাই, আমগো কোনো চিহ্ন নাই, মার্কা নাই, আমরা বেবাগ গরিবেরা ভাই ভাই...
সে তো বুঝি আমরা সব গরিবরা যদি এক হোইতে পারি তাইলে আর কোনো নোংরা পাবলিক আমাগো গরিবগোরে বেকুব বানাইতে পারব না। তাই বলি সব বিভেদ ভুলে তোরা আর একবার, সবাই এক হয়ে ভাই ভায়ের মতো বসবাস কর। প্লিজ তোরা আর নিজেরা নিজেরা বাঙালি হয়ে বাঙালির সাথে খুনাখুনি করিস না! সামান্য কিছু টাকার লোভে তোরা নিজেরা নিজেরা মারামারি করে মরছিস। আর দেখলি তো, সব বস্তা বস্তা টাকা, কোটি কোটি টাকা ফেলে কোথায় যে পালিয়েছে, তার হদিসই পাওয়া যাচ্ছে না। তাহলে এই টাকা টাকা করে, নিজেদের মাঝে মারামরি করে কী লাভ হচ্ছে!
আসলেই ভাই কী কবো, ১৯৭১ এ, বাঙালি মুসলমান আর বিহারি মুসলমান বইল্লা মুসলমান মুসলমান ভায়ে ভায়ে মারামারি করলাম। আমাগো মুসলমানগো মারামারি থেইক্কা ফায়দা লুটলো হিন্দুস্তান। এখন কী কইতে পারেন, এই বাঙালি বাঙালি মারামারির থেইক্কা ফায়দা লুটব কে?
জানি না ভাই এই বাঙালি বাঙালি মারামারিতে কার ফায়দা হবে?
এই সামান্য জিনিসটা বলতে পারলেন না, বাঙালি বাঙালি মারামারিতে কার ফায়দা হবে?
কার ফায়দা হবে বলতে পারি না, তবে এটা বলতে পারি, এই বারের এই বাঙালি বাঙালি মারামারিতে অন্তত হিন্দুস্তানের ফায়দা হবে না।
তাহলে ফায়দা হবে কার?
তুইই বল ফায়দা হবে কার?
ফায়দা হবে ওই যে দাঁড়িয়ে আছে, গলিতে গলিতে হিটলার, ওই বাঙালি হিটলাররাই আবার ফায়দা লুটবে।
[লেখক : চলচ্চিত্রকার]
জাঁ নেসার ওসমান
শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪
হি হি হি, এইডা কী কন, গণতন্ত্র আর হিটলার! এইডা কি একলগে যায় নি! হি হি হি...
হোইপ ব্যাডা এ্যাডলফ হিটলার আর ডেমোস একলগে যাক না যাক, বস্তবে তো কবি অর্ণিবান ভট্টাচার্য্যরে কবিতার মতো, “তোমার গড়া গণতন্ত্রের গলিতে গলিতে হিটলার...”
হে হে হে কী যে কন। বাংলাদেশে এ্যাডলফ হিটলার পাইবেন কোই? হিটলার তো জার্মানির প্রোডাক্ট। আপনে এহানে মানে বাংলাদেশে বড়জোর ডেভিড পাইতে পারেন, হিটলার পাইবেন না।
আব্বে হালায় তোর মতুন বুড়বকের লগে কথা কওয়াই মুশকিল।
ক্যা, আমরা অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত বইলা বেশি ফুটানি মাইরেন না। শ্যেষ-ম্যাশ ওই বুইড়া মাঝির মতুন আপনের জীবন ষুল্ল-আনাই মাটি হোইবো।
আরে মনু চ্যেতো ক্যা, আমি কোই এহানে হিটলার মানে জার্মানির প্রোডাক্টরে বুঝাই নাই।
ওম্মা, কোইবেন জার্মানির নাম আর কোইবেন জার্মানিরে বুঝাই নাই! লেব্বাবা আমার তো ব্যেরেইন আউট।
আরে ভাই তোকে বুঝতে হবে, এখানে কবি অর্ণিবান গলিতে গলিতে হিটলার বলতে সত্যি সত্যি স্বয়ং জার্মানির হিটলার দাঁড়িয়ে আছে, তা বলেননি, বলেছেন যে, হিটলারের মতো এক নায়কতন্ত্রের স্বৈরাচাররা গণতন্ত্রের নামে পাড়ায়-পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায় যেসব রাজনৈতিক ক্যাডার দাঁড় করিয়ে রেখেছে, তারা সব হিটলারের মতো আচরণ করছে। গণতন্ত্রের সর্বজন গ্রহণযোগ্য আইন এরা মানছে না। এরা নিজেদের মতোন করে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা দাঁড় করিয়ে আসলে হিটলারের মতো স্বৈরাচারকেই পূজা করছে!
কন কি? এই হালারা ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে জান-মাল বাজি রাইখ্খা গণতন্ত্রের জন্য দুই পাকিস্তানের বৈষম্য দূর করার জন্য, লক্ষ লক্ষ ছাত্র-জনতা শহীদ হইল, মা-বোনের ইজ্জত খোয়াইল, ওই হিটলারের পা-চাটার জন্য! আফশোষ হালারা কি মানুষ, না কি পাকিস্তানির অবৈধ বাচ্চা!
তোকে কি বলব বল ওই সব ক্র্যাক প্ল্যাটুনের বীর সৈনিকরা, যারা ১৯৭১ এ, জান বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশটাকে স্বাধীন করেছিল সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধারা এখন টাকার লোভে, হিটলারের পা-চাটতে গিয়ে স্বাধীন রা বাংলদেশের জেলে পচে মরছে।
লজ্জা, লজ্জা!
ভাবতে পারিস, যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধারা রণাঙ্গনের আর্মি পোশাক পরে. স্টেনগান, হ্যান্ড গ্রেনেড, পিস্তল নিয়ে গাজীর বেশে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল আজকে তারাই টাকা চুরি করে হিটলারের দ্যেখানো রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে, চোরের মতো সেই বাংলাদেশেরই জেলে হাজতির পোশাক পরে প্রবেশ করছে। এ কান্না তুই কী বুঝবি... ১৯৭১-এ যে মুক্তিযোদ্ধাদের দেখে বাংলার জনগণ শ্রদ্ধায় মাথানত করত, সেই বাংলার জনগণই মাত্র স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের মাথায় মুক্তিযোদ্ধাদের হিটলারি কায়দায় চলাচলের জন্য টাকার প্রতি পৈশাচিক লোভের জন্য আজ জনসাধারণ ওদের ঘরবাড়ি, কলকারখানা, গাড়ি-ঘোড়া সব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে খাক করছে। জানি না বাংলার সাধারণ জনগণের কপালে আরো কী ভোগান্তি আছে। জনগণের কপালে আর কী আছে!
হালারা আজীবন তথাকথিত শিক্ষিত লোকের পা-চাটব আর মধ্যবিত্তরা আফিং খায়া হালারা চ্যাগায়া পইড়া থাকব। এই সব পুঁপ অশিক্ষিত জনগণ কবে যে মানুষ হোইবো তা ওই মধ্যবিত্তের আফিমই জানে।
কিন্তু এভাবে বললে তো হবে না! এই সব অশিক্ষিত সাধারণ জনগণ তোমার দেশের নাগরিক না?
আরে হালায় আপনে কী কন! এই সব জনগণ আমাগো দেশের নাগরিক মানে!
এঁরা তো জনগণ, দেশের মালিক! তাহলে এই মালিকরা অশিক্ষিত বলে তুই এঁদের সাথে ছলনা করবি?
এঁদের সরলতার সুযোগে এঁদের সাথে চিটিং করবি? তাহলে তোর শিক্ষার দাম রইল কোথায়!
আরে ভাই আজকাল আর কেউ কারো জন্য ভাবে না সবাই কয় আপনে বাঁচলে, বাপের নাম। এই আপনে বাঁচলে বাপের নাম করতে যায়া তো তোর বাপের মাথায় পাবলিক মানে দেশের মালিক কী ন্যাক্কারজনক ঘটনাই না ঘটাল। তাই বলি আর নিজের জন্য নিজের জীবনের জন্য লালায়িত না হয়ে এবার সকল মানুষের জন্য কাজ কর।
আচ্ছা আচ্ছা তুই না বলতি, আমরা বেবাগ গরিবেরা ভাই ভাই, আমগো কোনো চিহ্ন নাই, মার্কা নাই, আমরা বেবাগ গরিবেরা ভাই ভাই...
সে তো বুঝি আমরা সব গরিবরা যদি এক হোইতে পারি তাইলে আর কোনো নোংরা পাবলিক আমাগো গরিবগোরে বেকুব বানাইতে পারব না। তাই বলি সব বিভেদ ভুলে তোরা আর একবার, সবাই এক হয়ে ভাই ভায়ের মতো বসবাস কর। প্লিজ তোরা আর নিজেরা নিজেরা বাঙালি হয়ে বাঙালির সাথে খুনাখুনি করিস না! সামান্য কিছু টাকার লোভে তোরা নিজেরা নিজেরা মারামারি করে মরছিস। আর দেখলি তো, সব বস্তা বস্তা টাকা, কোটি কোটি টাকা ফেলে কোথায় যে পালিয়েছে, তার হদিসই পাওয়া যাচ্ছে না। তাহলে এই টাকা টাকা করে, নিজেদের মাঝে মারামরি করে কী লাভ হচ্ছে!
আসলেই ভাই কী কবো, ১৯৭১ এ, বাঙালি মুসলমান আর বিহারি মুসলমান বইল্লা মুসলমান মুসলমান ভায়ে ভায়ে মারামারি করলাম। আমাগো মুসলমানগো মারামারি থেইক্কা ফায়দা লুটলো হিন্দুস্তান। এখন কী কইতে পারেন, এই বাঙালি বাঙালি মারামারির থেইক্কা ফায়দা লুটব কে?
জানি না ভাই এই বাঙালি বাঙালি মারামারিতে কার ফায়দা হবে?
এই সামান্য জিনিসটা বলতে পারলেন না, বাঙালি বাঙালি মারামারিতে কার ফায়দা হবে?
কার ফায়দা হবে বলতে পারি না, তবে এটা বলতে পারি, এই বারের এই বাঙালি বাঙালি মারামারিতে অন্তত হিন্দুস্তানের ফায়দা হবে না।
তাহলে ফায়দা হবে কার?
তুইই বল ফায়দা হবে কার?
ফায়দা হবে ওই যে দাঁড়িয়ে আছে, গলিতে গলিতে হিটলার, ওই বাঙালি হিটলাররাই আবার ফায়দা লুটবে।
[লেখক : চলচ্চিত্রকার]