শামীম ইকবাল
সাধারণ গ্রাহকের ভোগান্তি নিয়ে বলতে গেলে নিজের পেশার সঙ্গে মানানসই নয় এমন অনেক বিষয়ের অবতারণা করার প্রয়োজন পড়বে। আসলে সহজ কথায় বলতে গেলে শুধুমাত্র যে গ্রাহকরা ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে তা নয়; ব্যাংকারাও নিয়মিত হচ্ছে হীনমন্যতার স্বীকার।
ব্যাংকের প্রধানতম কাজ হচ্ছে গ্রাহকের জমাকৃত অর্থ চাহিবামাত্র তার গ্রাহককে ফেরত দেয়ার সক্ষমতা। বিদ্যমান সময়ে কয়েকটি ব্যাংক গ্রাহকের চাহিদাকৃত অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছে। এই সমস্ত ব্যাংকের লাখ লাখ গ্রাহক এখন দিশাহীন, দৈনন্দিন ব্যাংকিং কার্যাদি স্থবির হয়ে পড়েছে। গ্রাহকরা তাদের জমাকৃত অর্থ ফেরত পাওয়ার যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য গ্রাহকেরা টাকার প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও উদ্বিগ্ন হয়ে ব্যাংকে ছুটে আসছেন ব্যাংক থেকে তাদের অর্থ উত্তোলনের জন্য। এতে করে ব্যাংকগুলোর সার্বিক অবস্থা নাজুক থেকে নাজুকতর হচ্ছে। ব্যক্তি গ্রাহকের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহক যাদের ব্যবসা অনেকাংশে ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল। সুতরাং, দুর্বল ব্যাংকগুলোর সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে তাদের ব্যবসায়িক কর্মকা- ব্যাপকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। দুর্বল ব্যাংকগুলোর সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যে পরিচালনা পর্ষদে ব্যাপক রদবদল করা হলেও যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাদের বাণিজ্যিক ব্যাংক পরিচালনার অভিজ্ঞতা, জনগণের এবং ব্যাংকের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন জাগাটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। তাছাড়া ব্যাংকের ব্যবস্থাপনার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দৃষ্টিভঙ্গীর মেলবন্ধন তেমনভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ব্যবস্থাপনার জন্য নতুনভাবে যাদের নিযুক্ত করা হচ্ছে তাদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পেশাগত দক্ষতা থেকে বিবেচনা করা হচ্ছে তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ অথবা বিগত পরিচালনা পর্ষদের সময়ে বঞ্চিত অথবা চাকুরিচ্যুত ব্যক্তিদের। সুতরাং, সুশাসন প্রতিষ্ঠার যে মহান বার্তা আমাদের সামনে আনা হয়েছিল তা এখন মলিন হতে বসেছে। ব্যাংকিংয়ে সার্বিক সুশাসনের নামে ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির থেকে বর্তমানে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বেশি সময় ব্যয় করছে নিম্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুতি অথবা বদলি নিয়ে এবং বিভিন্ন তেলবাজ শ্রেণীর প্রমোশন এবং গুরুত্বপূর্ণ পদায়ন নিয়ে।
এ বিষয়ে সন্দেহ থাকার বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই যে, দুর্বল ব্যাংকগুলোর বর্তমান অবস্থার জন্য অবশ্যই দায়ী ছিল সুশাসনের অভাব, ব্যাংকিং আইনের পরিপন্থি নানাবিধ কর্মকা-ে জড়িয়ে ব্যাংকের স্বাভাবিকত্ব বিনষ্ট করা। ব্যাংকিং খাতে নিয়োগে মেধাবীদের অবহেলার সুযোগে তৈরি হয়েছে অত্যন্ত অদক্ষ মানবসম্পদ, আর এই অবমূল্যায়নের কারণে দক্ষ মেধাবী ব্যাংকারা চাকরি ছেড়েছেন আর নবীন মেধাবীরা হয়েছে ব্যাংক চাকরিবিমুখ। দুর্বল ব্যাংকগুলোর বর্তমান অবস্থার জন্য তার জন্য রাষ্ট্র মদদপুষ্ট লুটপাট অবশ্যই দায়ী এবং এর সঙ্গে দুর্বল ব্যাংকগুলোর গুটিকতক কর্মকর্তা যেমন দায়ী; তেমনই দায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের অবৈধ সুবিধাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। এই বিষয় ভাবার অবকাশ নেই যে, উক্ত ব্যাংকগুলোতে যে নানাবিধ অবৈধ কর্মকা- সংগঠিত হয়েছে সেগুলো নিশ্চয়ই বাংলাদেশ ব্যাংকের অক্ষির অগোচরে হয়নি। ব্যাংকগুলোর দুঃসময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের কর্মকা- নিয়ন্ত্রণ করার পরিবর্তে টাকা ছাপিয়ে ব্যাংকগুলোকে অভূতপূর্ব সহায়তা প্রদান করেছে আর সেই অর্থ ব্যাংকগুলো বিশেষ গ্রুপকে নিয়ম-নীতির পরিপালন না করে বিনিয়োগ করেছে। ফলশ্রুতিতে যা হওয়ার তাই হয়েছে; আমানতের বিপরীতে বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক বেশি তাই সৃষ্টি হয়েছে তারল্য সংকট। পরিবর্তনের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক এইসব ব্যাংকগুলোকে সরাসরি তারল্য সহায়তা প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে ব্যাংকগুলো আমানতকারীদের অর্থ প্রদান করতে ব্যর্থ হচ্ছে, সুতরাং ভেঙে পড়েছে ব্যাংকগুলোর মৌলিক ভিত্তি।
যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে কিছু ব্যাংক যাদের উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে তারা উচ্চ সুদে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা ঋণ প্রদান করেছে। তবে এই সহয়তা যে তেমন কোন কার্যকরী কোন সমাধান বলে দৃশ্যমান হচ্ছে না। আর স্বাভাবিক কার্যক্রম না পরিচালনা করার জন্য উদ্বিগ্ন গ্রাহকের ব্যাংক দিকে দৌড় এই সামান্য পরিমাণ তারল্য সহায়তা দীর্ঘমেয়াদি কোন সমাধান হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে না। তাছাড়া নগদ লেনদেন না করার পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে আন্তঃব্যাংক লেনদেন করতে না পারার কারণে ব্যাংকগুলোর লেনদেনে পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের বিবৃতিতে গ্রাহকদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের দরকার স্বাভাবিক ব্যাংকিং সেবা। ব্যাংকগুলোর দরকার স্বাভাবিক ব্যাংকিং কর্মকা-। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক এখনো কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেই, তারা ব্যাংকগুলোর পর্ষদগুলোর কর্মকা-ে খুবই সন্তুষ্ট। কিন্তু গ্রাহকরা উদ্বিগ্ন, সাধারণ কর্মকর্তারা দিশাহারা। যেহেতু আমাদের দেশের অর্থনীতি ব্যাংকনির্ভর, সুতরাং কিছু ব্যাংকের দুর্বলতা ছড়িয়ে পড়তে পারে সার্বিক অর্থনীতিতে নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট পড়তে পারে। এই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এসেছে, যেমন ব্যাংকগুলোর কর্মকা-ে কঠোর নিয়ন্ত্রণ রেখে এমন সহয়তা প্রদান করা যাতে ব্যাংকগুলো স্বাভাবিক ব্যাংকিং কর্মকা- পরিচালনা করতে পারে। গ্রাহকরা যদি স্বাভাবিক চাহিদা অনুযায়ী অর্থ উত্তোলন করতে পারে, তারা আবার ব্যাংকে টাকা জমা করবে; এটাই ব্যাংকের চক্রাকার প্রক্রিয়া। তবে এই সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি, বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত এইসব দুর্বল ব্যাংকগুলোর খারাপ সম্পদ পুনঃরুদ্ধারে প্রেসারাইজ করা এবং ভবিষ্যতে এমন খারাপ বিনিয়োগ না করে তার দিকে নজর রাখা। দুর্বল ব্যাংকগুলোর মধ্যে পরিপূর্ণ সুশাসন নিশ্চিত করা এবং পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যাংক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে পেশাগত সম্পর্ক নিশ্চিত করা। অন্যথায়, যতই হোক সংস্কার, সামনে আসছে শুধু অন্ধকার।
[লেখক : ব্যাংকার]
শামীম ইকবাল
শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪
সাধারণ গ্রাহকের ভোগান্তি নিয়ে বলতে গেলে নিজের পেশার সঙ্গে মানানসই নয় এমন অনেক বিষয়ের অবতারণা করার প্রয়োজন পড়বে। আসলে সহজ কথায় বলতে গেলে শুধুমাত্র যে গ্রাহকরা ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে তা নয়; ব্যাংকারাও নিয়মিত হচ্ছে হীনমন্যতার স্বীকার।
ব্যাংকের প্রধানতম কাজ হচ্ছে গ্রাহকের জমাকৃত অর্থ চাহিবামাত্র তার গ্রাহককে ফেরত দেয়ার সক্ষমতা। বিদ্যমান সময়ে কয়েকটি ব্যাংক গ্রাহকের চাহিদাকৃত অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছে। এই সমস্ত ব্যাংকের লাখ লাখ গ্রাহক এখন দিশাহীন, দৈনন্দিন ব্যাংকিং কার্যাদি স্থবির হয়ে পড়েছে। গ্রাহকরা তাদের জমাকৃত অর্থ ফেরত পাওয়ার যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য গ্রাহকেরা টাকার প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও উদ্বিগ্ন হয়ে ব্যাংকে ছুটে আসছেন ব্যাংক থেকে তাদের অর্থ উত্তোলনের জন্য। এতে করে ব্যাংকগুলোর সার্বিক অবস্থা নাজুক থেকে নাজুকতর হচ্ছে। ব্যক্তি গ্রাহকের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহক যাদের ব্যবসা অনেকাংশে ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল। সুতরাং, দুর্বল ব্যাংকগুলোর সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে তাদের ব্যবসায়িক কর্মকা- ব্যাপকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। দুর্বল ব্যাংকগুলোর সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যে পরিচালনা পর্ষদে ব্যাপক রদবদল করা হলেও যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাদের বাণিজ্যিক ব্যাংক পরিচালনার অভিজ্ঞতা, জনগণের এবং ব্যাংকের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন জাগাটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। তাছাড়া ব্যাংকের ব্যবস্থাপনার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দৃষ্টিভঙ্গীর মেলবন্ধন তেমনভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ব্যবস্থাপনার জন্য নতুনভাবে যাদের নিযুক্ত করা হচ্ছে তাদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পেশাগত দক্ষতা থেকে বিবেচনা করা হচ্ছে তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ অথবা বিগত পরিচালনা পর্ষদের সময়ে বঞ্চিত অথবা চাকুরিচ্যুত ব্যক্তিদের। সুতরাং, সুশাসন প্রতিষ্ঠার যে মহান বার্তা আমাদের সামনে আনা হয়েছিল তা এখন মলিন হতে বসেছে। ব্যাংকিংয়ে সার্বিক সুশাসনের নামে ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির থেকে বর্তমানে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বেশি সময় ব্যয় করছে নিম্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুতি অথবা বদলি নিয়ে এবং বিভিন্ন তেলবাজ শ্রেণীর প্রমোশন এবং গুরুত্বপূর্ণ পদায়ন নিয়ে।
এ বিষয়ে সন্দেহ থাকার বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই যে, দুর্বল ব্যাংকগুলোর বর্তমান অবস্থার জন্য অবশ্যই দায়ী ছিল সুশাসনের অভাব, ব্যাংকিং আইনের পরিপন্থি নানাবিধ কর্মকা-ে জড়িয়ে ব্যাংকের স্বাভাবিকত্ব বিনষ্ট করা। ব্যাংকিং খাতে নিয়োগে মেধাবীদের অবহেলার সুযোগে তৈরি হয়েছে অত্যন্ত অদক্ষ মানবসম্পদ, আর এই অবমূল্যায়নের কারণে দক্ষ মেধাবী ব্যাংকারা চাকরি ছেড়েছেন আর নবীন মেধাবীরা হয়েছে ব্যাংক চাকরিবিমুখ। দুর্বল ব্যাংকগুলোর বর্তমান অবস্থার জন্য তার জন্য রাষ্ট্র মদদপুষ্ট লুটপাট অবশ্যই দায়ী এবং এর সঙ্গে দুর্বল ব্যাংকগুলোর গুটিকতক কর্মকর্তা যেমন দায়ী; তেমনই দায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের অবৈধ সুবিধাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। এই বিষয় ভাবার অবকাশ নেই যে, উক্ত ব্যাংকগুলোতে যে নানাবিধ অবৈধ কর্মকা- সংগঠিত হয়েছে সেগুলো নিশ্চয়ই বাংলাদেশ ব্যাংকের অক্ষির অগোচরে হয়নি। ব্যাংকগুলোর দুঃসময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের কর্মকা- নিয়ন্ত্রণ করার পরিবর্তে টাকা ছাপিয়ে ব্যাংকগুলোকে অভূতপূর্ব সহায়তা প্রদান করেছে আর সেই অর্থ ব্যাংকগুলো বিশেষ গ্রুপকে নিয়ম-নীতির পরিপালন না করে বিনিয়োগ করেছে। ফলশ্রুতিতে যা হওয়ার তাই হয়েছে; আমানতের বিপরীতে বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক বেশি তাই সৃষ্টি হয়েছে তারল্য সংকট। পরিবর্তনের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক এইসব ব্যাংকগুলোকে সরাসরি তারল্য সহায়তা প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে ব্যাংকগুলো আমানতকারীদের অর্থ প্রদান করতে ব্যর্থ হচ্ছে, সুতরাং ভেঙে পড়েছে ব্যাংকগুলোর মৌলিক ভিত্তি।
যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে কিছু ব্যাংক যাদের উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে তারা উচ্চ সুদে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা ঋণ প্রদান করেছে। তবে এই সহয়তা যে তেমন কোন কার্যকরী কোন সমাধান বলে দৃশ্যমান হচ্ছে না। আর স্বাভাবিক কার্যক্রম না পরিচালনা করার জন্য উদ্বিগ্ন গ্রাহকের ব্যাংক দিকে দৌড় এই সামান্য পরিমাণ তারল্য সহায়তা দীর্ঘমেয়াদি কোন সমাধান হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে না। তাছাড়া নগদ লেনদেন না করার পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে আন্তঃব্যাংক লেনদেন করতে না পারার কারণে ব্যাংকগুলোর লেনদেনে পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের বিবৃতিতে গ্রাহকদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের দরকার স্বাভাবিক ব্যাংকিং সেবা। ব্যাংকগুলোর দরকার স্বাভাবিক ব্যাংকিং কর্মকা-। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক এখনো কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেই, তারা ব্যাংকগুলোর পর্ষদগুলোর কর্মকা-ে খুবই সন্তুষ্ট। কিন্তু গ্রাহকরা উদ্বিগ্ন, সাধারণ কর্মকর্তারা দিশাহারা। যেহেতু আমাদের দেশের অর্থনীতি ব্যাংকনির্ভর, সুতরাং কিছু ব্যাংকের দুর্বলতা ছড়িয়ে পড়তে পারে সার্বিক অর্থনীতিতে নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট পড়তে পারে। এই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এসেছে, যেমন ব্যাংকগুলোর কর্মকা-ে কঠোর নিয়ন্ত্রণ রেখে এমন সহয়তা প্রদান করা যাতে ব্যাংকগুলো স্বাভাবিক ব্যাংকিং কর্মকা- পরিচালনা করতে পারে। গ্রাহকরা যদি স্বাভাবিক চাহিদা অনুযায়ী অর্থ উত্তোলন করতে পারে, তারা আবার ব্যাংকে টাকা জমা করবে; এটাই ব্যাংকের চক্রাকার প্রক্রিয়া। তবে এই সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি, বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত এইসব দুর্বল ব্যাংকগুলোর খারাপ সম্পদ পুনঃরুদ্ধারে প্রেসারাইজ করা এবং ভবিষ্যতে এমন খারাপ বিনিয়োগ না করে তার দিকে নজর রাখা। দুর্বল ব্যাংকগুলোর মধ্যে পরিপূর্ণ সুশাসন নিশ্চিত করা এবং পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যাংক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে পেশাগত সম্পর্ক নিশ্চিত করা। অন্যথায়, যতই হোক সংস্কার, সামনে আসছে শুধু অন্ধকার।
[লেখক : ব্যাংকার]