আনোয়ারুল হক
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে গত ১ ডিসেম্বর রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। ফলে এই মামলায় দণ্ডিত সব আসামি খালাস পেলেন। মামলার রায়ের পরে সাংবাদিক মাসুদ কামাল যথার্থই প্রশ্ন তুলেছিলেন, তা হলে কি ২১ আগস্ট কোন গ্রেনেড হামলা হয় নি? আইভী রহমান কি ডাইরিয়ায় মারা গেছেন?
হাইকোর্টের পূর্নাংগ রায়ে অবশ্য ন্যায়বিচার নিশ্চিতে যথাযথ ও বিশেষজ্ঞ সংস্থার মাধ্যমে মামলা দুটি তদন্তে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রায়ের অনুলিপি পাঠাতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অতীত মুছে ফেলতে চাইলেও সংবাদ হয়ে বারবার ফিরে আসছে ২১ আগষ্ট। জনসভায় গ্রেনেড বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ২৪ জনকে হত্যা ও ৩০০ জনের অধিককে আহত করার ঘটনা নজিরবিহীন। ২০০৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা হয়েছিল।
একটা ট্রাকের ওপর তৈরি মঞ্চ থেকে বক্তৃতা শেষে তিনি ট্রাক থেকে নিচে নেমে আসতে থাকার সময়ে মঞ্চ লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা শুরু হয়। মাত্র দেড় মিনিটের মধ্যে বিস্ফোরিত হয় ১১টি শক্তিশালী গ্রেনেড। এতে ঘটনাস্থলেই ১২ জন এবং পরে হাসপাতালে আরও ১২ জন নিহত হন।
এই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এই হামলার নিন্দা এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি বিধানের অঙ্গীকার করলেও পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা নিজেই গ্রেনেড হামলার নাটক সাজিয়েছেন। তৎকালীন শাসকদলের কোন কোন নেতা বক্তৃতায় বলেন শেখ হাসিনা তার ভ্যানিটি ব্যাগে করে বোমা নিয়ে গিয়েছিলেন। এসব বক্তব্য এবং বহুল আলোচিত জজ মিয়া নাটক বি.এন.পি আমলের তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
শেখ হাসিনার মনে এমন এক ধারনার সৃষ্টি হয় যে,বিরোধীদের হাতে তার জীবন বিপন্ন। তার পিতা-মাতাসহ প্রায় পুরো পরিবার হত্যাযজ্ঞের শিকার হওয়ায়, তার উপরও একাধিকবার হত্যা প্রচেষ্টা হওয়ায় এবং হত্যা প্রচেষ্টার যথাযথ তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া অগ্রসর না হওয়ায় এ ধারনা তার বিশ্বাসে পরিনত হয়। কার্যত ধীরে ধীরে তিনি ‘ট্রমাটাইজড’ হয়ে পড়েন। শেখ হাসিনার শাসনামলে বিরোধী কন্ঠস্বর দমন, কতৃত্ববাদ ও ফ্যাসিবাদী প্রবনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এ ঘটনা অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
অন্যদিকে ২০০৬ সালে ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনের সময় সুবিধা আদায়ের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা পদে পছন্দের প্রধান বিচারপতিকে মনোনীত করার উদ্দেশ্যে তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী খালেদা জিয়া প্রধান বিচারপতির অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে দিয়ে দেশের বুকে এক জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। এবং কার্যত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার এক প্রকার অবসান ঘটান। এর পরে আওয়ামী লীগ সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের আন্দোলন সহ নানা ঘটনাবলি ও সংঘাতময় এক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নানা পালাবদলের মধ্য দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আবরনে যে সরকার আসীন হয় সেখানে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে সেনাবাহিনী। সেনা সমর্থিত সরকার হিসেবে বা সংক্ষেপে ১/১১-র সরকার নামে তা পরিচিতি অর্জন করে। তৎকালীন সামরিক নেতৃত্ব উগ্র কতৃত্ববাদী মনোভাব নিয়ে রাজনৈতিক সংস্কারের নামে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উপর, শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের উপর ঢালাওভাবে চড়াও হয়। রাজনৈতিক সংস্কারের সে উদ্যোগকে নাগরিক সমাজের অনেকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সমর্থন করলেও মাইনাস টু ফর্মুলা হিসেবে খ্যাত বিরাজনীতিকরন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংস্কার উদ্যোগ কার্যত ব্যর্থ হয়। ঐ সময়ে রাজনৈতিক দল গঠন করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সমালোচিত হওয়ার পাশাপাশি শেখ হাসিনার বিরাগভাজন হন।
সেনা সমর্থিত সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বিশেষত শেখ হাসিনার সাথে সমঝোতায় এসে অপেক্ষাকৃত একটি ভালো নির্বাচন করে বিদায় হয়। আওয়ামী লীগ বিপুলভাবে বিজয়ী হলেও নানা রাজনৈতিক সমীকরণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকার অনেকটাই ১/১১ -র সরকারের বর্ধিত সংস্করণে পরিণত হয়। ফলে ১৯৯১ থেকে দ্বিদলীয় মেরুকরণে প্রধান দুই দল পালাক্রমে সরকার পরিচালনার সময়ে সীমিত অর্থে যতটুকু গনতান্ত্রিক পরিসর ছিলো তাও ধীরে ধীরে সংকুচিত হতে থাকে। নির্বাচনে দলীয় সুবিধা পেতে জনমতকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে সংবিধান সংশোধন করার ব্যবস্থা করেন। এবং পর পর তিনটি একতরফা নির্বাচন করে বিরোধী দলকে ক্ষমতার বাইরে রাখাটা নিশ্চিত করেন। অবশ্য ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহলের চাপে শেখ হাসিনা বিএনপি-র প্রতিনিধিত্ব সহ নির্বাচনকালীন একটি সরকারের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন আয়োজন করতে সম্মত হলেও বেগম খালেদা জিয়া আপোষহীন থেকে শেখ হাসিনার ফাঁদেই পা দেন। এবং কার্যত শেখ হাসিনার নিরংকুশ ক্ষমতা ও কতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দেন। আওয়ামী লীগ একনাগাডে ১৫ বছর জবরদস্তি মূলক ভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে রেখে এবং সামরিক বেসামরিক আমলা ও ব্যবসায়ীদের অবাধ আর্থিক লুন্ঠনের সুযোগ করে দিয়ে, দেশের শিক্ষক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের বড় অংশকেই নানা সুযোগ সুবিধার প্রলোভনে এবং বিএনপি-জামায়াত জুজুর আতঙ্ক ছড়িয়ে বশীভূত রাখতে সক্ষম হয়। দেশের বুকে কায়েম হয় অনেকটা একদলীয় বা প্রকৃত অর্থে শেখ হাসিনার কতৃত্ববাদী স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা যা দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতিও সৃষ্টি করে ।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি শাসনামলে ভারতের সাথে সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর বিদ্রোহীদের মদদ দেয়া, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ ক্যাম্প পরিচালনা করার
সুযোগ দেয়া এবং এবং পাকিস্তানের আই.এস ও চীনের সাথে তাদের সংযোগ প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সমর্থন ও সহযোগিতার অভিযোগ ভারত করে আসছিলো। সে দিক থেকে আওয়ামী শাসন আমলে এ ধরনের কোন শংকা না থাকায় এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ব্যবসা বানিজ্যে বাড়তি সুবিধা পেয়ে ভারতবর্ষেও শাসকগোষ্ঠী যেন তেন ভাবে শেখ হাসিনার ক্ষমতা আঁকড়ে থাকাকে প্রকাশ্যে সমর্থন করে আসছিল।
ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূল পেয়ে শেখ হাসিনা হয়ে ওঠেন আরো দূর্বীনিত। আর ভারতীয় পররাষ্ট্র নীতির এ ধরনের দেউলিয়াত্ব বাংলাদেশে উগ্র ভারতবিরোধী মনোভাব সৃষ্টি করে। বিশেষতঃ বিজেপি ভারতীয় রাজনীতিতে ক্রমান্বয়ে হিন্দুত্ববাদী প্রচারনা বৃদ্ধি ও মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্য গুলোতে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করার প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তিও তাদের রাজনীতি প্রসারে উর্বর জমিন পেয়ে যায়।
নিজেদের রাজনৈতিক দূর্বলতার কারণে উগ্রবাদী ধর্মান্ধ শক্তির বাড় বাড়ন্তকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার নৈতিক শক্তি হারিয়ে শেখ হাসিনা কখনও শক্তি প্রয়োগ করে, কখনও নীতিগত ছাড় দিয়ে আবার কখনও ঐ সব গোষ্ঠীর নেতাদের পেছনে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে তাঁদের বশে রাখেন। এতে করে সরকার সাময়িক সুবিধা পেলেও ভিতরে ভিতরে উগ্রবাদী গোষ্ঠী আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে। যার প্রকাশ হাসিনা পতনের পরে এখন খুবই দৃশ্যমান।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জামায়াতে ইসলাম ও তার ছাত্র সংগঠনের গনহত্যাকারী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে সহযোগিতা সমর্থন এবং রাজাকার আলবদর বাহিনী গঠন করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সমর্থকদের বিশেষত বুদ্ধিজীবীদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়ায় জনমানসে তাদের প্রতি একটা ঘৃনা রয়েছে। কিন্তু সরকার বিরোধী কিছু ঘটলেইশেখ হাসিনা তার মধ্যে জামায়াত-শিবির খুঁজে পেতেন। এবং তাঁর জামায়ত-শিবির প্রলাপ এক পর্যায়ে মানুষের মাঝে বিরক্তির সৃষ্টি করে ও তাদের প্রতি ঘৃনাবোধকে কিছুটা হালকা করে দেয়।
বাংলাদেশের ইতিহাসের পথ পরিক্রমায় সকল সময়ে বিশেষত সন্ধিক্ষণ গুলোতে বামপন্থীদের উল্লেখযোগ্য এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে কেন্দ্রস্থিত ভূমিকা রয়েছে। বিগত পনেরো বছরে বামপন্থিরা সাধ্যমত মানুষের রুটি রুজির সংগ্রামে এবং স্বৈরাচারী ও কতৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে অবিচল থাকলেও জাতীয় রাজনীতিতে দৃশ্যমান ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়নি। শেখ হাসিনার কতৃত্ববাদী সরকার বামপন্থীদের একটি অংশকে ও কৌশলে তাঁদের শরিক করে ফেলে। সিপিবি সহ অন্য বামপন্থীরা লড়াইয়ের ময়দানে থাকলেও সকল বামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম না থাকায় বামপন্থীরা সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ দাগ কাটতে সক্ষম হয়নি।
দেশীয় এবং ভূ-রাজনৈতিক এমনতর পরিস্থিতিতে স্বৈরতন্ত্র,একনায়কতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদী প্রবনতা ডালপালা বিস্তার করে। যার ভ্রুন সৃষ্টি হয়েছিলো ২০০৪ সালের ২৪ নভেম্বরের পৈশাচিক ও নৃশংস গ্রেনেড হামলার মধ্য দিয়ে এবং পরবর্তীতে ফুলে ফলে পল্লবিত হয়েছে দেশের প্রধান দুই দলের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক ভূমিকার মধ্য দিয়ে। আওয়ামী লীগ একনাগাড়ে ১৫ বছর জবরদস্তি মূলক ভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে রেখে এবং সামরিক বেসামরিক আমলা ও ব্যবসায়ীদের অবাধ আর্থিক লুন্ঠনের সুযোগ করে দিয়ে, দেশের শিক্ষক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের বড় অংশকেই নানা সুযোগ সুবিধার প্রলোভনে এবং বিএনপি-জামায়াত জুজুর আতঙ্ক ছড়িয়ে বশীভূত রাখতে সক্ষম হয়। দেশের বুকে কায়েম হয় অনেকটা একদলীয় বা প্রকৃত অর্থে শেখ হাসিনার কতৃত্ববাদী স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা যা দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতিও সৃষ্টি করে । এবারের অভূতপূর্ব গনঅভ্যুত্থানের বিজয়ের পরে ২৪ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অপরাধীদের এবং এর পেছনের কুশীলবদের বিচার ও শাস্তি যদি নিশ্চিত না করা হয়, বিচারহীনতার সংস্কৃতিই যদি চলতে থাকে তবে সরকারের ফ্যাসিবাদ বিরোধী অবস্থান এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার বুলি গুরুতর প্রশ্নের মুখে পড়বে। সকল আসামিরই বেকসুর খালাস ইতোমধ্যে জনমনে প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে মানে এই নয় যে, তার জনসভায় গ্রেনেড হামলা, তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র ও ২৪ জন আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীকে হত্যাকারীরা এখন গাজী উপাধিতে ভূষিত হবে! আওয়ামী লীগ সরকার আমলে মামলার অধিকতর তদন্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়ার কারনেঅপরাধীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকবে!
দেশে প্রকৃত অর্থে গনতন্ত্রের বাতাবরণ সৃষ্টি করতে চাইলে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে জরুরীভাবে এবং অতিদ্রুত এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার মামলা সহ অনেক মামলাই তো অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত নিষ্পত্তি করছে।গ্রেনেড হামলা মামলার বিষয়েও দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা প্রয়োজন । তা নাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা এবং পতিত শক্তির বিরুদ্ধেও যে গুম, খুন, আয়না ঘরে বেআইনি আটক এবং সাম্প্রতিক ছাত্র গন আন্দোলন দমনে নির্বিচার হত্যা মামলার যে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
[লেখক: সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন]
আনোয়ারুল হক
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে গত ১ ডিসেম্বর রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। ফলে এই মামলায় দণ্ডিত সব আসামি খালাস পেলেন। মামলার রায়ের পরে সাংবাদিক মাসুদ কামাল যথার্থই প্রশ্ন তুলেছিলেন, তা হলে কি ২১ আগস্ট কোন গ্রেনেড হামলা হয় নি? আইভী রহমান কি ডাইরিয়ায় মারা গেছেন?
হাইকোর্টের পূর্নাংগ রায়ে অবশ্য ন্যায়বিচার নিশ্চিতে যথাযথ ও বিশেষজ্ঞ সংস্থার মাধ্যমে মামলা দুটি তদন্তে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রায়ের অনুলিপি পাঠাতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অতীত মুছে ফেলতে চাইলেও সংবাদ হয়ে বারবার ফিরে আসছে ২১ আগষ্ট। জনসভায় গ্রেনেড বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ২৪ জনকে হত্যা ও ৩০০ জনের অধিককে আহত করার ঘটনা নজিরবিহীন। ২০০৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা হয়েছিল।
একটা ট্রাকের ওপর তৈরি মঞ্চ থেকে বক্তৃতা শেষে তিনি ট্রাক থেকে নিচে নেমে আসতে থাকার সময়ে মঞ্চ লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা শুরু হয়। মাত্র দেড় মিনিটের মধ্যে বিস্ফোরিত হয় ১১টি শক্তিশালী গ্রেনেড। এতে ঘটনাস্থলেই ১২ জন এবং পরে হাসপাতালে আরও ১২ জন নিহত হন।
এই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এই হামলার নিন্দা এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি বিধানের অঙ্গীকার করলেও পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা নিজেই গ্রেনেড হামলার নাটক সাজিয়েছেন। তৎকালীন শাসকদলের কোন কোন নেতা বক্তৃতায় বলেন শেখ হাসিনা তার ভ্যানিটি ব্যাগে করে বোমা নিয়ে গিয়েছিলেন। এসব বক্তব্য এবং বহুল আলোচিত জজ মিয়া নাটক বি.এন.পি আমলের তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
শেখ হাসিনার মনে এমন এক ধারনার সৃষ্টি হয় যে,বিরোধীদের হাতে তার জীবন বিপন্ন। তার পিতা-মাতাসহ প্রায় পুরো পরিবার হত্যাযজ্ঞের শিকার হওয়ায়, তার উপরও একাধিকবার হত্যা প্রচেষ্টা হওয়ায় এবং হত্যা প্রচেষ্টার যথাযথ তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া অগ্রসর না হওয়ায় এ ধারনা তার বিশ্বাসে পরিনত হয়। কার্যত ধীরে ধীরে তিনি ‘ট্রমাটাইজড’ হয়ে পড়েন। শেখ হাসিনার শাসনামলে বিরোধী কন্ঠস্বর দমন, কতৃত্ববাদ ও ফ্যাসিবাদী প্রবনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এ ঘটনা অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
অন্যদিকে ২০০৬ সালে ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনের সময় সুবিধা আদায়ের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা পদে পছন্দের প্রধান বিচারপতিকে মনোনীত করার উদ্দেশ্যে তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী খালেদা জিয়া প্রধান বিচারপতির অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে দিয়ে দেশের বুকে এক জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। এবং কার্যত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার এক প্রকার অবসান ঘটান। এর পরে আওয়ামী লীগ সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের আন্দোলন সহ নানা ঘটনাবলি ও সংঘাতময় এক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নানা পালাবদলের মধ্য দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আবরনে যে সরকার আসীন হয় সেখানে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে সেনাবাহিনী। সেনা সমর্থিত সরকার হিসেবে বা সংক্ষেপে ১/১১-র সরকার নামে তা পরিচিতি অর্জন করে। তৎকালীন সামরিক নেতৃত্ব উগ্র কতৃত্ববাদী মনোভাব নিয়ে রাজনৈতিক সংস্কারের নামে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উপর, শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের উপর ঢালাওভাবে চড়াও হয়। রাজনৈতিক সংস্কারের সে উদ্যোগকে নাগরিক সমাজের অনেকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সমর্থন করলেও মাইনাস টু ফর্মুলা হিসেবে খ্যাত বিরাজনীতিকরন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংস্কার উদ্যোগ কার্যত ব্যর্থ হয়। ঐ সময়ে রাজনৈতিক দল গঠন করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সমালোচিত হওয়ার পাশাপাশি শেখ হাসিনার বিরাগভাজন হন।
সেনা সমর্থিত সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বিশেষত শেখ হাসিনার সাথে সমঝোতায় এসে অপেক্ষাকৃত একটি ভালো নির্বাচন করে বিদায় হয়। আওয়ামী লীগ বিপুলভাবে বিজয়ী হলেও নানা রাজনৈতিক সমীকরণে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকার অনেকটাই ১/১১ -র সরকারের বর্ধিত সংস্করণে পরিণত হয়। ফলে ১৯৯১ থেকে দ্বিদলীয় মেরুকরণে প্রধান দুই দল পালাক্রমে সরকার পরিচালনার সময়ে সীমিত অর্থে যতটুকু গনতান্ত্রিক পরিসর ছিলো তাও ধীরে ধীরে সংকুচিত হতে থাকে। নির্বাচনে দলীয় সুবিধা পেতে জনমতকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে সংবিধান সংশোধন করার ব্যবস্থা করেন। এবং পর পর তিনটি একতরফা নির্বাচন করে বিরোধী দলকে ক্ষমতার বাইরে রাখাটা নিশ্চিত করেন। অবশ্য ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহলের চাপে শেখ হাসিনা বিএনপি-র প্রতিনিধিত্ব সহ নির্বাচনকালীন একটি সরকারের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন আয়োজন করতে সম্মত হলেও বেগম খালেদা জিয়া আপোষহীন থেকে শেখ হাসিনার ফাঁদেই পা দেন। এবং কার্যত শেখ হাসিনার নিরংকুশ ক্ষমতা ও কতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দেন। আওয়ামী লীগ একনাগাডে ১৫ বছর জবরদস্তি মূলক ভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে রেখে এবং সামরিক বেসামরিক আমলা ও ব্যবসায়ীদের অবাধ আর্থিক লুন্ঠনের সুযোগ করে দিয়ে, দেশের শিক্ষক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের বড় অংশকেই নানা সুযোগ সুবিধার প্রলোভনে এবং বিএনপি-জামায়াত জুজুর আতঙ্ক ছড়িয়ে বশীভূত রাখতে সক্ষম হয়। দেশের বুকে কায়েম হয় অনেকটা একদলীয় বা প্রকৃত অর্থে শেখ হাসিনার কতৃত্ববাদী স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা যা দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতিও সৃষ্টি করে ।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি শাসনামলে ভারতের সাথে সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর বিদ্রোহীদের মদদ দেয়া, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ ক্যাম্প পরিচালনা করার
সুযোগ দেয়া এবং এবং পাকিস্তানের আই.এস ও চীনের সাথে তাদের সংযোগ প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সমর্থন ও সহযোগিতার অভিযোগ ভারত করে আসছিলো। সে দিক থেকে আওয়ামী শাসন আমলে এ ধরনের কোন শংকা না থাকায় এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ব্যবসা বানিজ্যে বাড়তি সুবিধা পেয়ে ভারতবর্ষেও শাসকগোষ্ঠী যেন তেন ভাবে শেখ হাসিনার ক্ষমতা আঁকড়ে থাকাকে প্রকাশ্যে সমর্থন করে আসছিল।
ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূল পেয়ে শেখ হাসিনা হয়ে ওঠেন আরো দূর্বীনিত। আর ভারতীয় পররাষ্ট্র নীতির এ ধরনের দেউলিয়াত্ব বাংলাদেশে উগ্র ভারতবিরোধী মনোভাব সৃষ্টি করে। বিশেষতঃ বিজেপি ভারতীয় রাজনীতিতে ক্রমান্বয়ে হিন্দুত্ববাদী প্রচারনা বৃদ্ধি ও মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্য গুলোতে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করার প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তিও তাদের রাজনীতি প্রসারে উর্বর জমিন পেয়ে যায়।
নিজেদের রাজনৈতিক দূর্বলতার কারণে উগ্রবাদী ধর্মান্ধ শক্তির বাড় বাড়ন্তকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার নৈতিক শক্তি হারিয়ে শেখ হাসিনা কখনও শক্তি প্রয়োগ করে, কখনও নীতিগত ছাড় দিয়ে আবার কখনও ঐ সব গোষ্ঠীর নেতাদের পেছনে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে তাঁদের বশে রাখেন। এতে করে সরকার সাময়িক সুবিধা পেলেও ভিতরে ভিতরে উগ্রবাদী গোষ্ঠী আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে। যার প্রকাশ হাসিনা পতনের পরে এখন খুবই দৃশ্যমান।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জামায়াতে ইসলাম ও তার ছাত্র সংগঠনের গনহত্যাকারী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে সহযোগিতা সমর্থন এবং রাজাকার আলবদর বাহিনী গঠন করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সমর্থকদের বিশেষত বুদ্ধিজীবীদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়ায় জনমানসে তাদের প্রতি একটা ঘৃনা রয়েছে। কিন্তু সরকার বিরোধী কিছু ঘটলেইশেখ হাসিনা তার মধ্যে জামায়াত-শিবির খুঁজে পেতেন। এবং তাঁর জামায়ত-শিবির প্রলাপ এক পর্যায়ে মানুষের মাঝে বিরক্তির সৃষ্টি করে ও তাদের প্রতি ঘৃনাবোধকে কিছুটা হালকা করে দেয়।
বাংলাদেশের ইতিহাসের পথ পরিক্রমায় সকল সময়ে বিশেষত সন্ধিক্ষণ গুলোতে বামপন্থীদের উল্লেখযোগ্য এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে কেন্দ্রস্থিত ভূমিকা রয়েছে। বিগত পনেরো বছরে বামপন্থিরা সাধ্যমত মানুষের রুটি রুজির সংগ্রামে এবং স্বৈরাচারী ও কতৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে অবিচল থাকলেও জাতীয় রাজনীতিতে দৃশ্যমান ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়নি। শেখ হাসিনার কতৃত্ববাদী সরকার বামপন্থীদের একটি অংশকে ও কৌশলে তাঁদের শরিক করে ফেলে। সিপিবি সহ অন্য বামপন্থীরা লড়াইয়ের ময়দানে থাকলেও সকল বামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম না থাকায় বামপন্থীরা সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ দাগ কাটতে সক্ষম হয়নি।
দেশীয় এবং ভূ-রাজনৈতিক এমনতর পরিস্থিতিতে স্বৈরতন্ত্র,একনায়কতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদী প্রবনতা ডালপালা বিস্তার করে। যার ভ্রুন সৃষ্টি হয়েছিলো ২০০৪ সালের ২৪ নভেম্বরের পৈশাচিক ও নৃশংস গ্রেনেড হামলার মধ্য দিয়ে এবং পরবর্তীতে ফুলে ফলে পল্লবিত হয়েছে দেশের প্রধান দুই দলের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক ভূমিকার মধ্য দিয়ে। আওয়ামী লীগ একনাগাড়ে ১৫ বছর জবরদস্তি মূলক ভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে রেখে এবং সামরিক বেসামরিক আমলা ও ব্যবসায়ীদের অবাধ আর্থিক লুন্ঠনের সুযোগ করে দিয়ে, দেশের শিক্ষক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের বড় অংশকেই নানা সুযোগ সুবিধার প্রলোভনে এবং বিএনপি-জামায়াত জুজুর আতঙ্ক ছড়িয়ে বশীভূত রাখতে সক্ষম হয়। দেশের বুকে কায়েম হয় অনেকটা একদলীয় বা প্রকৃত অর্থে শেখ হাসিনার কতৃত্ববাদী স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা যা দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতিও সৃষ্টি করে । এবারের অভূতপূর্ব গনঅভ্যুত্থানের বিজয়ের পরে ২৪ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অপরাধীদের এবং এর পেছনের কুশীলবদের বিচার ও শাস্তি যদি নিশ্চিত না করা হয়, বিচারহীনতার সংস্কৃতিই যদি চলতে থাকে তবে সরকারের ফ্যাসিবাদ বিরোধী অবস্থান এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার বুলি গুরুতর প্রশ্নের মুখে পড়বে। সকল আসামিরই বেকসুর খালাস ইতোমধ্যে জনমনে প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে মানে এই নয় যে, তার জনসভায় গ্রেনেড হামলা, তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র ও ২৪ জন আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীকে হত্যাকারীরা এখন গাজী উপাধিতে ভূষিত হবে! আওয়ামী লীগ সরকার আমলে মামলার অধিকতর তদন্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়ার কারনেঅপরাধীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকবে!
দেশে প্রকৃত অর্থে গনতন্ত্রের বাতাবরণ সৃষ্টি করতে চাইলে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে জরুরীভাবে এবং অতিদ্রুত এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার মামলা সহ অনেক মামলাই তো অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত নিষ্পত্তি করছে।গ্রেনেড হামলা মামলার বিষয়েও দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা প্রয়োজন । তা নাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা এবং পতিত শক্তির বিরুদ্ধেও যে গুম, খুন, আয়না ঘরে বেআইনি আটক এবং সাম্প্রতিক ছাত্র গন আন্দোলন দমনে নির্বিচার হত্যা মামলার যে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
[লেখক: সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন]