alt

উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য: “গো টু দ্য ডেভিল”

জাঁ-নেসার ওসমান

: সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

“ই...য়ে...ই...য়ে, ঢিংকা চিকা, ঢিংকা চিকা, ঔ... ঔ... ঔ... ঔ। বাঁইচ্চা গেলাম,

বাঁইচ্চা গেলাম, ঔ ঔ ঔ...”

“কিরে তখন থেকে গাঞ্জাখোরের মতো নাচানাচি করছিস!! ব্যাপার কী??

“নাচুম না!! কন কী আপনে! শত শত বছরে যে কাজ হয়নাই অহন ২০২৫ সালে, নতুন

বছরে একধাক্কায় কেল্লাফতে! মানে বুজছেন মিয়া। বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম. মোজ্জামেল হকের নাম ইতিহাস হয়ালচ্ছে!!”

“মানে কী! এই বল্লি ওরা সব স্বৈরাচারের চর, ওরাই আবার তোর কাছে ইতিহাসের বীর!! নাহ্ মনে হয় সকাল সকাল একটু বেশি মাত্রায় গঞ্জিকা সেবনের খপ্পরে পড়ছিস।”

“ধুর মিয়া আপনে হালায় পিস্যুডৌ ইন্টেলেকচ্যুয়াল। কোনো কিছু না বুঝাই গাঞ্জুট্টির মতুন ফাল পাড়তাছেন? আপনে মিয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম. মোজ্জামেল হকের অবদানের কথা বুঝেন?”

“বুঝবো না ক্যেনো, স্বৈরাচারের চ্যালাচামুন্ডা হয়ে বস্তা বস্তা ট্যাকা কামিয়েছে আর আলিশান বাড়ি বানিয়েছে!!”

“জ্বি অয়, হালায় ওই আলিশান অট্টালিকা বানাইছে বইলাই পাবলিক গেছিলো বুলডোজার হান্দাইতে; ব্যাস লগে লগে মাইকে ডাকাইত ডাকাইত ঘোষণা দিয়া পাবলিকে দিছে মাইর, আরকী? হাজার বছরে বড় বড় ন্যেতারা যেইডা পারে নাই বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম.মোজ্জামেল হক, চোক্ষের নিমিষে হ্যেইডা কইরা দ্যেখায়া দিছে!

হালায় বাঘের বাচ্চা।”

“মানে কী? অর্থলোভী পামারগুলো, বাঘের বাচ্চা! আশ্চার্য্য!!”

“বাঘের বাচ্চা নাতো কী? হ্যেয় যুদি মাল কামায়া অট্টালিকা না বানাইতো,

তায়লে পাবলিকভি অ্যাটাক করতে যাইতো না আর ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’

হইতো না।”

“ওই গদভ ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ মানে জানিস?”

“জানুম না ক্যেন? এডাতো পানির মতুন সুজা, ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ যেহানে যতো ‘ডেভিল’ আছে, সবগুলারে হান্ট কইরা মানে খুঁইজ্জা খুঁইজ্জা বাইর কইরা ধইরা আন, খতম করো ব্যাস।”

“কিন্তু এখানে ‘ডেভিল’ বলতে কাদেরকে বোঝাচ্ছে জানিস? এখানেতো ‘ডেভিল’ মানে যারা আ.ক.ম. মোজ্জামেল হকের বাসায় লুট করছিল, তাদের হাত থেকে যারা বিগত স্বৈরাচারের পতনের কারিগর তারাই আবার সেই স্বৈরাচারের দোসর আ.ক.ম. মোজ্জামেল হকের সম্পদ রক্ষা করতে গিয়েছিল, কত বড় মনের সেইসব স্বদেশপ্রেমিক সৎসুন্দর ছাত্রদের বাড়িতে তালা ভেঙে প্রবেশকরা দুষ্কৃতিকারীরা চাপাতি দিয়ে কোপাল-মারলো সেই বাঙালি হয়ে বাঙালির বাড়ি লুণ্ঠনকারীদের সেই বাঙালি দুষ্কৃতিকারীদের ‘ডেভিল’ বলা হচ্ছে।”

“হেঃ... হেঃ... হেঃ...আপনি হালা পারেনও, আরে মিয়া গাজীপুরে স্বৈরাচারের চ্যেলা

আ.ক.ম. মোজ্জামেল হকের বাড়িতে আঠারো কুটি পাবলিকনি লুট করতে গেছিলো?”

“না না, তা কেনো। একটা দেশের সব লোক কি চোর হয় নাকি! কী পাগলের প্রলাপ

বকছিস?”

“তয়মিয়া বুঝেন না, এই ‘ডেভিল’ শুধুু গাজীপুরের না, সারাদেশে চলতাছে, ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ মানে সারা দেশের ব্যেবাক ‘ডেভিল’ ধইরা তবেই শান্ত হোইবো ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ বুঝছেন।”

“না না, তোর কথায় যুক্তি আছে, এই ‘ডেভিল’ শুধু গাজীপুরের ‘ডেভিল’ না, এই ‘ডেভিল’ সারা বাংলাদেশের ‘ডেভিল’। তো সারা বাংলাদেশের কে ‘ডেভিল’ আর কে ‘ডেভিল’ নয় সে তুই

কীভাবে বিচার করবি?”

“আব্বে হালায় আপনেরে তো এতোদিন চালাক চতুর ভাবছিলাম, আপনে তো দেহী আমাগো শখিনার চায়াও ভুদাই। আপনে হালায় বুঝেন না। “ডেভিল” ক্যেডা? শুনেন আমি কোই; “ডেভিল” হোইলো, পাপাত্মাদের অধিপতি শয়তান ওরফে ইবলিশ, ভূত-প্রেত প্রভৃতি-অনিষ্টকরা আত্মা, অতি অসৎ ব্যাক্তি। এই হোইলো “ডেভিলে”র মানে, বুঝছেন।”

“ওরে তাহলে তো বাংলাদেশের কোটি কোটি অধিবাসী ধরা পড়বে।”

“ক্যান ক্যান, কুটি কুটি ক্যান!!”

“ও আমার কচি খোকা, তুমি বোঝো না!! অতি অসৎ ব্যক্তি যে কিনা তোর ভাষায়

“ডেভিল” তাহলে বাংলাদেশে অতি অসৎলোক তো প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ভুরি ভুরি।

দেখ না তোর বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট ভাঙতেই সুর সুর করে সুরের কোটি কোটি

টাকা, ডলার, এক কেজি গোল্ড, বেডরুমে পাঁচ লাখ, ড্রইংরুমে সাত লাখ, বউ’ এর অ্যাকাউন্টে তিন’ কোটি, ঝিয়ের অ্যাকাউন্টে পাঁচ কোটি, বাড়ির কাজের বুয়ার অ্যাকাউন্টে দেড়’ কোটি আবার নিজের নামে সাতটি ফ্ল্যাট, শ্বশুরের নামে তিনটি, শ্যালকের নামে আটটি ফ্ল্যাট শালির নামে সাতটি। এমনিভাবে শাশুড়ি ও গার্লফ্রেন্ডের নামে আর রয়েছে নয়টি। ভাবতে পারিস এমনি সকল “ডেভিল” নিয়ে ঘর করছি আমরা, এবার “অপারেশন ডেভিল হান্ট” ধরবে সকল ভোমরা।”

“হ্যাঁ হ্যাঁ আপনে হালায় স্বভাবকবি। আপনে তো বার লক্ষ টাকার ছাগল,খাটের নিচের

বস্তা ভরা টাকা, সচিবগো বাড়ি ভাড়া কইরা ফ্লোর ভরা ক্যাসিনোর ট্যাকা কতকিছু কোইবেন, কিন্তু আমিকোইকী, আপনে মিয়া আসল কতাটা ধরতে পারেন নাই। সেইটা হইলো হাজার বছরে বড় বড় ন্যেতারা যেইডা পারে নাই এইবার সেই ঘটনা ঘটব আর বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম.মোজ্জামেল হকের নাম বিশ্ব দরবারে জ্বলজ্বল কইরা তারার মতুন চমকাইবো।”

“বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম. মোজ্জামেল হক, এমন কী করেছে যে ওর নাম বিশ্ব ইতিহাসে জ্বলজ্বল করবে??”

“এত দিন না আপনে আমারে কত্তবার বুড়বক কোইছেন আইজ আমি আপনেরে কমু কানিবক। আপনে মিয়া কানা নাকি, দেখতাছেন না ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ফাট কইরা ইবলিশরে ধরবো আর সারা বাংলাদেশ থ্যেইক্কা অন্যায় অত্যাচার, মানুষে মানুষে খুনাখুনি, বাঙালি হয়া বাঙালি খুন, ভায়ে ভায়ের জমি দখল, গরিব নিরীহ বেডির ওপর বড়লোকের অত্যাচার সব সব চক্ষুর পলকে মিট্টা যাইবো, ক্যা? কারণ সারা বাংলাদেশে আর ইবলিশ নাই, ইবলিশের সকল দুই নাম্বার কর্মকা- বন্ধ। হালায় ইবলিশ ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ এ ধরা পইড়া কাইৎ। ব্যাস সোনার বাংলা হীরার বাংলায় পরিণত। আর পাবলিক কোইবো হালায় আ.ক.ম. মোজ্জামেল হক যুদি মাল কামায়া অট্টালিকা না বানাইতো, তায়লে পাবলিকভি অ্যাটাক করতে যাইতো না আর ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ও হইতো না ‘ডেভিল’ মানে ইবলিশভী খতম হোইতো না। তাই কোই আপনে সব থুয়া এবার চলেন হীরার বাংলায় কেমনে হুরপরীর লগে দিন কাটাইবেন হেই চিন্তা করেন।”

“সত্যি বলছিস বাংলাদেশের সকল অন্যায় দূর হয়ে যাবে?? বিশ্বাস হয় না !!”

“আরে ভাই যে দেশে ইবলিশই নাই, খন্নাস নাই; মানে ‘ডেভিল’ নাই, ইবলিশের ওয়সওয়াসা নাই, সে দেশে তো আরকুনো অন্যায় থাকা পারবো না। বাংলার সব মানুষ ফকির দরবেশের মতুন দিন কাটাইবো। চারিদিকে কেবল শান্তি আর শান্তি।”

“তাহলে চল এবার সবাই মিলে চেষ্টা করি যাতে ইবলিশ হান্ট হয় ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ সফল হয়।

তাহলে বাংলাদেশে আর কোনো অন্যায় থাকবে না, শয়তানের কুপরামর্শে পি কে হালদার, মালদারও জন্মাবে না।”

“চলেন বাংলার ব্যেবাগত্যে মিল্লা কোরাশে কোই ‘গো টু দ্য ডেভিল’ ডেভিলের কাছে যাও তারে ধর আর ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ সফল কর, সফল কর, সফল কর।”

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

সর্বজনীন শিক্ষার বলয়ের বাইরে আদিবাসীরা : অন্তর্ভুক্তির লড়াইয়ে বৈষম্যের দেয়াল

শোনার গান, দেখার টান : অনুভূতির ভোঁতা সময়

ছবি

ছিন্নপত্রে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও রবীন্দ্র চেতনা

ভেতরের অদৃশ্য অপরাধ : সমাজের বিপন্ন মানসিকতা

দারিদ্র্য ও বৈষম্য নিরসনে খাসজমি ও জলার গুরুত্ব

অবহেলিত কৃষক ও বাজার ব্যবস্থার বৈষম্য

রাক্ষুসে মাছের দাপটে বিপন্ন দেশীয় মাছ : করণীয় কী?

বজ্রপাতের আতঙ্কে জনজীবন

তাহলে কি ঘৃণায় ছেয়ে যাবে দেশ, মানবজমিন রইবে পতিত

কর্পোরেট ও ব্যক্তিগত সামাজিক দায়বদ্ধতা

‘রাখাইন করিডর’ : একটি ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

ভিন্নমতের ভয়, নির্বাচনের দোলাচল ও অন্তর্বর্তী সরকারের কৌশলী অবস্থান

সমুদ্রসম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা

কৃষি শিক্ষা হোক উদ্যোক্তা গড়ার মাধ্যম

রঙ্গব্যঙ্গ : কোটের কেবল রং বদলায়

মে দিবসের চেতনা বনাম বাস্তবতা

শ্রম আইন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় চাই আন্তরিকতা

বাসযোগ্যতা সূচকে ঢাকা কেন এত পিছিয়ে

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল : নিরাপদ যাত্রার প্রত্যাশা

কর ফাঁকি : অর্থনীতির জন্য এক অশনি সংকেত

১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় : উপকূলীয় সুরক্ষার শিক্ষা

যখন নদীগুলো অস্ত্র হয়ে ওঠে

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গুণগত মান উন্নয়নে গবেষণা ও উদ্ভাবন

বজ্রপাত ও তালগাছ : প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা

কুষ্ঠ ও বৈষম্য : মানবাধিকারের প্রশ্নে একটি অবহেলিত অধ্যায়

ছবি

প্রান্তজনের বাংলাদেশ

অতীতের ছায়ায় নতুন বাংলাদেশ : দুর্নীতি, উগ্রপন্থা ও সরকারের দায়

সাইবার নিরাপত্তা : অদৃশ্য যুদ্ধের সামনে আমাদের প্রস্তুতি

ছবি

বাহান্নর গর্ভে জন্ম নেয়া এক ঝড়ের পাখি

প্রবাসী শ্রমিক : অর্থের যন্ত্র নয়, রাষ্ট্রের সহযোদ্ধা

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির এক যুগ

ভোগবাদের বিরুদ্ধে পোপ ফ্রান্সিসের জলবায়ু বার্তা

রম্যগদ্য : হাসি নিষেধ...

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন : দাবি ও সমাধানের পথ

সিরিয়ার পতন কিভাবে আমেরিকার স্বার্থকে হুমকিতে ফেলছে

পরিবারতত্ত্ব ও পরিবারতন্ত্র : বিকল্প রাষ্ট্রচিন্তার সন্ধানে

tab

উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য: “গো টু দ্য ডেভিল”

জাঁ-নেসার ওসমান

সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

“ই...য়ে...ই...য়ে, ঢিংকা চিকা, ঢিংকা চিকা, ঔ... ঔ... ঔ... ঔ। বাঁইচ্চা গেলাম,

বাঁইচ্চা গেলাম, ঔ ঔ ঔ...”

“কিরে তখন থেকে গাঞ্জাখোরের মতো নাচানাচি করছিস!! ব্যাপার কী??

“নাচুম না!! কন কী আপনে! শত শত বছরে যে কাজ হয়নাই অহন ২০২৫ সালে, নতুন

বছরে একধাক্কায় কেল্লাফতে! মানে বুজছেন মিয়া। বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম. মোজ্জামেল হকের নাম ইতিহাস হয়ালচ্ছে!!”

“মানে কী! এই বল্লি ওরা সব স্বৈরাচারের চর, ওরাই আবার তোর কাছে ইতিহাসের বীর!! নাহ্ মনে হয় সকাল সকাল একটু বেশি মাত্রায় গঞ্জিকা সেবনের খপ্পরে পড়ছিস।”

“ধুর মিয়া আপনে হালায় পিস্যুডৌ ইন্টেলেকচ্যুয়াল। কোনো কিছু না বুঝাই গাঞ্জুট্টির মতুন ফাল পাড়তাছেন? আপনে মিয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম. মোজ্জামেল হকের অবদানের কথা বুঝেন?”

“বুঝবো না ক্যেনো, স্বৈরাচারের চ্যালাচামুন্ডা হয়ে বস্তা বস্তা ট্যাকা কামিয়েছে আর আলিশান বাড়ি বানিয়েছে!!”

“জ্বি অয়, হালায় ওই আলিশান অট্টালিকা বানাইছে বইলাই পাবলিক গেছিলো বুলডোজার হান্দাইতে; ব্যাস লগে লগে মাইকে ডাকাইত ডাকাইত ঘোষণা দিয়া পাবলিকে দিছে মাইর, আরকী? হাজার বছরে বড় বড় ন্যেতারা যেইডা পারে নাই বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম.মোজ্জামেল হক, চোক্ষের নিমিষে হ্যেইডা কইরা দ্যেখায়া দিছে!

হালায় বাঘের বাচ্চা।”

“মানে কী? অর্থলোভী পামারগুলো, বাঘের বাচ্চা! আশ্চার্য্য!!”

“বাঘের বাচ্চা নাতো কী? হ্যেয় যুদি মাল কামায়া অট্টালিকা না বানাইতো,

তায়লে পাবলিকভি অ্যাটাক করতে যাইতো না আর ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’

হইতো না।”

“ওই গদভ ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ মানে জানিস?”

“জানুম না ক্যেন? এডাতো পানির মতুন সুজা, ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ যেহানে যতো ‘ডেভিল’ আছে, সবগুলারে হান্ট কইরা মানে খুঁইজ্জা খুঁইজ্জা বাইর কইরা ধইরা আন, খতম করো ব্যাস।”

“কিন্তু এখানে ‘ডেভিল’ বলতে কাদেরকে বোঝাচ্ছে জানিস? এখানেতো ‘ডেভিল’ মানে যারা আ.ক.ম. মোজ্জামেল হকের বাসায় লুট করছিল, তাদের হাত থেকে যারা বিগত স্বৈরাচারের পতনের কারিগর তারাই আবার সেই স্বৈরাচারের দোসর আ.ক.ম. মোজ্জামেল হকের সম্পদ রক্ষা করতে গিয়েছিল, কত বড় মনের সেইসব স্বদেশপ্রেমিক সৎসুন্দর ছাত্রদের বাড়িতে তালা ভেঙে প্রবেশকরা দুষ্কৃতিকারীরা চাপাতি দিয়ে কোপাল-মারলো সেই বাঙালি হয়ে বাঙালির বাড়ি লুণ্ঠনকারীদের সেই বাঙালি দুষ্কৃতিকারীদের ‘ডেভিল’ বলা হচ্ছে।”

“হেঃ... হেঃ... হেঃ...আপনি হালা পারেনও, আরে মিয়া গাজীপুরে স্বৈরাচারের চ্যেলা

আ.ক.ম. মোজ্জামেল হকের বাড়িতে আঠারো কুটি পাবলিকনি লুট করতে গেছিলো?”

“না না, তা কেনো। একটা দেশের সব লোক কি চোর হয় নাকি! কী পাগলের প্রলাপ

বকছিস?”

“তয়মিয়া বুঝেন না, এই ‘ডেভিল’ শুধুু গাজীপুরের না, সারাদেশে চলতাছে, ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ মানে সারা দেশের ব্যেবাক ‘ডেভিল’ ধইরা তবেই শান্ত হোইবো ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ বুঝছেন।”

“না না, তোর কথায় যুক্তি আছে, এই ‘ডেভিল’ শুধু গাজীপুরের ‘ডেভিল’ না, এই ‘ডেভিল’ সারা বাংলাদেশের ‘ডেভিল’। তো সারা বাংলাদেশের কে ‘ডেভিল’ আর কে ‘ডেভিল’ নয় সে তুই

কীভাবে বিচার করবি?”

“আব্বে হালায় আপনেরে তো এতোদিন চালাক চতুর ভাবছিলাম, আপনে তো দেহী আমাগো শখিনার চায়াও ভুদাই। আপনে হালায় বুঝেন না। “ডেভিল” ক্যেডা? শুনেন আমি কোই; “ডেভিল” হোইলো, পাপাত্মাদের অধিপতি শয়তান ওরফে ইবলিশ, ভূত-প্রেত প্রভৃতি-অনিষ্টকরা আত্মা, অতি অসৎ ব্যাক্তি। এই হোইলো “ডেভিলে”র মানে, বুঝছেন।”

“ওরে তাহলে তো বাংলাদেশের কোটি কোটি অধিবাসী ধরা পড়বে।”

“ক্যান ক্যান, কুটি কুটি ক্যান!!”

“ও আমার কচি খোকা, তুমি বোঝো না!! অতি অসৎ ব্যক্তি যে কিনা তোর ভাষায়

“ডেভিল” তাহলে বাংলাদেশে অতি অসৎলোক তো প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ভুরি ভুরি।

দেখ না তোর বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট ভাঙতেই সুর সুর করে সুরের কোটি কোটি

টাকা, ডলার, এক কেজি গোল্ড, বেডরুমে পাঁচ লাখ, ড্রইংরুমে সাত লাখ, বউ’ এর অ্যাকাউন্টে তিন’ কোটি, ঝিয়ের অ্যাকাউন্টে পাঁচ কোটি, বাড়ির কাজের বুয়ার অ্যাকাউন্টে দেড়’ কোটি আবার নিজের নামে সাতটি ফ্ল্যাট, শ্বশুরের নামে তিনটি, শ্যালকের নামে আটটি ফ্ল্যাট শালির নামে সাতটি। এমনিভাবে শাশুড়ি ও গার্লফ্রেন্ডের নামে আর রয়েছে নয়টি। ভাবতে পারিস এমনি সকল “ডেভিল” নিয়ে ঘর করছি আমরা, এবার “অপারেশন ডেভিল হান্ট” ধরবে সকল ভোমরা।”

“হ্যাঁ হ্যাঁ আপনে হালায় স্বভাবকবি। আপনে তো বার লক্ষ টাকার ছাগল,খাটের নিচের

বস্তা ভরা টাকা, সচিবগো বাড়ি ভাড়া কইরা ফ্লোর ভরা ক্যাসিনোর ট্যাকা কতকিছু কোইবেন, কিন্তু আমিকোইকী, আপনে মিয়া আসল কতাটা ধরতে পারেন নাই। সেইটা হইলো হাজার বছরে বড় বড় ন্যেতারা যেইডা পারে নাই এইবার সেই ঘটনা ঘটব আর বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম.মোজ্জামেল হকের নাম বিশ্ব দরবারে জ্বলজ্বল কইরা তারার মতুন চমকাইবো।”

“বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম. মোজ্জামেল হক, এমন কী করেছে যে ওর নাম বিশ্ব ইতিহাসে জ্বলজ্বল করবে??”

“এত দিন না আপনে আমারে কত্তবার বুড়বক কোইছেন আইজ আমি আপনেরে কমু কানিবক। আপনে মিয়া কানা নাকি, দেখতাছেন না ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ফাট কইরা ইবলিশরে ধরবো আর সারা বাংলাদেশ থ্যেইক্কা অন্যায় অত্যাচার, মানুষে মানুষে খুনাখুনি, বাঙালি হয়া বাঙালি খুন, ভায়ে ভায়ের জমি দখল, গরিব নিরীহ বেডির ওপর বড়লোকের অত্যাচার সব সব চক্ষুর পলকে মিট্টা যাইবো, ক্যা? কারণ সারা বাংলাদেশে আর ইবলিশ নাই, ইবলিশের সকল দুই নাম্বার কর্মকা- বন্ধ। হালায় ইবলিশ ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ এ ধরা পইড়া কাইৎ। ব্যাস সোনার বাংলা হীরার বাংলায় পরিণত। আর পাবলিক কোইবো হালায় আ.ক.ম. মোজ্জামেল হক যুদি মাল কামায়া অট্টালিকা না বানাইতো, তায়লে পাবলিকভি অ্যাটাক করতে যাইতো না আর ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ও হইতো না ‘ডেভিল’ মানে ইবলিশভী খতম হোইতো না। তাই কোই আপনে সব থুয়া এবার চলেন হীরার বাংলায় কেমনে হুরপরীর লগে দিন কাটাইবেন হেই চিন্তা করেন।”

“সত্যি বলছিস বাংলাদেশের সকল অন্যায় দূর হয়ে যাবে?? বিশ্বাস হয় না !!”

“আরে ভাই যে দেশে ইবলিশই নাই, খন্নাস নাই; মানে ‘ডেভিল’ নাই, ইবলিশের ওয়সওয়াসা নাই, সে দেশে তো আরকুনো অন্যায় থাকা পারবো না। বাংলার সব মানুষ ফকির দরবেশের মতুন দিন কাটাইবো। চারিদিকে কেবল শান্তি আর শান্তি।”

“তাহলে চল এবার সবাই মিলে চেষ্টা করি যাতে ইবলিশ হান্ট হয় ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ সফল হয়।

তাহলে বাংলাদেশে আর কোনো অন্যায় থাকবে না, শয়তানের কুপরামর্শে পি কে হালদার, মালদারও জন্মাবে না।”

“চলেন বাংলার ব্যেবাগত্যে মিল্লা কোরাশে কোই ‘গো টু দ্য ডেভিল’ ডেভিলের কাছে যাও তারে ধর আর ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ সফল কর, সফল কর, সফল কর।”

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

back to top