মিহির কুমার রায়
বাজারের অধিকাংশ সবজির দাম বেড়েছে। স্বল্প আয়ের মানুষের পক্ষে তা কিনে খাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তবুও অনেকে দরদাম করে কেনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। সপ্তাহের ব্যবধানে ফার্মের মুরগি ও ডিমের দাম কিছুটা কমলেও সবজির দামে এখনও ক্রেতারা নাকাল। বাজারে ১০০ টাকার নিচে সবজি পাওয়া যাচ্ছে হাতে গোনা কয়েকটি। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েক ধরনের সবজির দাম আরও ১০-২০ টাকা বেড়ে শতকের ঘর স্পর্শ করছে।
কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা কমলেও এখনো ২০০ টাকার ওপরে। চাল এবং পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামে। বাজার করতে যাওয়া লোকজন বলছেন, দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সবচেয়ে বেশি থাকা পণ্যগুলোর সব কটির দামই অস্বাভাবিক। ফলে নির্ধারিত আয়ের মানুষকে সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বাজারগুলোতে খুচরায় উচ্ছে, করলা, কচুর লতি, কাঁকরোল, বরবটি ও পটোল বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকা কেজিতে। এ ছাড়া বেগুন ১৪০-১৬০, গাজর ১২০, পাকা টমেটো ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। নতুন আসা শিমের দামও আকাশছোঁয়া; সাধারণত মৌসুমের নতুন সবজি উঠলে এমন হয়। গতকাল শিম বিক্রি হচ্ছিল ২৪০-২৫০ টাকা কেজি দরে। কাঁচা মরিচ ২০০-২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
১০০ টাকার নিচে পাওয়া সবজির মধ্যে ঢ্যাঁড়স ৯০, শসা ৭০, কচুর মুখী ৫০-৬০, মুলা ৮০, মিষ্টিকুমড়া ৬০ এবং পেঁপে ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সহজলভ্য পুঁইশাকের দাম প্রতি আঁটি ৪০ টাকা। লাউ আকারভেদে ৮০-১০০, বাঁধাকপি ১২০, ফুলকপি ৮০-১০০ এবং চাল কুমড়া ৬০-৭০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে বেগুন, কাঁকরোল, ঢ্যাঁড়সসহ কয়েকটি সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। বাজারে এই পরিস্থিতি আরও দেড় থেকে দুই মাস স্থায়ী হতে পারে। কারণ বর্ষা মৌসুমের সবজির সরবরাহ শেষের দিকে। অক্টোবর-নভেম্বর থেকে শীতকালীন সবজি বাজারে উঠতে শুরু করলে দাম কিছুটা কমে আসতে পারে।
পেঁয়াজের দামও আগের সপ্তাহের মতোই স্থির। রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫-৮০ টাকা কেজিতে। পেঁয়াজ বিক্রেতারা জানিয়েছেন, পাইকারিতে তাদের ক্রয়মূল্য ৭১ টাকা। কিছুদিন আমদানির দুয়ার খোলা থাকলেও গত ১৯ তারিখ থেকে অনুমতি বন্ধ। ভারত থেকে কিছু পেঁয়াজ এসেছে, তবে পরিমাণ খুবই কম। দেশি পেঁয়াজ দিয়েই বাজারের চাহিদা পূরণ করতে হচ্ছে।
বাজারের আটা ও ময়দার দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে সবজি ও মুরগির বাজার চড়া। প্যাকেটজাত আটা ৫০-৫৫ টাকার পরিবর্তে এখন ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা আটা ৪০-৪২ থেকে বেড়ে ৪৫-৪৮ টাকা। প্যাকেটজাত ময়দা ৬০-৬৫ থেকে ৬৫-৭২ টাকা, খোলা ময়দা ৬০ টাকার মতো। ডালের বাজারও ঊর্ধ্বমুখী; ভালো মানের মসুর ডাল কেজিতে ১৪৫-১৫০ টাকা, বড় দানার মসুর ডাল ১০৫-১১০, মুগডাল ১৫-২০ এবং ছোলা ৫-১০ টাকা বেড়েছে।
ভোক্তারা চাল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন বাড়তি দামে। পাইকারি বাজারে ডালের দাম এক মাস ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আটা-ময়দার সরবরাহে কিছুটা টান আছে, তাই দাম কমবে কিনা বলা যাচ্ছে না।
ফসলের মূল্য নিয়ে কৃষকেরাও হতাশ। উৎপাদন খরচ মিললেও লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না। ভরপুর ফলনেও অনেক কৃষক কষ্টে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারছেন না। এর মূল কারণ অব্যবস্থাপনা। দেশে কৃষিপণ্য ও সবজি উৎপাদনের যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকলেও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ন্যায্য মূল্য পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তবে রপ্তানি ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৬০ কোটি ডলার (প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা), যা গত বছরের একই সময়ে ৫৪ কোটি ডলারের বেশি। সরকারের লক্ষ্য চলতি বছরে ১১২ কোটি ডলার রপ্তানি আয়। বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১৩৭ দেশে কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে রয়েছে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, তাজা ও হিমায়িত সবজি, ফলমূল। দ্বিতীয় বৃহৎ খাত শুকনা খাবার; যেমন মসলা, বিস্কুট, সস, নুডলস, জেলি, আলুপুরি, পাপড় ইত্যাদি।
দেশে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের প্রায় এক হাজার কারখানা রয়েছে। এদের ৯০ শতাংশ ক্ষুদ্র ও অতি ক্ষুদ্র। রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ২৫০টি কারখানা। তবে কৃষিপণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় তামাক, যা মোট রপ্তানি আয়ের এক-তৃতীয়াংশ।
বাংলাদেশ এখনও কৃষি প্রধান দেশ। কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, দেশের কৃষক ৬০ ধরনের ২০০ জাতের সবজি ফলান। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা অনুসারে, সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয়। তবে উৎপাদন বৃদ্ধির বিপরীতে খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে কৃষকরা দিশাহীন। চারা ও বীজের দাম, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষকশ্রেণিকে টিকিয়ে রাখতে হলে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে এবং রপ্তানি বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সরকার কৃষিপণ্য ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি উৎসাহিত করতে নগদ সহায়তা দিচ্ছে ১০ শতাংশ হারে। একসময় হার ছিল ২০ শতাংশ, পরে ১৫ এবং সর্বশেষ ১০ শতাংশে নামানো হয়েছে। দেশের অর্থনীতির মূল কাঠামো কৃষি খাতের ওপর নির্ভরশীল। তাই সঠিক প্রণোদনা, রপ্তানি বাড়ানো এবং তাজা ফলমূল ও শাকসবজি সংরক্ষণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা সময়ের দাবি।
[লেখক : সাবেক ডিন (ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ) ও সিন্ডিকেট সদস্য, সিটি ইউনিভার্সিটি, ঢাকা]
মিহির কুমার রায়
শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বাজারের অধিকাংশ সবজির দাম বেড়েছে। স্বল্প আয়ের মানুষের পক্ষে তা কিনে খাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তবুও অনেকে দরদাম করে কেনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। সপ্তাহের ব্যবধানে ফার্মের মুরগি ও ডিমের দাম কিছুটা কমলেও সবজির দামে এখনও ক্রেতারা নাকাল। বাজারে ১০০ টাকার নিচে সবজি পাওয়া যাচ্ছে হাতে গোনা কয়েকটি। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েক ধরনের সবজির দাম আরও ১০-২০ টাকা বেড়ে শতকের ঘর স্পর্শ করছে।
কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা কমলেও এখনো ২০০ টাকার ওপরে। চাল এবং পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামে। বাজার করতে যাওয়া লোকজন বলছেন, দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সবচেয়ে বেশি থাকা পণ্যগুলোর সব কটির দামই অস্বাভাবিক। ফলে নির্ধারিত আয়ের মানুষকে সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বাজারগুলোতে খুচরায় উচ্ছে, করলা, কচুর লতি, কাঁকরোল, বরবটি ও পটোল বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকা কেজিতে। এ ছাড়া বেগুন ১৪০-১৬০, গাজর ১২০, পাকা টমেটো ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। নতুন আসা শিমের দামও আকাশছোঁয়া; সাধারণত মৌসুমের নতুন সবজি উঠলে এমন হয়। গতকাল শিম বিক্রি হচ্ছিল ২৪০-২৫০ টাকা কেজি দরে। কাঁচা মরিচ ২০০-২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
১০০ টাকার নিচে পাওয়া সবজির মধ্যে ঢ্যাঁড়স ৯০, শসা ৭০, কচুর মুখী ৫০-৬০, মুলা ৮০, মিষ্টিকুমড়া ৬০ এবং পেঁপে ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সহজলভ্য পুঁইশাকের দাম প্রতি আঁটি ৪০ টাকা। লাউ আকারভেদে ৮০-১০০, বাঁধাকপি ১২০, ফুলকপি ৮০-১০০ এবং চাল কুমড়া ৬০-৭০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে বেগুন, কাঁকরোল, ঢ্যাঁড়সসহ কয়েকটি সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। বাজারে এই পরিস্থিতি আরও দেড় থেকে দুই মাস স্থায়ী হতে পারে। কারণ বর্ষা মৌসুমের সবজির সরবরাহ শেষের দিকে। অক্টোবর-নভেম্বর থেকে শীতকালীন সবজি বাজারে উঠতে শুরু করলে দাম কিছুটা কমে আসতে পারে।
পেঁয়াজের দামও আগের সপ্তাহের মতোই স্থির। রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫-৮০ টাকা কেজিতে। পেঁয়াজ বিক্রেতারা জানিয়েছেন, পাইকারিতে তাদের ক্রয়মূল্য ৭১ টাকা। কিছুদিন আমদানির দুয়ার খোলা থাকলেও গত ১৯ তারিখ থেকে অনুমতি বন্ধ। ভারত থেকে কিছু পেঁয়াজ এসেছে, তবে পরিমাণ খুবই কম। দেশি পেঁয়াজ দিয়েই বাজারের চাহিদা পূরণ করতে হচ্ছে।
বাজারের আটা ও ময়দার দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে সবজি ও মুরগির বাজার চড়া। প্যাকেটজাত আটা ৫০-৫৫ টাকার পরিবর্তে এখন ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা আটা ৪০-৪২ থেকে বেড়ে ৪৫-৪৮ টাকা। প্যাকেটজাত ময়দা ৬০-৬৫ থেকে ৬৫-৭২ টাকা, খোলা ময়দা ৬০ টাকার মতো। ডালের বাজারও ঊর্ধ্বমুখী; ভালো মানের মসুর ডাল কেজিতে ১৪৫-১৫০ টাকা, বড় দানার মসুর ডাল ১০৫-১১০, মুগডাল ১৫-২০ এবং ছোলা ৫-১০ টাকা বেড়েছে।
ভোক্তারা চাল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন বাড়তি দামে। পাইকারি বাজারে ডালের দাম এক মাস ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আটা-ময়দার সরবরাহে কিছুটা টান আছে, তাই দাম কমবে কিনা বলা যাচ্ছে না।
ফসলের মূল্য নিয়ে কৃষকেরাও হতাশ। উৎপাদন খরচ মিললেও লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না। ভরপুর ফলনেও অনেক কৃষক কষ্টে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারছেন না। এর মূল কারণ অব্যবস্থাপনা। দেশে কৃষিপণ্য ও সবজি উৎপাদনের যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকলেও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ন্যায্য মূল্য পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তবে রপ্তানি ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৬০ কোটি ডলার (প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা), যা গত বছরের একই সময়ে ৫৪ কোটি ডলারের বেশি। সরকারের লক্ষ্য চলতি বছরে ১১২ কোটি ডলার রপ্তানি আয়। বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১৩৭ দেশে কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে রয়েছে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, তাজা ও হিমায়িত সবজি, ফলমূল। দ্বিতীয় বৃহৎ খাত শুকনা খাবার; যেমন মসলা, বিস্কুট, সস, নুডলস, জেলি, আলুপুরি, পাপড় ইত্যাদি।
দেশে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের প্রায় এক হাজার কারখানা রয়েছে। এদের ৯০ শতাংশ ক্ষুদ্র ও অতি ক্ষুদ্র। রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ২৫০টি কারখানা। তবে কৃষিপণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় তামাক, যা মোট রপ্তানি আয়ের এক-তৃতীয়াংশ।
বাংলাদেশ এখনও কৃষি প্রধান দেশ। কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, দেশের কৃষক ৬০ ধরনের ২০০ জাতের সবজি ফলান। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থা অনুসারে, সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয়। তবে উৎপাদন বৃদ্ধির বিপরীতে খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে কৃষকরা দিশাহীন। চারা ও বীজের দাম, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষকশ্রেণিকে টিকিয়ে রাখতে হলে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে এবং রপ্তানি বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সরকার কৃষিপণ্য ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি উৎসাহিত করতে নগদ সহায়তা দিচ্ছে ১০ শতাংশ হারে। একসময় হার ছিল ২০ শতাংশ, পরে ১৫ এবং সর্বশেষ ১০ শতাংশে নামানো হয়েছে। দেশের অর্থনীতির মূল কাঠামো কৃষি খাতের ওপর নির্ভরশীল। তাই সঠিক প্রণোদনা, রপ্তানি বাড়ানো এবং তাজা ফলমূল ও শাকসবজি সংরক্ষণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা সময়ের দাবি।
[লেখক : সাবেক ডিন (ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ) ও সিন্ডিকেট সদস্য, সিটি ইউনিভার্সিটি, ঢাকা]