জিনিয়া তাবাসসুম
বাংলাদেশের কৃষি আজ আর লাঙল-জোয়ালের গল্পে সীমাবদ্ধ নেই। প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির ফলে কৃষির চিত্র বদলে গেছে একেবারে ভিতর থেকে। নতুন প্রজন্মের হাতে উঠে এসেছে ড্রোন, সেন্সর, মোবাইল অ্যাপ ও তথ্য বিশ্লেষণের ক্ষমতা, যা কৃষিকে করে তুলছে আরও আধুনিক, দক্ষ ও তথ্যনির্ভর। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, চাষযোগ্য জমি কমে যাওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্মার্ট কৃষিই এখন সবচেয়ে কার্যকর সমাধান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি শুধু উৎপাদনশীলতা বাড়ায় না, বরং কৃষিকে সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব এবং ভবিষ্যৎমুখী শিল্পে রূপান্তরিত করছে।
দীর্ঘদিন ধরে যে দেশে কৃষিকে ‘‘পুরনো এবং লোকজ পেশা’’ হিসেবে দেখা হতো, সেখানে এখন প্রযুক্তিসমৃদ্ধ কৃষি তরুণদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। স্মার্ট কৃষি আজ শুধু ফলন বাড়ানোর গল্প নয়; বরং এটি নতুন প্রজন্মকে উদ্ভাবন, সম্ভাবনা ও উদ্যোক্তা হওয়ার পথ দেখাচ্ছে। কৃষির প্রতিটি ধাপ-বীজ বপন, সার প্রয়োগ, সেচব্যবস্থা, রোগ শনাক্তকরণ থেকে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত-সবকিছুতেই প্রযুক্তির ছোঁয়া এসেছে।
স্মার্ট প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় শক্তি হলো তথ্য। সেন্সর, স্যাটেলাইট ডেটা, অটোমেশন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে এখন একজন কৃষক খুব সহজেই জানতে পারেন মাটির আর্দ্রতা, পুষ্টিমান, পিএইচ, আবহাওয়ার পূর্বাভাস বা ফসলে রোগের ঝুঁকি। মাটির সেন্সর দেখিয়ে দেয় কখন সেচ প্রয়োজন এবং কতটুকু সার লাগবে। এতে যেমন অপচয় কমে, তেমনি বাড়ে উৎপাদন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক সফটওয়্যার ছবি বা ডেটা বিশ্লেষণ করে দ্রুত রোগ শনাক্ত করে দেয় এবং উপযুক্ত ব্যবস্থাপনার পরামর্শ দেয়। যে কৃষি একসময় পুরোপুরি অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভরশীল ছিল, তা আজ বিজ্ঞান, ডেটা এবং রিয়েল-টাইম বিশ্লেষণের ওপর দাঁড়িয়ে গেছে।
ড্রোন প্রযুক্তি কৃষিতে এনেছে সম্পূর্ণ নতুন দৃষ্টিভঙ্গি। আকাশ থেকে তোলা ছবির মাধ্যমে জমির প্রতিটি অংশ বিশ্লেষণ করা যায় সহজেই। কোথায় ফসল দুর্বল, কোন জায়গায় রোগ ছড়িয়েছে, কোথায় সেচ কম পড়েছে-এই সব তথ্য ড্রোনের মাধ্যমে খুব দ্রুত পাওয়া যায়। ফলে কৃষক আর অপেক্ষায় থাকেন না রোগ দেখা দেওয়ার; বরং রোগ ছড়ানোর আগেই সতর্ক হওয়া সম্ভব হয়। ড্রোন যেন এখন মাঠের এক নতুন ‘চিকিৎসক’, যে ফসলের সমস্যা প্রথম থেকেই চিনে নিতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় জলবায়ু-স্মার্ট কৃষিও এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। লবণসহনশীল ধান, খরাসহনশীল ফসল, ভাসমান কৃষি এবং বর্ষানির্ভর আধুনিক চাষাবাদ-এসব প্রযুক্তি বাংলাদেশের উপকূলীয় ও ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে স্থায়ী উৎপাদন নিশ্চিত করছে। কৃষি কেবল আধুনিক হচ্ছে না, বরং পরিবেশের সঙ্গে আরও টেকসই ও মানানসই হচ্ছে।
যান্ত্রিকীকরণও কৃষিতে এনেছে এক বিপ্লব। একসময় যে কাজ করতে সারাদিন লেগে যেত, এখন কম্বাইন্ড হারভেস্টার, রিপার বা ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে কয়েক ঘণ্টাতেই শেষ করা যায়। এতে শ্রমের চাপ কমছে, সময় বাঁচছে এবং উৎপাদন ব্যয়ও কমে আসছে। এসব যন্ত্র পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের ফলে গ্রামে তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান, যা তরুণদের কৃষিখাতে আরও আকৃষ্ট করছে।
নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই। সৌরচালিত ধান শুকানো ঘর, সৌর ঠান্ডা কক্ষ, বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট-এসব প্রযুক্তি কৃষিকে আরও সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব করছে। উৎপাদন ক্ষতি কমছে, সংরক্ষণ ব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে এবং কৃষিপণ্যের মান বজায় থাকছে দীর্ঘসময়।
কৃষির সঙ্গে ডিজিটাল মার্কেটিংও যুক্ত হয়েছে নতুন সম্ভাবনা হিসেবে। তরুণরা এখন শুধু মাঠেই নয়, অনলাইনেও কৃষিকে তুলে ধরছেন নতুনভাবে। চেল্লো, শপআপের মতো ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে কৃষিপণ্য সরাসরি ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে, ফলে মধ্যস্বত্বভোগীর সংখ্যা কমছে এবং কৃষকের আয় বাড়ছে।
তবে স্মার্ট কৃষির সামনে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। প্রযুক্তির খরচ তুলনামূলক বেশি, অনেক এলাকায় ইন্টারনেট বা বিদ্যুৎ সুবিধা সীমিত এবং অনেক কৃষক এখনো প্রযুক্তির ব্যবহারে পুরোপুরি দক্ষ নন। কিন্তু এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও কৃষি যে একটি বড় পরিবর্তনের দিকে এগোচ্ছে তা নিশ্চিত। নতুন প্রজন্মের আগ্রহ, শেখার মানসিকতা এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে পারদর্শিতা কৃষিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে।
স্মার্ট কৃষির এই অগ্রগতি শুধু উৎপাদন বৃদ্ধির গল্প নয়; এটি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনীতি এবং গ্রামীণ উন্নয়নের শক্ত ভিত। যে কৃষিকে একসময় অতীতের পেশা মনে করা হতো, সেই কৃষিই আজ প্রযুক্তির হাত ধরে ভবিষ্যতের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত হয়ে উঠছে। তরুণরাই হবে এই পরিবর্তনের চালিকাশক্তি, যারা প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মাঠের মাটিকে বদলে দিতে পারে নতুন ভাবনা, উদ্যম ও দক্ষতায়। স্মার্ট কৃষির চাকা যদি তরুণদের হাতে সত্যিকার অর্থে ঘুরতে শুরু করে, তবে বাংলাদেশ শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণই হবে না-রফতানিতেও গড়ে তুলবে নতুন ইতিহাস।
[লেখক: শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
জিনিয়া তাবাসসুম
মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের কৃষি আজ আর লাঙল-জোয়ালের গল্পে সীমাবদ্ধ নেই। প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির ফলে কৃষির চিত্র বদলে গেছে একেবারে ভিতর থেকে। নতুন প্রজন্মের হাতে উঠে এসেছে ড্রোন, সেন্সর, মোবাইল অ্যাপ ও তথ্য বিশ্লেষণের ক্ষমতা, যা কৃষিকে করে তুলছে আরও আধুনিক, দক্ষ ও তথ্যনির্ভর। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, চাষযোগ্য জমি কমে যাওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্মার্ট কৃষিই এখন সবচেয়ে কার্যকর সমাধান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি শুধু উৎপাদনশীলতা বাড়ায় না, বরং কৃষিকে সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব এবং ভবিষ্যৎমুখী শিল্পে রূপান্তরিত করছে।
দীর্ঘদিন ধরে যে দেশে কৃষিকে ‘‘পুরনো এবং লোকজ পেশা’’ হিসেবে দেখা হতো, সেখানে এখন প্রযুক্তিসমৃদ্ধ কৃষি তরুণদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। স্মার্ট কৃষি আজ শুধু ফলন বাড়ানোর গল্প নয়; বরং এটি নতুন প্রজন্মকে উদ্ভাবন, সম্ভাবনা ও উদ্যোক্তা হওয়ার পথ দেখাচ্ছে। কৃষির প্রতিটি ধাপ-বীজ বপন, সার প্রয়োগ, সেচব্যবস্থা, রোগ শনাক্তকরণ থেকে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত-সবকিছুতেই প্রযুক্তির ছোঁয়া এসেছে।
স্মার্ট প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় শক্তি হলো তথ্য। সেন্সর, স্যাটেলাইট ডেটা, অটোমেশন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে এখন একজন কৃষক খুব সহজেই জানতে পারেন মাটির আর্দ্রতা, পুষ্টিমান, পিএইচ, আবহাওয়ার পূর্বাভাস বা ফসলে রোগের ঝুঁকি। মাটির সেন্সর দেখিয়ে দেয় কখন সেচ প্রয়োজন এবং কতটুকু সার লাগবে। এতে যেমন অপচয় কমে, তেমনি বাড়ে উৎপাদন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক সফটওয়্যার ছবি বা ডেটা বিশ্লেষণ করে দ্রুত রোগ শনাক্ত করে দেয় এবং উপযুক্ত ব্যবস্থাপনার পরামর্শ দেয়। যে কৃষি একসময় পুরোপুরি অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভরশীল ছিল, তা আজ বিজ্ঞান, ডেটা এবং রিয়েল-টাইম বিশ্লেষণের ওপর দাঁড়িয়ে গেছে।
ড্রোন প্রযুক্তি কৃষিতে এনেছে সম্পূর্ণ নতুন দৃষ্টিভঙ্গি। আকাশ থেকে তোলা ছবির মাধ্যমে জমির প্রতিটি অংশ বিশ্লেষণ করা যায় সহজেই। কোথায় ফসল দুর্বল, কোন জায়গায় রোগ ছড়িয়েছে, কোথায় সেচ কম পড়েছে-এই সব তথ্য ড্রোনের মাধ্যমে খুব দ্রুত পাওয়া যায়। ফলে কৃষক আর অপেক্ষায় থাকেন না রোগ দেখা দেওয়ার; বরং রোগ ছড়ানোর আগেই সতর্ক হওয়া সম্ভব হয়। ড্রোন যেন এখন মাঠের এক নতুন ‘চিকিৎসক’, যে ফসলের সমস্যা প্রথম থেকেই চিনে নিতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় জলবায়ু-স্মার্ট কৃষিও এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। লবণসহনশীল ধান, খরাসহনশীল ফসল, ভাসমান কৃষি এবং বর্ষানির্ভর আধুনিক চাষাবাদ-এসব প্রযুক্তি বাংলাদেশের উপকূলীয় ও ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে স্থায়ী উৎপাদন নিশ্চিত করছে। কৃষি কেবল আধুনিক হচ্ছে না, বরং পরিবেশের সঙ্গে আরও টেকসই ও মানানসই হচ্ছে।
যান্ত্রিকীকরণও কৃষিতে এনেছে এক বিপ্লব। একসময় যে কাজ করতে সারাদিন লেগে যেত, এখন কম্বাইন্ড হারভেস্টার, রিপার বা ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে কয়েক ঘণ্টাতেই শেষ করা যায়। এতে শ্রমের চাপ কমছে, সময় বাঁচছে এবং উৎপাদন ব্যয়ও কমে আসছে। এসব যন্ত্র পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের ফলে গ্রামে তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান, যা তরুণদের কৃষিখাতে আরও আকৃষ্ট করছে।
নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই। সৌরচালিত ধান শুকানো ঘর, সৌর ঠান্ডা কক্ষ, বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট-এসব প্রযুক্তি কৃষিকে আরও সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব করছে। উৎপাদন ক্ষতি কমছে, সংরক্ষণ ব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে এবং কৃষিপণ্যের মান বজায় থাকছে দীর্ঘসময়।
কৃষির সঙ্গে ডিজিটাল মার্কেটিংও যুক্ত হয়েছে নতুন সম্ভাবনা হিসেবে। তরুণরা এখন শুধু মাঠেই নয়, অনলাইনেও কৃষিকে তুলে ধরছেন নতুনভাবে। চেল্লো, শপআপের মতো ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে কৃষিপণ্য সরাসরি ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে, ফলে মধ্যস্বত্বভোগীর সংখ্যা কমছে এবং কৃষকের আয় বাড়ছে।
তবে স্মার্ট কৃষির সামনে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। প্রযুক্তির খরচ তুলনামূলক বেশি, অনেক এলাকায় ইন্টারনেট বা বিদ্যুৎ সুবিধা সীমিত এবং অনেক কৃষক এখনো প্রযুক্তির ব্যবহারে পুরোপুরি দক্ষ নন। কিন্তু এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও কৃষি যে একটি বড় পরিবর্তনের দিকে এগোচ্ছে তা নিশ্চিত। নতুন প্রজন্মের আগ্রহ, শেখার মানসিকতা এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে পারদর্শিতা কৃষিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে।
স্মার্ট কৃষির এই অগ্রগতি শুধু উৎপাদন বৃদ্ধির গল্প নয়; এটি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনীতি এবং গ্রামীণ উন্নয়নের শক্ত ভিত। যে কৃষিকে একসময় অতীতের পেশা মনে করা হতো, সেই কৃষিই আজ প্রযুক্তির হাত ধরে ভবিষ্যতের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত হয়ে উঠছে। তরুণরাই হবে এই পরিবর্তনের চালিকাশক্তি, যারা প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মাঠের মাটিকে বদলে দিতে পারে নতুন ভাবনা, উদ্যম ও দক্ষতায়। স্মার্ট কৃষির চাকা যদি তরুণদের হাতে সত্যিকার অর্থে ঘুরতে শুরু করে, তবে বাংলাদেশ শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণই হবে না-রফতানিতেও গড়ে তুলবে নতুন ইতিহাস।
[লেখক: শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]