alt

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

লাশের বদলে লাশই যদি চুড়ান্ত হয়, তবে রাষ্ট্রের দরকার কী?

ফকর উদ্দিন মানিক

: শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫

রাষ্ট্র সাধারণত কথা বলে সংবিধানের ভাষায়। আদালতের কাঠগড়ায় বসে, আইনের পাতায় লেখা থাকে তার উচ্চারণ। কিন্তু আজ সেই ভাষা ভাঙাটুকরো টুকরো, যেন এক দুর্বোধ্য ধ্বনিমালা; যেখানে যুক্তির বদলে হুমকি, নীতির বদলে লাশ। শব্দগুলো আর মুক্ত বাক্য নয়; শব্দগুলো হয়ে উঠেছে কাঁটাযা নাগরিকের বুকের ভেতর ঢুকে ছিঁড়ে ফেলে আলো ও আস্থা।

এক লাশের বিনিময়ে আরেক লাশসঙ্গে ধৈর্যের সীমিত অফার।

এটি কোনো নাটকীয় সংলাপ নয়। এটি একটি মানসিকতার রূপক। লাশ এখানে কেবল মৃত্যু নয়; লাশ হয়ে উঠেছে যুক্তি। ধৈর্য আর মানবিক গুণ নয়ধৈর্য এখন মেয়াদোত্তীর্ণ অনুমতি। সময় শেষ হলে ন্যায় নয়, কার্যকর হবে প্রতিশোধ।

রাষ্ট্র সাধারণত আশ্রয়। রাষ্ট্র সাধারণত রক্ষক। রাষ্ট্র সাধারণত ন্যায়দাতা। কিন্তু যখন ভাষা বলে, “আমাদের গায়ে হাত দেওয়া যাবে না,” তখন রাষ্ট্র আর রক্ষক থাকে নারাষ্ট্র হয়ে ওঠে হিসাবরক্ষক। নাগরিক আর নাগরিক থাকে না; সে হয়ে ওঠে সম্ভাব্য পাল্টা আঘাত। প্রশ্ন করা মানেই হাত দেওয়া, সমালোচনা মানেই আক্রমণ, ভিন্নমত মানেই অপরাধ। বাংলাদেশের ইতিহাসে লাশ নতুন নয়। এই মাটি বহুবার রক্ত দেখেছে। প্রতিটি লাশের পেছনে ছিল কোনো দাবিভাষার, ভোটের, অধিকারের। আজকের লাশগুলোর পেছনে কোনো স্বপ্ন নেই। আজ লাশ নিজেই বার্তা। লাশ নিজেই নীতি।

আগে বলা হতো“মানুষ মরেছে, তাই আমরা প্রতিবাদ করি।” এখন বলা হচ্ছে“প্রতিবাদ করলে মানুষ মরবে।”এই উল্টো যাত্রা রাষ্ট্রকে কোথায় নিয়ে যায়? ইতিহাস বহুবার উত্তর দিয়েছে। যে রাষ্ট্র ভয়কে নীতি বানায়, সে একসময় নিজের নাগরিককেই শত্রু মনে করতে শুরু করে। তখন জনগণ আর শক্তি নয়জনগণ ঝুঁকি। সবচেয়ে ভয়ংকর হলোএই ভাষা যখন স্বাভাবিক হয়ে যায়। তখন তা সংক্রমণের মতো ছড়ায়। আজ উপরের স্তরে বলা হলো, কাল নিচে বলা হবে। আজ প্রতীকী হুমকি, কাল বাস্তব প্রয়োগ। ভাষা আগে বিষাক্ত হয়, তারপর পরিবেশ।

রূপকের ভাষায় বললেরাষ্ট্র এখন আর চিকিৎসক নয়। রাষ্ট্র ক্রমশ কসাইখানার হিসাবরক্ষক হয়ে উঠছে। কতটা কাটলে শান্তি বজায় থাকবে, কতটা রক্ত ঝরলে শৃঙ্খলা স্থায়ী হবেএই অমানবিক অঙ্কই মুখ্য। আদালতের কাঠগড়ার জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে হুক। যুক্তির বদলে চলছে ওজন।

সবচেয়ে নির্মম ব্যঙ্গ হলোএই ভাষা উচ্চারিত হচ্ছে সেইসব প্রতীকী জায়গা থেকে, যেখানে একসময় মানুষ মাথা নত না করার শিক্ষা নিয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল, “আমরা কথা বলব,” সেখানে এখন বলা হচ্ছে, “চুপ থাকোনইলে হিসাব হবে।” ইতিহাসের কাঁধে বন্দুক রেখে বর্তমান নিজের সুবিধামতো ভবিষ্যৎ লিখতে চাইছে।

সদ্য বিদায়ী একজন উপদেষ্টা ১৫ই ডিসেম্বর সোমবার ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশে বলেন: “আমাদের গায়ে হাত দেওয়া যাবে না। একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব। অত সুশীলতা করে লাভ নেই... কারণ অনেক ধৈর্য ধরা হয়েছে। এমন ভাষা শুনে মানুষের মনে হয়ক্ষমতায় থাকাকালের নৈতিকতার সেমিনার ছিল কেবল মঞ্চসজ্জা। আলো নিভলেই বাস্তব উন্মোচিত হয়েছে। এই দ্বিচারিতা ব্যক্তিগত নয়; এটি একটি মানসিকতার সতর্কবার্তা। সেই মানসিকতা, যা ভাবেভয় দিয়েই স্থিতিশীলতা আসে। অথচ ভয় স্থিতিশীলতা আনে না; ভয় আনে স্থবিরতা। আর স্থবিরতার পরেই আসে বিস্ফোরণ।

এখানে ধৈর্য মানবিক গুণ নয়; এটি বিলম্বিত সহিংসতা। রাষ্ট্র যখন বলেধৈর্যের সীমা আছে, তখন বোঝা যায় আইনের সীমাও ফুরিয়ে এসেছে। ক্ষমতায় থাকাকালে সহনশীলতা একটি কৌশল, ক্ষমতা ছাড়ার পর লাশের হুমকি একটি নীতি। এই দ্বৈত চরিত্রই রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বিপদ।

এই পথে চললে রাষ্ট্র ও জনগণের মাঝে আর কোনো সেতু থাকবে নাথাকবে কেবল কবরের সারি। সেতু দিয়ে মানুষ চলাচল করে। কবরের সারিতে থাকে নীরবতা। নীরবতা হলো ভয়ভিত্তিক শাসনের সবচেয়ে নিরাপদ নাগরিক।

লাশের বদলে লাশই যদি চুড়ান্ত হয়, তবে রাষ্ট্রের দরকার কী? প্রত্যেক গোষ্ঠী নিজের আইন নিজেই বানাবে, নিজের শাস্তি নিজেই কার্যকর করবে। রাষ্ট্র থাকবে শুধু নামফলকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে লাশ ছিল ফলাফল; আজ লাশ নীতি। লাশ দিয়ে যুক্তি প্রতিষ্ঠা করা যায় নালাশ কেবল জায়গা দখল করে। আর যে রাষ্ট্র কবর বাড়াতে ব্যস্ত থাকে, সে রাষ্ট্র ভবিষ্যৎ হারায়।

রাষ্ট্র টিকে থাকে মানুষের বিশ্বাসেরক্তের বিনিময়ে নয়। ভাষা বদলাতে পারে, দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে পারে। শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্র কোনো কসাইখানা নয়রাষ্ট্র মানুষের জন্য।

সবাই যদি লাশের বদলে লাশ নেয়, তবে একদিন আর নেওয়ার কেউ থাকবে না। তখন রাষ্ট্র নিজেই প্রশ্নের মুখে দাঁড়াবেএই কসাইখানার মালিক কে? ইতিহাস তখন এক লাইনে রায় লিখবেরাষ্ট্র ছিল, মানুষ ছিল না।

(মতামত লেখকের নিজস্ব)

[লেখক: সভাপতি, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ এলামনাই এসোসিয়েশন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]

বায়দূষণে অকালমৃত্যু

ভিক্ষাবৃত্তি যেখানে অন্যতম পেশা

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

আদিবাসীদের ভূমি অধিকার ও নিরাপত্তা সংকট

“মুনীর চৌধুরীর কবর...”

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

জলবায়ু সংকট ও খাদ্য নিরাপত্তা

স্বাধীন তদন্ত কমিশন দাবির নেপথ্যে কি দায়মুক্তি?

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

প্রহর গুনি কোন আশাতে!

বিজয়ের রক্তাক্ত সূর্য ও আমাদের ঋণের হিসাব

বিজয় দিবস: নতুন প্রজন্মের রাষ্ট্রচিন্তার দিকদর্শন

ছবি

আমাদের বিজয়ের অন্তর্নিহিত বার্তা

প্রাণিসম্পদ: দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি

জমির জরিপ: ন্যায়বিচার প্রসঙ্গ

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

উন্নয়নের আড়ালে রোগীর ভোগান্তি: আস্থা সংকটে স্বাস্থ্যসেবা

ছবি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: অমিত শক্তির উৎস

ছবি

বেগম রোকেয়া এখনো জাগ্রত

পশ্চিমবঙ্গ: বামপন্থীদের ‘বাংলা বাঁচাও’-এর ডাক

সবার বাংলাদেশ কবে প্রতিষ্ঠিত হবে?

বিদেশি বিনিয়োগ : প্রয়োজন আইনের শাসন ও সামাজিক স্থিতি

চিকিৎসা যখন অসহনীয় ব্যয়, তখন প্রতিবাদই ন্যায়

মস্কোর কৌশলগত পুনর্গঠন

“সব শিয়ালের এক রা’ মারা গেল কুমিরের ছা”

ছবি

বিচূর্ণ দর্পণের মুখ

নিজের চেতনায় নিজেরই ঘা দেয়া জরুরি

ঋণ অবলোপনের প্রভাব

ভেজাল গুড়ের মরণফাঁদ: বাঙালির ঐতিহ্য, জনস্বাস্থ্য ও আস্থার নীরব বিপর্যয়

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস

জোটের ভোট নাকি ভোটের জোট, কৌশলটা কী?

প্রমাণ তো করতে হবে আমরা হাসিনার চেয়ে ভালো

ছবি

কৃষি ডেটা ব্যবস্থাপনা

যুক্তরাজ্যে ভর্তি স্থগিতের কুয়াশা: তালা লাগলেও চাবি আমাদের হাতে

শিক্ষকদের কর্মবিরতি: পেশাগত নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধ

জাতীয় রক্তগ্রুপ নির্ণয় দিবস

tab

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

লাশের বদলে লাশই যদি চুড়ান্ত হয়, তবে রাষ্ট্রের দরকার কী?

ফকর উদ্দিন মানিক

শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫

রাষ্ট্র সাধারণত কথা বলে সংবিধানের ভাষায়। আদালতের কাঠগড়ায় বসে, আইনের পাতায় লেখা থাকে তার উচ্চারণ। কিন্তু আজ সেই ভাষা ভাঙাটুকরো টুকরো, যেন এক দুর্বোধ্য ধ্বনিমালা; যেখানে যুক্তির বদলে হুমকি, নীতির বদলে লাশ। শব্দগুলো আর মুক্ত বাক্য নয়; শব্দগুলো হয়ে উঠেছে কাঁটাযা নাগরিকের বুকের ভেতর ঢুকে ছিঁড়ে ফেলে আলো ও আস্থা।

এক লাশের বিনিময়ে আরেক লাশসঙ্গে ধৈর্যের সীমিত অফার।

এটি কোনো নাটকীয় সংলাপ নয়। এটি একটি মানসিকতার রূপক। লাশ এখানে কেবল মৃত্যু নয়; লাশ হয়ে উঠেছে যুক্তি। ধৈর্য আর মানবিক গুণ নয়ধৈর্য এখন মেয়াদোত্তীর্ণ অনুমতি। সময় শেষ হলে ন্যায় নয়, কার্যকর হবে প্রতিশোধ।

রাষ্ট্র সাধারণত আশ্রয়। রাষ্ট্র সাধারণত রক্ষক। রাষ্ট্র সাধারণত ন্যায়দাতা। কিন্তু যখন ভাষা বলে, “আমাদের গায়ে হাত দেওয়া যাবে না,” তখন রাষ্ট্র আর রক্ষক থাকে নারাষ্ট্র হয়ে ওঠে হিসাবরক্ষক। নাগরিক আর নাগরিক থাকে না; সে হয়ে ওঠে সম্ভাব্য পাল্টা আঘাত। প্রশ্ন করা মানেই হাত দেওয়া, সমালোচনা মানেই আক্রমণ, ভিন্নমত মানেই অপরাধ। বাংলাদেশের ইতিহাসে লাশ নতুন নয়। এই মাটি বহুবার রক্ত দেখেছে। প্রতিটি লাশের পেছনে ছিল কোনো দাবিভাষার, ভোটের, অধিকারের। আজকের লাশগুলোর পেছনে কোনো স্বপ্ন নেই। আজ লাশ নিজেই বার্তা। লাশ নিজেই নীতি।

আগে বলা হতো“মানুষ মরেছে, তাই আমরা প্রতিবাদ করি।” এখন বলা হচ্ছে“প্রতিবাদ করলে মানুষ মরবে।”এই উল্টো যাত্রা রাষ্ট্রকে কোথায় নিয়ে যায়? ইতিহাস বহুবার উত্তর দিয়েছে। যে রাষ্ট্র ভয়কে নীতি বানায়, সে একসময় নিজের নাগরিককেই শত্রু মনে করতে শুরু করে। তখন জনগণ আর শক্তি নয়জনগণ ঝুঁকি। সবচেয়ে ভয়ংকর হলোএই ভাষা যখন স্বাভাবিক হয়ে যায়। তখন তা সংক্রমণের মতো ছড়ায়। আজ উপরের স্তরে বলা হলো, কাল নিচে বলা হবে। আজ প্রতীকী হুমকি, কাল বাস্তব প্রয়োগ। ভাষা আগে বিষাক্ত হয়, তারপর পরিবেশ।

রূপকের ভাষায় বললেরাষ্ট্র এখন আর চিকিৎসক নয়। রাষ্ট্র ক্রমশ কসাইখানার হিসাবরক্ষক হয়ে উঠছে। কতটা কাটলে শান্তি বজায় থাকবে, কতটা রক্ত ঝরলে শৃঙ্খলা স্থায়ী হবেএই অমানবিক অঙ্কই মুখ্য। আদালতের কাঠগড়ার জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে হুক। যুক্তির বদলে চলছে ওজন।

সবচেয়ে নির্মম ব্যঙ্গ হলোএই ভাষা উচ্চারিত হচ্ছে সেইসব প্রতীকী জায়গা থেকে, যেখানে একসময় মানুষ মাথা নত না করার শিক্ষা নিয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল, “আমরা কথা বলব,” সেখানে এখন বলা হচ্ছে, “চুপ থাকোনইলে হিসাব হবে।” ইতিহাসের কাঁধে বন্দুক রেখে বর্তমান নিজের সুবিধামতো ভবিষ্যৎ লিখতে চাইছে।

সদ্য বিদায়ী একজন উপদেষ্টা ১৫ই ডিসেম্বর সোমবার ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশে বলেন: “আমাদের গায়ে হাত দেওয়া যাবে না। একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব। অত সুশীলতা করে লাভ নেই... কারণ অনেক ধৈর্য ধরা হয়েছে। এমন ভাষা শুনে মানুষের মনে হয়ক্ষমতায় থাকাকালের নৈতিকতার সেমিনার ছিল কেবল মঞ্চসজ্জা। আলো নিভলেই বাস্তব উন্মোচিত হয়েছে। এই দ্বিচারিতা ব্যক্তিগত নয়; এটি একটি মানসিকতার সতর্কবার্তা। সেই মানসিকতা, যা ভাবেভয় দিয়েই স্থিতিশীলতা আসে। অথচ ভয় স্থিতিশীলতা আনে না; ভয় আনে স্থবিরতা। আর স্থবিরতার পরেই আসে বিস্ফোরণ।

এখানে ধৈর্য মানবিক গুণ নয়; এটি বিলম্বিত সহিংসতা। রাষ্ট্র যখন বলেধৈর্যের সীমা আছে, তখন বোঝা যায় আইনের সীমাও ফুরিয়ে এসেছে। ক্ষমতায় থাকাকালে সহনশীলতা একটি কৌশল, ক্ষমতা ছাড়ার পর লাশের হুমকি একটি নীতি। এই দ্বৈত চরিত্রই রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বিপদ।

এই পথে চললে রাষ্ট্র ও জনগণের মাঝে আর কোনো সেতু থাকবে নাথাকবে কেবল কবরের সারি। সেতু দিয়ে মানুষ চলাচল করে। কবরের সারিতে থাকে নীরবতা। নীরবতা হলো ভয়ভিত্তিক শাসনের সবচেয়ে নিরাপদ নাগরিক।

লাশের বদলে লাশই যদি চুড়ান্ত হয়, তবে রাষ্ট্রের দরকার কী? প্রত্যেক গোষ্ঠী নিজের আইন নিজেই বানাবে, নিজের শাস্তি নিজেই কার্যকর করবে। রাষ্ট্র থাকবে শুধু নামফলকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে লাশ ছিল ফলাফল; আজ লাশ নীতি। লাশ দিয়ে যুক্তি প্রতিষ্ঠা করা যায় নালাশ কেবল জায়গা দখল করে। আর যে রাষ্ট্র কবর বাড়াতে ব্যস্ত থাকে, সে রাষ্ট্র ভবিষ্যৎ হারায়।

রাষ্ট্র টিকে থাকে মানুষের বিশ্বাসেরক্তের বিনিময়ে নয়। ভাষা বদলাতে পারে, দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে পারে। শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্র কোনো কসাইখানা নয়রাষ্ট্র মানুষের জন্য।

সবাই যদি লাশের বদলে লাশ নেয়, তবে একদিন আর নেওয়ার কেউ থাকবে না। তখন রাষ্ট্র নিজেই প্রশ্নের মুখে দাঁড়াবেএই কসাইখানার মালিক কে? ইতিহাস তখন এক লাইনে রায় লিখবেরাষ্ট্র ছিল, মানুষ ছিল না।

(মতামত লেখকের নিজস্ব)

[লেখক: সভাপতি, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ এলামনাই এসোসিয়েশন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]

back to top