মাহতাব হোসাইন মাজেদ
বাংলাদেশে শীতের প্রকৃত উপস্থিতি নভেম্বরের শেষের দিকে থেকে শুরু হয়ে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত অনুভূত হয়। এই সময় শহর হোক বা গ্রাম, মানুষের জীবনযাত্রা পরিবর্তিত হয়। ভোরের কুয়াশা, তীব্র ঠান্ডা বাতাস, দিনের আলো কম, রাত দীর্ঘ-সবই মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে নতুন আকার দেয়।
শীত শুধু ঋতুই নয়; এটি মানুষের অনুভূতি, সংস্কৃতি এবং সংগ্রামের এক অধ্যায়। শহরের লোকজন আরামদায়ক উষ্ণতার মধ্যে থাকে, কিন্তু গ্রামীণ ও দরিদ্র মানুষদের জন্য শীত মানে সংগ্রাম, রোগবালা এবং টিকে থাকার লড়াই।
শহরে শীত মানে সকালবেলার কুয়াশা, রাস্তায় গরম কাপড় পরিহিত মানুষ, হাতে উষ্ণ চা বা কফি। অফিসে যাওয়ার পথে মানুষ গরম কফি হাতে নিয়ে বন্ধুর সঙ্গে আলাপ করে, ছোট ছোট ক্যাফেতে সময় কাটায়। শহরের এই দৃশ্য এক ধরনের আরামদায়ক অনুভূতি দেয়।
কিন্তু শহরের আরাম সব মানুষের জন্য সমান নয়। ফুটপাত, বাসস্ট্যান্ড বা রেলস্টেশনে রাত কাটানো মানুষের কাছে শীত এক ভয়ংকর অধ্যায়। একটি কম্বল বা গরম খাবার তাদের জীবন বাঁচানোর একমাত্র উপায়। শহরের উষ্ণ ঘরে বসা মানুষ এই বাস্তবতা প্রায়ই বুঝতে পারে না-কত মানুষ শীতের হাত থেকে জীবনের লড়াই করছে।
গ্রামে শীতের সৌন্দর্য প্রকৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে। ধান, গম, সবজি-ফসলের মাঠ শীতের হিমায় উজ্জ্বল হয়। ভোরের শিশিরে ভেজা মাঠ, খেজুরের রস সংগ্রহ, উঠান ঘিরে পিঠা-পুলির প্রস্তুতি-সবই গ্রামীণ জীবনে শীতের আনন্দ দেয়।কিন্তু এই সৌন্দর্যের সঙ্গে থাকে কষ্টও। শিশুদের সর্দি-কাশি বেড়ে যায়, গবাদিপশু অসুস্থ হয়ে পড়ে, এবং গরম কাপড় ও চিকিৎসার অভাব জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে। পরিবারের দৈনন্দিন জীবন, খাদ্য ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা শীতের সঙ্গে আরও জটিল হয়ে ওঠে।
শীতকাল মানবদেহের জন্য বিশেষ চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। শিশু, বৃদ্ধ এবং অসুস্থদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ সময়। নিউমোনিয়া, হাঁপানি, সর্দি-কাশি, ঠান্ডাজনিত সংক্রমণ-এসব রোগ শীতের সময়ে প্রকট আকার ধারণ করে।দরিদ্র ও সীমিত সুবিধাসম্পন্ন জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গরম কাপড়, পর্যাপ্ত পুষ্টি, চিকিৎসা-এসব সুবিধা তাদের কাছে সীমিত। তাই শীতকালীন স্বাস্থ্য সচেতনতা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত নয়, সামাজিক দায়িত্বও দাবি করে।
শীতকাল সমাজের বৈষম্য আরও স্পষ্ট করে। শহরের ফুটপাতের মানুষ, ছিন্নমূল শিশু, বৃদ্ধ ভিক্ষুক-এরা শীতের প্রকটতা সবচেয়ে বেশি ভোগে। একটি কম্বল বা সোয়েটার তাদের জন্য বিলাসিতা নয়, জীবন বাঁচানোর অবলম্বন।প্রতিবছর সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। তবে অনেক সময় প্রকৃত উপকারভোগীরা বঞ্চিত হন। এই বাস্তবতা আমাদের মানবিক দায়িত্বের প্রতি সচেতন করে। শীত কেবল দান বা সাহায্যের নয়, সমাজের দুর্বল মানুষদের প্রতি দায়িত্ব পালনও শীতকালীন গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
শীত আমাদের মনে করিয়ে দেয়-উষ্ণতা শুধুমাত্র পোশাকে নয়, আচরণেও প্রয়োজন। প্রতিবেশী, পরিবার, সমাজ-সব স্তরে দায়িত্ব ও সহমর্মিতা জাগ্রত হওয়া উচিত। শীতের দিনে দরিদ্র ও অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো, কম্বল বা গরম খাবার দেওয়া, খোঁজ নেওয়া-এসব ছোট ছোট কাজই সমাজকে মানবিক করে তোলে।শীতকাল সামাজিক সংহতি ও সহমর্মিতার পরীক্ষা নেয়। আমরা যদি সবাই আমাদের নিকটতম দুর্বল মানুষদের কথা মনে রাখি, তবে শীত কেবল আরামদায়ক নয়, মানবিকতা বৃদ্ধির সময়ও হবে।
বাংলার শীত মানেই পিঠা-পুলি, ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা, চিতই পিঠা। এগুলি কেবল খাবার নয়, শীতকালীন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনকেও ঘিরে রাখে। গ্রামের উঠান, পরিবারের আড্ডা, সন্ধ্যার গল্প-সবই শীতকে স্মৃতিমধুর করে তোলে।শীত আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে ধীর করে, পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেয়, মানুষকে কাছাকাছি আনে। প্রযুক্তিনির্ভর জীবনে শীত যেন মানবিক সম্পর্ককে পুনর্জীবিত করে।
শীত মানেই শিশুরা আঙিনায় খেলে, কুয়াশা আর শিশিরে ভিজে খেলার আনন্দ। স্কুলের ছুটিতে তারা দৌড়ে বেড়ে, লাল গরম স্কার্ফে ঘুরে, এক ধরনের আনন্দের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে দেয়। তবে দরিদ্র শিশুদের কাছে শীত মানে গরম পোশাকের অভাব, স্বাস্থ্যঝুঁকি। তাদের জন্য সমাজের সহানুভূতি ও সহযোগিতা প্রয়োজন।
শীতকাল আমাদের খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনে। ভাপা পিঠা, গরম চা, সেদ্ধ মিষ্টি আলু-শীতের স্বাদ আরামদায়ক। তবে দরিদ্র পরিবারের কাছে পুষ্টিকর খাবারও যথেষ্ট পাওয়া যায় না। এই অভাব শীতের সময় স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়। সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে এই ফাঁক পূরণ করা।
এখন আমরা শীতের মধ্যবিন্দুতে। কুয়াশা ঘন, বাতাস তীব্র, দিনের আলো কম, রাত দীর্ঘ। মানুষের জীবন এই শীতকে কেন্দ্র করে গতি নেয়-কেউ অফিসে যায়, কেউ স্কুলে, কেউ কৃষিকাজে। শীতের সঙ্গে জীবনযাত্রার চ্যালেঞ্জও থাকে।
প্রতিটি মানুষ যেন এই শীতে সুরক্ষিত ও স্বাস্থ্যবান থাকে, সেটি নিশ্চিত করা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের জন্য উষ্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা-এটাই প্রকৃত শীত জয়।শীত আসবে, যাবে, আবার ফিরে আসবে। কিন্তু আমাদের মন, সমাজ ও মানবিকতা যদি উষ্ণ থাকে, তাহলে শীত শুধু ঠান্ডা নয়, উষ্ণতার ঋতুও হবে।
শীত আমাদের শুধু প্রকৃতির পরিবর্তনের কথা মনে করিয়ে দেয় না, মানুষের মধ্যে মানবিকতা, সহমর্মিতা ও দায়িত্ববোধের পরীক্ষাও নেয়। শহরের আরাম, গ্রামের সৌন্দর্য, স্বাস্থ্যঝুঁকি, বৈষম্য-সবই মিলিয়ে শীত আমাদের জীবনকে স্পর্শ করে।
শীত মানেই কুয়াশা, ঠান্ডা বাতাস, রাতের দীর্ঘতা, কিন্তু সাথে আসে উষ্ণতার খোঁজ, পারস্পরিক সহানুভূতি ও মানবিক গল্প। চলমান এই শীতে তাই শুধু নিজের উষ্ণতার খোঁজ নয়, অন্যের পাশে দাঁড়ানোর দায়িত্বও পালন করতে হবে।
শীতকাল আসলেই আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়-মানুষের জীবন যতই চ্যালেঞ্জপূর্ণ হোক না কেন, মানবিকতা ও উষ্ণতা সেই চ্যালেঞ্জকে সহজ করে তোলে।
[লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি]
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মাহতাব হোসাইন মাজেদ
শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশে শীতের প্রকৃত উপস্থিতি নভেম্বরের শেষের দিকে থেকে শুরু হয়ে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত অনুভূত হয়। এই সময় শহর হোক বা গ্রাম, মানুষের জীবনযাত্রা পরিবর্তিত হয়। ভোরের কুয়াশা, তীব্র ঠান্ডা বাতাস, দিনের আলো কম, রাত দীর্ঘ-সবই মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে নতুন আকার দেয়।
শীত শুধু ঋতুই নয়; এটি মানুষের অনুভূতি, সংস্কৃতি এবং সংগ্রামের এক অধ্যায়। শহরের লোকজন আরামদায়ক উষ্ণতার মধ্যে থাকে, কিন্তু গ্রামীণ ও দরিদ্র মানুষদের জন্য শীত মানে সংগ্রাম, রোগবালা এবং টিকে থাকার লড়াই।
শহরে শীত মানে সকালবেলার কুয়াশা, রাস্তায় গরম কাপড় পরিহিত মানুষ, হাতে উষ্ণ চা বা কফি। অফিসে যাওয়ার পথে মানুষ গরম কফি হাতে নিয়ে বন্ধুর সঙ্গে আলাপ করে, ছোট ছোট ক্যাফেতে সময় কাটায়। শহরের এই দৃশ্য এক ধরনের আরামদায়ক অনুভূতি দেয়।
কিন্তু শহরের আরাম সব মানুষের জন্য সমান নয়। ফুটপাত, বাসস্ট্যান্ড বা রেলস্টেশনে রাত কাটানো মানুষের কাছে শীত এক ভয়ংকর অধ্যায়। একটি কম্বল বা গরম খাবার তাদের জীবন বাঁচানোর একমাত্র উপায়। শহরের উষ্ণ ঘরে বসা মানুষ এই বাস্তবতা প্রায়ই বুঝতে পারে না-কত মানুষ শীতের হাত থেকে জীবনের লড়াই করছে।
গ্রামে শীতের সৌন্দর্য প্রকৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে। ধান, গম, সবজি-ফসলের মাঠ শীতের হিমায় উজ্জ্বল হয়। ভোরের শিশিরে ভেজা মাঠ, খেজুরের রস সংগ্রহ, উঠান ঘিরে পিঠা-পুলির প্রস্তুতি-সবই গ্রামীণ জীবনে শীতের আনন্দ দেয়।কিন্তু এই সৌন্দর্যের সঙ্গে থাকে কষ্টও। শিশুদের সর্দি-কাশি বেড়ে যায়, গবাদিপশু অসুস্থ হয়ে পড়ে, এবং গরম কাপড় ও চিকিৎসার অভাব জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে। পরিবারের দৈনন্দিন জীবন, খাদ্য ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা শীতের সঙ্গে আরও জটিল হয়ে ওঠে।
শীতকাল মানবদেহের জন্য বিশেষ চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। শিশু, বৃদ্ধ এবং অসুস্থদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ সময়। নিউমোনিয়া, হাঁপানি, সর্দি-কাশি, ঠান্ডাজনিত সংক্রমণ-এসব রোগ শীতের সময়ে প্রকট আকার ধারণ করে।দরিদ্র ও সীমিত সুবিধাসম্পন্ন জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গরম কাপড়, পর্যাপ্ত পুষ্টি, চিকিৎসা-এসব সুবিধা তাদের কাছে সীমিত। তাই শীতকালীন স্বাস্থ্য সচেতনতা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত নয়, সামাজিক দায়িত্বও দাবি করে।
শীতকাল সমাজের বৈষম্য আরও স্পষ্ট করে। শহরের ফুটপাতের মানুষ, ছিন্নমূল শিশু, বৃদ্ধ ভিক্ষুক-এরা শীতের প্রকটতা সবচেয়ে বেশি ভোগে। একটি কম্বল বা সোয়েটার তাদের জন্য বিলাসিতা নয়, জীবন বাঁচানোর অবলম্বন।প্রতিবছর সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। তবে অনেক সময় প্রকৃত উপকারভোগীরা বঞ্চিত হন। এই বাস্তবতা আমাদের মানবিক দায়িত্বের প্রতি সচেতন করে। শীত কেবল দান বা সাহায্যের নয়, সমাজের দুর্বল মানুষদের প্রতি দায়িত্ব পালনও শীতকালীন গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
শীত আমাদের মনে করিয়ে দেয়-উষ্ণতা শুধুমাত্র পোশাকে নয়, আচরণেও প্রয়োজন। প্রতিবেশী, পরিবার, সমাজ-সব স্তরে দায়িত্ব ও সহমর্মিতা জাগ্রত হওয়া উচিত। শীতের দিনে দরিদ্র ও অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো, কম্বল বা গরম খাবার দেওয়া, খোঁজ নেওয়া-এসব ছোট ছোট কাজই সমাজকে মানবিক করে তোলে।শীতকাল সামাজিক সংহতি ও সহমর্মিতার পরীক্ষা নেয়। আমরা যদি সবাই আমাদের নিকটতম দুর্বল মানুষদের কথা মনে রাখি, তবে শীত কেবল আরামদায়ক নয়, মানবিকতা বৃদ্ধির সময়ও হবে।
বাংলার শীত মানেই পিঠা-পুলি, ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা, চিতই পিঠা। এগুলি কেবল খাবার নয়, শীতকালীন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনকেও ঘিরে রাখে। গ্রামের উঠান, পরিবারের আড্ডা, সন্ধ্যার গল্প-সবই শীতকে স্মৃতিমধুর করে তোলে।শীত আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে ধীর করে, পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেয়, মানুষকে কাছাকাছি আনে। প্রযুক্তিনির্ভর জীবনে শীত যেন মানবিক সম্পর্ককে পুনর্জীবিত করে।
শীত মানেই শিশুরা আঙিনায় খেলে, কুয়াশা আর শিশিরে ভিজে খেলার আনন্দ। স্কুলের ছুটিতে তারা দৌড়ে বেড়ে, লাল গরম স্কার্ফে ঘুরে, এক ধরনের আনন্দের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে দেয়। তবে দরিদ্র শিশুদের কাছে শীত মানে গরম পোশাকের অভাব, স্বাস্থ্যঝুঁকি। তাদের জন্য সমাজের সহানুভূতি ও সহযোগিতা প্রয়োজন।
শীতকাল আমাদের খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনে। ভাপা পিঠা, গরম চা, সেদ্ধ মিষ্টি আলু-শীতের স্বাদ আরামদায়ক। তবে দরিদ্র পরিবারের কাছে পুষ্টিকর খাবারও যথেষ্ট পাওয়া যায় না। এই অভাব শীতের সময় স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়। সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে এই ফাঁক পূরণ করা।
এখন আমরা শীতের মধ্যবিন্দুতে। কুয়াশা ঘন, বাতাস তীব্র, দিনের আলো কম, রাত দীর্ঘ। মানুষের জীবন এই শীতকে কেন্দ্র করে গতি নেয়-কেউ অফিসে যায়, কেউ স্কুলে, কেউ কৃষিকাজে। শীতের সঙ্গে জীবনযাত্রার চ্যালেঞ্জও থাকে।
প্রতিটি মানুষ যেন এই শীতে সুরক্ষিত ও স্বাস্থ্যবান থাকে, সেটি নিশ্চিত করা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের জন্য উষ্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা-এটাই প্রকৃত শীত জয়।শীত আসবে, যাবে, আবার ফিরে আসবে। কিন্তু আমাদের মন, সমাজ ও মানবিকতা যদি উষ্ণ থাকে, তাহলে শীত শুধু ঠান্ডা নয়, উষ্ণতার ঋতুও হবে।
শীত আমাদের শুধু প্রকৃতির পরিবর্তনের কথা মনে করিয়ে দেয় না, মানুষের মধ্যে মানবিকতা, সহমর্মিতা ও দায়িত্ববোধের পরীক্ষাও নেয়। শহরের আরাম, গ্রামের সৌন্দর্য, স্বাস্থ্যঝুঁকি, বৈষম্য-সবই মিলিয়ে শীত আমাদের জীবনকে স্পর্শ করে।
শীত মানেই কুয়াশা, ঠান্ডা বাতাস, রাতের দীর্ঘতা, কিন্তু সাথে আসে উষ্ণতার খোঁজ, পারস্পরিক সহানুভূতি ও মানবিক গল্প। চলমান এই শীতে তাই শুধু নিজের উষ্ণতার খোঁজ নয়, অন্যের পাশে দাঁড়ানোর দায়িত্বও পালন করতে হবে।
শীতকাল আসলেই আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়-মানুষের জীবন যতই চ্যালেঞ্জপূর্ণ হোক না কেন, মানবিকতা ও উষ্ণতা সেই চ্যালেঞ্জকে সহজ করে তোলে।
[লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি]