alt

উপ-সম্পাদকীয়

চুকনগর : বিশ্বের স্বাধীনতা ইতিহাসে অন্যতম গণহত্যা

সামসুজ্জামান

: বৃহস্পতিবার, ১৯ মে ২০২২

‘চুকনগরের গণহত্যা’ এখন আর কারও অজানা নয়। ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারতে পলায়নরত দশ হাজারেরও বেশি মানুষকে এলোপাতাড়ি ব্রাশফায়ার করে হত্যা করেছিল পাকসেনারা। যাদের অধিকাংশই ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের।

যুদ্ধকালীন সময় হত্যা, গণহত্যা, সংঘটিত হয়ে থাকে যুদ্ধরত দেশে। ভিয়েতনামের মাইলায় মার্কিন সৈন্যরা এক জায়গায় হত্যা করেছিল ১৫-১৬শ মানুষ। পাঞ্জাবের জালিয়ানাবাগে ব্রিটিশ জেনারেল ডায়ারের নির্দেশে হত্যা করা হয় প্রায় ২২০০ মানুষকে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন দেশের বৃহত্তম গণহত্যাটি সংঘটিত হয় খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার চুকনগর বাজারে।

যে দৃশ্য প্রত্যক্ষদর্শীদের মানুষপটে ভেসে উঠলে আজও শিহরিত হয়ে উঠেন তারা। ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে ভীত, সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠে। তারা যে নৃশংসতা দেখেছে তা বর্ণানাতীত। তারা দেখেছে পাক হানাদারদের বর্বরতা। প্রকাশ্যে ধর্ষণের দৃশ্য। দেখেছে প্রাণে বাঁচার তাগিদে কালীমন্দিরের পেছনের নদীর লাগোয়া বটগাছের শিকড় ধরে কেবল নাক বের করেও সুবোল নন্দী পরিবারের নয়জনের নৃশংস হত্যা। পাক সেনারা পানির মধ্যেই এলাপাতাড়ি গুলি করে তাদের হত্যা করে। ৫৬টি আর্মি ক্যাম্পে প্রায় একহাজার পাকসেনা মাত্র চার-পাঁচ ঘণ্টা অবিরাম এলোপাতাড়ি ক্রসফায়ার করে হত্যা করে দশ হাজারের বেশি মানুষকে। যার মধ্যে এক-চতুর্থাংশ ছিল শিশু-কিশোর এবং বৃদ্ধা। ১৯৭১ সালের ২০ মে বাংলা ৫ জ্যৈষ্ঠ বৃহস্পতিবার এ নৃশংস ঘটনা ঘটে চুকনগর বাজারে।

যুদ্ধের শুরু থেকেই রাজাকার বাহিনী এবং শান্তি কমিটির সহায়তায় খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় শুরু হয় গণহত্যা, লুটপাট, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ। ১৪ এপ্রিল পাকসেনারা প্রথম বটিয়াঘাটার চক্রাখালী স্কুলের সামনে অবস্থান নেয় এবং গানবোট থেকে শেলনিক্ষেপ করে। এদিকে এই সময় নকশালপন্থিদের তৎপরতাও বৃদ্ধি পায়। দেশে যেখানে শাসন নেই। সর্বত্র চলছে বিশৃঙ্খলা ও ভীতি সন্ত্রাস। রণকৌশল হিসেবে তারা তখন নির্ধারণ করে সেনা শত্রু খতমের পরিকল্পনা। ১৭ মে আবাদের বিখ্যাত ধনী পরিবারের পুলিন সরদার, অনন্ত সরদার, দয়াল সরদার ও বিষ্ণু সরদারকে হত্যা করে। একদিকে পাকসেনাদের গণহত্যা, স্থানীয় মানুষদের লুটপাট, অন্যদিকে নকসালদের মানুষ হত্যা। এমতাবস্থায় কালবিলম্ব না করে ১৭ মে’র পর থেকে তারা যাত্রা শুরু করে ভারতের উদ্দেশে। সোনাদানা টাকা-পয়সা এবং প্রয়োজনীয় কিছু খাদ্যসামগ্রী পাথেয় করে জীবন বাঁচানোর তাগিদে তারা চুকনগর এসে জড়ো হয়। এর আগেও কয়েক হাজার মানুষ এই পথ দিয়েই ভারতে ঢুকেছিল। দিন যত যাচ্ছিল মানুষের আগমন ততই বাড়ছিল। গণহত্যার দুদিন আগে থেকে অর্থাৎ ১৯-২০ মে রাত দিন ছিল বিরামহীন জনস্রোত। বাজার এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় তিলধারণের ঠাঁই ছিল না।

চুকনগর থেকে ২৫-৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারলেই সীমান্ত পার হওয়া যাবে। কিছুদিন আগেও সাতক্ষীরা পর্যন্ত যে বাস-ট্রাক চলাচল করতো তা পাকসেনারা নিজেদের ব্যবহারের জন্য নিয়ে নিয়েছে। ফলে পায়েহাঁটা ছাড়া বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা সাংগঠনিকভাবে যতটা সম্ভব শরণার্থীদের সহযোগিতা দানে হয়েছিল তৎপর। গ্রুপ তৈরি করে পাহারা দিয়ে সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার প্রস্তুতিও নিয়েছিল ১৯ মে। কিন্তু বিধিবাম ২০ মে সৃষ্টি হলো চুকনগরে একরক্তের ইতিহাস। চুকনগরে সংঘটিত গণহত্যা বাংলাদেশের বৃহত্তম গণহত্যা এমনকি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বা অন্যতম গণহত্যা। যে মূল্য আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করতে দিতে হয়েছিল তা ভুলে যেতে বসেছে জাতি।

বর্বর এ হত্যাযজ্ঞের পর এলাকার ৪২ জন মানুষ পরম মমতা ভরে দুই দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে এসব মৃতদের গণকবর দেয়।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক সেদিন বাংলাদেশের বৃহত্ত গণহত্যাটি সংঘটিত হয়েছিল চুকনগরের মাটিতে। এটি পৃথিবীর জঘন্যতম গণহত্যা কিনা সে বিষয়টি অনুসন্ধানের দাবি রাখে। যে গণহত্যার শিকার হয়েছিল দশ সহস্রাধিক মানুষ। স্মরণকালের সাড়া জাগানো এতবড় ভয়াবহ একটি ঘটনা ১৯৯০ দশকের পূর্বপর্যন্ত দেশবাসীর কাছে ছিল অজানা। ১৯৯৩ সালে গঠিত হয় চুকনগর গণহত্যা ’৭১ স্মৃতিরক্ষা পরিষদ। সেই থেকে প্রতি বছর এ ব্যানারের আওতায় পালিত হচ্ছে ২০ মে চুকনগর গণহত্যা দিবস।

স্বাধীনতা অর্জন ও মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্ব। আমাদের অহংকার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থে বিভিন্ন আলোচনায় এ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তুলে ধরা হয়। সেই তুলনায় গণহত্যা বিষয়টি আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এবং মানুষের মন-মননে ততটা স্থান পায়নি। স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমরা না পেরেছি তাদের পাশে দাঁড়াতে, না পেরেছি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সম্মান জানাতে, না পেরেছি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তির অপকৌশল থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে।

[লেখক : ব্যবসায়ী]

পিতৃতন্ত্রের মনস্তত্ত্ব ও নারীর গ-িবদ্ধতা

চিরতন ও কালীচরণ : শতবর্ষ আগে যারা আইনের মঞ্চে উঠেছিলেন

রম্যগদ্য : প্লিজ স্যার... প্লিজ, ইকটু রেহাই দ্যান...

জমি, সম্মান ও প্রতিহিংসার নির্মম রাজনীতি

জানি তিনি মোড়ল বটে, আমাদের কেন তা হতে হবে

ভূমি মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় যুগোপযোগী আমূল সংস্কার জরুরি

বরেন্দ্রর মাটিতে আমের বিপ্লব : সম্ভাবনা ও সতর্কবার্তা

অবশেষে ‘হাসিনা’ গ্রেফতার

স্ক্যাবিস সংক্রমণের কারণ ও প্রতিরোধে করণীয়

বাস্তবমুখী বাজেটের প্রত্যাশা : বৈষম্যহীন অর্থনীতির পথে কতটা অগ্রগতি?

কৌশল নয়, এবার প্রযুক্তিতে সৌদি-মার্কিন জোট

সিউল : স্বর্গ নেমেছে ধরায়

নাচোল বিদ্রোহ ও ইলা মিত্র সংগ্রহশালা : সাঁওতাল স্মৃতি কেন উপেক্ষিত?

ছবি

অন্ধকার সত্য, শেষ সত্য নয়!

বিয়েতে মিতব্যয়িতা

এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বঞ্চনার কথা

রোহিঙ্গা সমস্যা : বাহবা, ব্যর্থতা ও ভবিষ্যতের ভয়

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়

প্রযুক্তির ফাঁদে শৈশব : স্ক্রিন টাইম গিলে খাচ্ছে খেলার মাঠ

রমগদ্য : সিরাজগঞ্জে ‘ব্রিটিশ প্রেতাত্মা’

বামপন্থা : নীতির সঙ্গে নেতৃত্বের ভূমিকা

দাবি আদায়ে জনদুর্ভোগ : জনশিক্ষা ও সুশাসনের পথ

ইমাম রইস উদ্দিন হত্যাকাণ্ড : সুবিচার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব

কারাগার, সংশোধনাগার ও ভবঘুরে কেন্দ্রগুলোর সংস্কার কি হবে

জ্বালানির বদল, জীবিকার ঝুঁকি

প্রসঙ্গ : রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও চট্টগ্রামে এস্কর্ট ডিউটি

দেশটা কারো বাপের নয়!

বুদ্ধের বাণীতে বিশ্বশান্তির প্রার্থনা

আর কত ধর্ষণের খবর শুনতে হবে?

সংস্কারের স্বপ্ন বনাম বাস্তবতার রাজনীতি

মধুমাসের স্মৃতি ও দেশীয় ফলের রসাল সমারোহ

মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

লিঙ্গের রাজনীতি বা বিবাদ নয়, চাই মানবিকতার নিবিড় বন্ধন

বাজেট : বাস্তবতা, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পারমাণবিক আলোচনার স্থবিরতা

রম্যগদ্য: “বাঙালি আমরা, নহি তো মেষ...”

tab

উপ-সম্পাদকীয়

চুকনগর : বিশ্বের স্বাধীনতা ইতিহাসে অন্যতম গণহত্যা

সামসুজ্জামান

বৃহস্পতিবার, ১৯ মে ২০২২

‘চুকনগরের গণহত্যা’ এখন আর কারও অজানা নয়। ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারতে পলায়নরত দশ হাজারেরও বেশি মানুষকে এলোপাতাড়ি ব্রাশফায়ার করে হত্যা করেছিল পাকসেনারা। যাদের অধিকাংশই ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের।

যুদ্ধকালীন সময় হত্যা, গণহত্যা, সংঘটিত হয়ে থাকে যুদ্ধরত দেশে। ভিয়েতনামের মাইলায় মার্কিন সৈন্যরা এক জায়গায় হত্যা করেছিল ১৫-১৬শ মানুষ। পাঞ্জাবের জালিয়ানাবাগে ব্রিটিশ জেনারেল ডায়ারের নির্দেশে হত্যা করা হয় প্রায় ২২০০ মানুষকে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন দেশের বৃহত্তম গণহত্যাটি সংঘটিত হয় খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার চুকনগর বাজারে।

যে দৃশ্য প্রত্যক্ষদর্শীদের মানুষপটে ভেসে উঠলে আজও শিহরিত হয়ে উঠেন তারা। ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে ভীত, সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠে। তারা যে নৃশংসতা দেখেছে তা বর্ণানাতীত। তারা দেখেছে পাক হানাদারদের বর্বরতা। প্রকাশ্যে ধর্ষণের দৃশ্য। দেখেছে প্রাণে বাঁচার তাগিদে কালীমন্দিরের পেছনের নদীর লাগোয়া বটগাছের শিকড় ধরে কেবল নাক বের করেও সুবোল নন্দী পরিবারের নয়জনের নৃশংস হত্যা। পাক সেনারা পানির মধ্যেই এলাপাতাড়ি গুলি করে তাদের হত্যা করে। ৫৬টি আর্মি ক্যাম্পে প্রায় একহাজার পাকসেনা মাত্র চার-পাঁচ ঘণ্টা অবিরাম এলোপাতাড়ি ক্রসফায়ার করে হত্যা করে দশ হাজারের বেশি মানুষকে। যার মধ্যে এক-চতুর্থাংশ ছিল শিশু-কিশোর এবং বৃদ্ধা। ১৯৭১ সালের ২০ মে বাংলা ৫ জ্যৈষ্ঠ বৃহস্পতিবার এ নৃশংস ঘটনা ঘটে চুকনগর বাজারে।

যুদ্ধের শুরু থেকেই রাজাকার বাহিনী এবং শান্তি কমিটির সহায়তায় খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় শুরু হয় গণহত্যা, লুটপাট, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ। ১৪ এপ্রিল পাকসেনারা প্রথম বটিয়াঘাটার চক্রাখালী স্কুলের সামনে অবস্থান নেয় এবং গানবোট থেকে শেলনিক্ষেপ করে। এদিকে এই সময় নকশালপন্থিদের তৎপরতাও বৃদ্ধি পায়। দেশে যেখানে শাসন নেই। সর্বত্র চলছে বিশৃঙ্খলা ও ভীতি সন্ত্রাস। রণকৌশল হিসেবে তারা তখন নির্ধারণ করে সেনা শত্রু খতমের পরিকল্পনা। ১৭ মে আবাদের বিখ্যাত ধনী পরিবারের পুলিন সরদার, অনন্ত সরদার, দয়াল সরদার ও বিষ্ণু সরদারকে হত্যা করে। একদিকে পাকসেনাদের গণহত্যা, স্থানীয় মানুষদের লুটপাট, অন্যদিকে নকসালদের মানুষ হত্যা। এমতাবস্থায় কালবিলম্ব না করে ১৭ মে’র পর থেকে তারা যাত্রা শুরু করে ভারতের উদ্দেশে। সোনাদানা টাকা-পয়সা এবং প্রয়োজনীয় কিছু খাদ্যসামগ্রী পাথেয় করে জীবন বাঁচানোর তাগিদে তারা চুকনগর এসে জড়ো হয়। এর আগেও কয়েক হাজার মানুষ এই পথ দিয়েই ভারতে ঢুকেছিল। দিন যত যাচ্ছিল মানুষের আগমন ততই বাড়ছিল। গণহত্যার দুদিন আগে থেকে অর্থাৎ ১৯-২০ মে রাত দিন ছিল বিরামহীন জনস্রোত। বাজার এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় তিলধারণের ঠাঁই ছিল না।

চুকনগর থেকে ২৫-৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারলেই সীমান্ত পার হওয়া যাবে। কিছুদিন আগেও সাতক্ষীরা পর্যন্ত যে বাস-ট্রাক চলাচল করতো তা পাকসেনারা নিজেদের ব্যবহারের জন্য নিয়ে নিয়েছে। ফলে পায়েহাঁটা ছাড়া বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা সাংগঠনিকভাবে যতটা সম্ভব শরণার্থীদের সহযোগিতা দানে হয়েছিল তৎপর। গ্রুপ তৈরি করে পাহারা দিয়ে সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার প্রস্তুতিও নিয়েছিল ১৯ মে। কিন্তু বিধিবাম ২০ মে সৃষ্টি হলো চুকনগরে একরক্তের ইতিহাস। চুকনগরে সংঘটিত গণহত্যা বাংলাদেশের বৃহত্তম গণহত্যা এমনকি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বা অন্যতম গণহত্যা। যে মূল্য আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করতে দিতে হয়েছিল তা ভুলে যেতে বসেছে জাতি।

বর্বর এ হত্যাযজ্ঞের পর এলাকার ৪২ জন মানুষ পরম মমতা ভরে দুই দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে এসব মৃতদের গণকবর দেয়।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক সেদিন বাংলাদেশের বৃহত্ত গণহত্যাটি সংঘটিত হয়েছিল চুকনগরের মাটিতে। এটি পৃথিবীর জঘন্যতম গণহত্যা কিনা সে বিষয়টি অনুসন্ধানের দাবি রাখে। যে গণহত্যার শিকার হয়েছিল দশ সহস্রাধিক মানুষ। স্মরণকালের সাড়া জাগানো এতবড় ভয়াবহ একটি ঘটনা ১৯৯০ দশকের পূর্বপর্যন্ত দেশবাসীর কাছে ছিল অজানা। ১৯৯৩ সালে গঠিত হয় চুকনগর গণহত্যা ’৭১ স্মৃতিরক্ষা পরিষদ। সেই থেকে প্রতি বছর এ ব্যানারের আওতায় পালিত হচ্ছে ২০ মে চুকনগর গণহত্যা দিবস।

স্বাধীনতা অর্জন ও মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্ব। আমাদের অহংকার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থে বিভিন্ন আলোচনায় এ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তুলে ধরা হয়। সেই তুলনায় গণহত্যা বিষয়টি আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এবং মানুষের মন-মননে ততটা স্থান পায়নি। স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমরা না পেরেছি তাদের পাশে দাঁড়াতে, না পেরেছি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সম্মান জানাতে, না পেরেছি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তির অপকৌশল থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে।

[লেখক : ব্যবসায়ী]

back to top