alt

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

আদালত প্রাঙ্গণ টাউট-দালালমুক্ত হোক

রায়হান আলী

: মঙ্গলবার, ১৪ জুন ২০২২

বিচার প্রার্থীদের শেষ আশ্রয় স্থল হলো আদালত। আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি একজন নাগরিকের অধিকার। শুধু বিধিবদ্ধ আইনই নয়, আমাদের সংবিধানও নাগরিকের সে অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশ সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী’।

সংবিধান বলছে, আইনের কাছে সমান আশ্রয় লাভের অধিকার শুধু অধিকারই নয়, মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। মৌলিক অধিকার হচ্ছে এমন অধিকার, যা রাষ্ট্র তার নাগরিকদের প্রদান করতে আইনত বাধ্য। অর্থাৎ রাষ্ট্র নাগরিকদের এসব মৌলিক অধিকার বলবৎ করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তবে আইনের আশ্রয় লাভের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র কিছু শর্ত ও পদ্ধতি আরোপ করেছে। সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে কিছু শর্ত ও পদ্ধতির কথা বলা আছে, যা পূরণ সাপেক্ষে মৌলিক অধিকার তথা আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার প্রয়োগ করা যায়। বিদ্যমান আদালতের মাধ্যমেই মানুষের এ অধিকার প্রয়োগ করার বিধান আছে। রাষ্ট্র আদালতের মাধ্যমে নাগরিকদের এ অধিকার প্রয়োগ করে থাকে।

রাষ্ট্রের দায়িত্ব বিচার প্রার্থীদের আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। আর এই ন্যায়বিচার নিশ্চিতে বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। বর্তমানে অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে অন্যতম হয়ে দাঁড়িয়েছে আদালতপাড়ায় টাউট, দালালের দৌরাত্ম্য। ইদানীং গণমাধ্যমেও এমন খবর সরব।

আদালতপাড়া থেকে ভুয়া আইনজীবী, টাউট, দালাল, ভুয়া মুহুরি, ক্লার্ক শনাক্ত করে বিভিন্ন আইনজীবী সমিতি ব্যবস্থাও নিচ্ছে। কিন্তু তাতেও মনে হয় এ অপরাধ কমছে না। সমস্যাটি নিরসনে ২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি কোর্টে রিট আবেদন দাখিল হয়। রিট আবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ লিগ্যাল প্র্যাক্টিশনার্স অ্যান্ড বার কাউন্সিল অর্ডার ১৯৭২-এর ৪১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে বার কাউন্সিল সনদপ্রাপ্ত হতে হবে। অন্যথায় ছয় মাসের কারাদমঙ্গলবার ের বিধান রয়েছে। কিন্তু বার কাউন্সিল এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেয়ায় আদালত অঙ্গনে টাউট-দালালদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে’।

এর প্রেক্ষিতে সারাদেশের আইন অঙ্গন থেকে টাউট, দালাল, ভুয়া আইনজীবীদের দৌরাত্ম্য ও তৎপরতা বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত আবেদন নিষ্পত্তি করে বার কাউন্সিল সচিবকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।

সরকার আদালতপাড়ার এ সমস্যা নিরসনে বিভিন্ন পদক্ষেপও নিয়েছে আইনজীবী সমিতিগুলোও বিভিন্ন সময়ে এটা রোধে পদক্ষেপ নিয়েছেন ও নিচ্ছেন। কিন্তু সমস্যাটি সমাধানের কার্যকর পদক্ষেপ কতটুকু নেয়া হয়েছে এটাই এখন বড় প্রশ্ন। সাধারণ জনগণ আগের চেয়ে অনেকটা সচেতন হয়েছে। তারপরও টাউট-দালালদের খপ্পর থেকে রেহাই পেতে মামলা-মোকদ্দমা-সংক্রান্ত বিষয়াদি থাকলে সরাসরি একজন আইনজীবীর পরামর্শ নিতে হবে।

বিচার প্রার্থীদের আইনজীবী ব্যতীত কারও কাছে আইনি পরামর্শ ও আর্থিক লেনদেন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আদালতপাড়া থেকে টাউট-দালাল নির্মূল করতে হলে বিচার প্রার্থীদের নিজে আরও সচেতন হতে হবে। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বার সমিতিগুলোর আরও পরিকল্পনা করে এটা নিরসনে ব্যবস্থাই হতে পারে আদালতপাড়া টাউট-দালালমুক্ত।

[লেখক : আইনজীবী

জজ কোর্ট, খুলনা]

ভাষার বৈচিত্র্য রক্ষায় নীরব বিপ্লব

উপাত্ত সুরক্ষা আইন : গোপনীয়তা রক্ষা নাকি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ?

সমতা কি ন্যায্যতা নিশ্চিত করে?

ডেঙ্গু সংকট দূরদৃষ্টির ব্যর্থতা

ষাটের দশকে বামপন্থী ভাবনার উত্থান ও বিবর্তন

দেখিতে পাও না তুমি মৃত্যুদূত দাঁড়ায়েছে দ্বারে!

বায়ুর অপর নাম জীবন

ছবি

হাওরের জীবন ও সংস্কৃতি

বিখণ্ডিত আত্মপরিচয়: তরল সহানুভূতিতে নৈতিক মূলধনের সমাজতত্ত্ব

প্রভাষকের ‘প্রভা’ যখন ‘শোক’: শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতি বঞ্চনা

যুদ্ধ বিরতি গাজাবাসীর জন্য জরুরি ছিল

লবলং খালের মৃত্যু: স্মৃতিতে নদী, বাস্তবে দূষণ

বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা: অর্থনৈতিক স্থিতির পূর্বশর্ত

হায় যম! আর কতক্ষণ, হবে অপেক্ষা করিতে মোরে?

পোশাক শিল্প : অগ্রগতি ও শ্রমিকের অধিকার

গণভোটের রাজনৈতিক গুরুত্ব

বামঘরানার বাটখারা...

বাগদা ফার্ম : স্মারকলিপি, অবরোধ, অনশন, আন্দোলন- কিছুতেই বরফ গলেনি

ব্যাটারি-শকট: নতুন সংকট

মতপ্রকাশ কিংবা দ্বিমত পোষণ: নাগরিক অধিকার ও রাজনৈতিক বাস্তবতা

সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন ব্যাংক কি আদৌ প্রয়োজন

ট্রাম্প ও শি’র ‘কৌশলগত শান্তি’

আশার সমাজতত্ত্ব: বিভ্রান্তির যুগে ভবিষ্যৎ নির্মাণের বিপ্লবী বিজ্ঞান

পিএইচডি: উচ্চ শিক্ষার মানদণ্ড না প্রতীকী মরীচিকা?

ডিম নয় তবু অশ্বডিম্ব!

ছবি

অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও নির্বাচন

পিএইচডি: উচ্চ শিক্ষার মানদণ্ড না প্রতীকী মরীচিকা?

প্রকৃতার্থে ফকির কারা

এনসিপি চায় অবিনাশী জুলাই সনদ

পিএইচডি: উচ্চ শিক্ষার মানদণ্ড না প্রতীকী মরীচিকা?

আলুর প্রাচুর্যে কৃষকের সংকট

তাহলে কী ‘কোটা’ই জয়যুক্ত হবে!

ব্যাংকিং খাতে বিষফোঁড়া: বাংলাদেশের অর্থনীতির ধমনী বিষাক্ত হয়ে উঠছে

ছবি

ঢাকার নদী ও খালের দখল-দূষণ: পুনরুদ্ধার কোন পথে

জমি কী মূলে রেকর্ড হয়েছে, দলিল মূলে না উত্তরাধিকার মূলে?

কার্বন-নিরপেক্ষ শিশুর অনুপ্রেরণায় দেশ

tab

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

আদালত প্রাঙ্গণ টাউট-দালালমুক্ত হোক

রায়হান আলী

মঙ্গলবার, ১৪ জুন ২০২২

বিচার প্রার্থীদের শেষ আশ্রয় স্থল হলো আদালত। আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি একজন নাগরিকের অধিকার। শুধু বিধিবদ্ধ আইনই নয়, আমাদের সংবিধানও নাগরিকের সে অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশ সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী’।

সংবিধান বলছে, আইনের কাছে সমান আশ্রয় লাভের অধিকার শুধু অধিকারই নয়, মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। মৌলিক অধিকার হচ্ছে এমন অধিকার, যা রাষ্ট্র তার নাগরিকদের প্রদান করতে আইনত বাধ্য। অর্থাৎ রাষ্ট্র নাগরিকদের এসব মৌলিক অধিকার বলবৎ করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তবে আইনের আশ্রয় লাভের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র কিছু শর্ত ও পদ্ধতি আরোপ করেছে। সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদে কিছু শর্ত ও পদ্ধতির কথা বলা আছে, যা পূরণ সাপেক্ষে মৌলিক অধিকার তথা আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার প্রয়োগ করা যায়। বিদ্যমান আদালতের মাধ্যমেই মানুষের এ অধিকার প্রয়োগ করার বিধান আছে। রাষ্ট্র আদালতের মাধ্যমে নাগরিকদের এ অধিকার প্রয়োগ করে থাকে।

রাষ্ট্রের দায়িত্ব বিচার প্রার্থীদের আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। আর এই ন্যায়বিচার নিশ্চিতে বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। বর্তমানে অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে অন্যতম হয়ে দাঁড়িয়েছে আদালতপাড়ায় টাউট, দালালের দৌরাত্ম্য। ইদানীং গণমাধ্যমেও এমন খবর সরব।

আদালতপাড়া থেকে ভুয়া আইনজীবী, টাউট, দালাল, ভুয়া মুহুরি, ক্লার্ক শনাক্ত করে বিভিন্ন আইনজীবী সমিতি ব্যবস্থাও নিচ্ছে। কিন্তু তাতেও মনে হয় এ অপরাধ কমছে না। সমস্যাটি নিরসনে ২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি কোর্টে রিট আবেদন দাখিল হয়। রিট আবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ লিগ্যাল প্র্যাক্টিশনার্স অ্যান্ড বার কাউন্সিল অর্ডার ১৯৭২-এর ৪১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে বার কাউন্সিল সনদপ্রাপ্ত হতে হবে। অন্যথায় ছয় মাসের কারাদমঙ্গলবার ের বিধান রয়েছে। কিন্তু বার কাউন্সিল এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেয়ায় আদালত অঙ্গনে টাউট-দালালদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে’।

এর প্রেক্ষিতে সারাদেশের আইন অঙ্গন থেকে টাউট, দালাল, ভুয়া আইনজীবীদের দৌরাত্ম্য ও তৎপরতা বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত আবেদন নিষ্পত্তি করে বার কাউন্সিল সচিবকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।

সরকার আদালতপাড়ার এ সমস্যা নিরসনে বিভিন্ন পদক্ষেপও নিয়েছে আইনজীবী সমিতিগুলোও বিভিন্ন সময়ে এটা রোধে পদক্ষেপ নিয়েছেন ও নিচ্ছেন। কিন্তু সমস্যাটি সমাধানের কার্যকর পদক্ষেপ কতটুকু নেয়া হয়েছে এটাই এখন বড় প্রশ্ন। সাধারণ জনগণ আগের চেয়ে অনেকটা সচেতন হয়েছে। তারপরও টাউট-দালালদের খপ্পর থেকে রেহাই পেতে মামলা-মোকদ্দমা-সংক্রান্ত বিষয়াদি থাকলে সরাসরি একজন আইনজীবীর পরামর্শ নিতে হবে।

বিচার প্রার্থীদের আইনজীবী ব্যতীত কারও কাছে আইনি পরামর্শ ও আর্থিক লেনদেন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আদালতপাড়া থেকে টাউট-দালাল নির্মূল করতে হলে বিচার প্রার্থীদের নিজে আরও সচেতন হতে হবে। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বার সমিতিগুলোর আরও পরিকল্পনা করে এটা নিরসনে ব্যবস্থাই হতে পারে আদালতপাড়া টাউট-দালালমুক্ত।

[লেখক : আইনজীবী

জজ কোর্ট, খুলনা]

back to top