ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চুরির অভিযোগে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীর উপস্থিত ছিল। উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকে নৃশংসভাবে তোফাজ্জল নামের সেই যুবকের উপর অত্যাচার চালিয়েছে, অনেকে আবার দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করেছে। এর থেকে নির্মম, মর্মান্তিক, হতাশাজনক কী আর হতে পারে! নির্বিচারে নৃশংসভাবে মানুষকে গুম-খুন এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন থেকে শুরু করে ভোট ডাকাতির কারণে শেখ হাসিনা সরকারকে এদেশের মানুষ উৎখাত করেছে। কিন্তু সেই একই নৃসংশতা যদি এখনো বিরাজমান থাকে তাহলে পরিবর্তনটা আসলে কোথায় সেই প্রশ্ন তোলার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।
এবার আসা যাক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার বিষয়ে। গত ১৫ জুলাই রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে আন্দোলনরতদের ওপর হামলার ঘটনায় শামীম নামক সেই নেতা সামনের সারিতে ছিলেন এমন অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা মারধোর করলে পরবর্তীতে তিনি মারা যান।
শামীমের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, জমি দখল, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। তবে মূখ্য বিষয় হল- যদি কেউ অপরাধী করে থাকে, অন্যায় কাজের সাথে সম্পৃক্ত থেকে থাকে তাহলে তার বিচারের জন্য আইন আছে, আদালত আছে। কাউকে নৃশংসভাবে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হঠকারিতা ও অন্যায়ের একশেষ।
দুটি হত্যাকা-ের ক্ষেত্রেই লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে- এই ঘটনা দ্বয়ের পূর্বে কিংবা শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতি নেই। ঘটনা যখন অনেক দূর গডড়য়েছে তখন উভয় ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দেখা গেছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে, দেশের এহেন অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এঙানোয় তাদের ভূমিকা কী এবং তারা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এঙাতে কী পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে?
জায়গায় জায়গায় গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে, নির্মমভাবে মানুষ মারা হচ্ছে। এর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। সরকারের সবচেয়ে বেশি মনোনিবেশ করা উচিত দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিকীকরণের দিকে। এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ্য, যেকোনো অপকর্ম ঘটলেই নির্দিষ্ট কোন রাজনৈতিক দলের উপর দায় চাপিয়ে সাধারণ অপরাধীদের আঙালে রাখার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। এটা মানতে হবে, অন্যায়, অপরাধ, জুলুম এই সবাই কর্ম শুধু আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, বিএনপি, ছাত্রদল করছে না, অনেক সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থী এর সাথে জড়িত। এ বিষয়টি স্বীকার করেই সংকট সমাধানের পথে এগোতে হবে। মনে রাখা দরকার, আইন-আদালতের দায়িত্ব নিজে কাঁধে তুলে নিলে, দেশের সিস্টেম কলাপ্স করবে। দেশে চূড়ান্ত পর্যায়ের অরাজকতা সৃষ্টি হবে।
রবিউল আওয়াল পারভেজ
শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চুরির অভিযোগে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীর উপস্থিত ছিল। উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকে নৃশংসভাবে তোফাজ্জল নামের সেই যুবকের উপর অত্যাচার চালিয়েছে, অনেকে আবার দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করেছে। এর থেকে নির্মম, মর্মান্তিক, হতাশাজনক কী আর হতে পারে! নির্বিচারে নৃশংসভাবে মানুষকে গুম-খুন এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন থেকে শুরু করে ভোট ডাকাতির কারণে শেখ হাসিনা সরকারকে এদেশের মানুষ উৎখাত করেছে। কিন্তু সেই একই নৃসংশতা যদি এখনো বিরাজমান থাকে তাহলে পরিবর্তনটা আসলে কোথায় সেই প্রশ্ন তোলার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।
এবার আসা যাক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার বিষয়ে। গত ১৫ জুলাই রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে আন্দোলনরতদের ওপর হামলার ঘটনায় শামীম নামক সেই নেতা সামনের সারিতে ছিলেন এমন অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা মারধোর করলে পরবর্তীতে তিনি মারা যান।
শামীমের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, জমি দখল, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। তবে মূখ্য বিষয় হল- যদি কেউ অপরাধী করে থাকে, অন্যায় কাজের সাথে সম্পৃক্ত থেকে থাকে তাহলে তার বিচারের জন্য আইন আছে, আদালত আছে। কাউকে নৃশংসভাবে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হঠকারিতা ও অন্যায়ের একশেষ।
দুটি হত্যাকা-ের ক্ষেত্রেই লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে- এই ঘটনা দ্বয়ের পূর্বে কিংবা শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতি নেই। ঘটনা যখন অনেক দূর গডড়য়েছে তখন উভয় ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দেখা গেছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে, দেশের এহেন অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এঙানোয় তাদের ভূমিকা কী এবং তারা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এঙাতে কী পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে?
জায়গায় জায়গায় গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে, নির্মমভাবে মানুষ মারা হচ্ছে। এর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে। সরকারের সবচেয়ে বেশি মনোনিবেশ করা উচিত দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিকীকরণের দিকে। এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ্য, যেকোনো অপকর্ম ঘটলেই নির্দিষ্ট কোন রাজনৈতিক দলের উপর দায় চাপিয়ে সাধারণ অপরাধীদের আঙালে রাখার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। এটা মানতে হবে, অন্যায়, অপরাধ, জুলুম এই সবাই কর্ম শুধু আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, বিএনপি, ছাত্রদল করছে না, অনেক সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থী এর সাথে জড়িত। এ বিষয়টি স্বীকার করেই সংকট সমাধানের পথে এগোতে হবে। মনে রাখা দরকার, আইন-আদালতের দায়িত্ব নিজে কাঁধে তুলে নিলে, দেশের সিস্টেম কলাপ্স করবে। দেশে চূড়ান্ত পর্যায়ের অরাজকতা সৃষ্টি হবে।
রবিউল আওয়াল পারভেজ
শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।