alt

শব্দদূষণ রোধে উদ্যোগ নিন

: বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

শব্দদূষণ আধুনিক শহর জীবনের এক বড় সমস্যা। নগরায়ণ ও শিল্পায়নের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে শব্দদূষণ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। যানবাহনের অপ্রয়োজনীয় হর্ন, নির্মাণকাজ, লাউডস্পিকার এবং বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান শব্দদূষণের প্রধান উৎস। এই সমস্যা মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে।

শহর কিংবা গ্রাম সবখানেই এখন শব্দদূষণ। অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে মাইকে বিভিন্ন ধরনের প্রচার-প্রচারণা। রাজধানী ঢাকাসহ সবাই শহর-গ্রামগঞ্জে বাসাবাড়িতে থাকা অবস্থায়, রাস্তাঘাটে চলাচল করার সময় শব্দদূষণের অত্যাচারে টেকা দায়। গ্রামে অতিরিক্ত প্রাইভেট ক্লিনিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পণ্য বিক্রি, মাছ-মাংসসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের প্রচারগাড়ি প্রতিনিয়ত ঘুরছে-ফিরছে। এ ছাড়াও গ্রামে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে কিশোর ও যুবক দ্বারা রাতভর উচ্চ আওয়াজে বক্সে গান বাজানোর বিষয়টি। বিভিন্ন দিবস ছাড়াও এই উচ্ছৃঙ্খলতা বেড়ে গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডঐঙ)-এর মতে, স্বাভাবিক শব্দের সহনীয় মাত্রা ৫৫-৬০ ডেসিবেল; কিন্তু ঢাকার মতো শহরে এটি ৮৫ থেকে ১২০ ডেসিবেল পর্যন্ত পৌঁছে যায়। শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশেই এই শব্দদূষণে আক্রান্ত। এই মাত্রার শব্দ দীর্ঘমেয়াদে মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এটি শ্রবণশক্তি হ্রাস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, এবং মানসিক চাপের কারণ হতে পারে। শিশু ও বয়স্করা শব্দদূষণের প্রতি বেশি সংবেদনশীল।

শব্দদূষণ শুধু মানুষের ওপরই নয়, প্রাণীজগতেও বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। শহরের উচ্চ শব্দ বন্যপ্রাণীদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে। এটি প্রাকৃতিক পরিবেশে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে।

সমস্যাটি সমাধানের জন্য ব্যক্তি এবং সামাজিক পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। প্রথমত, অপ্রয়োজনীয় হর্ন বাজানো বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে স্কুল, হাসপাতাল এবং আবাসিক এলাকায় লাউডস্পিকার ও উচ্চশব্দের যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। যানবাহন চালকদের উচিত রাস্তায় ধৈর্য বজায় রেখে প্রয়োজন ছাড়া হর্ন বাজানো থেকে বিরত থাকা। বিশেষ করে ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকার সময়, তেমন বাধা ছাড়াই গাড়ি চলছে এমন অবস্থায় বা পথচারীদের অযথা হর্ন দিয়ে বিরক্ত করা উচিত নয়। যানবাহন চালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে ট্রাফিক পুলিশ এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো প্রয়োজন।

সরকারি উদ্যোগেও শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। কঠোর আইন প্রণয়ন এবং তার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি। নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে জরিমানা এবং অন্যান্য শাস্তি আরোপ করতে হবে।

শব্দদূষণ একটি নীরব ঘাতক। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা একটি চ্যালেঞ্জ হলেও এটি অসম্ভব নয়। ব্যক্তিগত সচেতনতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার মাধ্যমে আমরা একটি শান্তিপূর্ণ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারি। তাই সবাই মিলে সচেতন হয়ে শব্দদূষণ মোকাবিলায় এগিয়ে আসা উচিত।

আবদুল হান্নান

ছবি

এলপিজি ব্যবহারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি

কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে

সঙ্গীত ও শরীরচর্চা: সুস্থ জীবনের দুই স্তম্ভ

কৃষিতে নতুন প্রজন্মের প্রত্যাবর্তন: আশার ইঙ্গিত

বিশ্বায়নের গ্রাসে আদিবাসী ভাষা ও সংস্কৃতি

ছবি

বর্ষায় পদ্মাতীরের মানুষদের দুর্বিষহ জীবন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তন চাই

ভেঙে পড়া পুকুরপাড়ের রাস্তায় গ্রামবাসীর দুর্বিষহ জীবন

ছবি

ছয় কুড়ি বিল আর নয় কুড়ি কান্দা: প্রকৃতির সাথে গাঁথা টাঙ্গুয়ার মানুষের ভাগ্য

ময়মনসিংহকে যানজটমুক্ত শহর গড়ে তোলার দাবি

অপর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট

ছবি

মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা কেন বাড়ছে?

ছবি

নিরাপদ ভোজ্য তেল ও ভিটামিন সমৃদ্ধকরণ

হাওর অঞ্চলের শিক্ষার উন্নয়নে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের প্রয়োজন

কসমেটিক সংস্কৃতি : সুন্দর হওয়ার চাপ নারীর মানসিক স্বাস্থ্যে কী করছে

মামলার রায় ও আইনের ভাষা হোক বাংলা

বেকারত্বের অভিশাপ বাংলাদেশের মাথায়

ছবি

ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য : মানুষের আচরণ নাকি সিস্টেমের ব্যর্থতা?

ছবি

মশার কয়েলের ধোঁয়া : ঘরের বাতাসের নীরব বিপদ

রাবির হলের খাবারে স্বাস্থবিধির সংকট

কুষ্টিয়া স্টেশনে যাত্রী দুর্ভোগ

চট্টগ্রাম বিমানবন্দর প্রবেশমুখ : টিনঘরে বন্দী সৌন্দর্য, সংস্কারের দাবি

ভূমিকম্পের ঝুঁকি নিরসনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শিক্ষা

ছবি

ভূমিকম্প : ঝুঁকি ও অরক্ষিত বাস্তবতা

ছবি

দখলমুক্ত ফুটপাত চাই

ভূমিদস্যুদের প্রকোপে অতিষ্ঠ কেরানিগঞ্জবাসী

বাকৃতিতে নেই পর্যাপ্ত ডাস্টবিন

যৌতুক প্রথা: এক সামাজিক অভিশাপের নীরব বিস্তার

দেশের রাজনীতির তিন দিগন্ত

ছবি

দেশীয় মাছের বিলুপ্তি ও পুনরুদ্ধার উদ্যোগ

ছবি

নয়া জাগরণের পথে দেশের ফুটবল

শিশুদের খেলার জায়গায় স্থায়ী মঞ্চ নয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য

অগ্নিনির্বাপণে প্রস্তুতির ঘাটতি আমাদের বড় বিপদ

সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতনবৈষম্য দূর হবে কবে?

ছবি

নারী কৃষকের অবদান ও স্বীকৃতি

tab

শব্দদূষণ রোধে উদ্যোগ নিন

বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

শব্দদূষণ আধুনিক শহর জীবনের এক বড় সমস্যা। নগরায়ণ ও শিল্পায়নের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে শব্দদূষণ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। যানবাহনের অপ্রয়োজনীয় হর্ন, নির্মাণকাজ, লাউডস্পিকার এবং বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান শব্দদূষণের প্রধান উৎস। এই সমস্যা মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে।

শহর কিংবা গ্রাম সবখানেই এখন শব্দদূষণ। অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে মাইকে বিভিন্ন ধরনের প্রচার-প্রচারণা। রাজধানী ঢাকাসহ সবাই শহর-গ্রামগঞ্জে বাসাবাড়িতে থাকা অবস্থায়, রাস্তাঘাটে চলাচল করার সময় শব্দদূষণের অত্যাচারে টেকা দায়। গ্রামে অতিরিক্ত প্রাইভেট ক্লিনিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পণ্য বিক্রি, মাছ-মাংসসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের প্রচারগাড়ি প্রতিনিয়ত ঘুরছে-ফিরছে। এ ছাড়াও গ্রামে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে কিশোর ও যুবক দ্বারা রাতভর উচ্চ আওয়াজে বক্সে গান বাজানোর বিষয়টি। বিভিন্ন দিবস ছাড়াও এই উচ্ছৃঙ্খলতা বেড়ে গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডঐঙ)-এর মতে, স্বাভাবিক শব্দের সহনীয় মাত্রা ৫৫-৬০ ডেসিবেল; কিন্তু ঢাকার মতো শহরে এটি ৮৫ থেকে ১২০ ডেসিবেল পর্যন্ত পৌঁছে যায়। শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশেই এই শব্দদূষণে আক্রান্ত। এই মাত্রার শব্দ দীর্ঘমেয়াদে মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এটি শ্রবণশক্তি হ্রাস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, এবং মানসিক চাপের কারণ হতে পারে। শিশু ও বয়স্করা শব্দদূষণের প্রতি বেশি সংবেদনশীল।

শব্দদূষণ শুধু মানুষের ওপরই নয়, প্রাণীজগতেও বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। শহরের উচ্চ শব্দ বন্যপ্রাণীদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে। এটি প্রাকৃতিক পরিবেশে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে।

সমস্যাটি সমাধানের জন্য ব্যক্তি এবং সামাজিক পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। প্রথমত, অপ্রয়োজনীয় হর্ন বাজানো বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে স্কুল, হাসপাতাল এবং আবাসিক এলাকায় লাউডস্পিকার ও উচ্চশব্দের যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। যানবাহন চালকদের উচিত রাস্তায় ধৈর্য বজায় রেখে প্রয়োজন ছাড়া হর্ন বাজানো থেকে বিরত থাকা। বিশেষ করে ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকার সময়, তেমন বাধা ছাড়াই গাড়ি চলছে এমন অবস্থায় বা পথচারীদের অযথা হর্ন দিয়ে বিরক্ত করা উচিত নয়। যানবাহন চালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে ট্রাফিক পুলিশ এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো প্রয়োজন।

সরকারি উদ্যোগেও শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। কঠোর আইন প্রণয়ন এবং তার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি। নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে জরিমানা এবং অন্যান্য শাস্তি আরোপ করতে হবে।

শব্দদূষণ একটি নীরব ঘাতক। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা একটি চ্যালেঞ্জ হলেও এটি অসম্ভব নয়। ব্যক্তিগত সচেতনতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার মাধ্যমে আমরা একটি শান্তিপূর্ণ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারি। তাই সবাই মিলে সচেতন হয়ে শব্দদূষণ মোকাবিলায় এগিয়ে আসা উচিত।

আবদুল হান্নান

back to top