ঋতুচক্রের আবর্তনে আমাদের দেশে শীত আসে কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে। শীতকালের আগমন ঘটার সঙ্গে নিয়ে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি। আমাদের দেশে অতিথি পাখিরা আসে উত্তর মেরু থেকে। সাইবেরিয়া, উত্তর ইউরোপ, হিমালয় পর্বত, অস্ট্রেলিয়া, এন্টার্কটিকাসহ অনেক অঞ্চলে অপমাত্রা মাইনাস শূন্য ডিগ্রিতে নেমে আসলে তখন সেগুলোতে প্রচ- খাদ্যাভাব দেখা দেয়। তীব্র শীতে পাখির দেহ থেকে পালক খসে পড়ে। প্রকৃতি যখন পাখিদের জীবনধারনের জন্য অনুকূলে থাকে না, তখন নাতিশীতোষ্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এসব পাখিদের গ্রহণ করে নেয় অতিথি পাখি হিসেবে। পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি পাখি আসে বাংলাদেশে।
কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এবং শিকারিরা ফাঁদ ও জাল তৈরি করে রাখেন শীতের আগে থেকে। গুলি করে, বিষ টোপ ব্যাবহার করে, জাল পেতে আরো বিভিন্ন উপায়ে তারা শিকার করে থাকে এসব অতিথি পাখি। শীতকালে বাজারে প্রকাশ্যে অতিথি পাখি বিক্রি করতে দেখা যায়। অসাধু ব্যক্তিরা সর্বোচ্চ মূল্যে এসব পাখি বিক্রি করে থাকেন। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে বলা হয়েছে, পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল, এক লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয় দন্ডে দ-িত। অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে অপরাধীর দুই বছরের জেল, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দ-ের বিধান রয়েছে।
কিন্তু দুঃখজনক হলো বাস্তবে এই আইনের কোনো প্রয়োগ দেখা যায় না। ফলে অসাধু মানুষেরা নির্বিচারে পাখি শিকার করেই যাচ্ছে এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আমাদের মত সাধারণ মানুষদের সচেতনতাই বন্ধ করতে পারে অতিথি পাখি শিকার। জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য টিকিয়ে রাখতে পশুপাখি, জীবজন্তুসহ সব প্রাণীর প্রতি সদাচার করা উচিত। যেসব এলাকায় অতিথি পাখি আসে, সেসবাই এলাকায় অতিথি পাখি নিধন সম্বন্ধে সচেতনতামূলক সভা করতে হবে এবং পরিবেশবাদী সংগঠনকে শিকারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। যেসব অসাধু মানুষ পাখি শিকার করে এবং বিক্রয় করে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুয়ায়ী শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অতিথি পাখির অবদান রয়েছে। অতিথি পাখি অতিথিদের মতোই তাই তাদের সঙ্গে অতিথিদের মতোই আচরণ করতে হবে। এরা আমাদের সম্পদ। তাই অতিথি পাখি শিকার নয় বরং তাদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল তৈরি করা এবং অতিথি পাখির প্রতি মানবিক হওয়া জরুরি।
অনিন্দীতা দাস
শিক্ষার্থী, রাজশাহী কলেজ
বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
ঋতুচক্রের আবর্তনে আমাদের দেশে শীত আসে কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে। শীতকালের আগমন ঘটার সঙ্গে নিয়ে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি। আমাদের দেশে অতিথি পাখিরা আসে উত্তর মেরু থেকে। সাইবেরিয়া, উত্তর ইউরোপ, হিমালয় পর্বত, অস্ট্রেলিয়া, এন্টার্কটিকাসহ অনেক অঞ্চলে অপমাত্রা মাইনাস শূন্য ডিগ্রিতে নেমে আসলে তখন সেগুলোতে প্রচ- খাদ্যাভাব দেখা দেয়। তীব্র শীতে পাখির দেহ থেকে পালক খসে পড়ে। প্রকৃতি যখন পাখিদের জীবনধারনের জন্য অনুকূলে থাকে না, তখন নাতিশীতোষ্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এসব পাখিদের গ্রহণ করে নেয় অতিথি পাখি হিসেবে। পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি পাখি আসে বাংলাদেশে।
কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এবং শিকারিরা ফাঁদ ও জাল তৈরি করে রাখেন শীতের আগে থেকে। গুলি করে, বিষ টোপ ব্যাবহার করে, জাল পেতে আরো বিভিন্ন উপায়ে তারা শিকার করে থাকে এসব অতিথি পাখি। শীতকালে বাজারে প্রকাশ্যে অতিথি পাখি বিক্রি করতে দেখা যায়। অসাধু ব্যক্তিরা সর্বোচ্চ মূল্যে এসব পাখি বিক্রি করে থাকেন। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে বলা হয়েছে, পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল, এক লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয় দন্ডে দ-িত। অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে অপরাধীর দুই বছরের জেল, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দ-ের বিধান রয়েছে।
কিন্তু দুঃখজনক হলো বাস্তবে এই আইনের কোনো প্রয়োগ দেখা যায় না। ফলে অসাধু মানুষেরা নির্বিচারে পাখি শিকার করেই যাচ্ছে এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আমাদের মত সাধারণ মানুষদের সচেতনতাই বন্ধ করতে পারে অতিথি পাখি শিকার। জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য টিকিয়ে রাখতে পশুপাখি, জীবজন্তুসহ সব প্রাণীর প্রতি সদাচার করা উচিত। যেসব এলাকায় অতিথি পাখি আসে, সেসবাই এলাকায় অতিথি পাখি নিধন সম্বন্ধে সচেতনতামূলক সভা করতে হবে এবং পরিবেশবাদী সংগঠনকে শিকারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। যেসব অসাধু মানুষ পাখি শিকার করে এবং বিক্রয় করে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুয়ায়ী শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অতিথি পাখির অবদান রয়েছে। অতিথি পাখি অতিথিদের মতোই তাই তাদের সঙ্গে অতিথিদের মতোই আচরণ করতে হবে। এরা আমাদের সম্পদ। তাই অতিথি পাখি শিকার নয় বরং তাদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল তৈরি করা এবং অতিথি পাখির প্রতি মানবিক হওয়া জরুরি।
অনিন্দীতা দাস
শিক্ষার্থী, রাজশাহী কলেজ